1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বার্লিনে হামলা, বিভ্রান্ত জার্মান পুলিশ

২১ ডিসেম্বর ২০১৬

হঠাৎ করেই ঘটলো ঘটনাটা৷ বার্লিনের একটি ক্রিসমাস মার্কেটে বিশাল এক লরি নিয়ে ঢুকে গেল এক লোক৷ অনেকটা ফ্রান্সের নিস শহরের মতো হামলায় ঝড়ে গেল ১২টি তাজা প্রাণ৷ পুলিশ হামলা তো রুখতে পারেইনি, বরং মানুষকে করেছে বিভ্রান্ত৷

যেখানে হামলা হয়েছিল
ছবি: Reuters/F. Bensch

সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহারে বিশেষ পারদর্শী জার্মানির পুলিশ৷ যে কোনো বড় ঘটনার পরই তাদের টুইটার তৎপরতা চোখে পড়ার মতো৷ বার্লিনে সোমবারের ট্রাক হামলার পরও পুলিশ বিভিন্ন তথ্য প্রকাশ করতে শুরু করে টুইটারে৷ এতে মানুষের জানার আগ্রহ মিটেছে, বিশেষ করে সামাজিক যোগোযোগের মাধ্যমে গুজব ছড়ানোর সুযোগ ছিল না পুলিশের অনলাইন তৎপরতার কারণে৷ এছাড়া হতাহতদের ছবি বা ভিডিও সেভাবে ইন্টারনেটে আসেনি পুলিশের অনুরোধের প্রেক্ষিতে৷ বরং যার কাছে হামলার যা তথ্য, ছবি বা ভিডিও ছিল তা পুলিশের কাছেই তারা পাঠিয়েছেন নির্ভয়ে৷

বলতে বাধ্য হচ্ছি, হামলা বিষয়ক তথ্য প্রকাশের ক্ষেত্রে পুলিশের দ্রুত গতির কারণে এবার খানিকটা বিভ্রান্তিও ছড়িয়েছে৷ গণমাধ্যমও বাধ্য হয়েছে সংবাদ প্রকাশ করে তা সংশোধন করে আবারও পুরনো সংবাদে ফিরে যেতে৷ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের কথাই ধরুন, হামলার কয়েকঘণ্টার মধ্যে তারা জানালো লরিতে যাত্রীর আসনে এক ব্যক্তিকে পাওয়া গেছে যিনি পোলিশ নাগরিক৷ ওমা, পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে জানালো যে, লরিটা পোলিশ নম্বর প্লেটের হলেও যাত্রীর পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি৷ রয়টার্স তাদের সংবাদ সংশোধন করল৷ কিন্তু খানিকক্ষণ পরেই জানা গেলো যাত্রী আসলে পোলিশ নাগরিক ছিল৷

বার্লিন হামলার পর তথ্য প্রকাশের ক্ষেত্রে জার্মানির পুলিশের সবচেয়ে বড় ভুলটি ছিল একজন পাকিস্তানি শরণার্থীকে সন্দেহভাজন হিসেবে দ্রুত সামনে নিয়ে আসা৷ ঘটনাস্থলের কাছে একটি চিড়িয়াখানা থেকে তাঁকে আটক করা হয়৷ পুলিশ এই তথ্য প্রকাশের পরই শরণার্থীদের উপর দায় চলে যায় হামলার৷ জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টোমাস ডেমেজিয়ার পাকিস্তানি শরণার্থীকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তারের কথা জানান৷ পুলিশের বরাতে গণমাধ্যম প্রকাশ করে সেই শরণার্থী কবে, কোথা থেকে কীভাবে জার্মানিতে এসেছেন৷ খোদ ম্যার্কেলও ব্যথিত কণ্ঠে জানান, একজন শরণার্থী সম্ভবত হামলার সঙ্গে জড়িত৷

কিন্তু মঙ্গলবার দুপুর নাগাদই জানা গেল, সন্দেহভাজন পাকিস্তান শরণার্থী হামলার সঙ্গে জড়িত এমন কোনো প্রমাণ আসলে পুলিশ বের করতে পারেনি৷ শুধু তাই নয়, হামলার ২৪ ঘণ্টা পার হওয়ার আগেই সেই পাকিস্তান শরণার্থীকে ছেড়েও দিয়েছে পুলিশ৷ এর মাধ্যমে এটাও পরিষ্কার হয়ে গেছে, যে হামলা চালিয়েছে, সেই ব্যক্তি এখনো পুলিশের ধরাছোয়ার বাইরে৷ তাছাড়া কেন এই হামলা, কারা এই হামলা চালিয়েছে, সে সম্পর্কেও বিস্তারিত কিছু নিশ্চিতভাবে এখনো জানা যায়নি৷

আরাফাতুল ইসলাম, ডয়চে ভেলে

তথাকথিত ‘ইসলামিক স্টেট' বা আইএস অবশ্য বার্লিন হামলার ২৪ ঘণ্টা পর তার দায় স্বীকার করেছে৷ সিরিয়াভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠীটির দাবি, তাদের এক ‘সেনা' হামলাটি চালিয়েছে৷ তবে এই দাবি নিয়ে সন্দেহের যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে৷

প্রথমত, ইসলামিক স্টেট বড় কোনো হামলার দায় স্বীকার করতে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত সময় নেয় না৷

দ্বিতীয়ত, আইএস জঙ্গিরা সাধারণত হামলার সময় মৃত্যুর আগ পর্যন্ত যতটা সম্ভব ক্ষতি করার চেষ্টা করে৷ কিন্তু এক্ষেত্রে হামলাকারী পালিয়ে গেছে৷

তৃতীয়ত, এই প্রথম আইএস কোনো হামলার দায় স্বীকার করলো যেখানে হামলাকারী এখনো জীবিত৷

চতুর্থত, আইএস হামলার দায় স্বীকার করলেও তার পক্ষে কোনো প্রমাণ দেখাতে পারিন৷ অথচ এর আগে অন্য হামলাকারীদের ছবি, ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেছে গোষ্ঠীটি৷

সুতরাং বার্লিনে হামলা আসলে কাদের কাজ সেটা এখনই নিশ্চিতভাবে বলার উপায় নেই৷ কোনো শরণার্থী এর পেছনে জড়িত থাকলে জার্মান রাজনীতিতে তার বড় প্রভাব অনিবার্যভাবেই আসবে৷ তবে আগেভাগেই জল্পনাকল্পনা কিংবা সাধারণ মানুষকে তথ্য বন্যায় ভাসিয়ে দেয়া কোনোটাই এক্ষেত্রে ইতিবাচক নয়৷

প্রিয় পাঠক, আপনি কি আরাফাতুল ইসলামের সঙ্গে একমত? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷

বার্লিন, আমরা তোমার সঙ্গে আছি

01:30

This browser does not support the video element.

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ