চলচ্চিত্র উৎসব
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১২সাবেক পূর্ব জার্মানির বদ্ধ পরিবেশে রাষ্ট্রের ইচ্ছা অমান্য করা সহজ ছিল না৷ জীবনের প্রায় প্রতিটি ধাপেই সরকার স্থির করে দিত, নাগরিকরা কী করবে বা করবে না৷ কিন্তু তা সত্ত্বেও গোপনে অনেকেই পছন্দ অনুযায়ী নিজেদের জীবনকে সাজিয়ে নিতে পেরেছিল৷ এবারের বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবে দেখা গেল তারই কিছু নমুনা৷ যেমন ‘দিস এন্ট ক্যালিফোর্নিয়া' তথ্যচিত্রের কথাই ধরা যাক৷ কর্তৃপক্ষের নজর এড়িয়ে কিছু তরুণ কীভাবে তাদের স্কেটবোর্ড নিয়ে মেতে ছিল, তা দেখানো হয়েছে এই ছবিতে৷ মার্কিন মুলুক থেকে ইউরোপের বাকি দেশ হয়ে স্কেটবোর্ড কীভাবে আদৌ পূর্ব জার্মানিতে প্রবেশ করতে পেরেছিল, সেবিষয়ে কোনো তথ্য নেই৷ ‘সুপার এইট' ভিডিও ক্যামেরায় তোলা কিছু বিরল ভিডিও ব্যবহার হয়েছে এই ছবিতে৷ ‘অ্যামাং মেন – গে ইন ইস্ট জার্মানি' ছবিতে ফুটে উঠেছে কমিউনিস্ট কাঠামোর মধ্যেও সমকামীদের বেঁচে থাকার সংগ্রাম৷
পূর্ব জার্মান রাষ্ট্র, কমিউনিস্ট পার্টি, সরকার ও কুখ্যাত গোয়েন্দা পুলিশ ‘স্টাসি'র কার্যকলাপের উপর ভিত্তি করে এতকাল ধরে অনেক চলচ্চিত্র ও তথ্যচিত্র তৈরি হয়েছে৷ কিন্তু এবারের উৎসবে যেসব ছবি দেখা যাচ্ছে, সেগুলির মাধ্যমে সাধারণ মানুষের প্রতিবাদের নানা পদ্ধতি দেখা যাচ্ছে, যাকে সীমিত অর্থে রাজনৈতিক বলা চলে না৷ অনেক সময়ে টিন-এজ বা কিশোর-কিশোরীদের বিদ্রোহের হাতিয়ার ছিল উদ্দাম পার্টি, বিশেষ ধরণের গান, মদের ফোয়ারা ইত্যাদি৷ ‘মার্কিন বুর্জোয়া' সংস্কৃতির এই সব দিকের সঙ্গে সমকামীদেরও বিরোধিতা করে এসেছে কমিউনিস্ট পার্টি৷ ফলে সাবেক পূর্ব জার্মানির প্রতিবাদী নাগরিকদের যথেষ্ট ঝুঁকি নিয়েই সেই পথে এগোতে হতো৷
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক