বারাক ওবামার জয়ে আনন্দের অশ্রুধারা জার্মানিতে
৫ নভেম্বর ২০০৮![](https://static.dw.com/image/3765792_800.webp)
বারাক ওবামা এত বিশাল ব্যবধানে জিতবে তা অনেকের কাছেই ছিল কল্পনার অতীত৷
গত জুলাই মাসে বারাক ওবামা বার্লিনে এসেছিলেন৷ জানিয়ে গেছেন তাঁর না বলা কথা, সন্ধান দিয়েছেন নতুন পথের, নতুন বিশ্বের, দিয়েছেন নতুন প্রতিশ্রুতি, করেছেন নতুন অঙ্গীকার৷ তার বক্তব্য শুনতে বার্লিনে জড়ো হয়েছিল প্রায় দু লক্ষ মানুষ৷ সবাই উত্সাহ দিয়েছে বারাক ওবামাকে, আশার আলো দেখিয়েছে৷
বার্লিনে বসবাসরত প্রায় ৮০০ মার্কিন সারারাত অপেক্ষা করছিলেন নির্বাচনের ফলাফলের জন্য৷ নির্ঘুম রাত পার করেছেন প্রায় সাবই৷ অপেক্ষা - কে যাচ্ছে হোয়াইট হাউজে, তা দেখার জন্য৷ জানা - ৮ বছর পর কোন দলকে দেখা যাবে ক্ষমতায় একজন রিপাবলিকান নাকি একজন ডেমোক্র্যাটকে৷ অবশেষে স্থানীয় সময়েভোর পাঁচটায় আসল কাংখিত উত্তর বা ফলাফাল৷ হ্যা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট জন ম্যাক কেইন নয় বরং বারাক ওবামা, ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন৷
২৮ বছর বয়স্ক ডিলিয়া বেইল জানান, অসাধারণ একটি ঘটনা ঘটেছে৷ এটি অবিশ্বাস্য৷ নিউ ইয়র্কে ডিলিয়া এম বি এ বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করছে৷ এক পর্যায়ে সে চিত্কার করতে থাকে – ইয়েস উয়ি ক্যান৷ এই শ্লোগান দিয়ে বারাক ওবামা এগিয়ে গেছেন, জিতেছেন ভোটারদের হৃদয়, জিতেছেন হোয়াইট হাউজ৷
ডিলিয়া আরো জনায়, যদিও জার্মানরা ভোট দেয়নি কিন্তু তারাও শরীক হয়েছে এই আনন্দ শ্রোতধারায়৷ কেন, তিনি নিজেও জানেন না৷ তবে পুরো সময়টি তিনি উপভোগ করেছেন৷
এই নির্বাচনে অনেকেই মত পাল্টেছেন৷ যেমন পাল্টেছেন ৪৭ বছর বয়স্ক ক্যারল কেইটার৷ ক্যারল পেশায় একজন শিল্পী৷ পেনসেলভেনিয়ার নাগরিক৷ তিনি এবং তাঁর বাবা-মা সবসময় রিপাবলিকানদের ভোট দিয়ে এসেছেন৷ কিন্তু এবার তারা ঘটালো ব্যতিক্রম ধর্মী এক ঘটনা৷ বারাক ওবামা তাদের সবার ভোট জিতে নিয়েছেন, নিতে সক্ষম হয়েছেন৷ ক্যারল জানান, বারাক ওবামা এত নিখুঁত ভাবে কথা বলতে পারে, সে এত বিচক্ষণ, এত বুদ্ধিদিপ্ত তাঁর সততা আমাকে মুগ্ধ করেছে৷ আমি তাঁকে মনে প্রামে বিশ্বাস করি, বিশ্বাস করি তাঁর প্রতিটি কথা৷ আমার দৃঢ় বিশ্বাস তাঁর প্রতিটি প্রতিশ্রুতি তিনি রক্ষা করবেন৷ তিনি আমাদের জিতে নিয়েছেন৷
৩৯ বছর বয়স্ক জার্মান নাগরিক ফ্রাঙ্ক শ্নাইডার জানান, এই নির্বাচনে ইউরোপ আমেরিকাকে নতুন করে দেখবে, একে অপরের কাছে আসবে৷ ফ্রাঙ্ক সারারাত ঘুমায়নি শুধুমাত্র জানার জন্য হোয়াইট হাউজে কে যাচ্ছে তা দেখার জন্য৷ ফ্রাঙ্কের মতে, ইরাক যুদ্ধকে কেন্দ্র করে ইউরোপ এবং আমেরিকার মধ্যে অদৃশ্য একটি দেয়াল তৈরী হয়েছিল৷ কারণ ছিল প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ৷ সেই সময়ের অবসান হয়েছে৷ তিনি জানান, আমি বিশ্বাস করি স্বাধীনতার অন্য আরেকটি সংজ্ঞা বারাক ওবামা জানেন৷ তিনি জানেন, স্বাধীনতা কী দিয়ে তৈরী৷ জর্জ বুশের মত তাঁর নিজের মতামত সাবর ওপর চাপিয়ে দিতে চাননা বারাক ওবামা৷ আমার মনে হয় পরারাষ্ট্রনীতিতে আমরা বিশাল একটি পিবর্তন দেখবো আমেরিকার পক্ষ থেকে৷ ইরান, তাদের পরমানু কর্মকান্ড সবকিছু তিনি আলোচনার মধ্যে নিয়ে আসবেন৷ এভাবেই তিনি এসব সমস্যার সমাধান করবেন৷