ডাব্লিউটোয়েন্টি সম্মেলনের জনতা যুক্তরাষ্ট্রের ‘ফার্স্ট ডটার’-কে রেয়াত করেনি, ইভানকা যখন তাঁর বাবার পক্ষ সমর্থন করে মিডিয়ার ওপর দোষ চাপাচ্ছিলেন, তখন দুয়ো দিয়েছেন উপস্থিত দর্শক৷
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবারের ডাব্লিউটোয়েন্টি শীর্ষ সম্মেলন বস্তুত আগামী জি-টোয়েন্টি শীর্ষ সম্মেলনের প্রস্তুতি হিসেবে গণ্য হওয়ার কথা৷ সেই শীর্ষ সম্মেলন ৭ই ও ৮ই জুলাই জার্মানির হামবুর্গ শহরে অনুষ্ঠিত হবে৷ ডাব্লিউউটোয়েন্টি বলতে বোঝায় উওমেনটোয়েন্টি, অর্থাৎ নারী তথা মহিলাদের শীর্ষবৈঠক৷ সেখানে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কন্যার আবির্ভাব, কেননা, জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল গত ১৭ই মার্চ ওয়াশিংটনে নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তাঁর প্রথম সরকারি সাক্ষাতের অবকাশে ইভানকাকে ডাব্লিউটোয়েন্টি উপলক্ষ্যে বার্লিনে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন৷
ইভানকা ট্রাম্পের অন্যরকম জীবনধারা
ধনী পিতামাতার সন্তান থেকে মডেল, প্রেসিডেন্ট কন্যা -ইভানকা ট্রাম্পের জীবন যে অন্য আর দশটা মেয়ের মতো নয়, তা বোঝাই যাচ্ছে৷ এখানে রয়েছে তাঁর অন্যরকম জীবনযাপনের কিছু মুহূর্ত৷
ছবি: picture-alliance/dpa/I. Savignano
বিচ্ছেদের সন্তান
১৯৯৪ সালে নিউ ইয়র্কে ইউএস ওপেন চলাকালে তোলা এই ছবিতে ১২ বছরের ইভানকা আর তাঁর ধনী ব্যবসায়ী বাবা ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দেখা যাচ্ছে৷ ইভানকা মেরি ট্রাম্পের জন্ম ১৯৮১ সালে৷ তাঁর মা চেক-অ্যামেরিকান মডেল ইভানা ট্রাম্প৷ ইভানকা, ট্রাম্প ও ইভানা দম্পতির দ্বিতীয় সন্তান৷ ইভানকার যখন ১০ বছর বয়স তখন তাঁর বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ ঘটে৷
ছবি: picture alliance/ASSOCIATED PRESS/R. Frehm
সম্মিলিত যৌথ পরিবার
ইভানকা তাঁর ছোট সৎ বোন টিফানিকে কোলে নিয়ে আছেন৷ ট্রাম্পের ৫০তম জন্মদিনে তোলা এই ছবিতে তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী মার্লাকে দেখা যাচ্ছে৷ ইভানকারা চার ভাই-বোন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/A. Savignano
কিশোরী মডেল
১৯৯৭ সালে ১৬ বছর বয়সি ইভানকা প্যারিসে বিখ্যাত ডিজাইনার টিয়েরি মুগলারের একটি ফ্যাশন শো-তে অংশ নিয়েছিলেন৷ মাত্র ১৫ বছর বয়সে ইভানকা মুগলারের হয়ে মডেলিং শুরু করেন৷ এছাড়া ভ্যার্সাচে এবং পাকো রাবানে-র হয়েও মডেলিং করেছিলেন তিনি৷
ছবি: picture-alliance/dpa
আদর্শ মডেলের খোঁজে
১৯৯৭ সালে নিউ ইয়র্কের ব্রিজহ্যাম্পটনে একটি পোলো ক্লাবে কিশোরী ইভানকা তাঁর ধনী বাবার দিকে তাকিয়ে আছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/ipol Grant
মাল্টি-মিলিয়ন ব্যবসায়ী নারী
২০১২ সালে নিউ ইয়র্কে ‘ইভানকা ট্রাম্প কালেকশন রানওয়ে’-র উদ্বোধনের দিন কথা বলছেন ট্রাম্প কন্যা৷ এই কোম্পানিতে ডায়পার ব্যাগ থেকে শিশুদের জুতা, জামা, অলংকার সব পাওয়া যায়৷
ছবি: picture alliance/abaca/D. Van Tine
অপরাধে অংশীদার
২০১২ সালে ইস্তানবুলে ট্রাম্প টাওয়ার মল উদ্বোধনের সময় তোলা ছবিতে ইভানকা আর ডোনাল্ড হাসছেন৷ ২০০৫ সালে পরিবার ব্যবসায় যুক্ত হন ইভানকা৷ দুই ভাই ডোনাল্ড জুনিয়র এবং এরিক-এর সঙ্গে ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন৷ সে সময়ে ইভানকা ঘোষণা দেন, বাবা ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিলে এই অর্গানাইজেশন থেকে ছুটি নেবেন তিনি৷
ছবি: picture alliance/dpa/T. Bozoglu
পারিবারিক জীবন
ছবিটি ইভানকার স্বামী জ্যারেড কুশনার এবং তাঁদের সন্তানদের৷ ২০১৭ সালে ওয়েস্ট পাম বিচে এয়ারফোর্স ওয়ানে করে পৌঁছান ইভানকা পরিবার৷ ইভানকা, কুশনারকে বিয়ে করেন ২০০৯ সালে৷ তাঁদের তিনটি সন্তান৷
ছবি: picture alliance/AP Images/W. Lee
ট্রাম্পের প্রচারণায় প্রধান নেতৃত্ব
২০১৬ সালে সাউথ ক্যারোলাইনায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণায় বাবার পক্ষে সমর্থদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখছেন ইভানকা ট্রাম্প৷ ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচারণায় তাঁর মুখ্য ভূমিকা ছিল এবং নারী ভোটারদের টানতে তাঁর প্রচারণা সাহায্য করেছিল বলে ধারণা করা হয়৷
ছবি: picture alliance/AP Photo/A. Sanz
হোয়াইট হাউজের পথে
২০১৭ সালের মার্চে হোয়াইট হাউজের কেবিনেট কক্ষে ছবিটি তোলা, যাতে দেখা যাচ্ছে ইভানকা জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সঙ্গে ফিসফিস করে কথা বলছেন৷ গত সপ্তাহে যখন ঘোষণা করা হয় ইভানকা তাঁর বাবার উপদেষ্টা হতে যাচ্ছেন৷ নির্দিষ্ট কোনো পদ না থাকলেও, হোয়াইট হাউজে তাঁর একটি অফিস থাকবে৷ এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা মুখে পড়েন তিনি৷
হোয়াইট হাউজে তাণর অনানুষ্ঠানিক ভূমিকা নিয়ে নীতি নির্ধারক ও বিশেষজ্ঞরা যখন সমালোচনায় মুখর, তখন ২৯ মার্চ ইভানকা জানান যে, তিনি একজন সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করতে চলেছেন৷
ছবি: picture alliance/dpa/J. Szenes
10 ছবি1 | 10
ঐ সফরে ওয়ার্কফোর্স ডেভেলপমেন্ট সংক্রান্ত একটি আলোচনা সভায় ইভানকাকে ম্যার্কেলের পাশে বসিয়ে বিরূপ সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ এবার বার্লিনে সে ভুল করা হয়নি৷ ম্যার্কেল ও ইভানকার মধ্যে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের প্রধান ক্রিস্টিন লাগার্দকে বসানো হয়েছে৷ তা সত্ত্বেও ম্যার্কেল নানা আভাসে-ইঙ্গিতে তাঁর দূরের অতিথিকে স্বচ্ছন্দ বোধ করানোর চেষ্টা করেছেন৷
নারীর ক্ষমতায়ন
‘ফিমেল এমপাওয়ারমেন্ট’ ছিল আলোচ্য বিষয়৷ কিন্তু সঞ্চালিকা মিরিয়াম মেকেল যখন প্রশ্ন করেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নারী-পুরুষের সমানাধিকারের প্রবক্তা হিসেবে গণ্য করা যায় কিনা – তখন ইভানকা তাঁর বাবা যে তাঁর বিভিন্ন কোম্পানিতে কত শত মহিলাকে উচ্চপদে নিয়োগ করেছেন, সে কথা বলেন৷ এছাড়া ট্রাম্প ইভানকার নিজের বিজনেস ক্যারিয়ারেও তাঁকে সাহায্য করেছেন বলে ইভানকা জানান৷
যুক্তরাষ্ট্রের ‘ফার্স্ট ডটার’ হবার তাৎপর্য্ কী? ইভানকাকে প্রশ্ন করেন মেকেল৷ ‘‘আপনি কার প্রতিনিধি? আপনার বাবার? মার্কিন জনগণের? নাকি আপনার ব্যবসায়িক স্বার্থের?’’ ‘‘শেষোক্তটি নিশ্চয়ই নয়,’’ উত্তর দেন ইভানকা – এবং তার কিছু পরেই নিজেকে ‘শিল্পোদ্যোগী’ বলে বর্ণনা করেন৷ তাঁর বার্লিন সফরের রাজনৈতিক গুরুত্ব সম্ভবত ইভানকার একটি মন্তব্যে ব্যক্ত হয়েছে৷ ইভানকা বলেছেন, তিনি তাঁর ‘‘বাবার কাছে পরামর্শ ও জ্ঞান ফেরত নিয়ে যাবেন৷’’
ইভানকাকে বার্লিনে আসার আমন্ত্রণ জানানোর পিছনে সেটাই মূল উদ্দেশ্য ছিল বলে অনেক জার্মান রাজনীতিক বিশ্লেষকের ধারণা৷
এসি/এসিবি (এপি, ডিপিএ, রয়টার্স)
প্রিয় পাঠক, আপনি কিছু বলতে চাইলে লিখুন নীচে মন্তব্যের ঘরে...