জার্মানির অন্যান্য শহরের তুলনায় রাজধানী বার্লিনে বাড়ছে ইহুদী বিদ্বেষ৷ স্থানীয় একটি সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটিতে ইহুদীদের প্রতি বিদ্বেষমূলক অপরাধের ঘটনার প্রতি পাঁচটির একটি ঘটছে বার্লিনে৷
পত্রিকাটি জানিয়েছে, ইহুদী বিদ্বেষ সংক্রান্ত এ ধরনের অপরাধের অধিকাংশই ঘটছে ডানপন্থি গ্রুপের সদস্যদের দ্বারা৷
জার্মানির ১৬টি রাজ্যের মধ্যে একটি হলো বার্লিন-ব্রান্ডেনবুর্গ, যেখানে গত ছ'মাসে দেশটির অন্যান্য রাজ্যের তূলনায় সবচেয়ে বেশি ইহুদী-বিদ্বেষী অপরাধের ঘটনা ঘটেছে৷ ইহুদীদের প্রতি বিদ্বেষমূলক অপরাধের ঘটনায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে দেশটির বাভেরিয়া রাজ্য, যেখানে চলতি বছরের প্রথম ছ'মাসে মোট ৪৩টি ঘটনা ঘটে৷
Adam: 'People just walked by'
04:28
এদিকে পুলিশের একটি প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি পত্রিকাটি জানিয়েছে, বার্লিনে ঘটে যাওয়া ৮০টি ঘটনার মধ্যে ৬২টি ঘটনাই ঘটিয়েছে ডানপন্থি গ্রুপের সদস্যদরা৷ এর মধ্যে আটটি ঘটনা ঘটেছে বিদেশিদের দ্বারা, যেগুলো ইসরায়েলের প্রতি ঘৃণার মনোভাব থেকে ঘটেছে৷ অন্তত তিনটি ঘটনা ঘটেছে ধর্মীয় কারণে৷ আর মোট ৮০টি ঘটনার মধ্যে তিনটি ঘটনা ঘটেছে বামপন্থি ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ সদস্যদের দ্বারা৷ এছাড়া চারটি ঘটনায় জড়িত দুর্বৃত্তদের ধর্মীয় বা রাজনৈতিক মতাদর্শ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে প্রতিবেদনটি৷
তবে ইহুদীদের প্রতি বিদ্বেষমূলক অপরাধের ঘটনার সংখ্যা আরো অনেক বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার বিষয়ে নিশ্চত হওয়া একটু সময়সাপেক্ষ৷ কারণ অপরাধের প্রকৃত সংখ্যার বিষয়ে নিশ্চিত হতে কিছুটা সময় প্রয়োজন৷ প্রসঙ্গত, বছর বার্লিনে ঘটে যাওয়া ইহুদীদের প্রতি বিদ্বেষমূলক অপরাধের ঘটনার সংখ্যা ছিল ২৮৮টি৷
রাস্তায় টহল দিচ্ছে কট্টরপন্থিরা
বাভেরিয়া রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইওয়াখিম হ্যারমান সতর্ক করে বলেছেন যে তাঁর রাজ্যে কট্টরপন্থিরা ‘মিলিশিয়াদের মতো' রাস্তায় টহল দিচ্ছে৷ কট্টরপন্থিরা শরণার্থীদের, বিশেষ করে শরণার্থী নারীদের হামলার ভয় দেখাচ্ছে৷ গত মঙ্গলবার বাভেরিয়া রাজ্যের গোয়েন্দা প্রতিবেদন প্রকাশের সময় তিনি এ মন্তব্য করেন৷ তিনি বলেন, নব্য-নাৎসিদের সমর্থকরা মিউনিখের কেন্দ্রীয় রেলস্টেশন ও তার আশেপাশের এলাকায় টহল দিচ্ছে, যেখানে মূলত তরুণ ও অল্পবয়সি শরণার্থী বা উদ্বাস্তুরা অবসর সময় কাটায়৷ তিনি আরো বলেন ‘সোলজার অফ অডিন' নামে একটি আন্তর্জাতিক কট্টরপন্থি দলের সদস্যরা বাভেরিয়ার আরো কিছু শহরে একই কাজ করছে৷
আরআর/ডিজি
ধর্ম, টুপি এবং মাথা ঢাকার ঐতিহ্য
পৃথিবীর নারী-পুরুষদের অনেকেই ধর্মীয় কারণে মাথায় টুপি পরেন বা মাথা ঢাকেন৷ তবে ধর্মীয় বিধান ও আনুষ্ঠানিকতা অনুযায়ী টুপি বা মাথাবন্ধনীর রয়েছে নানা ধরনের বৈচিত্র্য৷ এবারের ছবিগুলোতে সেই বৈচিত্র্যই তুলে ধরার চেষ্টা হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/D. Dyck
ইয়ারমুকে
ইউরোপের ইহুদিরা ১৭ এবং ১৮ শতকে টুপি পরতে শুরু করে, যার নাম ইয়ারমুকে৷ ইহুদিদের ধর্মীয় আইন অনুযায়ী পুরুষ এবং ছেলেদের জন্য প্রার্থনা, সিনাগগ ও কবরস্থানে অবস্থানকালে এবং ধর্মীয় বিষয় পড়ার সময় এ টুপি মাথায় দেওয়া বাধ্যতামূলক৷
ছবি: picture alliance/dpa/W. Rothermel
মাইটার
রোমান-ক্যাথলিক চার্চের বিশপদের বিশেষ অনুষ্ঠানে পরিধান করা হয় মাইটার নামের টুপি৷ লম্বা এ টুপির প্রচলন ১১ শতকে৷ এটি পেছনের দুটি রিবন দিয়ে বাঁধা থাকে, যা ওল্ড টেস্টামেন্ট আর নিউ টেস্টামেন্টের প্রতীক৷
ছবি: picture alliance/dpa/P. Seeger
পাগড়ি
১৫ শতকে চালু হওয়া ভারতের পাঞ্জাবের শিখ ধর্মের অনুসারীরা ‘দাসতার’ নামের এই পাগড়ি ব্যবহার করেন৷ এটি সাধারণত পুরুষেরা তৈরি করে৷ ধর্মীয় নিয়ম অনুযায়ী শিখ পুরুষেরা পাগড়ির নীচে তাদের চুল বাড়তে দেয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/D. Dyck
চাদর
ফারসি ভাষায় চাদর শব্দের অর্থ তাঁবু৷ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের মুসলমান মেয়েদের একটি বড় অংশ চাদর দিয়ে মাথা ঢাকেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M.Kappeler
সন্ন্যাসীনিদের মাথাবন্ধনী
সন্ন্যাসীনিরা সবসময় মাথাবন্ধনী পরে থাকেন৷ নবীন সন্ন্যাসীনিরা সাদা এবং প্রবীণরা কালো মাথাবন্ধনী ব্যবহার করেন৷ ধর্মীয় অবস্থান অনুযায়ী এই মাথাবন্ধনীর আকার বিভিন্ন রকমের হয়৷ কারোটা বেশ বড় হয়, যা মুখমণ্ডলসহ পুরো মাথা ঢেকে রাখে৷ আবার কারোটা খুব ছোট হয়, স্রেফ মাথার উপরের অংশ ঢেকে রাখে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/U. Baumgarten
স্কার্ফ বা হিজাব
মূলত একটি ধর্মীয় পোশাক হিসেবে পরিচিত, যা নিয়ে পুরো পৃথিবীতেই এখন তর্ক হচ্ছে৷ তুরস্ক বা আরবের মেয়েরা ধর্মীয় প্রতীক হিসেবে এটির ব্যবহার করতো৷ পরে পুরো পৃথিবীতেই এটি ছড়িয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/G. Schiffmann
শাইটেল
মূলত হাসিডিক মতাদর্শের ইহুদিরা এ ধরনের টুপি ব্যবহার করেন৷ হাসিডিক মতাদর্শের ইহুদিদের পশ্চিম ইউক্রেনে উত্থান হয় ১৭ থেকে ১৮ শতাব্দীর গোড়ায়৷
ছবি: picture-alliance/Photoshot/Y. Dongxun
বিরাশা
কাপড়, কার্ডবোর্ড এবং এক টুকরো রেশমি কাপড় দিয়ে তৈরি ‘বিরাশা‘ ১২ শতাব্দীর রোমান ক্যাথলিক যাজকরা ব্যবহার করা শুরু করেন৷ জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, ব্রিটেন এবং ফ্রান্সে এই টুপিটি চার কোণা ৷ তবে অনেক জায়গায় এটি তিনকোণা৷
ছবি: Picture-alliance/akg-images
ট্যাগেলমাস্ট
বিশেষ ধরনের মাথা ও মুখবন্ধনী৷ ১৫ মিটার লম্বা সুতি কাপড় দিয়ে তৈরি এই মুখবন্ধনী উত্তর আফ্রিকার মুসলমান পুরুষরা পরতেন৷
উত্তর অ্যামেরিকার রক্ষণশীল খ্রিষ্টান গোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত অ্যামিশরা এই ধরনের টুপি ব্যবহার করেন৷ সুইজারল্যান্ড এবং দক্ষিণ জার্মানির অ্যানাব্যাপ্টিস্ট আন্দোলনের পর অ্যামিশদের প্রথম প্রজন্ম ধর্মীয় সহিংসতার জের ধরে ১৮ শতকে অ্যামেরিকায় পালায়৷ তাঁদের মেয়েরা ঘরে বসে বনেট বুনেন৷ অ্যামিশ পুরুষেরা খড় বা অন্যকিছুর তৈরি হ্যাট পরেন৷