সরকারি এক জরিপ বলছে, বার্লিনের নাইটক্লাবগুলোতে প্রায়ই অর্ধেকের মতো পার্টি করা লোকজন কোকেনের সমতুল্য সিনথেটিক ড্রাগ অ্যাম্ফিটামিন ও এমডিএমএ গ্রহণ করেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Eisele
বিজ্ঞাপন
পার্টির জন্য বার্লিনের ক্লাবগুলো বিখ্যাত৷ বুধবার এই প্রথম ক্লাবগুলোর ওপর এক গবেষণার ফলাফল জানালো প্রশাসন৷ শহরের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও শারিটি হাসপাতাল যৌথভাবে এই জরিপটি করেছে৷
জরিপে দেখা যায়, পার্টিতে যোগ দেয়া লোকদের মধ্যে ৫০ দশমিক ৩ ভাগ স্বীকার করেছেন যে, তারা অ্যাম্ফিটামিন বা স্পিড সেবন করেন৷ এছাড়া ৪৯ দশমিক ১ ভাগ মানুষ স্বীকার করেছেন যে, তারা গত ৩০ দিনে এমডিএমএ সেবন করেছেন৷ এর বাইরে ক্লাবগুলোতে জনপ্রিয় ড্রাগগুলোর মধ্যে আছে কোকেন (৩৬ ভাগ) ও কেটামিন (৩২ দশমিক ৩ ভাগ)৷ ১২ ভাগ মানুষ বলেছেন যে, তারা এলএসডি গ্রহণ করেছেন৷
জার্মানির সবচেয়ে ‘হট’ দশটি ‘পার্টি মাইল’
‘পার্টি মাইল’ বলতে শহরের যে অঞ্চলে বার-রেস্টুরেন্ট-নাইট ক্লাবের ছড়াছড়ি৷ যারা ‘পার্টি’ করতে চান, তাদের জন্য জার্মানিতেও মজা করার জায়গার অভাব নেই! হামবুর্গ থেকে মিউনিখ অবধি দশটি সেরা পার্টি মাইলের খোঁজ পাবেন এই ছবিঘরে...
ছবি: picture-alliance/dpa/K. Nietfeld
বার্লিন: কিবা দিন, কিবা রাত, সারাক্ষণ পার্টি!
বার্লিনে ২৪ ঘণ্টা পার্টি করা যায়৷ বহু আমুদেরা সপ্তাহান্তে রাজধানীতে এসে গোটা শনি আর রবিবার শুধু একটি জায়গা থেকে আরেকটি জায়গায় গিয়ে পার্টি করে কাটান৷ বিশেষ করে স্প্রে নদীর তীরে, এছাড়া ক্রয়েৎসব্যার্গ ও ফ্রিডরিখসহাইন এলাকায় একটির পর একটি ফুর্তি করার জায়গা, যেমন সুবিখ্যাত ব্যার্গহাইন টেকনো ক্লাব৷ টেকনো বলতে টেকনো মিউজিক৷
ছবি: Visit Berlin
হামবুর্গের রেপারবান
চতুর্দিকে নিয়নসাইন, নাইট ক্লাব থেকে মাইকের গান ভেসে আসে, উৎসবে মশগুল জনতা একটি পানশালা থেকে আরেকটি পানশালায় গিয়ে ভিড় করছে৷ সন্ধ্যা যতো বাড়ছে, ততোই সান্ক্ট পাউলি এলাকার সুবিখ্যাত রেপারবান রাস্তাটিতে মানুষের দঙ্গল বাড়ছে: ‘গোল্ডেন পুডেল ক্লাব’ কিংবা ‘মলোটভ’-এর মতো নাইট ক্লাবের টানে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Heimken
মিউনিখ: সেলিব্রিটিদের মজা করার জায়গা
বাভারিয়ার রাজধানী মিউনিখের গ্লকেনবাখ বা শোয়াবিং, কিংবা শহরের প্রাচীন অংশ রাত বাড়লে জমজমাট হয়ে ওঠে৷ অভিজাত ডিস্কো ‘পি-ওয়ান’-এ এককালে লেডি গাগা, রোলিং স্টোনস বা প্যারিস হিলটনের মতো নামিদামি মানুষ পার্টি করে গেছেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Horhager
ফ্রাংকফুর্ট: ‘হাউস মিউজিক’-এর তীর্থ
নাইট ক্লাবে গিয়ে নাচা, কিংবা কোনো বার-এ গিয়ে ফ্রাংকফুর্টের সুপরিচিত ‘অ্যাপল ওয়াইন’ খাওয়া৷ ফ্রাংকফুর্টের নাইটলাইফ নিয়ে চিন্তা করার কিছু নেই৷ সাক্সেনহাউজেন এলাকাটি ‘রাতের প্যাঁচাদের’ কাছে খুবই প্রিয়, কেননা এখানে একটির পর একটি বার৷ শহরের বহু নাইট ক্লাবে হাউস মিউজিক বাজানো হয়৷ অনুরাগীরা স্বভাবতই সে খবর রাখেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/B. Roessler
কোলোন: ননস্টপ পার্টি
কোলোনে পার্টি করতে গেলে জ্যুলপিশার স্ট্রাসে’তে যেতে হবে৷ ‘রোনবুর্গ’-এর মতো নাইট ক্লাবে বাজে পপ চার্ট-এর গান, নাইনটিজ-এর গান আর জার্মান হিট সং, যার নাম ‘শ্লাগার’৷ ‘এমটিসি’ নাইট ক্লাবটিতে প্রায়ই রক কনসার্ট হয়৷ অধিক রাতে অধিকাংশ নাইট ক্লাব বন্ধ হয়ে যাবার পরেও খোলা থাকে ‘ভেনুস কেলার’৷
ছবি: Roonburg
ড্যুসেলডর্ফ: বিশ্বের দীর্ঘতম বার
ড্যুসেলডর্ফ শহরের প্রাচীন অংশে মাত্র আধ বর্গমিটার এলাকার মধ্যে পাওয়া যাবে শ’তিনেক বার, ডিস্কোথেক এবং রেস্টুরেন্ট৷ ড্যুসেলডর্ফের মানুষ গর্ব করেন, ‘বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা বার’৷ বল্কার স্ট্রিট হল ড্যুসেলডর্ফের নাইটলাইফের প্রাণকেন্দ্র: এখানে ৫০টি বার, ব্রুয়ারি ও ডিস্কোথেক আছে৷ এখানকার একটি নামকরা ক্লাব হল ‘কু’স্টাল’ বা ‘গরুর গোয়াল’৷
ছবি: Kuhstall
স্টুটগার্ট: ‘থিও’ বরাবর ‘বারহপিং’
‘থিও’ বলতে থিওডোর হয়েস স্ট্রাসে বা স্ট্রিট৷ আর বারহপিং মানে এক বার থেকে আরেক বার-এ যাওয়া৷ বিশেষ করে সপ্তাহান্তে৷ এই সব বার-এ বাজে হাউস মিউজিক কিংবা হিপ-হপ গান৷ বহু জায়গাতেই কোনো প্রবেশমূল্য নেই, কাজেই বারহপিং-এর পক্ষে আদর্শ৷ নামকরা নাইট ক্লাবগুলোর মধ্যে পড়ে ‘মুটারমিলশ’ কিংবা ‘বারকোড’৷
ছবি: Stuttgart-Marketing GmbH-Gilardone
বোখুম: রুর শিল্পাঞ্চলের ফুর্তি করার জায়গা
বোখুম-এর পার্টি মাইলে প্রতিবছর ত্রিশ লাখ ‘রাতের প্যাঁচা’ নাচগান-খানাপিনা করতে আসেন৷ বিয়ারের পাঁইট হাতে চকমকে রেস্টুরেন্ট বা নাইট ক্লাবে ফুর্তি করতে আসেন যারা, তাদের জন্য ভিতরে আর বাইরে মিলিয়ে বসার জায়গা আছে প্রায় দশ হাজার৷
ছবি: Stadt Bochum, Presse- und Informationsamt
লাইজিগ-এর ‘কার্লি’
কার্লি বলতে কার্ল লিবক্নেশট স্ট্রাসে বা স্ট্রিট৷ লাইপজিগের ছাত্রজনতার বসে আড্ডা দেবার জায়গা৷ সারি দিয়ে বার ও রেস্টুরেন্ট, তারই মাঝে নানা ধরনের ‘বিকল্প বিপণীতে’ হিপি স্টাইলের জামাকাপড় বা পুরনো এলপি রেকর্ড বিক্রি করা হচ্ছে৷ ‘ফাইনকস্ট’ নামধারী সাবেক ব্রুয়ারিটিতে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা আছে৷
ছবি: Andreas Schmidt
ব্রেমেন-এর ‘ফিয়ার্টেল’
ব্রেমেন শহরে পার্টি করতে গেলে কোনো শক্ত নাম মনে রাখার দরকার নেই৷ এখানে পার্টি করার জায়গা বলতে ‘ফিয়ার্টেল’ বা ‘মহল্লা’, যেখানে বহু কাফে, বার ও নাইটক্লাব রয়েছে৷ ওয়েজার নদীর তীরে ‘স্ট্র্যান্ডের’ ওপরেই পাওয়া যাবে ‘শ্লাখ্টে’ নামধারী বিয়ারগার্ডেনটিকে৷
ছবি: Jonas Ginter/BTZ Bremer Touristik-Zentrale
10 ছবি1 | 10
এর বাইরেও অতিরিক্ত মদ ও ধুমপান এবং গাঁজা সেবন করার কথা স্বীকার করেছেন তাঁরা৷
ব্যাপারটা এমন নয় যে, সপ্তাহান্তে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বার্লিনের ক্লাবগুলোতে মজা লুটতে এসে লোকজন এতটা মাদক সেবন করেছেন৷ যারা মাদক সেবন করছেন, তাদের ৮৫ ভাগই জার্মানির রাজধানীতে থাকেন এবং ৪০ ভাগের বিশ্ববিদ্যালয় ডিগ্রি আছে৷ এদের মধ্যে ৫৫ দশমিক ৩ ভাগ পুরুষ ও ৪২ দশমিক ৮ ভাগ নারী৷
বার্লিনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বলেছেন যে, যেভাবে মাদক সেবনকরা হচ্ছে, তাকে ‘অ্যাডিকশন' বলা যায়৷ ‘‘আমি তাদের খলনায়ক হিসেবে উপস্থাপন করতে চাই না৷ কিন্তু অন্ধভাবে আমাদের ঝুঁকিপূর্ণ মাদক সেবন করা উচিত নয়৷''
এলিজাবেথ শুমাখার/জেডএ
গাঁজা পরিমাণমতো সেবনে অনেক উপকার
গাঁজার নেশা হলে, বা সে নেশা বাড়াবাড়ি পর্যায়ে গেলে জীবনে বিপদ ডেকে আনতে পারে৷ তবে গবেষকরা বলছেন পরিমাণমতো গাঁজা ওষুধ হিসেবে সেবন করলে নাকি অনেক উপকার৷ নয়টি উপকার সম্পর্কে জানুন৷
ছবি: Novartis Vaccine
মৃগীরোগ কমায়
যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া কমনওয়েলথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ২০১৩ সালেই জানিয়েছেন, মারিজুয়ানা বা গাঁজা একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় নিলে মৃগী বা এ ধরণের কিছু স্নায়ুরোগ থেকে দূরে থাকা যায়৷ বিজ্ঞান বিষয়ক সাময়িকী জার্নাল অফ ফার্মাকোলজি অ্যান্ড এক্সপেরিমেন্টাল থেরাপিউটিক্স-এ ছাপাও হয়েছে তাঁদের এই গবেষণালব্ধ তত্ত্ব৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Sultan
গ্লুকোমা দূরে রাখতে সহায়তা করে
এই বিষয়টি তো প্রায় দশ বছর আগে জানা গেছে৷ যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল আই ইন্সটিটিউট জানিয়েছিল মারিজুয়ানা গ্লুকোমার ঝুঁকিও কমায়৷ গ্লুকোমা চোখের এমন এক রোগ যা চির অন্ধত্ব ডেকে আনে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Leukert
আলৎসহাইমার শত্রু
দ্য জার্নাল অফ আলৎসহাইমার’স ডিজিজে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মারিজুয়ানা মস্তিষ্কের দ্রুত নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়াও রোধ করে৷ আর এভাবে আলৎসহাইমার ঝুঁকিও কমাতে পারে মারিজুয়ানা৷ তবে মারিজুয়ানা ‘ওষুধ’ হলেই রোগ সারাবে, কারো নিয়ন্ত্রণহীন আসক্তির পণ্য হলে নয়৷
ছবি: Colourbox
ক্যানসারেরও ‘অ্যানসার’!
এই বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্র সরকারিভাবেই স্বীকার করেছে৷ ২০১৫ সালে সে দেশের ক্যানসার বিষয়ক ওযেবসাইট ক্যানসার অর্গ-এ জানানো হয়, মারিজুয়ানা অনেক ক্ষেত্রে টিউমারের ঝুঁকি কমিয়ে ক্যানসার প্রতিরোধকেরও ভূমিকা পালন করে৷
ছবি: Imago/Science Photo Library
কেমোথেরাপির ক্ষতি কম
ইউএস এজেন্সি ফর ড্রাগ জানিয়েছে, মারিজুয়ানা ক্যানসার রোগীর রোগযন্ত্রণা অন্যভাবেও কমায়৷ ক্যানসার রোগীকে এক পর্যায়ে কেমোথেরাপি নিতে হয়৷ কেমোথেরাপির অনেক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া৷ মারিজুয়ানা কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াজনিত অনেক ক্ষতি লাঘব করে৷
ছবি: Frederic J. Brown/AFP/Getty Images
স্ট্রোক কম হয়
এটি যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অফ নটিংহ্যামের গবেষকদের উদ্ভাবন৷ তাঁরা গবেষণা করে দেখেছেন, মারিজুয়ানা মস্তিষ্ককে সুস্থ রাখতেও সহায়তা করে৷ ফলে স্ট্রোক-এর ঝুঁকি কমে৷
ছবি: Colourbox
গাঁজা মাল্টিপল সক্লেরোসিসবিরোধী
মানুষের স্নায়ুতন্ত্রে একটি বিশেষ স্তর ক্ষতিগ্রস্থ হলে ‘মাল্টিপল সক্লেরোসিস’ বা এমএস নামের এক ধরণের স্নায়ুরোগ হয়৷ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী মারিজুয়ানা সেবন করলে এই রোগের ঝুঁকিও কমে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ব্যথা নিরোধ
ডায়াবেটিস চরম রূপ নিলে রোগীদের অনেক সময় হাত-পা এবং শরীরের নানা অংশে জ্বালা-যন্ত্রণা হয়৷ ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষকরা বলছেন, ক্যানাবিস সেই যন্ত্রণা লাঘব করতে সক্ষম৷
হেপাটাইটিস ‘সি’-র পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কমায়
হেপাটাইটিস সি-র পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও কমায় মারিজুয়ানা৷ নির্দিষ্ট মাত্রায় ওষুধের মতো গাঁজা সেবন করিয়ে দেখা গেছে এই রোগে আক্রান্তদের শতকরা ৮৬ ভাগেরই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া অনেক কমেছে৷