লায়লা৷ মাত্র ১৭ বছর বয়সে বিয়ে হয় তাঁর৷ তাও একটি ছাগলের বিনিময়ে৷ এখনও তাঁর পরিষ্কার মনে পড়ে, বিয়ের অনুষ্ঠানের ঠিক আগে আগে তার বাবা তাঁকে কী মারাটাই না মেরেছিল!
বিজ্ঞাপন
ইরানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এসফারায়েনের কাছে এক গ্রামে বাড়ি লায়লার৷ দেশটিতে গ্রামীন ও উপজাতীয় অধ্যূষিত এলাকার দরিদ্র অল্পবয়সি মেয়েদের এমন বিয়ের গল্প হরহামেশাই শোনা যায়৷ এমনকি মাত্র ১০ বছর বয়সি মেয়েদের জোর করে বিয়ে দেয়ার খবরও আছে৷
ইরানের গ্রামাঞ্চলে মেয়েরা প্রায়ই অল্প বয়সে বিয়ে করতে বাধ্য হয়৷ ইরানের আইনে এর অনুমোদন থাকায় এই প্রবণতা বাড়ছেই, যার ফলে ভাঙন ধরছে পরিবারারগুলোতে৷ কোনো ধরনের প্রত্যাশা ছাড়াই তৈরি হচ্ছে একেকটি প্রজন্ম৷
জাতিসংঘের শিশু সংস্থা ইউনিসেফ-এর ২০১৬ সালের প্রতিবেদন বলছে, ইরানের শতকরা ১৭ ভাগ মেয়ের বিয়ে ১৮ বছরের আগে হয়৷ আর ইরানের ‘অর্গানাইজেশন ফর সিভিল রেজিস্ট্রেশন'-এ মানবাধিকার কেন্দ্রের ২০১৩ সালের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, এর আগের মাত্র এক বছরে ১৫ বছরের নীচে ৪০ হাজারেরও বেশি মেয়ে বিয়ের নিবন্ধন করেছে৷
দক্ষিণ এশিয়ায় বাল্য বিবাহের হিড়িক
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ সরকারের প্রতি মেয়েদের বিয়ের বয়স কমিয়ে ১৬ না করার আবেদন জানিয়েছে৷ দক্ষিণ এশিয়ায় বাল্য বিবাহের সংখ্যা অত্যন্ত বেশি, এবং সেই তালিকার শীর্ষে বাংলাদেশ৷
ছবি: Getty Images/AFP
বিয়ের সর্বনিম্ন বয়স
গত ৯ই জুন প্রকাশিত একটি রিপোর্টে এইচআরডাব্লিউ বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের প্রতি বাল্য বিবাহের এই নতুন ‘মহামারীর’ মোকাবিলা করার আহ্বান জানিয়েছে৷ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনটি বাংলাদেশে মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৮ থেকে কমিয়ে ১৬ করার বিরোধী৷
ছবি: Getty Images/AFP/Str
পনেরো বছর হবার আগেই
বাংলাদেশের ৩০ শতাংশ মেয়ের ১৫ বছর বয়স হওয়ার আগেই বিয়ে হয়ে যায়, বলছে ‘বাড়ি বন্যার জলে ভেসে যাওয়ার আগেই বিয়ে করে ফেলো’, এই শীর্ষকের একটি রিপোর্ট৷ এইচআরডাব্লিউ সংগঠনের রিপোর্টটি বাংলাদেশে শত শত বালিকা বধূর সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে লেখা হয়েছে৷ বাংলাদেশে বাল্য বিবাহ নিষিদ্ধ, কিন্তু কর্মকর্তাদের ঘুস দিয়ে সহজেই ভুয়ো বার্থ সার্টিফিকেট বার করে নেওয়া যায়৷
ছবি: Getty Images/AFP/Str
একটি কারণ: দারিদ্র্য
ঘন ঘন প্রাকৃতিক বিপর্যয় বাংলাদেশের বহু মানুষকে চরম দারিদ্র্যের মুখে ঠেলে দিয়েছে৷ ফলে বাল্য বিবাহের সংখ্যা বেড়েছে, কেননা দক্ষিণ এশিয়ার অধিকাংশ পরিবারে কন্যাসন্তান একটি দায় বা বোঝা৷ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতবছর প্রতিশ্রুতি দেন যে, ১৫ বছরের নীচে মেয়েদের বিয়ে নিষিদ্ধ করা হবে৷ কিন্তু সরকার সে প্রতিশ্রুতি পালনের জন্য বিশেষ কিছু করেননি, বলে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলির অভিযোগ৷
ছবি: Getty Images/AFP/Str
দাম্পত্য জীবনে মারধোর ও ধর্ষণ
বিভিন্ন জরিপ থেকে দেখা গেছে, মেয়েদের পড়াশুনা করতে না দিলে তারা দারিদ্র্যের শৃঙ্খলেই আবদ্ধ থাকে, পরনির্ভর হয়ে থাকে, এমনকি তাদের স্বাস্থ্যেরও হানি ঘটতে পারে৷ বালিকা বধূদের জন্য আরো রয়েছে পতির হাতে মারধোর, এমনকি ধর্ষণ৷
ছবি: picture-alliance/Pacific Press/M. Asad
গোটা দক্ষিণ এশিয়ার সমস্যা
সমস্যাটা যে শুধু বাংলাদেশের, এমন নয়৷ জোর করে কম বয়সে বিয়ে দেওয়ার প্রথা দক্ষিণ এশিয়া জুড়ে পাওয়া যাবে – খানিকটা সেখানকার বিভিন্ন দেশের ধর্ম ও সংস্কৃতির কারণে৷ জাতিসংঘের উদ্বাস্তু ত্রাণ সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী আগামী দশ বছরে ১৪ কোটির বেশি মেয়ের ১৮ বছর হবার আগেই বিয়ে হয়ে যাবে৷ তাদের অর্ধেকই হবে দক্ষিণ এশিয়ার মেয়ে৷
ছবি: DW/P.M.Tewari
সংস্কার বনাম সরকার
ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, নেপাল কিংবা শ্রীলঙ্কায় বাল্য বিবাহ নিষিদ্ধ, কিন্তু তা সত্ত্বেও সামাজিক প্রথাটি ভালোভাবেই বেঁচে রয়েছে৷ জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিলের পরিসংখ্যানে দেখা যায়: ২০০০ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে প্রায় আড়াই কোটি মহিলা, যাদের বয়স ২০ থেকে ২৪-এর মধ্যে, তাদের সকলেরই কিন্তু বিয়ে হয়েছিল ১৮বছর বয়স হবার আগে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/P. Hatvalne
মনোভাব বদলাতে হবে
ইউনিসেফ-এর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক আঞ্চলিক উপ-পরিচালক স্টিফেন অ্যাডকিনসন ডয়চে ভেলেকে বলেন যে, বাল্য বিবাহ, আঁতুড়ে মায়ের মৃত্যু, মেয়ে হলে গর্ভপাত ইত্যাদি বিষয়ে মানুষজনের মনোভাব বদলানোর জন্য সর্বাগ্রে সংলাপ চালু করতে হবে, পৌঁছাতে হবে এই ‘মাইন্ডসেট’ বা কুসংস্কারের সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক তথা রাজনৈতিক মূলে৷
ছবি: picture alliance/AP Photo
7 ছবি1 | 7
লায়লা ডয়চে ভেলেকে জানান, উত্তর খোরসান প্রদেশে মেয়েদের বিয়ে শুরু হয় মাত্র ১১ বছর বয়স থেকে৷ তবে সবচেয়ে বেশি বিয়ে হয় ১৬ থেকে ১৭ বছর বয়সে৷
অনিবন্ধিত বিয়ের যত সমস্যা
ইরানের বাল্যবিয়ের যে চিত্র বিভিন্ন মাধ্যমে যে সংখ্যা আসে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন বাস্তবে সংখ্যাটা তার চেয়ে অনেক বেশি৷ এর কারণ হলো, অনেক বিয়েতে আনুষ্ঠানিক নিবন্ধন হয় না৷ এটি অনেক জটিলতা সৃষ্টি করে৷ নিবন্ধনহীন বিয়ে করা স্বামী-স্ত্রীদের কোনো নাগরিক অধিকার থাকে না, সন্তানদেরও জন্ম সনদ মেলে না৷ ফলে অনিবন্ধিত বাল্যবিয়ের ফলে জন্ম নেওয়া শিশুরা শিক্ষা ও সামাজিক সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়৷
তেহরানের শহীদ বেহেশতি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানী মজিদ আবহারি বলেন, ইরানের সবচেয়ে বেশি অনিবন্ধিত বিয়ে হয় সিস্তান, বালুচিস্তান, খুজেস্টান, কুর্দিস্তান এবং উত্তর ও দক্ষিণ খোরসানের মতো সীমান্তবর্তী প্রদেশে৷
‘‘স্বামী-স্ত্রীর বয়সের অনেক পার্থক্যের কারণে এই ধরনের বিয়েতে দম্পতিদের মধ্যে স্বাচ্ছন্দ্যময় যৌন সম্পর্ক তৈরি হয় না৷ ফলে অনেকেই বাইরে নানান সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে৷ বাল্যবিয়ের ফলে মেয়েদের নানা ধরনের যৌন রোগ ও সংক্রমন দেখা দেয়৷ ফলাফলস্বরুপ অনেকে বাড়ি ছেড়ে চলে যায়, এমনকি আত্মহত্যাও করে'' বলে জানান মজিদ৷
লায়লা জানান, তাঁর স্বামী মাদকাসক্ত এবং স্বল্প শিক্ষিত৷ ‘‘মাত্র পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছি আমি৷ ইশ্, আবারো যদি স্কুলে যেতে পারতাম...!'' যোগ করেন তিনি৷ জানান, ‘‘বিয়ের পর বাচ্চাদের ভরনপোষণের জন্য আমাকে তেহরান ছাড়তে হয়েছে, কারণ, তাদের বাবা মাদকাসক্ত ছিল৷'' তিন সন্তানের মা লায়লাকে পরিবারের জন্য আয় করতে হতো৷ কারণ, তাঁর স্বামী কাজ করতে চাইতো না৷ অথচ তারপরও স্বামী প্রায়ই তাঁকে মারধর করত৷
শিশুদের নিয়ে মন খারাপ করা কিছু খবর
বাংলাদেশে ২০১৩ সালে প্রণীত শিশু আইন অনুযায়ী, ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত সকলকে শিশু বলে গণ্য করা হয়৷ শিশুদের নিয়ে ছবিঘরে থাকছে এমন কিছু তথ্য, যা পড়ে আপনার মন খারাপ হতে বাধ্য৷
ছবি: picture-alliance/dpa
সাত মাসে ৬১ গণধর্ষণ
শিশু অধিকার নিয়ে কাজ করে এমন ২৬৭টি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম’ এর হিসেবে, চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে ৬১টি শিশু গণধর্ষণের শিকার হয়েছে৷ সংবাদপত্রে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে এই তথ্য জানায় ফোরামটি৷ একই সময়ে ধর্ষণ, উত্ত্যক্তসহ যৌন সহিংসতার শিকার হয় ৩৪৭টি শিশু৷ এর মধ্যে চারটি ছেলেশিশুও রয়েছে৷
ছবি: Getty Images/A. Joyce
বয়স ১৫ হওয়ার আগেই বিয়ে
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের হিসেব অনুযায়ী, বাংলাদেশে গড়ে ২৯ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয় তাদের বয়স ১৫ পার হওয়ার আগে৷ আর ৬৫ শতাংশের বিয়ে হয় বয়স ১৮ পার হওয়ার আগে৷
ছবি: Getty Images/A. Joyce
ঝুঁকিপূর্ণ কাজে শিশু
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে ৪৫ লাখেরও বেশি শিশু ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত৷ এর মধ্যে প্রায় ১৭ লাখেরও বেশি শিশুর বাস খোদ ঢাকা শহরে৷ বাংলাদেশ সরকার ঝুঁকিপূর্ণ ৩৮টি কাজে শিশুশ্রম নিষিদ্ধ করলেও আদতে তা মানা হচ্ছে না৷ সরকারিভাবে নেই কোনো নজরদারির ব্যবস্থা৷
ছবি: Mustafiz Mamun
কিশোর অপরাধী
পুলিশ সদর দপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে গড়ে প্রতিবছর কমপক্ষে দুই হাজার শিশুকে নানা অপরাধে আটক করা হয়৷ শিশু অধিকার ফোরামের হিসেবে, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ২৭৬ জন শিশুকে অস্ত্র ও মাদক বহনসহ নানা অভিযোগে আটক করা হয়৷
ছবি: bilderbox
মাত্র তিনটি
আইন অনুযায়ী শিশু-কিশোর অপরাধীদের বিচার করা হয় কিশোর আদালতে৷ এরপর বিচার শেষে শাস্তি ভোগের জন্য তাদের শিশু-কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর কথা৷ কিন্তু বাংলাদেশে এমন কেন্দ্র আছে মাত্র তিনটি৷ গাজীপুরে দু’টি এবং যশোরে একটি৷ এর মধ্যে গাজীপুরের একটি মেয়েদের জন্য৷ সব মিলিয়ে এই তিনটির ধারণ ক্ষমতা ৬০০৷ অর্থাৎ আটক শিশুদের বড় একটি অংশের জায়গা উন্নয়ন কেন্দ্রে হয় না৷ ফলে তাদের কারাগারে থাকতে হয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
5 ছবি1 | 5
বাল্য বিয়ের বিভিন্ন কারণ
সমাজবিজ্ঞানী মজিদ আবহারি ইরানের বাল্যবিয়েকে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করেছেন৷ প্রথম দল ‘রক্তের স্পর্কের বিয়ে'৷
এছাড়া দু'টি উপজাতিদের মধ্যে শত্রুতা দূর করার উপায় হিসাবে মেয়েদেরকে তথাকথিত ‘রক্তের বিয়ে' দেওয়া হয়৷ এই বিয়েতে নবজাতকের নাভির নরম অংশটি প্রতীকীভাবে কাটা হয়৷ সাধারণত চাচাতো ভাই বা কখনো কখনো দূর র্সম্পর্কের আত্মীয়ের মধ্যে এই বিয়ে দেয়া হয়৷
আরেক ধরনের বাল্য বিয়ের কথা বলেন আবহারি, যেখানে হতদরিদ্র মানুষেরা অর্থনৈতিক লাভের আশায় মেয়েদের বিয়ে দেয়৷ এই বাবা-মায়েরা পাত্রের বাড়ি থেকে কোনো একটা কিছু পাওয়ার বিনিময়ে মেয়েকে বিয়ে দেয়৷ তবে এক্ষেত্রে মেয়েটি কতটা সুন্দর বা পাত্রের পরিবার কতখানি ধনী, তার ওপর নির্ভর করে৷ এছাড়া ইরানের কিছু মানুষ বিশ্বাস করে, বয়ঃসন্ধির আগেই মেয়েদের বিয়ে হওয়া উচিত৷
পরিবর্তনের কোনো আশা?
ইরানের মানবাধিকার কর্মী ও রাজনীতিবিদরা ২০১৭সালের আগস্টে বিয়ের আইন সংশোধনের দাবিতে একটি বিবৃতি দেন৷ সেখানে মেয়েদের বিয়ের বয়স বাড়ানো এবং ছেলেদের বয়স কমপক্ষে ১৮ করার সুপারিশ করা হয়৷ বিবৃতিতে বাল্যবিয়ের ক্ষতিকর নানা দিকও তুলে ধরা হয়৷ এর একটি অংশে শিশু নির্যাতন, বিশেষত মেয়েদের অধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে৷
ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বলছে, আইন করে বিয়ের বয়স বাড়ানো এবং বাল্য বিয়ে সংক্রান্ত বিধিনিষেধের জন্য একটি পরিকল্পনা করতে একত্রিত হয়েছেন আইন প্রণেতারা৷ ইরানি সংসদের নারী সাংসদ ফাতেমা জোলঘাদর স্থানীয় ইলনা নিউজ এজেন্সিকে জানিয়েছেন, বিয়ের বয়স বাড়ানোর ব্যাপারে আইন সংশোধনের একটি বিল তৈরি হচ্ছে৷
শিশু অধিকার সম্পর্কিত জাতিসংঘের কনভেনশন অনুযায়ী, ১৮ বছরের কম বয়সি প্রত্যেকেই ‘শিশু' বলে বিবেচিত্ এবং কনভেনশনের অন্তর্ভুক্ত সব অধিকার পাওয়ার অধিকার তাদের আছে৷ মেয়েদের অধিকারের মধ্যে আছে, ‘‘সব ধরনের বৈষম্য থেকে মুক্তি, অমানবিক এবং অপমানজনক হিসেবে বিবেচিত না হওয়া এবং দাসত্ব থেকে মুত্তি৷''