বার্লিনের ফ্রিডরিশস্ট্রাসে শুধু একটা রাস্তাই নয়, যেন এক টুকরো ইতিহাস; জার্মানির ইতিহাস, ইউরোপের ইতিহাস৷ আবার এখানে চোখ-ধাঁধানো ক্যাবারে থেকে শুরু করে সুবিশাল ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, সব কিছুই পাবেন৷
বিজ্ঞাপন
সব কিছু শুরু হয়েছিল এখানে – এই ফ্রিডরিশস্ট্রাসে স্টেশনে৷ টুরিস্ট গাইড রাল্ফ হপে বলেন, ‘‘স্টেশনটি খোলা হয় ১৮৮২ সালে৷ তার পর থেকেই ফ্রিডরিশস্ট্রাসে রাস্তার নাম ছড়িয়ে পড়ে – কেননা স্টেশনের নামও ফ্রিডরিশস্ট্রাসে৷ এমনকি রাজধানীতে আসার আকুলতা বোঝানোর জন্য ফ্রিডরিশস্ট্রাসে নামটি চালু হয়ে যায়৷''
বিশেষ করে সাধারণ মানুষদের কাছে সে'আমলে ফ্রিডরিশস্ট্রাসের যে কী আকর্ষণ ছিল, রাল্ফ হপে তা বোঝানোর চেষ্টা করেছেন তাঁর বইতে৷ টুরিস্ট গাইড হিসেবেও কাজ করেন রাল্ফ৷
ঐতিহাসিক বার্লিন প্রাচীর পতনের ২৫ বছর
আজ থেকে ঠিক ২৫ বছর আগে অর্থাৎ ১৯৮৯ সালের ৯ নভেম্বর ঐতিহাসিক বার্লিন প্রাচীর ভাঙার মধ্য দিয়ে দুই জার্মানির একত্রীকরণ হয়েছিল৷ তৎকালীন পূর্ব জার্মানির শান্তিপূর্ণ বিপ্লব, বার্লিন প্রাচীরের নানা কথা থাকছে এই ছবিঘরে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বিশ্বের ইতিহাস বদলে দেয়া আন্দোলন
২৫ বছর আগে পূর্ব জার্মানির লাইপশিস শহরে শান্তিপূর্ণ মিছিলের মধ্য দিয়ে এক আন্দোলন শুরু হয়েছিল, যে মিছিলে অংশ নিয়েছিলো ৭০,০০০ মানুষ৷ সেই মিছিলের ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছিল অন্যান্য শহরেও৷ ভেঙে গিয়েছিল বার্লিন প্রাচীর৷ বিশ্বের ইতিহাসে জন্ম নিয়েছিল এক নতুন ইতিহাস৷
ছবি: picture-alliance/dpa
‘চেক পয়েন্ট চার্লি’
বার্লিন প্রাচীর ঘেঁষে ছিল এই সীমান্ত পাহারা কেন্দ্রটি, যেটা চেক পয়েন্ট চার্লি নামেই পরিচিত ছিল৷ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মিত্র বাহিনীর সেনা এবং কূটনীতিকরা যাতায়াত করতেন এই রাস্তা দিয়ে৷ রাস্তাটি ছিলো ১৯৬১ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত৷ বর্তমানে এই ঐতিহাসিক জায়গায় একটি মিউজিয়াম তৈরি করা হয়েছে৷
ছবি: AFP/Getty Images
এখন তাঁরা সবাই এক জনগোষ্ঠী
যে প্রাচীর টপকাতে গেলেই মৃত্যুর ভয় ছিলো সে প্রাচীর খুলে দেওয়ার ৪৮ ঘণ্টা পরই সমস্ত ভয় কেটে যায় জার্মান জনগণের৷ প্রাচীরের সামনে পেছনে, ওপরে, সব জায়গায়ই যেন আনন্দের বন্যা বইছিল৷ এখন পূর্ব আর পশ্চিমের মানুষ বলে কিছু নেই, এখন তাঁরা সবাই এক জনগোষ্ঠী৷
ছবি: picture-alliance/dpa
সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ
নভেম্বর মাসের প্রথম দিকে প্রতিবাদ আন্দোলন পোঁছে পূর্ব জার্মানির রাজধানী পূর্ব বার্লিনে৷ হাজার হাজার মানুষ সংস্কার ও সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে৷ তবে তাঁদের লক্ষ্য ছিলো, এসময় যেন কোনো হিংসাত্মক ঘটনা না ঘটে৷ এটা ছিলো পূর্ব জার্মানি ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ৷
ছবি: Reuters/Hannibal
বিরোধীরা আরো সক্রিয় হয়
পূর্ব বার্লিনের আলেকজান্ডার প্লাৎসে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভটি সরাসরি টিভিতে সম্প্রচার করা হয়৷ বিক্ষোভকারীরা ভ্রমণ ও সমাবেশ অনুষ্ঠানের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার দাবি জানায় সেখানে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Martti Kainulainen
স্বপ্ন যখন সত্য হয়
১৯৮৯ সালের ৯ নভেম্বর রাতে অনেক স্মরণীয় ঘটনা ঘটে৷ মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে পূর্ব জার্মানির শত শত নাগরিক হেঁটে, সাইকেলে এবং ট্রামান গাড়িতে করে পশ্চিম বার্লিনে প্রবেশ করে৷ সেদিন চেক পয়েন্ট চার্লি বা সীমান্ত পাহাড়া কেন্দ্রে মানুষ আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠে, ঠিক যেন কোলনের কার্নিভালের মতো৷
ছবি: imago/Sven Simon
বার্লিন প্রাচীরের আসল টুকরো
ইতিহাসকে স্মরণীয় করে রাখতে রাজনীতিকদের লক্ষ্য ছিলো ১৯৬১ সালে বার্লিন প্রাচীর তৈরির সময়কার কিছু ইটের নমুনা যেন বন শহরের ইতিহাস বিষয়ক মিউজিয়ামে স্থান পায়৷ আজ সেই স্মৃতিচিহ্ন মিউজিয়াম দর্শনার্থীদের দৃষ্টি কেড়ে নেয়৷
ছবি: DW/H. Mund
ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা
১৯৮৯ সালের ৯ নভেম্বরের রাতে ডয়চে ভেলের বিভিন্ন ভাষা বিভাগের কর্মীরা সরাসরি সম্প্রচার করার জন্য ‘ভ্রাম্যমাণ ট্রান্সমিটার’ নিয়ে উপস্থিত ছিলেন ডুডারস্টাট শহরের সীমান্তে৷ সে দলের সঙ্গী হয়ে ছিলাম আমিও৷ পূর্বের মানুষেরা এত বছর পর কীভাবে মিলিত হচ্ছেন পশ্চিমের মানুষদের সঙ্গে সেটা দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল আমার৷ সবার চোখে ছিল জল আর ঠোঁটে হাসি৷ স্বচক্ষে দেখা এ ঘটনা কোনোদিনই ভোলার নয়!
ছবি: picture-alliance/dpa
কলকাতায় উদযাপন
বার্লিনের প্রাচীর পতনের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে জার্মান কনসুলেটের উদ্যোগে কলকাতায় নানা অনুষ্ঠান হচ্ছে৷ এর মধ্যে আন্তর্জাতিক গ্রাফিতি ও হিপ হপ কর্মশালা উল্লেখযোগ্য৷ ছবির এই দেয়ালচিত্রটি কলকাতা থেকেই পাঠানো৷
ছবি: DW/S. Bandopadhyay
কূটনীতিকদের বাগানে রিফিউজি ক্যাম্প
১৯৮৯ সালের গ্রীষ্মে সাবেক পূর্ব জার্মানির জনগণের কাছে এই জায়গাটি খুবই জনপ্রিয় ছিলো৷
ছবি: picture-alliance/dpa
10 ছবি1 | 10
একটি রাস্তার ডাকনাম ছিল ‘জাউফস্ট্রাসে' বা ‘পিনেওয়ালাদের রাস্তা', কেননা এখানে প্রচুর পরিমাণ বিয়ার পান করা হতো৷ ফ্রিডরিশস্ট্রাসের পুরনো বাড়িগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পুরনো যে বাড়িটি, সেটি হল বাভারিয়ার এক ব্রুয়ারির সাবেক বিয়ার প্যালেস৷ রাল্ফ জানালেন, ‘‘‘সর-ব্রয়' বিয়ার তৈরির কোম্পানি ১৮৮৭-৮৮ সালে এই বিয়ার প্যালেস নির্মাণের নির্দেশ দেয়৷ এখানে যে শুধু একতলাতেই প্রচুর লোক ধরতো, এমন নয়, দোতলাতেও প্রচুর লোক বসতে পারতো৷''
অধিকাংশ বাড়িই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ধাক্কা সামলাতে পারেনি৷ তারপর আসে জার্মানির বিভাজন৷ ফ্রিডরিশস্ট্রাসের নাম আবার ছড়ায়, কেননা বিভক্ত বার্লিনের কয়েকটি সুবিখ্যাত সীমান্ত পারাপারের কেন্দ্র ছিল এই রাস্তাটিতে৷ যেমন চেকপয়েন্ট চার্লি৷ বিদেশি, আর্মির লোকজন আর কূটনীতিকরা এই চেকপয়েন্ট চার্লি দিয়ে পশ্চিম বার্লিন থেকে পূর্ব বার্লিনে যেতেন৷ আজ এখানে মানুষজন সেই পুরনো রোমাঞ্চের স্বাদ পেতে আসেন৷ ঠিক উল্টোদিকেই দেখতে পাওয়া যাবে ‘ঠান্ডা লড়াই' নিয়ে একটি প্রদর্শনী৷ একদিন এখানে একটি স্থায়ী মিউজিয়াম করার পরিকল্পনা রয়েছে৷
বার্লিনের কিছু মজার জাদুঘর
দারুণ কিছু মজার জাদুঘর আছে বার্লিনে৷ যেমন চিনির জাদুঘর, লিপস্টিকের জাদুঘর, কম্পিউটার গেমসের জাদুঘর, সমকামীদের জাদুঘর...৷ চলুন দেখা যাক, আরো কত রকমের মজার জাদুঘর আছে বার্লিনে৷
ছবি: picture-alliance/W. Steinberg
সব চিনির তৈরি
বার্লিনের ‘সুগার মিউজিয়াম’-এ প্রদর্শনের জন্য রাখা সব জিনিসই চিনির তৈরি৷ জাদুঘরটির উদ্বোধন হয়েছিল ১৯০৪ সালে৷ তবে তখন অন্য জায়গায় ছিল জাদুঘরটি৷ পরে তা সরিয়ে ক্রয়েৎসব্যার্গের প্রযুক্তি জাদুঘরে নেয়া হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
লিপস্টিকের সংগ্রহশালা
১৯২৫ সালের লিপস্টিকও আছে এই জাদুঘরে৷ এটি অবশ্য ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়া জাদুঘর৷ বার্লিনের এক প্রখ্যাত মেকআপ আর্টিস্টের একান্ত নিজস্ব উদ্যোগ পথ চলা শুরু করে এখন অনেক দর্শনার্থীকে আকৃষ্ট করতে শুরু করেছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/E. Wabitsch
সমকামী জাদুঘর
বার্লিনের টিয়ারগার্টেন এলাকার এই জাদুঘরে ঢুকতে কোনো পয়সা লাগে না৷ ওপরের ছবিতে যেমন সুপারম্যান চুমু খাচ্ছে রবিনকে তেমন অনেক কিছুই দেখা যাবে সেখানে৷ সমকামীদের পছন্দের জগৎকেই তুলে ধরার চেষ্টা হয়েছে সেখানে৷ সবার জন্যই উন্মুক্ত এই জাদুঘর৷
ছবি: picture-alliance/dpa/K.-D. Gabbert
কম্পিউটার গেমের জাদুঘর
এই জাদুঘরটি বার্লিনের ফ্রিডরিশহাইন এলাকায়৷ প্রতিদিন প্রচুর দর্শনার্থী যান সেখানে৷ বিশ্বের প্রথম কম্পিউটার গেমের জাদুঘরটি কেমন তা কে না দেখতে চায়, বলুন!
ছবি: picture-alliance/dpa/S. Pilick
জার্মানির আত্মসমর্পণের জাদুঘর
জাদুঘরটিকে সবাই ‘জার্মান-রাশিয়ান জাদুঘর’ নামেই চেনে৷ এটি আসলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির আত্মসমর্পনের ইতিহাসের ধারক৷ কার্লসহর্স্ট এলাকায় এক জার্মান কর্মকর্তার মেসেই রাশিয়ার রেড আর্মির কাছে জার্মানির আত্মসমর্পণের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছিল৷
ছবি: picture-alliance/dpa/B. Pedersen
5 ছবি1 | 5
‘অশ্রুর প্রাসাদ'
‘বানহোফ ফ্রিডরিশস্ট্রাসে', অর্থাৎ ফ্রিডরিশস্ট্রাসে স্টেশনে ইতিমধ্যেই একটা মিউজিয়াম রয়েছে, লোকমুখে যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘ট্রেনেনপালাস্ট' বা ‘অশ্রুর প্রাসাদ'৷ কমিউনিস্ট পূর্ব জার্মানি যে সব অবাধ্য নাগরিকদের বিদায় করতে চাইতো, তাদের এই ফ্রিডরিশস্ট্রাসে স্টেশন দিয়েই পুব থেকে পশ্চিমে পাঠানো হতো – যেমন পূর্ব জার্মানির সোশ্যালিস্ট ইউনিটি পার্টি অফ জার্মানি বা এসইডি দলের সমালোচকদের৷ ‘অশ্রুর প্রাসাদের' ইতিহাসবিদ নিনা শুমাখার শোনালেন, ‘‘তাদের সোজা বলা হতো: হয় জেলে যাবে, নয়ত পশ্চিম জার্মানিতে যাবে৷ কাজেই অধিকাংশ সরকারবিরোধী জেলের বদলে ফেডারাল জার্মান প্রজাতন্ত্রে যাওয়াটাই বেছে নিতেন৷ কিন্তু তখন সেটা ছিল চিরকালের মতো যাওয়া৷''
চিরকালের মতো দেশ, পরিবার ছাড়তে গিয়ে চোখের জলে বুক ভেসেছে অনেকের: যা থেকে ‘ট্রেনেনপালাস্ট' বা অশ্রুর প্রাসাদ' নাম৷ সাড়ে তিনশ মিটার দূরেই পরিস্থিতি ঠিক তার উল্টো৷ ফ্রিডরিশস্টাট-পালাস্টের বিশ্বখ্যাত ক্যাবারে, নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকা যাকে বার্লিনের প্রথম দশটি দর্শনীয়ের মধ্যে ফেলেছে৷ ফ্রিডরিশস্টাট-পালাস্টের প্রশাসনিক পরিচালক গিডো হ্যারমান জানালেন, ‘‘প্রতি সন্ধ্যায় ১১০ জন শিল্পী আমাদের শো-তে নামেন৷ এই মঞ্চ হলো বিশ্বের বৃহত্তম থিয়েটার মঞ্চগুলির মধ্যে একটি৷ আমাদের শো-গুলির মোহরত হয় শুধু এখানেই৷ কাজেই এই শো শুধু বার্লিনেই দেখতে পাওয়া যায়৷ নয়ত এরকম একটা শো দেখতে লাস ভেগাস যাত্রা করতে হবে৷''
বার্লিনের কবরখানা
বার্লিনের ২২৪টি কবরখানায় সঙ্গীসাথীর সঙ্গে কথা বলতে বলতে হাঁটার মজাই আলাদা৷ আবার অনেকে যান এই আশ্চর্য শহরটির ইতিহাসের সঙ্গে পরিচিত হতে৷
ছবি: B. von Brauchitsch
দেবদূতের ভিড়ে
বার্লিনের কবরখানাগুলির জন্য একটি আলাদা টুর গাইড লিখে ফেলেছেন ইতিহাসবিদ বরিস ফন ব্রাউকিচ৷ বিশ্বের আর কোনো বড় শহরে এতোগুলো কবরখানা নেই৷ কবর যেখানে আছে, সেখানে দেবদূতেরা থাকবেই৷ ছবির দুই দেবদূতকে দেখতে পাবেন বার্লিনের ‘মিটে’ এলাকার একটি কবরখানায়, যেখানে হেগেল-এর মতো দার্শনিক, ব্যার্টল্ট ব্রেশট-এর মতো নাট্যকার সমাহিত আছেন৷
ছবি: B. von Brauchitsch
যুদ্ধের স্মৃতি
বার্লিনেও বোমা পড়েছে, যুদ্ধ বেঁধেছে, গোলাগুলি চলেছে৷ কবরখানাগুলি তার ক্ষতচিহ্ন বহন করছে৷ মিটে এলাকার ডরোথেয়েনস্টাট-ফ্রিডরিখসভ্যার্ডার কবরখানার এই সমাধিসৌধটি পড়েছিল গোলাবর্ষণের মুখে৷ তার চিহ্ন আজও বর্তমান৷
ছবি: B. von Brauchitsch
পারিবারিক সমাধি
মরণে যে বাঁধন কাটে না৷ প্রেনৎসলাউয়ার ব্যার্গ এলাকার গেয়র্গেন-পারোকিয়াল কবরখানায় এই অসাধারণ কবরটি দেখা যাবে৷ কিন্তু বিপদ ঘনাচ্ছে অন্য দিক থেকে৷ কবরখানাটি পড়ে খুব দামি একটি আবাসিক এলাকায়৷ প্রোমোটারদের এদিকে নজর পড়তে আর ক’দিন?...
ছবি: B. von Brauchitsch
রোম্যান্টিক
বার্লিনের সবচেয়ে বিখ্যাত ইহুদি কবরখানাটি ভাইসেনজে এলাকায়, কিন্তু যুগপৎ প্রাচীনতম ও আজও ব্যবহৃত ইহুদি কবরখানাটিকে পাওয়া যাবে প্রেনৎসলাউয়ার ব্যার্গ এলাকার শ্যোনহাউজার অ্যালি-তে৷ এখানে সমাহিত মাক্স লিবারমান-এর মতো চিত্রকর, জিয়াকোমো মায়ারবেয়ার-এর মতো সঙ্গীতস্রষ্টা৷
ছবি: B. von Brauchitsch
ধ্বংসের মুখে
কবরখানার শত্রু অনেক৷ রোগভোগ, অকালমৃত্যু কমছে; সমাজে ধর্মের প্রভাব হ্রাস পাচ্ছে৷ ফলে বার্লিনের অনেক ঐতিহাসিক কবরখানা আজ বন্ধ হওয়ার মুখে৷ যদিও এর ফলে বার্লিনের ইতিহাসের একাংশ হারিয়ে যাবে – তা-তে প্রোমোটারদের কি আসে যায়?
ছবি: B. von Brauchitsch
সুইসাইড সেমেটারি
লোকমুখে ‘আত্মহননকারীদের কবরখানা’ নাম পেয়েছে গ্রুনেভাল্ড-ফর্স্ট এলাকার এই কবরখানাটি৷ যারা আত্মহত্যা করে, তাদের সাধারণত গির্জার কবরখানায় স্থান হয় না – কিন্তু এই কবরখানাটির ক্ষেত্রে গির্জা কর্তৃপক্ষ তেমন উচ্চবাচ্য করেননি৷ ছবিতে যে ক্রুশগুলি দেখা যাচ্ছে, সেগুলি রুশ বিপ্লবের পর হতাশ জারপন্থিদের কবর৷
ছবি: B. von Brauchitsch
রুশি, তুর্কি, বার্লিনবাসী
বার্লিনের ইতিহাস এক মিশ্র সংস্কৃতির ইতিহাস৷ তার একটি দৃষ্টান্ত হলো রাইনিকেনডর্ফ এলাকার এই রুশ সনাতনপন্থি কবরখানাটি৷ অপরদিকে জার্মানির সবচেয়ে পুরনো তুর্কি কবরখানাটি দেখতে পাওয়া যাবে নয়ক্যোলন এলাকার কলাম্বিয়াডাম-এর কাছে৷
ছবি: B. von Brauchitsch
বিভক্ত বার্লিন
শার্লটেনবুর্গ এলাকার ক্যাথলিক কবরখানাটি বার্লিন প্রাচীর গঠনের সময় পশ্চিম বার্লিন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল৷ পূর্ব জার্মানির কর্তৃপক্ষ এই কবরখানাটির রক্ষণাবেক্ষণের কোনো প্রচেষ্টাই করেননি৷
ছবি: B. von Brauchitsch
8 ছবি1 | 8
গত শতাব্দীর বিশের দশকেই ফ্রিডরিশস্টাট-পালাস্টের শো-গুলোর খুব নামডাক ছিল৷ তখন শো হত গ্রোসেস শাওস্পিলহাউস বা বড় থিয়েটারে৷ আশির দশকে বড় থিয়েটারটির ভেঙে পড়ার দশা হয়৷ তখন সেটাকে ভেঙে ফেলে তার জায়গায় ফ্রিডরিশস্টাট-পালাস্ট তৈরি করা হয়৷ প্রতি বছর সাত লক্ষ মানুষ এই শো দেখেন৷
ফ্রিডরিশস্ট্রাসেতে কেনাকাটা করতে আরো বেশি মানুষ আসেন৷ শুধুমাত্র ডুসমান বই আর গানের দোকানেই আসেন বছরে ৩০ লক্ষের বেশি গ্রাহক৷ এখানে ইউরোপীয় ক্ল্যাসিক্যাল মিউজিকের যে কলেকশান আছে, তা নাকি বিশ্বের সবচেয়ে বড়৷
আরো দক্ষিণে গেলে পাওয়া যাবে গ্যালেরি লাফাইয়েৎ নামধারী সুবিশাল বিভাগীয় বিপণী৷ ১৯৯০ সালে দুই জার্মানির মিলনের পর ফ্রিডরিশস্ট্রাসেতে প্রথম যে শপিং হাইলাইটটি সৃষ্টি হয়, সেটি ছিল এই গ্যালেরি লাফাইয়েৎ৷