বাবা-মা-র সচেতনতা সন্তানের জীবন সহজ করে, কিন্তু বাবা-মা অসচেতন হলে সন্তান পদে পদে ভোগে৷ স্কুলপড়ুয়া সন্তানের যথার্থ ‘যৌন শিক্ষা' দেয়ার ক্ষেত্রেও বাবা-মা-এর সচেতনতা খুব দরকার৷
বিজ্ঞাপন
দু-তিন বছর আগে বেশ ‘শিক্ষিত' এবং ‘আধুনিক' একটি পরিবারের অভিজ্ঞতা বিষয়টি নিয়ে খুব ভাবিয়ে তুলেছিল৷
ঢাকা শহরের ওই পরিবারের কর্তা-কর্ত্রী দু'জনই বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিয়েছেন৷ তাঁদের বড় ছেলে তথাকথিত অভিজাত এলাকার একটি স্কুলে পড়ে৷ ছেলেটির বয়স তখন ৮ অথবা ৯৷ এক দুপুরে ছেলেটি স্কুল থেকে ফিরে বাথরুমে শাওয়ারের নীচে দাঁড়িয়েই চেঁচিয়ে মায়ের কাছে জানতে চায়, ‘‘ মা, যৌনমিলন কী?''
মা তখন রান্নাঘরে৷ ছেলের প্রশ্ন তিনি শুনেছেন ঠিকই৷ প্রথমে মনে করেছিলেন ভুল শুনছেন৷ তাই চুপচাপ ছিলেন৷ কিন্তু ছেলে ‘যৌনমিলন কী', ‘যৌনমিলন কী' বলে চিৎকার করে পাড়া প্রায় মাথায় তুলল৷ অগত্যা মা কাজ ফেলে একরকম ছুটেই চলে গেলেন বাথরুমে৷ এমন বিষয়ে তো আর চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে কথা বলা যায় না! ছেলেকে এক নজর ভালো করে দেখে মা সসংকচে বললেন, ‘‘এ সব আরো বড় হলে জানতে পারবে৷ এখন এ সব নিয়ে না ভেবে গোসল সেরে খেতে এসো৷''
ছেলে কি আর সে কথা শোনে! সে সগর্বে বলে ওঠে, ‘‘কে বলেছে আমার বয়স হয়নি? জানো, আজ স্কুলে এটা পড়িয়েছে৷'' মা বুঝলেন, কথায় ভোলানো যাবে না, তাই অনেকটা আত্মসমর্পনের ভঙ্গিতেই বললেন, ‘‘বাবা, আমি তো পুরো বিষয়টা জানি না, জেনে নিই, তারপরে তোমাকে জানাবো৷''
ওইটুকু ছেলে এ বয়সে এমন প্রশ্ন করবে তা তিনি ঘুণাক্ষরেও ভাবেননি৷ স্কুলে এসব পড়ানো শুরু হবে, তা-ও তিনি জানতেন না৷ কিন্তু ছেলে জানতে যখন চেয়েছে কিছু একটা বলতে তো হবেই৷ কী বলবেন? কিভাবে বলবেন? মা হয়ে শিশু সন্তানকে এ সব বলা কি ঠিক হবে? ‘যৌনমিলন কী' – এই এক প্রশ্নে মায়ের মনে তখন হাজারো প্রশ্নের উঁকি৷ এক বান্ধবীকে ফোন করলেন৷ সব শুনে বান্ধবী বললেন, ‘‘ধুর, এটা কি বলা যায় নাকি? তাছাড়া যৌনমিলন কি বলে বোঝানোর বিষয়? ওকে বলে দিন, যৌনশিক্ষার ক্লাস করতে হবে না৷ বলে দিন, আপনি স্কুলের প্রিন্সিপালের সঙ্গে কথা বলবেন৷''
পারিবারিক সম্পর্ক সুন্দর রাখার ১০ উপায়
পেশাগত কাজের চাপই যে স্ট্রেসের প্রধান কারণ তা নয়৷ এই বিশ্বায়নের যুগে স্বামী-স্ত্রীর চাকরি, সন্তানদের যোগ্য মানুষ হওয়া নিয়ে নানা মতবিরোধ, দ্বন্দ্ব থাকা সত্ত্বেও সবার মাঝে মধুর সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার কিছু টিপস থাকছে ছবিঘরে৷
ছবি: Getty Images
ঝগড়া এড়িয়ে শান্ত থাকুন
প্রায়ই কথায় কথায় এর সাথে ওর লেগে যায়, অর্থাৎ স্বামী-স্ত্রীর কলহ বা সন্তানদের নিয়ে অথবা সন্তানদের মধ্যে৷ তা হতে পারে পেশাগত চাপ বা নিজেদের লাইফস্টাইল নিয়ে৷ কিংবা সংসারের নানা কাজ৷ তাই কিছুটা সচেতন হয়ে কথা বলুন, একজন উত্তেজিত হলে অন্যজন শান্ত থাকুন৷ সরাসরি বলতে গেলে, ঝগড়া এড়িয়ে চলুন৷
ছবি: drubig-photo - Fotolia
কাজের স্বীকৃতি দিন
দৈনন্দিন জীবনের অনেক কাজ থাকে, যা একজন হয়তো নিয়মিত করে চলেছে৷ কিন্তু সেকথা কখনো বলা হয়না বা স্বীকৃতি দেওয়া হয়না৷ যে যেটা নিয়মিত করছে তাকে মাঝে মধ্যে মুখে বলুন বা স্বীকৃতি দিন, কাজের সম্মান দেখান৷ স্বীকৃতি পেলে কে খুশি না হয়! তাছাড়া সংসারে সবাই সমান পারদর্শী নয়, তাই বলে কাউকে অবহেলা একেবারেই নয় !
ছবি: imago/imagebroker
কাজ ভাগাভাগি করে নিন
সংসারের প্রয়োজনীয় কাজগুলো ভাগাভাগি করে নিন৷ কারো পেশাগত চাপ বা পড়াশোনার চাপ থাকলে সে সময়ে অন্য আরেকজন সে কাজটি করে ফেলুন৷ তবে এ নিয়ে অবশ্যই কথা বলুন রাতে খাবার টেবিলে অথবা সপ্তাহান্তে৷ সকালে তাড়াহুড়ো করে বাড়ি থেকে বের হবার আগে কখনো সিরিয়াস আলাপ নয় !
ছবি: DW/L.Heller
ব্যক্তিগত ইচ্ছে বা সখের মূল্য দিন
পরিবারের সদস্যদের সখ বা ইচ্ছের মূল্য দিন৷ অবসর সময়ে কে কী করতে চায় অর্থাৎ গান, বাজনা, বই পড়া, ছবি আঁকা, বন্ধুদের সাথে আড্ডা বা অন্য যা কিছুই হোক না কেন, এতে আগ্রহ দেখান৷ একজনের যা ভালো লাগে, অন্যের তা পছন্দ নাও হতে পারে৷ তাই বলে অসম্মান নয়৷ তবে প্রয়োজনে ভালো-মন্দ বুঝিয়ে বলা যেতে পারে৷ সবাই মিলে আলোচনা করে একে অপরের আগ্রহের কথা জানতে পারলে সব সমস্যার সমাধান সম্ভব৷
ছবি: Fotolia/ Gennadiy Poznyakov
স্বামী-স্ত্রীর কলহ
আধুনিক যুগের চাকরিজীবী স্বামী-স্ত্রীর কলহের ধরনও পালটে গেছে৷ তবে সন্তানদের সামনে মা-বাবা ঝগড়া করলে তা সন্তানদের ওপর বেশ প্রভাব ফেলে৷ তাই মা-বাবাকে দু’জনের ভেতরের কলহ নিজেদের ঘরেই মিটিয়ে ফেলতে হবে৷ সন্তানদের সামনে ঝগড়া নয়, বিশেষ করে ছোট বাচ্চাদের সামনে ঝগড়া হলে শিশুমনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে, যা পরে মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে৷
ছবি: goodluz - Fotolia
পারিবারিক দ্বন্দ্ব
পারিবারিক দ্বন্দ্ব নেই – এমন পরিবার বোধহয় কমই আছে৷ নানা জনের নান মত থাকবেই৷ তাই মনের মধ্যে কোন দ্বন্দ্ব বা ভিন্ন মত হলে তা নিজের মধ্যে লুকিয়ে রেখে কষ্ট না পেয়ে খোলাখুলি স্বামী-স্ত্রী, ভাইবোন বা সকলে মিলে কথা বলুন৷ পারিবারিক দ্বন্দ্ব এড়াতে সবসময় সরাসরি আলোচনা করুন, কারণ এর কোনো বিকল্প নেই৷
ছবি: Fotolia/drubig-photo
জন্মদিন বা কোন উপলক্ষ্য
জন্মদিন পালন করা পশ্চিমা বিশ্বের সংস্কৃতি হলেও আজকাল তা আমাদের দেশেও চলে এসেছে৷ জন্মদিন উদযাপন মানেই বিশাল আকারে পার্টি করা নয়৷ ছেলে-মেয়ে, বাবা-মা সবার জন্মদিনকে বিশেষভাবে, অর্থাৎ যার জন্মদিন তাকে পছন্দের ছোট কিছু দিয়ে সবাই মিলে পরিবারের মধ্যেই দিনটি উদযাপন করতে পারেন৷ পরিবারে যার জন্মদিন, তাকে বছরের এই দিনটিতে সুন্দর করে বুঝিয়ে দেয়া যে, পরিবারে তার মূল্য কারো চেয়ে কম নয়৷
ছবি: pressmaster - Fotolia.com
অসুখ-বিসুখে বাড়তি যত্ন
অসুখ-বিসুখে পরিবারের সদস্যরা একে অপরের প্রতি বিশেষ যত্ন নিন, বুঝিয়ে দিন অন্যদের সমবেদনার কথা৷ কিনে আনুন ফুল অথবা রোগীর পছন্দের মজার কোনো বই, যা রোগীকে আনন্দ দিতে পারে৷ কোনোভাবেই অবহেলা নয়, প্রয়োজনে নিজের কোনো কাজ ফেলে রেখে রোগীর দৃষ্টি আকর্ষণ করুন৷
ছবি: picture alliance/ZB
সপ্তাহান্ত বা ছুটির দিন
পরিবারের সবার কাছেই যেন মনে হয় দিনটি পরিবারের জন্য৷ একসাথে একটু বেশি সময় নিয়ে সকালের নাস্তা করুন৷ কারো অন্য কোন কাজ বা অন্যকিছু থাকলে সবাইকে জানিয়ে দিন, হঠাৎ করে বলবেন না ‘আমি বাইরে যাচ্ছি’৷ যার যে কাজই থাকুক না কেন, সবার যেন এই অনুভূতি হয় যে ‘আমরা সকলে সকলের’৷ বাইরে থেকে ফিরতে দেরি হলে অবশ্যই বাড়িতে ফোন করে জানিয়ে দিন৷
ছবি: Fotolia/stefanfister
হলিডে বা ছুটি কাটানোর পরিকল্পনা
এ বছর কখন কোথায় বেড়াতে যাবেন কিংবা কোথাও যাওয়া হবে কিনা, তা নিয়ে সবাই মিলে আলোচনা করুন৷ পরিবারের প্রতিটি সদস্যেরই মতামতের মূল্য রয়েছে – তা সবাইকে জানিয়ে দেয়া৷ হোক সে ছোট বা বড়৷ ছুটিতে গিয়ে দৈনন্দিন জীবনের সমস্ত চাপ ঝেড়ে আসুন, আনন্দ করুন, নতুন উদ্যম নিয়ে ফিরে আসুন৷ ভাবুন জীবন অনেক সুন্দর!
ছবি: Getty Images
10 ছবি1 | 10
বান্ধবীর পরামর্শ মনে ধরল না৷ তাই সেই রাতেই ভদ্রমহিলা তাঁর স্বামীর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করলেন৷ স্বামী মহোদয় বুদ্ধিমান৷ সব শুনে দু-দিন বিষয়টি নিয়ে ছেলেকে কিছুই বললেন না৷ ছুটির দিনে ছেলেকে ডেকে শুধু বললেন, ‘‘তুমি নাকি যৌনমিলন সম্পর্কে জানতে চেয়েছো? যৌনমিলন হলো এক ধরণের ভালোবাসা৷ বড় হলে মানুষ ওভাবে ভালোবাসে৷ ওভাবে ভালোবাসলে বাচ্চা হয়৷ এই ভালোবাসার জন্যই তুমি হয়েছো৷''
পরে সেই স্কুলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ছেলেটিকে ক্লাসে যিনি ‘যৌন শিক্ষা' বিষয়ে পাঠদান করেছিলেন, তিনি পাঠ্যপুস্তকের ওই একটি অধ্যায় একবার পড়ে নেয়া ছাড়া এ বিষয়ে কোনো প্রস্তুতিই নেননি৷ যে সমাজের বেশির ভাগ মানুষ ‘যৌনশিক্ষা' বিষয়ে প্রায় অজ্ঞ, সেখানে শিক্ষক-শিক্ষিকার হাতে একটা বই তুলে দিলেই হবে? যৌন শিক্ষা, যৌন শিক্ষার প্রয়োজন এবং গুরুত্ব সম্পর্কে শিক্ষক এবং অভিবাককদের ধারণাই যদি স্বচ্ছ না হয়, কী লাভ শিশুদের যৌন শিক্ষা দেয়ার চেষ্টা করে?
শেষ কথা
শিশু শিক্ষা, শিশু প্রতিপালন – এ সব সমন্বয়হীন হলে মহাবিপদ৷ উন্নত বিশ্বে শুধু মানুষের সন্তান নয়, যে কোনো প্রাণির ‘শিক্ষা' এবং প্রতিপালনের ক্ষেত্রেই সমন্বয়ের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হয়৷ জার্মানির মতো কিছু দেশে তো কুকুরের জীবনযাপন দেখলেও অবাক হতে হয়৷
এখানে ঘরে ঘরে কুকুর৷ কুকুর পোষা এখানে অনেকটা সংস্কৃতির অংশ৷ তা-ই বলে চাইলেই কেউ কুকুর পুষতে পারেন না৷ আগে কুকুর পোষার ‘যোগ্য' হতে হয়৷ যিনি পুষবেন তাঁর কুকুর পোষার মতো আর্থিক সঙ্গতি এবং ‘মানসিক অবস্থা' আছে কিনা – তা রীতিমতো পরীক্ষা করে দেখা হয়৷ কুকুর পোষার প্রশিক্ষণও নিতে হয় তাঁকে৷ কুকুরের জীবনের মূল্য বুঝতে হয়৷ কুকুরের থাকা-খাওয়া-চিকিৎসার সুব্যবস্থা করতে হয়, স্কুলে পাঠাতে হয়৷ সেখানে কুকুর শেখে, কাউকে দেখলেই ‘ঘেউ, ঘেউ' করে কামড়াতে যাওয়া চলবে না৷ কুকুর কাউকে কামড়ালেই মালিকের মোটা অঙ্কের জরিমানা৷ তাই নিজের স্বার্থেই মালিক প্রিয় পোষা প্রাণীকে স্কুলে নিয়ে যান৷ সেখানে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার শিক্ষাও পায় কুকুর৷
আমরা উন্নত বিশ্বের মতো অনেক কিছু চাই৷ শিক্ষায়ও চাই সেরকম পরিবর্তন৷ চাওয়া মন্দ নয়৷ শুধু চাওয়া-পাওয়ার সম্ভাব্য ব্যবধানটা মনে রাখা দরকার৷ রাজধানীর অভিজাত এলাকার স্কুল, শিক্ষক এবং অভিভাবকই যেখানে শিশুদের ‘যৌনশিক্ষা' সম্পর্কে সচেতন করতে অক্ষম, সেখানে দেশের গড়পড়তা স্কুলের শিক্ষার্থীদের কী অবস্থা হতে পারে তা তো বোঝাই যায়৷
বাংলাদেশে যৌন শিক্ষা
পাঠ্যপুস্তকে যৌন স্বাস্থ্যের বিষয়টি ইতিমধ্যেই অন্তর্ভুক্ত করেছে সরকার৷ কিন্তু যৌন শিক্ষা পড়ানো নিয়ে সমস্যা হচ্ছে৷ শিক্ষকরা এতে অভ্যস্ত হয়ে ওঠেননি, ছাত্র-ছাত্রীরাও বিষয়টিকে সহজভাবে নিচ্ছে না৷ কী বলছে আজকের তরুণ সমাজ?
ছবি: DW/K. Andrade
ফারজানা খানম
অ্যামেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের মিডিয়া অ্যান্ড মাস কমিউনিকেশনের তৃতীয় সেমিস্টারের ছাত্রী ফারজানা৷ তাঁর মতে, যৌন শিক্ষা হচ্ছে যা থেকে যৌনতা সম্পর্কে জানা যায়৷ এ শিক্ষা প্রত্যেকের জীবনে প্রয়োজন৷ বাচ্চাদের পরিবার এবং শিক্ষকরা এটা শিখাতে পারেন৷ এছাড়া যৌনতা সম্পর্কে তাদের জানার উৎস হতে পারে পরিবার অথবা বন্ধু-বান্ধব৷ তাছাড়া ইন্টারনেট থেকেও যৌনতা সম্পর্কে জানা যায়, জানান ফারজানা৷
ছবি: DW
নাফিসা হক অর্পা
অ্যামেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের মিডিয়া অ্যান্ড মাস কমিউনিকেশনের ষষ্ঠ সেমিস্টারের ছাত্রী নাফিসা হক অর্পা৷ নারী-পুরুষের শারীরিক মিলন সম্পর্কে জ্ঞানকেই যৌন শিক্ষা৷ নাফিসার কথায়, ‘‘আমাদের সময়ে ইন্টারনেট এত সহজলভ্য ছিল না৷ তখন বন্ধু, সহপাঠী, আত্মীয়স্বজনরাই ছিলেন মূল ভরসা৷’’ তাঁর মতে, যৌন শিক্ষাটাকে ট্যাবু হিসেবে না দেখে একে শিক্ষার অংশ করা উচিত৷ এতে করে যৌন বিষয়ক অপরাধ কমবে৷
ছবি: DW
জান্নাতুল ফেরদৌস কনক
নাফিসার মতোই মাস কমিউনিকেশন নিয়ে পড়াশোনা করছেন জান্নাতুল ফেরদৌস কনক, তবে তিনি পড়ছেন পঞ্চম সেমিস্টারে৷ তাঁর মতে, যৌনতা হচ্ছে বয়সের পরিবর্তনে শারীরিক এক ধরণের চাহিদা৷ আগে এ নিয়ে সীমাবধ্যতা থাকলেও, এখন ছেলে-ছেলে কিংবা মেয়ে-মেয়ের যৌন সম্পর্কও বেশ জনপ্রিয়৷ ‘‘বন্ধুদের আড্ডায় এটাই সবচেয়ে আলোচিত বিষয়’’, জানান কনক৷ তাঁর মতে, যৌন শিক্ষার দরকার না থাকলেও এ বিষয়ে জ্ঞান থাকা জরুরি৷
ছবি: DW
ইমরান খান
অ্যামেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী ইমরান খান৷ তিনি যৌন শিক্ষা বলতে যৌনতা সম্পর্কে সব ধরণের ধারণাকে বোঝেন৷ তাঁর মতে, যৌন শিক্ষা সবার জন্য একটি অত্যন্ত জরুরি বিষয়৷ আর এ কথাটা শিশুদের ক্ষেত্রেও সমানভাবে প্রযোজ্য৷ তবে ইমরানের কথায়, ‘‘সঠিক যৌন শিক্ষা স্কুল বা বিশ্ববিদ্যালয়ে নয়, পরিবার থেকেই গড়ে উঠতে পারে৷’’
ছবি: DW
কেডিএস সাকিব
বেসরকারি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নাফিসা আর কনকের মতো মিডিয়া অ্যান্ড মাস কমিউনিকেশন নিয়ে পড়ছেন সাকিব, পঞ্চম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী৷ তাঁর মতে, যৌন শিক্ষা হলো যৌন মিলনের উপর জ্ঞান৷ তবে শিক্ষকদের কাছ থেকে নয়, বয়ঃসন্ধিকাল থেকেই বন্ধুদের কাছ থেকে এ বিষয়ে জেনেছেন তিনি৷ সাকিবের মতে, পর্যাপ্ত যৌন শিক্ষা অবশ্যই দরকার৷ যৌনতা সম্পর্কে তাঁর জানার মূল উৎস বিভিন্ন ওয়েবসাইট, ব্লগ এবং এ সম্বন্ধে লিখা বিভিন্ন বই৷
ছবি: DW
মাহবুব টিপু
নাফিসা, কনক, সাকিব আর ফারজানার মতোই মাস কমিউনিকেশন নিয়ে পড়াশোনা করছেন মাহবুব টিপু৷ অবশ্য তিনি এখনও দ্বিতীয় সেমিস্টারে৷ যৌন শিক্ষা তাঁর কাছে যৌনতা সম্পর্কে সঠিক শিক্ষা৷ তাঁর মতে, যৌন শিক্ষাটা বয়সের সঙ্গে সঙ্গেই চলে আসে৷ এ বিষয়ে জানার সবচেয়ে বড় জায়গা বন্ধু-বান্ধব৷ তাঁর মতে, যৌন শিক্ষার মৌলিক বিষয়গুলো সবারই কম-বেশি জানা থাকে৷ তারপরও এ বিষয়ে শেখার সবচেয়ে বড় মাধ্যম বিভিন্ন ওয়েবসাইট৷
ছবি: DW
সামিয়া রহমান
সামিয়া রহমানও মিডিয়া অ্যান্ড মাস কমিউনিকেশনের দ্বিতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী৷ যৌন শিক্ষা বলতে তিনি বোঝেন নারী ও পুরুষের শারীরিক সম্পর্ক বিষয়ে জ্ঞান৷ তাঁর কথায়, ‘‘যৌন শিক্ষা আমাদের দেশে নিষিদ্ধ একটি বিষয়ের মতো৷ তাই এ বিষয়ে আমি শিক্ষা পায়নি৷’’ তাঁর মতে, যৌন শিক্ষা খুবই জরুরি৷ এ বিষয়ে সঠিক জ্ঞান না থাকায় অনেকেই ভুল পথে চলে যায়৷ তাই বাবা-মায়েরও এ বিষয়ে সন্তানদের সঙ্গে খোলাখুলি কথা বলা উচিত৷
ছবি: DW
নাফিউল হক শাফিন
টিপু আর সামিয়ার মতো অ্যামেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের মাস কমিউনিকেশন বিভাগের দ্বিতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী নাফিউল৷ তাঁর মতে, যৌন শিক্ষা জীবনের জৈবিক চাহিদা সম্পর্কে জানা এবং যৌনতার সঠিক প্রয়োগ ও সতর্কতাকে বোঝায়৷ তিনি শিক্ষকদের কাছ থেকে এ বিষয়ে কিছু শেখেননি৷ তবে এই শিক্ষাটা খুবই জরুরি বলে মনে করেন তিনি৷ তাঁর মতে, যৌন শিক্ষার জন্য বড় কেউ কিংবা সহপাঠীরাই বড় মাধ্যম৷
ছবি: DW
মালিহা রহমান
মালিহা রহমানও ঐ একই বিশ্ববিদ্যালয়ে মিডিয়া অ্যান্ড মাস কমিউনিকেশনের দ্বিতীয় সেমিস্টারের ছাত্রী৷ তাঁর মতে, যৌন শিক্ষা হলো শারীরিক সম্পর্কের হাতে কলমে শিক্ষা৷ অবশ্য তাঁর কথায়, যৌন শিক্ষা একটা স্বাভাবিক বিষয় যেটা মানুষ থেকে শুরু করে সব প্রাণীই প্রাকৃতিকভাবে জানে৷ তাঁর মতে, এ বিষয়ে আগে থেকে জানার কিছু নেই, নেই ভালো কোনো দিক৷ যখন এ বিষয়ে জানার প্রয়োজন হবে তখন এমনিতেই তা জানা যাবে৷
ছবি: DW
9 ছবি1 | 9
সন্তানকে যৌনতা সম্পর্কে সচেতন করা কি বাবা-মায়ের কর্তব্য নয়? মতামত জানান নীচের মন্তব্যের ঘরে৷