1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বালোতেল্লির কাণ্ড!

২১ মে ২০১৩

এসি মিলানের টিম তখন খেলার পর ট্রেনে উঠতে চলেছে৷ সেই সময় ফ্লোরেন্সের ফ্যানদের ঠাট্টা-টিটকিরির মুখে ইটালির জাতীয় একাদশের ফরোয়ার্ড বালোতেল্লি তাদের এক হাত নিতে যান৷ দলের সতীর্থরা কোনোমতে তাঁকে আটকায়৷

Italy's Mario Balotelli celebrates his second goal during the Euro 2012 soccer championship semifinal match between Germany and Italy in Warsaw, Poland, Thursday, June 28, 2012. (Foto:Gregorio Borgia/AP/dapd)
Mario Balotelli Halbfinale EM 2012 Deutschland Italienছবি: dapd

মিলানের খেলা কিন্তু ছিল সিয়েনার সঙ্গে৷ এ মরশুমে তাদের শেষ লিগ ম্যাচ৷ মিলান জেতে ২-১ গোলে এবং পয়েন্টের তালিকায় তাদের তৃতীয় স্থান নিশ্চিত করে – সেই সঙ্গে চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলার সুযোগ৷ ঐদিনই ফ্লোরেন্স পেস্কারাকে ৫-১ গোলে হারানো সত্ত্বেও মিলানের চেয়ে দু'পয়েন্ট পিছিয়ে থাকে, অর্থাৎ পয়েন্টের তালিকায় চতুর্থ স্থানেই থেকে যায়, অর্থাৎ তাদের চ্যাম্পিয়নস লিগের বদলে ইউরোপা লিগে খেলতে হবে৷

এ সব মিলিয়েই কিনা বলা শক্ত, কিন্তু মিলানের ‘ডেভিলরা' যখন সিয়েনা থেকে বাসে করে ফ্লোরেন্স পৌঁছায়, সেখান থেকে মিলানের ট্রেন ধরার জন্য, তখন ফ্লোরেন্সের ফ্যানরা তাদের জন্য অপেক্ষা করেছে৷ অবশ্যই অভিনন্দন কিংবা সম্বর্ধনা জানানোর জন্য নয়৷ ব্যাপারটা ঠাট্টা-টিটকিরিতেই সীমিত থাকতে পারতো, কিন্তু মাথা চাড়া দেয় ইটালির তথা ইউরোপীয় ফুটবলের সেই পুরাতন ভূত, যার নাম জাতিবাদ৷

বালোতেল্লি তাঁর টুইটে নিজ ঘোষিত অবস্থানের পুনরাবৃত্তি করেন: তাঁকে খেলার মাঠে জাতি তুলে অসম্মান করলে তিনি মাঠ ছেড়ে চলে যাবেন, তা যদি এসি মিলানকে দশজন খেলোয়াড় নিয়ে খেলতে হয়, তা সত্ত্বেওছবি: picture-alliance/dpa

বালোতেল্লি ছাড়বার পাত্র নন

কৃষ্ণাঙ্গ মারিও বালোতেল্লি ও ব্রাজিলের রবিনিও'কে সেই জাতিবাদি গালিগালাজ শুনতে হয়৷ তারাও ফ্যানদের মুখোমুখি হবার প্রস্তুতি নেন৷ কিন্তু পুলিশ আর দলীয় সতীর্থরা মিলে তাদের নিরস্ত করে৷ দৃশ্যত বালোতেল্লিই বেশি মারমুখি ছিলেন – হবারই কথা, কেননা তিনি ইটালীয়, তাঁর গাত্রবর্ণ যাই হোক না কেন৷

পরে বালোতেল্লি তাঁর টুইটে নিজ ঘোষিত অবস্থানের পুনরাবৃত্তি করেন: তাঁকে খেলার মাঠে জাতি তুলে অসম্মান করলে তিনি মাঠ ছেড়ে চলে যাবেন, তা যদি এসি মিলানকে দশজন খেলোয়াড় নিয়ে খেলতে হয়, তা সত্ত্বেও৷ মনে রাখতে হবে, বালোতেল্লি আগামী সপ্তাহে ইটালির জাতীয় একাদশের ট্রেনিং ক্যাম্পে যোগদান করছেন ব্রাজিলে কনফেডারেশনস কাপের প্রস্তুতি হিসেবে৷ ক্যাম্পটি হবে আবার ফ্লোরেন্সের ঠিক বাইরে, কোভারচিয়ানোতে৷ পুলিশ নাকি সে'জন্য বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করছে৷

কার লজ্জা? কিসের লজ্জা?

ব্যাপারটা শুধু ইটালি কি ফুটবলের পক্ষেই লজ্জাকর নয়, ইউরোপীয় ফুটবলের পক্ষে এটা বিশেষভাবে লজ্জাকর৷ গত সপ্তাহান্তের কথাই ধরা যাক৷ ইংল্যান্ডে আলবিয়নের হয়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে শেষ দু'টি গোলের একটি করেন কঙ্গোর মিডফিল্ডার ইউসুফ মুলুম্বু৷ অন্যটি করেন রোমেলু লুকাকু, তিনিও আফ্রিকার মানুষ৷

এভাবেই চেলসির হয়ে খেলেছেন সেনেগালের ডেম্বা বা৷ বিপক্ষ এভারটনের হয়ে খেলেছেন নাইজিরিয়ার ভিক্টর আনিচেবে৷ টটেনহ্যামের হয়ে খেলেছেন টোগোর মানুষ এমানুয়েল আদেবাইওর৷ ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে ইয়াইয়া টুরে৷ ফ্রান্সে খেলেছেন তুলুজের হয়ে গিনির টিনেজ ফুলব্যাক ইসিয়াগা সিল্লা৷ সোশোর হয়ে সেনেগালের ওমর ডাফ৷ জার্মানিতে দেখা গেছে আইভরি কোস্টের দিদিয়ের দিয়ুফকে, যিনি হ্যানোভারের হয়ে খেলেছেন৷ স্টুটগার্টের হয়ে স্কোর করেছেন ঐ আইভরি কোস্টেরই আর্থার বোকা৷ ইটালিতে পাওয়া যাবে ঘানার মানুষ কোয়াডউও আসামোয়াকে, যিনি ইউভেন্তুসের হয়ে খেলেন৷ স্পেনে পাওয়া যাবে গ্রানাডার মতো একটিমাত্র দলে তিনটি আফ্রিকান দেশের প্লেয়ার: সেনেগালের পাপে দিয়াখাতে, মরক্কোর ইউসেফ এলআরাবি এবং নাইজিরিয়ার ওডিয়ন ইঘালোকে৷ এবং তালিকা ওখানেই শেষ নয়৷

দৃশ্যত বালোতেল্লিই বেশি মারমুখি ছিলেন – হবারই কথা, কেননা তিনি ইটালীয়, তাঁর গাত্রবর্ণ যাই হোক না কেনছবি: Reuters

এই হলো ইউরোপীয় ফুটবলে আফ্রিকার হস্তাক্ষর – নাকি পদচিহ্ন?

ফুটবলের কিছু ফ্যান যদি ফুটবল তথা মনুষ্যসভ্যতার আদিম যুগে আটকা পড়ে গিয়ে থাকে, তবে সেটা কি ফুটবলের দোষ?

এসি/ডিজি (এএফপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ