রাজধানী ঢাকার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে এখন শুধু পেট্রোল বোমায় দগ্ধ মানুষের কান্না আর আহাজারি৷ গত কয়েকদিনে দগ্ধ মানুষের মিছিল কিছুটা কম হলেও, পরিস্থিতি ভয়াবহ৷ ১০০ বেডের বার্ন ইউনিটে ভর্তি অন্ততপক্ষে ৫০০ মানুষ৷
বিজ্ঞাপন
৬ই জানুয়ারি থেকে বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের অবরোধ আর হরতালে পেট্রোল বোমার ব্যবহার বেড়ে গেছে বাংলাদেশ৷ সরকারের পক্ষ থেকেও এহেন ঘটনা প্রতিরোধে বিশেষ কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না৷ আর তাতেই সৃষ্টি হয়েছে এ পরিস্থিতি৷ কিন্তু এত সহিংসতার পরও রবিবার থেকে আবার ৭২ ঘণ্টার হরতালের ডাক দিয়েছে বিএনপি৷
ঢাকার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে এখনো যন্ত্রণায় ছটফট করছেন সালাহউদ্দিন(৩৭)৷ ২৩শে জানুয়ারি যাত্রাবাড়ীতে একটি বাসে পেট্রোল বোমা বিস্ফোরণের পলে তাঁর শরীরের ৪৭ শতাংশ পুড়ে গেছে৷ তাঁকে দেখলে মনে হয় যেন এক জীবন্ত মমি৷ সারা শরীরে ব্যান্ডেজ বাধা৷ ছোট ছোট দুই সন্তান হাসিব ও আবির বাবার এই অবস্থায় হতবাক৷ তাদের কথা, ‘‘বাবার কিছু হয়ে গেলে আমাদের কী হবে?''
সালাহউদ্দিনের স্ত্রী উর্মি আক্তার বলেন, ‘‘আমার স্বামী রাজধানীর একটি শপিংমলে কাজ করেন৷ ২৩শে জানুয়ারি পেট্রোল বোমায় আহত হওয়ার খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসি৷ দু'সন্তানকে তাদের বাবার পোড়া শরীর যাতে না দেখতে হয়, সেজন্য বাসায় তাঁদের বলতে গেলে আটকে রাখতে হয়েছিল৷ কিন্তু তারপরও ঠেকানো যায়নি৷ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থেকে বাবাকে দেখাতে তাদের হাসপাতালে নিয়ে আসতে হয় শেষ পর্যন্ত৷ কিন্তু বাবাকে দেখার পর প্রথমে কান্না এবং পরে অনেকটা নির্বাকই হয়ে গেছে তারা৷''
ট্রাকের হেলপার জাহাঙ্গীরের (৩০ ) ৫৩ শতাংশ শরীর পুড়ে গেছে৷ তাঁর স্ত্রী বিউটি জানান, ‘‘২৩শে জানুয়ারি বগুড়া শহরের চারমাথা মোড়ে পেট্রোল বোমায় দগ্ধ হন জাহাঙ্গীর৷ এখনো আইসিইউ-তে রাখা হয়েছে তাঁকে৷ ডাক্তার বলেছেন, তাঁর অবস্থা বেশ খারাপ৷''
বিউটির কথায়, দুটি শিশু সন্তান জাহিদ ও জুঁই আক্তারকে নিয়েই তাঁদের সংসার৷ মাথার ওপর দেনার পাহাড় জমছে৷ জাহাঙ্গীরকে বাঁচানো না গেলে দু'সন্তান নিয়ে ভিক্ষা করা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না৷ ‘‘ভবিষ্যতের সব স্বপ্ন যে এখন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে৷''
দগ্ধ রোগীদের আর্তনাদে ভারি হয়ে উঠেছে বার্ন ইউনিটের বাতাস৷ বাইরে থেকে শোনা যাচ্ছে স্বজনদের কান্না৷ এরপরও প্রতিদিনই নতুন কোনো ঝলসানো মানুষ আসছেন হাসপাতালে৷ নতুন শোকার্ত স্বজন৷ বেড নেই৷ ঠাঁই নেই৷ কিন্তু বোমার জোগান শেষ হয় না৷ এভাবেই দিন যাচ্ছে আর বার্ন ইউনিটে ফিকে হয়ে আসছে অনেকের স্বপ্ন, মানুষের মতো বেঁচে থাকার আশা৷
চিকিত্সকরা চিকিত্সা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন৷ তাঁদের কাছে এখন আর রাত দিন নেই, নেই ‘ডিউটি আওয়ার'৷ তাঁরা সবাই মানবতার সেবায় এ সব ভুলে গেছেন৷ বার্ন ইউনিটের অধ্যাপক ডা. মো. সাজ্জাদ খোন্দকার জানান, পেট্রোল বোমায় আহতসহ সাড়ে পাঁচশ' রোগীর চিকিত্সা করে যাচ্ছেন তাঁরা৷ রোগীদের যথাযথ চিকিত্সা সেবা দেয়ার জন্য আরও ডাক্তার ও নার্স সংযুক্ত করা হচ্ছে৷
তিনি জানান, ‘‘পেট্রোল বোমায় আহত রোগীদের চিকিত্সা একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া৷ ধীরে ধীরে এ সব রোগীকে সুস্থ জীবনের দিকে নিয়ে যেতে হয়৷'' পেট্রোল বোমায় দগ্ধ আটজনের অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘রোগীদের প্রচণ্ড চাপের মধ্যেও আমরা দিন-রাত চিকিত্সা দিয়ে যাচ্ছি৷ কিন্তু এখানে বেড আছে মাত্র ১০০৷ তারপরও আমরা বেডের কথা চিন্তা না করে যেভাবে পারি রোগীদের চিকিত্সা দেয়ার কথা ভাবছি৷ চেষ্টা করছি আর কারুর যাতে জীবন না যায়৷''
সহিংসতায় প্রধান হাতিয়ার ‘পেট্রোল বোমা’
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সহিংসতার সময় পেট্রোল বোমার ব্যাপক ব্যবহার লক্ষ্য করা গেছে৷ হাতে তৈরি এই বোমা ব্যবহার করে গাড়িতে আগুন দেয়ার বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে৷ এই বিষয়ে আমাদের ছবিঘর৷
ছবি: Munir Uz Zaman/AFP/Getty Images
পেট্রোল বোমায় পুড়ছে জীবন
বাংলাদেশে ২০১৩ সালে সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছে পাঁচ শতাধিক মানুষ৷ নির্বাচনসংক্রান্ত জটিলতা ছাড়াও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ইস্যুতে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে এসময়৷ হরতাল, অবরোধ চলাকালে ব্যাপক আকারে ব্যবহার হয়েছে পেট্রোল বোমা৷
ছবি: imago/imagebroker/theissen
যেভাবে তৈরি হয় এই বোমা
কাঁচের বোতল, পেট্রোল আর কিছু ভাঙা কাঁচ বা মার্বেলের টুকরা ব্যবহার করে পেট্রোল বোমা তৈরি করছে দুর্বৃত্তরা৷ এরপর সুযোগ বুঝে সেগুলো নিক্ষেপ করছে যাত্রীবাহী গাড়িতে৷ ফলে গাড়ি পুড়ছে, সঙ্গে পুড়ছে মানুষ৷ সাম্প্রতিক সময়ে সহিংসতার আগুনে পুড়ে মারা গেছেন বেশ কয়েকজন৷ (ফাইল ফটো)
ছবি: picture alliance/abaca
রয়েছে অন্য বোমাও
তবে শুধু পেট্রোল বোমাই নয়, লাল বা কালো টেপে মোড়া ককটেলও ব্যবহার হচ্ছে বাংলাদেশে৷ ককটেল তৈরিতে ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক পদার্থ এবং ছোট পেরেক বা লোহার টুকরা৷ এছাড়া বোমা তৈরিতে গান পাউডারও ব্যবহার করা হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বোমা বাণিজ্য
রাজনৈতিক অস্থিরতায় সময় হাতে তৈরি বোমার চাহিদা বেড়ে যায়৷ তখন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা ছাড়াও পেশাদারি গ্রুপও বোমা তৈরি করে৷ চড়া দামে এসব বোমা বিক্রিও করা হয়৷ গত বছর পাওয়া হিসেব অনুযায়ী, একেকটি হাত বোমার দাম ৫০০ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত৷
ছবি: Reuters
বড় পর্যায়ে বোমা হামলা
বলাবাহুল্য, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে আত্মঘাতী বা বড় পর্যায়ে বোমা হামলার কোনো ঘটনা ঘটেনি৷ তবে ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) বাংলাদেশের ৬৩ জেলায় একযোগে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল৷
ছবি: dpa - Bildfunk
আত্মঘাতী হামলা
১৭ আগস্টের সেই সিরিজ হামলার পর কয়েকটি আত্মঘাতী বোমা হামলার ঘটনাও ঘটে৷ দৈনিক জনকণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেসময় ‘‘বোমা হামলায় বিচারক, আইনজীবী, পুলিশ, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাসহ কমপক্ষে ৩৩ জন নিহত হন৷’’ তবে নিরাপত্তা বাহিনী কঠোর হাতে জঙ্গিবাদের উত্থান দমনে সক্ষম হয়৷ ২০০৭ সালে জেএমবির কয়েকজন শীর্ষ নেতার ফাঁসি কার্যকর হয়৷
ছবি: AP
বোমা নিষ্ক্রিয়করণ টিম
ডয়চে ভেলের ঢাকা প্রতিনিধি হারুন উর রশীদ স্বপন জানান, বাংলাদেশ পুলিশের শক্তিশালী বোমা নিষ্ক্রিয়করণ টিম রয়েছে৷ তাদের কাছে আধুনিক সরঞ্জামও রয়েছে৷ ইতোমধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ের বোমা নিষ্ক্রিয় করে প্রশংসা কুড়িয়েছে পুলিশের এই টিম৷
ছবি: Munir Uz Zaman/AFP/Getty Images
7 ছবি1 | 7
আবাসিক চিকিত্সক ডা. পার্থ শঙ্কর পাল জানান, ‘‘গত ২৪ দিনে হরতাল-অবরোধের ফলে পেট্রোল বোমা এবং আগুনে ঝলসে গিয়ে বার্ন ইউনিটে ভর্তি মোট ৮৬ জন হয়েছেন৷ তার মধ্যে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ছ'জন৷'' তিনি জানান, ‘‘শরীরের ৩০ ভাগের বেশি পুড়ে গেছে এ রকম রোগী আছেন ৪৭ জন৷ তাঁদের মধ্যে আটজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক৷ তাঁদের শরীরের ৪৫ ভাগের বেশি পুড়ে গেছে, কয়েকজনের পুড়ে গেছে কণ্ঠনালীও৷ তবে পরিস্থিতি সামাল দিতে নতুন ১৫ চিকিত্সক ও ২০ জন নার্স যোগ দিয়েছেন হাসপাতালে৷''
ঢাকার বাইরের হাসপাতালগুলোতে আরো ১৩টি বার্ন ইউনিট থাকলেও, আগুনে পোড়া রোগীদের পূর্ণাঙ্গ চিকিত্সার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটই একমাত্র ভরসা৷ ফলে রোগীদের চাপে হিমশিম খেতে হচ্ছে এই ইউনিটকে৷ জনবল ও চিকিত্সা ব্যবস্থার অপ্রতুলতার কারণে বাকি ১৩টি হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে দগ্ধ রোগীদের প্রাথমিক চিকিত্সা দেয়ার পর ঢাকা মেডিকেলে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে৷ কিন্তু স্থানান্তরিত করার সময় মৃত্যু ও পঙ্গুত্বের ঝুঁকিও বেড়ে যাচ্ছে রোগীর৷
একই সঙ্গে অভাব রয়েছে দক্ষ জনবলের৷ ১৬ কোটি মানুষের এই দেশে এ মুহূর্তে ১ হাজার ৫৫১ জন বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জন দরকার৷ অথচ বিষয়টিতে বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক আছেন মাত্র ৫০ জন৷
পুড়ছে মানুষ, পুড়ছে মানবতা
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি আদায়ের জন্য বিরোধীদলের কর্মসূচিতে পুড়ছে যানবাহন, ধ্বংস হচ্ছে সম্পদ, মরছে মানুষ৷ হরতাল-অবরোধের নামে পোড়ানো অনেকে এখনো যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে৷
ছবি: Mustafiz Mamun
সারি সারি পোড়া মানুষ
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১ নম্বর বার্ন ইউনিট এখন হরতাল-অবরোধের নামে পোড়ানো জীবিকার তাগিদ কিংবা দৈনন্দিন প্রয়োজনে রাস্তায় নামা মানুষে ভরে গেছে৷
ছবি: Mustafiz Mamun
শিশুর কষ্ট বোঝেনা তারা!
কোলের শিশুও বাঁচতে পারছেন না জ্বালাও-পোড়াওয়ে হাত থেকে৷ প্রতিপক্ষের আদর্শকে ভুল প্রমাণ করে শ্রেয়তর আদর্শ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা নয়, প্রতিপক্ষকে আঘাত করে, হত্যা করে লক্ষ্যে পৌঁছানোর চেষ্টা অনেক দেখেছে বাংলাদেশের মানুষ৷ স্বাধীন দেশে নিরীহ মানুষকে নির্বিচারে পোড়ানোও দেখতে হচ্ছে৷ ৩ নভেম্বর আট বছরের সুমি দাদীর সঙ্গে নেত্রকোনা থেকে ঢাকা আসছিল৷ জয়দেবপুর চৌরাস্তায় তাদের বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়৷
ছবি: Mustafiz Mamun
বোবা কান্না...
নির্মমতার আরেকটি ছবি হয়ে আছে মজিবরের পোড়া শরীর৷ মজিবর বাকপ্রতিবন্ধী৷ কুমিল্লার দেবিদ্বারের এক ট্রাকের হেলপার৷ পিকেটারদের বোমা হামলায় বাসের সঙ্গে তাঁর শরীরও পুড়েছে৷ সবাই শুনে বুঝবে এমনভাবে কথা তিনি বলতে পারেন না, বোবা কান্নায় শুধু পারেন অসহায়ত্ব প্রকাশ করতে, আর্তনাদ করতে আর এ অন্যায়ের প্রতিকার আশা করতে৷
ছবি: Mustafiz Mamun
মেয়েকে দেখতে গিয়ে মা হাসপাতালে
জাহানারা বেগম৷ বয়স ৫২৷ পেশা – ফেরি করে কাপড় বিক্রি করা৷ হরতাল-অবরোধ থাকলে বিক্রি কমে যায় বলেই হয়তো সেদিন কাপড় নিয়ে বাড়ি বাড়ি না ঘুরে জাহানারা গিয়েছিলেন শ্যামপুরে৷ সেখানে তাঁর মেয়ের বাড়ি৷ মেয়েকে দেখে অটো রিক্সায় ফেরার সময়েই বিপদ৷ বিরোধী দলের কিছু সমর্থক সেই অটোরিক্সাতেও ছুড়ে মারে পেট্রোল বোমা৷ সন্তানের প্রতি অপত্য স্নেহের মূল্য আগুনে পুড়ে চুকাচ্ছেন জাহানারা বেগম!
ছবি: Mustafiz Mamun
তালহার অসহায়ত্ব
২৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে বাসে পেট্রোল বোমা ছুড়ে মারে দুর্বৃত্তরা৷ শরীরের ৩০ শতাংশ পুড়ে যাওয়ায় আবু তালহা সেই থেকে ১ নম্বর বার্ন ইউনিটে৷
ছবি: Mustafiz Mamun
রাজমিস্ত্রী
রাজমিস্ত্রী ও ঠিকাদার আবুল কালাম আজাদের শরীর পুড়েছে গত ১২ নভেম্বর৷ সেদিন ঢাকার রায়েরবাগেও একটি চলন্ত বাসে ছোড়া হয় পেট্রোল বোমা৷ সেই থেকে তাঁরও ঠিকানা ঢাকা মেডিকেল কলেজের ১ নম্বর বার্ন ইউনিট৷
ছবি: Mustafiz Mamun
বাসচালক
২৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় শাহবাগে পেট্রোল বোমা ছুড়ে পোড়ানো সেই বাসটি চালাচ্ছিলেন মাহবুব৷ যাত্রীদের মতো তাঁর শরীরও পুড়েছে৷ তাঁর দেয়া তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের স্বাধীনতা যু্দ্ধের সময়, অর্থাৎ ১৯৭১ সালেই জন্ম মাহবুবের৷ স্বাধীনতার ৪২ বছর পর দেশ পুড়ছে, তিনিও পুড়েছেন৷
ছবি: Mustafiz Mamun
ঘুমের মাঝেই আগুন...
৭ ডিসেম্বর মুন্সীগঞ্জ জেলার মাওয়া ফেরিঘাটে বাসে ঘুমাচ্ছিলেন হেলপার আলমগীর৷ থামানো বাসেই দেয়া হয় আগুন৷ পোড়া দেহ নিয়ে এখন তিনি হাসপাতালে৷
ছবি: Mustafiz Mamun
লেগুনার যাত্রী
১০ নভেম্বর ঢাকার লক্ষীবাজারে পেট্রোল বোমা ছুড়ে পোড়ানো হয় একটি লেগুনা৷ লেগুনা পুড়ে শেষ, লেগুনার যাত্রী কামাল হোসেন ভাগ্যগুণে বেঁচে গেছেন৷ তবে শরীরের ৩৫ ভাগেরও বেশি অংশ পুড়ে গেছে৷ ৩৬ বছরের এ তরুণ লড়ছেন মৃত্যুর সঙ্গে৷ চিকিৎসকদের চেষ্টা এবং সুস্থ মানসিকতার প্রতিটি মানুষের শুভকামনায় তিনি শিগগিরই হয়তো ফিরবেন স্বাভাবিক জীবনে৷ কিন্তু এই দুর্ভোগ, এই দুঃস্বপ্নের দিনগুলো কি কোনোদিন ভুলতে পারবেন?
ছবি: Mustafiz Mamun
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শুভও ছিলেন রায়েরবাগের সেই বাসে৷ তাই ১২ নভেম্বর থেকে তিনিও পোড়া শরীর নিয়ে পড়ে আছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের বিছানায়৷