ক্যানাডায় বামপন্থি দলের সঙ্গে সমঝোতা করে ২০২৫ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকা নিশ্চিত করলেন প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো।
বামপন্থিদের শর্ত মেনে তাদের সঙ্গে সমঝোতা করে ট্রুডো ক্ষমতায় থাকছেন। ছবি: Adrian Wyld/empics/picture alliance
বিজ্ঞাপন
ট্রুডোর লিবারেল পার্টির সঙ্গে বিরোধী বামপন্থি নিউ ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি)-র সমঝোতা হলো। তার জেরে ২০২৫ পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে পারবেন প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো।
প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, এর ফলে এই সংকটের সময়ে সরকারের স্থায়িত্ব নিয়ে কোনো সংশয় থাকলো না। তারা বাজেট পেশ করবে ও তা রূপায়ণ করবে। ক্যানাডার মানুষের জন্য কাজ করবে।
গত সেপ্টেম্বরে ট্রুডোর দল সবচেয়ে বড় দল হলেও সরকার গঠনের মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। এই অবস্থায় বামপন্থিদের সমর্থন নিয়ে ট্রুডোকে ক্ষমতায় থাকতে হচ্ছে। বামপন্থি এনডিপি সরকারে থাকবে না। তবে তাদের সঙ্গে ট্রুডোর দলের যে সমঝোতা হয়েছে, তাতে অন্যতম শর্ত হলো, সরকার ওষুধ ও ডেন্টাল কেয়ার পরিকল্পনা রূপায়ণ করবে।
আগামী ২০ সেপ্টেম্বর ক্যানাডায় জাতীয় নির্বাচন৷ বড় আশা নিয়ে আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছিলেন জাস্টিন ট্রুডো৷ কিন্তু নির্বাচনের হাওয়া এখন তার বিপরীতে৷ দেখুন ছবিঘরে...
ছবি: Carlos Osorio/REUTERS
নির্বাচনি প্রচারে চরম প্রতিকূলতা
চলতি আগস্ট মাসেই আগাম নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেন জাস্টিন ট্রুডো৷ আশা ছিল মোটামুটি সহজেই বৈতরণী পার হবেন৷ কিন্তু রাতারাতি বদলে গেছে পরিস্থিতি৷ গত শুক্রবার ওন্টারিওতে নির্বাচনি সভাই করতে পারেননি ক্যানাডার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী৷ কিছু লোক এসে এমন আগ্রাসি প্রতিবাদ শুরু করেন যে সভা বাতিল ঘোষণা করে চলে আসতে হয় তাকে৷
ছবি: Carlos Osorio/REUTERS
বিক্ষোভের মুখে ট্রুডো
ওন্টারিওর নোবলটনে লিবারেল পার্টির নির্বাচনি প্রচারের বাস থেকেই নামতে পারেননি ট্রুডো৷ দরজার সামনে বিক্ষোভকারীরা হট্টগোল শুরু করায় লিবারেল সমর্থকরা কাছে আসতে পারেননি৷ দূর থেকেই হাত নেড়ে সমর্থকদের শুভেচ্ছা জানান ট্রুডো৷
ছবি: Carlos Osorio/REUTERS
জনপ্রিয়তায় ভাটা
শনিবার আসন্ন নির্বাচন নিয়ে জনমত জরিপের ফল প্রকাশ করেছে ক্যানাডার গণমাধ্যম৷ ন্যানোস রিসার্চের করা জরিপ অনুযায়ী এ মুহূর্তে প্রধান বিরোধী দল কনজারভেটিভের প্রার্থী এরিন ও’টুল জনপ্রিয়তায় ট্রুডোর চেয়ে এগিয়ে৷ জরিপ অনুযায়ী, এ মুহূর্তে নির্বাচন হলে এরিন ও’টুল পাবেন ৩৩.৩ শতাংশ ভোট আর ট্রুডো পাবেন ৩০.৮ শতাংশ ভোট৷ ওপরের ছবিতে ওন্টারিওতে ট্রুডোর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ৷
ছবি: Carlos Osorio/REUTERS
প্রধান কারণ আফগানিস্তান
ন্যানোস রিসার্চের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত এক সপ্তাহে লিবারেল পার্টির যে জনপ্রিয়তায় ভাটা লক্ষ্য করা গেছে তার মূল কারণ আফগানিস্তান থেকে ক্যানাডীয় এবং আফগানদের নিয়ে আসায় সরকারের ঢিলেঢালা প্রয়াস৷
ছবি: Carlos Osorio/REUTERS
আরেক কারণ করোনা-ব্যবস্থাপনা
এছাড়া করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে সরকারের পদক্ষেপের কারণেও জাস্টিন ট্রুডোর জনপ্রিয়তা কমেছে বলে ন্যানোসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে৷ শুক্রবার ভ্যাকসিনবিরোধীদের বিক্ষোভের মুখে টরন্টোর একটি নির্বাচনি সভা বাতিল করতে হয় ট্রুডোকে৷ ওপরের ছবিটি অবশ্য শনিবার ওন্টারিওতে তোলা৷
ছবি: Carlos Osorio/REUTERS
5 ছবি1 | 5
ট্রুডো জানিয়েছেন, বাজেট বা কোনো আইন নিয়ে এনডিপি ভেটো দেবে না। দুই দল একসঙ্গে কাজ করবে। তিনি বলেছেন, ''আমরা কী কী বিষয়ে একমত হয়েছি, সেটার উপরই ফোকাস থাকবে। আমরা যে বিষয়ে একমত হতে পারিনি, তার উপর নয়।''
এনডিপি নেতা জগমিত সিং জানিয়েছেন, এই সমঝোতা টিকিয়ে রাখার বিষয়ে তিনি আশাবাদী। তবে লিবারেল পার্টি যদি শর্ত না মানে, তাহলে সমঝোতাও আর থাকবে না।
আকর্ষণীয় কয়েকজন সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান
শুধু সৌন্দর্য্য নয়, আচরণ এবং ব্যক্তিত্বও মানুষের চেহারায় ফুটিয়ে তোলে আকর্ষণের ছাপ৷ নিজস্ব বৈশিষ্ট্যে বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান জায়গা করে নিচ্ছেন বিশ্ববাসীর মনে৷ এমন কয়েকজনকে নিয়েই আজকের ছবিঘর৷
ছবি: Getty Images/AFP/STR
কোলিন্ডা গ্রাবার-কিটারোভিচ
বিশ্বকাপ ফুটবলে গ্যালারিতে সবার নজর কেড়েছিলেন ক্রোয়েশিয়ার সুন্দরী প্রেসিডেন্ট কোলিন্ডা গ্রাবার-কিটারোভিচ৷ ২০১৫ সাল থেকে তিনি প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছেন৷ তবে তাঁর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার বর্ণাঢ্য৷ প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে কাজ করেছেন ইউরোপ বিষয়কমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে৷ ২০০৮ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত জাতিসংঘে ক্রোয়েশিয়ার দূত ছিলেন কোলিন্ডা৷
ছবি: Reuters/D. Sagolj
ভ্লাদিমির পুটিন
১৯ বছর ধরে কখনও সরকারপ্রধান, কখনও রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন সাবেক এই রুশ গোয়েন্দা৷ ১৯৯৯ থেকে ২০০০ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী, ২০০০ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি, ২০০৮ থেকে ২০১২ পর্যন্ত আবার প্রধানমন্ত্রী, এবং এরপর থেকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন পুটিন৷ ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙনের পর বিশ্ব রাজনীতিতে রাশিয়া যে অবস্থান খুইয়েছিল, তার অনেকটাই পুনরুদ্ধার করেছেন পুটিন৷
ছবি: Reuters/G. Dukor
এমানুয়েল মাক্রোঁ
ফ্রান্সের ইতিহাসে সবচেয়ে কমবয়সি প্রেসিডেন্ট মাক্রোঁ৷ ২০১৭ সালে মাত্র ৩৯ বছর বয়সে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন তিনি৷ তরুণ রাজনীতিবিদ হলেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাজনীতিতে তাঁর ভূমিকা প্রশংসা পেয়েছে বিশ্বনেতাদের কাছে৷ বিশ্বকাপ ফাইনালে ফ্রান্সের খেলা চলাকালীন সময়ে ভিআইপি গ্যালারিতে মাক্রোঁ’র উত্তেজনা নজর কেড়েছে অনেকের৷
ছবি: Reuters/C. Platiau
জাস্টিন ট্রুডো
৪৪ বছর বয়সে ক্যানাডার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে সাড়া ফেলেছিলেন ট্রুডো৷ সুদর্শন এই তরুণের মন্ত্রিসভাকে বিশ্বের সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় মন্ত্রিসভা হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়৷ তাঁর মন্ত্রিসভায় আদিবাসী ছাড়াও বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণের ক্যানাডিয়ান পেয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব৷ এছাড়াও বৈশ্বিক বিভিন্ন ইস্যুতে তাঁর প্রগতিশীল চিন্তাভাবনাও তাঁকে তরুণদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় করে তুলেছে৷
ছবি: picture-alliance/empics/A. Wyld
বরুট পাহো
২০০৭ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত স্লোভেনিয়ার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের পর ২০১২ থেকে দেশটির প্রেসিডেন্ট পাহো৷ অনেকটা আনুষ্ঠানিক পদ হলেও প্রেসিডেন্ট হিসেবে পাহো বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখার চেষ্টা করে চলেছেন৷ ইউক্রেন সংকট নিরসন এবং ট্রাম্প-পুটিন বৈঠকে তাঁর আন্তরিক চেষ্টা ইউরোপের রাজনীতিতে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছিল৷
ছবি: Reuters/S. Zivulovic
এনরিকে পেনিয়া নিয়েটো
২০১২ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত মেক্সিকোর প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে ছিলেন সুদর্শন এই মেক্সিকান৷ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের একচেটিয়া আধিপত্য ভাঙা, জ্বালানি খাত আধুনিকায়ন, রাষ্ট্রীয় শিক্ষা ব্যবস্থার অর্থায়নসহ নানা উদ্যোগে মেক্সিকোর তরুণদের মধ্যে তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন৷
ছবি: picture-alliance/Zumapress
6 ছবি1 | 6
বিরোধীদের অভিযোগ
বিরোধী রাজনীতিবিদদের অভিযোগ, এটা ট্রুডোর ক্ষমতা দখলের চেষ্টা ছাড়া আর কিছু নয়। বিরোধী রক্ষণশীল দলের নেতারা বলেছেন, ক্যানাডার মানুষ ট্রুডোর এভাবে ক্ষমতা দখলের প্রয়াস দেখে বিরক্ত।
ট্রুডো জানিয়েছেন, তার নেতৃত্বেই দল আবার ২০২৫ সালের নির্বাচনে লড়বে।