1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বার্লিনে বিশ্বনেতাদের মিলন মেলা

৬ নভেম্বর ২০০৯

শান্তিপূর্ণ এক বিপ্লবে বার্লিন প্রাচীর পতনের ২০ বছর পর আজকের পুনরেকত্রিত জার্মানিতে বিশ্বনেতাদের মিলন মেলা বসছে জার্মান ইতিহাসের অবিস্মরণীয় মূহুর্তটিকে উদযাপন করতে৷

ফাইল ফটোছবি: AP

দীর্ঘ সময় ধরে পুব আর পশ্চিমের বিভক্তিরেখা হয়ে থাকা প্রাচীরের কাছে ঐক্যের শক্তিশালী প্রতীক ব্রানডেনবুর্গ তোরণকে ঘিরেই হবে উৎসবের মূল আয়োজন৷ অতীত আর বর্তমানের সব গৌরবগাঁথা তুলে ধরার এ আয়োজনে প্রায় এক লাখ লোক যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে৷

পূ্ব জার্মানির কম্যুনিস্ট কর্তৃপক্ষ আকস্মিকভাবে সীমান্ত খুলে দিয়ে বিশ্ববাসীকে চমকে দেয়ার সে উত্তাল রাতের দুই দশক পূর্তিতে ছোটো বড় অনেক আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিশ্বসভার মনোযোগ কাড়বে এই একত্রিত জার্মানি৷ এটা সে রাত যখন নিজদেশে ২৮ বছরের রুদ্ধ দশা থেকে মুক্তির আনন্দে বানের জলের মতো পূর্ব জার্মানরা ছুটছিল পশ্চিমের চেকপয়েন্টগুলোর দিকে৷ এটা সে সময় যখন হতভম্ব সীমান্তরক্ষীরা সীমান্তে মানুষের ঢল দেখে নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিল না, যখন সীমান্তের ওপারে তাদের স্বাগত জানাতে আসা পশ্চিমাদের আলিঙ্গনে হাজার হাজার মানুষ কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছিল৷

এই প্রাচীরের পতন ১৯৮৯ সালের ৯ নভেম্বরের সে রাতে বিশ্বের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত পর্যন্ত কাঁপিয়ে দিয়েছিল৷ হঠাৎ করেই তা স্নায়ুযুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে দেয় এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে বিভক্ত হয়ে যাওয়া জার্মানির পুনরেকত্রীকরণের পথ খুলে দেয়৷ ব্রিটিশ সাপ্তাহিক দ্য ইকোনোমিস্ট এ সপ্তাহে লিখেছে, ‘‘১৯৮৯ সালের ৯ই নভেম্বর ওই লোহার পর্দার ধ্বংস প্রত্যক্ষ করাই এখন পর্যন্ত বহু মানুষের জীবনের সবচে বড় রাজনৈতিক ঘটনা৷ এটা লাখ লাখ মানুষকে মুক্ত করেছিল এবং এমন এক বৈশ্বিক সংঘাতের অবসান ঘটিয়েছিল যা কিনা দুনিয়াকে একটি পারমাণবিক ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছিল৷''

এ উৎসবের প্রস্তুতিকালেই মঙ্গলবার জার্মান চ্যান্সেলর হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দিলেন আঙ্গেলা ম্যার্কেল৷ প্রাচীরের রূপকল্প ব্যবহার করেই তিনি জার্মানির একত্রীকরণে জোরালো ভূমিকা রাখায় ওয়াশিংটনকে ধন্যবাদ জানান এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মতো জরুরি ইস্যুগুলো মোকাবেলায় আটলান্টিকের দুই পারের সহযোগিতা জোরদারের আহ্বান জানান৷

পুব জার্মানিতে বেড়ে ওঠা ম্যার্কেল বলেন,‘‘আমি বিশ্বাস করি যে, বিশ শতকে যেভাবে আমরা কনক্রিট আর কাঁটাতারের তৈরি ওই প্রাচীর ভাঙার শক্তি অর্জন করেছিলাম, একইভাবে আমরা একুশ শতকের অন্তরায়ের প্রাচীরও ভাঙতে পরবো৷''

ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়ার নেতারা এই মহোৎসবে যোগ দিতে বার্লিনে আসছেন৷ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এশিয়া সফরে থাকায় দেশটির পক্ষ থেকে প্রতিনিধিত্ব করবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন৷ তাঁদের সঙ্গে যোগ দেবেন সাবেক সোভিয়েত নেতা মিখাইল গর্বাচভ, পোল্যান্ডের সাবেক প্রেসিডেন্ট লেখ ভালেঁসা এবং জার্মান নাগরিক অধিকার কর্মীরা৷ এঁদের সবাই মিলিত হবেন বর্নহলমার স্ট্রাসে-তে৷ এ সড়কটি সেসব স্থানের অন্যতম যেখানে সবার আগে প্রাচীর ভেঙে ফেলা হয়েছিল৷

আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে থাকছেন বাংলাদেশের নোবেল শান্তিজয়ী প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনুস৷

ব্রান্ডেনবুর্গ তোরণেই ইসরায়েলি-আর্জেন্টিনিয়ান সংগীত নির্দেশক ড্যানিয়েল বারেনবয়েম-এর পরিচালনায় স্টেট অপেরা অর্কেস্ট্রা সংগীত পরিবেশন করবে৷ হবে বৃন্দগানের কনসার্ট৷ এরপর সাবেক প্রাচীর বরাবর প্রায় দুই কিলোমিটার ধরে স্থাপন করা বিশালকৃতির হাজার হাজার স্টাইরোফোম ডোমিনোর প্রথমটি উন্মোচন করবেন গর্বাচভ৷ রাতের উন্মাদনায় শ্রোতাদের মাতাবেন মার্কিন রকার বন জোভি এবং জার্মান ডিজে পাউল ফন ডিক৷

এসব আয়োজনের ফাঁকে বহু দ্বিপাক্ষিক বৈঠকেও বসবেন নেতারা৷ ইরান ও আফগানিস্তানের মতো জরুরি ইস্যু এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রথম স্থায়ী প্রেসিডেন্ট বেছে নেওয়ার বিষয়টি নিয়েও কথা হবে তাদের৷

প্রতিবেদক: মুনীর উদ্দিন আহমেদ

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ