1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

এবার কি ‘বাঙালিও হারবে' ত্রিপুরায়?

শীর্ষ বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা
৫ মার্চ ২০১৮

উত্তর-পূর্ব ভারতের ত্রিপুরায় বিজেপির ঐতিহাসিক নির্বাচনী জয়ের পর এখন রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছেন বামপন্থিরা৷

ছবি: DW/P. Mani Tiwari

পশ্চিমবঙ্গে ৩৪ বছরের বাম শাসনের অবসান ঘটিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার মুহূর্তে তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জির স্লোগান ছিল, ‘‘‌বদলা নয়, বদল চাই৷''‌ তাঁর দলের কর্মীরা কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতির মর্যাদা রাখতে পারেনি৷ পশ্চিমবঙ্গে একাধিক জায়গায় সিপিআইএম-এর পার্টি অফিস ভাঙচুর হয়েছিল, আক্রান্ত, প্রহৃত হয়েছিলেন বামপন্থি কর্মী, সমর্থকরা৷ সেই সময় এক ধরনের প্রশাসনিক নিস্পৃহতাও চোখে পড়েছিল এবং বলা হয়েছিল, এত বছর ধরে শাসকদলের বিরুদ্ধে পুঞ্জিভূত জনরোষের ফল ওটা৷ নিশ্চিতভাবে ত্রিপুরার বিজেপি নেতৃত্ব এখন একই কথা বলবে৷ কারণ, ভোটের ফল ঘোষণার পর থেকেই শোনা যাচ্ছে, বাম কর্মীরা একাধিক জায়গায় নিগৃহিত হচ্ছেন৷ তাঁদের বাড়িঘর ভাঙচুর হচ্ছে৷ শহরাঞ্চলে এমন ঘটনা দেখা না গেলেও বামপন্থিদের আক্রান্ত হওয়ার খবর আসছে গ্রামাঞ্চল থেকে৷ ডয়চে ভেলেকে জানালেন ত্রিপুরা সিপিআইএম-এর রাজ্য সম্পাদক বিজন কুমার ধর৷

‘বামপন্থিদের আক্রান্ত হওয়ার খবর আসছে গ্রামাঞ্চল থেকে’

This browser does not support the audio element.

কেন এমন ফল হলো, কীভাবে এমন বিপুলভাবে জিতল বিজেপি, সেটা এখনও বাম নেতাদের কাছে একটা রহস্য হয়ে আছে৷ সদ্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, তাঁরা নিজেরা বসবেন, কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানতে চাইবেন, কেন এমন হলো৷ আর সিপিএম-এর সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি ভোটের ফল ঘোষণার পরপরই টুইট করে অভিযোগ করেন, অর্থশক্তি এবং পেশীশক্তি দিয়ে ত্রিপুরায় বাম-বিরোধী ভোট একজোট করতে পেরেছে বিজেপি৷ যদিও পরে এই টুইটটি আর দেখা যায়নি৷ এর বদলে ইয়েচুরি ফের টুইটেই ত্রিপুরাবাসীকে ধন্যবাদ জানান, ২৫ বছর ধরে তাঁদের সেবা করার সুযোগ বামেদের দেওয়ার জন্য৷

কিন্তু ত্রিপুরার বামপন্থি রাজনৈতিক মহলেরই একাংশের বক্তব্য, নতুন প্রজন্মের সঙ্গে সংযোগ হারিয়েছিল শাসক বামপন্থিরা৷ এ কারণে ৪৫ শতাংশ ভোট পেয়েও দক্ষিণপন্থি, কট্টর হিন্দুত্ববাদী বিজেপির কাছে এই শোচনীয় পরাজয় হলো৷ ত্রিপুরার ওই নবীন প্রজন্ম নরেন্দ্র মোদির দর্শনেই ভরসা করেছে, ত্রিপুরার বামপন্থি আন্দোলনের দীর্ঘ ঐতিহ্যের কথা মনে রাখেনি, বা রাখার প্রয়োজন বোধ করেনি৷

বরং এখন এমনও ভয় পাচ্ছেন অনেকে যে, বাংলা ভাষা, বাঙালির সংস্কৃতিকে সংরক্ষিত রাখার যে গৌরব ত্রিপুরার, তা-ও বোধহয় এবার সংকটের মুখে পড়বে৷ কারণ, বিজেপির হিন্দি বলয় থেকে আমদানি করা যে রক্ষণশীল সাম্প্রদায়িক রাজনীতি, তা এবার ত্রিপুরার উদারমনস্ক সামাজিক বুনোটকে নষ্ট করতে চাইবে৷ অসমে কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া, এখন সে রাজ্যের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার একটি মন্তব্যেই সেটা রীতিমতো স্পষ্ট হয়েছে৷ ভোটে বামপন্থিদের হারের পর পদত্যাগী মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারকে বাংলাদেশ পাঠিয়ে দেওয়া হবে, বলেছিলেন বিশ্বশর্মা৷ভোটের ফল ঘোষণার পর তিনি আবার সেই কটু কথার পুনরাবৃত্তি করেছেন৷ কাজেই সম্ভাবনা প্রবল, সীমান্তপার বাংলাদেশের সঙ্গে ত্রিপুরার আত্মিক যোগাযোগেরও এবার কদর্থ হবে৷ বাঙালি হওয়ার কারণে হয়ত সঙ্কটাপন্ন হবে ত্রিপুরাবাসীর অস্তিত্ব৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ