বার্লিন প্রাচীর পতনের বিশ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান নতুনদিল্লিতে
৯ নভেম্বর ২০০৯সোমবার সেই অনুষ্ঠানমালার সমাপ্তি দিনে বক্তব্য রাখেন, জার্মানির প্রাক্তন প্রতিরক্ষা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বিশিষ্ট সিডিইউ রাজনীতিক এবং লন্ডনের কিংস কলেজের ভিজিটিং প্রফেসর ড. ফ্রিডবার্ট ফ্লুগার৷
বার্লিন প্রচীরের পতন আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে যে সুদূর প্রসারি প্রভাব ফেলেছে, ইতিহাসের আলোতে ব্যক্তিগত অভিঞ্জতা মিশিয়ে তারই একটা খতিয়ান দেন জার্মানির খ্রিষ্টীয় গণতন্ত্রী দল সিডিইউ এর বিশিষ্ট রাজনীতিক প্রফেসর ড. ফ্রিডবার্ট ফ্লুগার৷ বল্লেন, বার্লিন প্রাচীর পতন শুধু জার্মানির নয়, সারা ইউরোপে এনেছিল রাজনৈতিক,আর্থিক ও সামাজিক পরিবর্তন৷ পরিবর্তনের সেই হাওয়া লেগেছিল ভারতেও৷ মধ্য ও পূর্ব ইউরোপের কমেকন বাণিজ্য ব্লকের সঙ্গে ভারতের সাযুজ্য অন্তর্হিত হয়৷ ভারতীয় মুদ্রার বিনিময়যোগ্যতা মুখ থুবড়ে পড়ে৷ আমদানির জন্য নির্ভর করতে হয় প্রধানত মার্কিন ডলারের ওপর৷ সেই আবর্তন ১৯৯০-৯১তে সূচনা করে ভারতের আর্থিক সংস্কারের৷ দ্বিতীয়ত, সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর ভারতের সোভিয়েতমুখী পররাষ্ট্রনীতিকেও ঢেলে সাজাতে হয়৷ করতে হয়, ইওরোপমুখী, যা ভারত-মার্কিন সম্পর্কের নতুন ভিত্তি রচনা করে৷ এককথায় বলা যায়, এইসবই জার্মানির পুনরেকত্রীরণের ফলশ্র্রুতি৷ জার্মানির পুনরেকত্রীকরণে প্রয়াত চ্যান্সেলর কনরাড আডে নাউয়ার ও ভিলি ব্রান্টের বিরাট অবদানের উল্লেখ করে ড ফ্লুগার বলেন, ভিলি ব্রান্ট পুব ও পশ্চিমের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে দিতাঁত, নিরস্ত্রীকরণ, মানবাধিকার ও ব্যক্তিস্বাধীনতার বার্তা সারা বিশ্বে এমনভাবে ছড়িয়ে দেন যে, কমিউনিষ্ট শাসিত ইওরোপীয় দেশগুলির বিক্ষুব্ধ জনসমষ্টি চেয়ে বসলো স্বাধীনতা ও মানবাধিকার৷ পোলান্ডে সলিডারিটি আন্দোলন তারই প্রকাশ৷ প্রাথমিক পর্যায়ে জার্মানির পুনরেকত্রীকরণে কিন্ত খুশি হতে পারেনি ব্রিটেন ও ফ্রান্স৷ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচার তো বলেই বসেন যে, কমিউনিজম নিপাত যাক ঠিক আছে, কিন্ত তাই বলে জার্মানি আবার ক্ষমতাশালী হয়ে সবার ওপর ছড়ি ঘোরাবে তা অসহ্য - বলেন ড ফ্লুগার৷ তাঁর মতে, খুশি হতে পারেনি পূব জার্মানির বুদ্ধিজীবি মহলের একাংশ৷ তাঁরা চেয়েছিলেন, কমিউনিজম নয়, পুজিঁবাদও নয়৷ চেয়েছিলেন সমাজতন্ত্র৷
সভামঞ্চ ছিল কানায় কানায় ভরা৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী,অধ্যাপক ও বিদ্বজ্জনদের সঙ্গে চলে ড ফ্লুগারের প্রশ্নোত্তরের পালা৷
প্রতিবেদক: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি
সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক