বাহরাইনে জঙ্গি হামলার পরিকল্পনা ফাঁস, গ্রেফতার বহু
২১ সেপ্টেম্বর ২০২০
বাহরাইনে জঙ্গি হামলার ছক বানচাল করলো নিরাপত্তা বাহিনী। কয়েকজন জঙ্গি গ্রেফতার। স্থানীয় মিডিয়ার দাবি, এই পরিকল্পনার পিছনে ছিল ইরান।
বিজ্ঞাপন
বড়সড় জঙ্গি হামলার ছক করেছিল জঙ্গিরা। কিন্তু নিরাপত্তা বাহিনী সক্রিয় হয়ে জঙ্গিদের ঘাঁটিতে অভিযান চালিয়ে প্রচুর সন্ত্রাসবাদীকে গ্রেফতার করেছে। বিপুল পরিমাণে বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় মিডিয়ার দাবি, বিদেশি কূটনীতিক ও নাগরিকদের হত্যার পরিকল্পনা করেছিল জঙ্গিরা। এর পিছনে ছিল ইরানের মদত। মিডিয়ার রিপোর্ট বলছে, ১৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তার মধ্যে নয় জন ইরানে আছেন।
বাহরাইন সরকার এখনো জঙ্গিদের গ্রেফতার নিয়ো কোনো মন্তব্য করেনি। সরকারি টিভিতেও কিছু দেখানো হয়নি। কিন্তু সৌদি আরবের সরকারি টিভিতে এর ফুটেজ দেখানো হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, নিরাপত্তা বাহিনী জঙ্গিদের ডেরায় হানা দিয়েছে। সেখানে অ্যাসল্ট রাইফেল ও বিস্ফোরক উদ্ধার করা হচ্ছে। ইরানের সরকারি মিডিয়াও গ্রেফতারের খবর করেছে। তবে সেখানে সরকারের তরফে কিছু জানানো হয়নি।
সৌদির এক টিভি রিপোর্টারের দাবি, ইরানের জেনারেল কাসেম সোলেইমানি হত্যার প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিল জঙ্গিরা। গত জানুয়ারিতে বাগদাদে মার্কিন ড্রোন হানায় সোলেইমানির মৃত্যু হয়।
ইসরায়েলের সঙ্গে আমিরাত, বাহরাইনের চুক্তি
ইসরায়েলের সঙ্গে আমিরাত ও বাহরাইনের ঐতিহাসিক চুক্তি হোয়াইট হাউসে সই হলো। ইসরায়েল লাভবান হলো। বিক্ষোভ প্যালেস্টাইনে।
ছবি: Getty Images/A. Wong
দীর্ঘ বিরোধের অবসান
কয়েক দশক ধরে চলা বিরোধের অবসান। সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনের সঙ্গে চুক্তিতে সই করল ইসরায়েল। কূটনৈতিক,সম্পর্ক গড়ে তুলবে তারা। চুক্তিতে সই করলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু, আমিরাতের বিদেশ মন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ বিন আল নেহয়ান এবং বাহরাইনের বিদেশমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল জায়ানি।
ছবি: Getty Images/AFP/S. Loeb
ট্রাম্পের সভাপতিত্ব
হোয়াইট হাউসে চুক্তি সই হয়েছে। সভাপতিত্ব করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট ভোটের আগে এই চুক্তি তাঁর অন্যতম তুরুপের তাস। ট্রাম্প বলেছেন, ''মধ্যপ্রাচ্যে নতুন ভোর হলো। এই চুক্তি ঐতিহাসিক।'' তার আশা, বাকি আরব দেশগুলিও আমিরাত ও বাহরাইনকে অনুসরণ করবে।
ছবি: Getty Images/A. Wong
উচ্ছ্বসিত নেতানিয়াহু
এতদিন আরব দুনিয়ায় কার্যত একঘরে ছিল ইসরায়েল। এ বার আমিরাত ও বাহরাইনের সঙ্গে তাদের কূটনৈতিক সম্পর্ক চালু হবে। তাই উচ্ছ্বসিত ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, এই চুক্তি আরব-ইসরায়েল সংঘাত চিরতরে শেষ করে দিতে পারে। তাই এই চুক্তি ঐতিহাসিক। শান্তির ভোর হলো। তার মতে, করোনা নামক অতিমারির দিন শেষ হবে, কিন্তু আজ যে চুক্তি হলো, তার জন্য দীর্ঘস্থায়ী শান্তি থাকবে।
ছবি: Reuters/T. Brenner
খুশি আমিরাত, বাহরাইন
নেতানিয়াহুকে ধন্যবাদ দিয়েছেন আমিরাতের বিদেশমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, ইসরায়েল যে শান্তির পথ বেছে নিয়েছে এবং প্যালেস্টাইনের এলাকা দখল করবে না বলেছে, তাতে তিনি খুশি। কয়েক দশক ধরে বিভাজন ও সংঘাতের পর শান্তি ফিরল। ইতিহাসের গতি পরিবর্তন হলো। খুশি বাহরাইনও।
ছবি: picture-alliance/AP Photo/A. Brandon
খারিজ করল প্যালেস্টাইন
হোয়াইট হাউসে যখন এই চুক্তি সই হচ্ছে, তখন প্যালেস্টাইনে বিক্ষোভ চলছে। বিশেষ করে অধিকৃত পশ্চিম তীর ও গাজা ভূখণ্ডে। বিক্ষোভকারীদের দাবি, ইসরায়েল যে এলাকা দখল করে রেখেছে, তা ছেড়ে না দিলে শান্তি আসবে না। প্যালেস্টাইন এই চুক্তিকে খারিজ করে বলেছে, তাদের পিছন থেকে ছুরি মারা হয়েছে।
ছবি: Reuters/M. Salem
বিরোধে সৌদি, ইরান, তুরস্ক
এই চুক্তির বিরোধিতা করে প্যালেস্টাইনের পাশে দাঁড়িয়েছে সৌদি আরব, ইরান এবং তুরস্ক। সৌদি আরব বলেছে, তারা প্যালেস্টাইন সমস্যার প্রকৃত সমাধান চায়। তাদের দাবি, স্বাধীন প্যালেস্টাইন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিতে হবে এবং পূর্ব জেরুসালেমকে তার রাজধানী করতে হবে। ইরান ও তুরস্কও চুক্তির বিরোধী। এই চুক্তিতে শুধু নতুন করে প্যালেস্টাইনের এলাকা দখন না করার মৌখিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ইসরায়েল।
ছবি: Reuters/T. Brenner
লাভ কতটা
এক দল বিশেষজ্ঞের মতে, এই চুক্তির ফলে লাভ খুব বেশি হবে না। কারণ, এমনিতেই ইসরায়েলের সঙ্গে আমিরাত ও বাহরাইনের সংঘাত একেবারেই কমে গিয়েছিল। লাভটা হলো, তাদের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক শুরু হলো। ওই বিশেষজ্ঞদের মতে, এই তিন দেশের একটাই লক্ষ্য, ইরানের প্রভাব কমানো। সে জন্যই এই চুক্তি সম্ভব হয়েছে।
ছবি: Reuters/T. Brenner
ট্রাম্প কতটা সুবিধা পাবেন
হোয়াইট হাউসে ইসরায়েলের সঙ্গে আমিরাত ও বাহরাইনের চুক্তি হয়েছে। এই চুক্তি করিয়ে ট্রাম্প তার ক্ষমতা দেখাতে পারলেন বলে তার সমর্থকদের দাবি। এর ফলে ভোটের আগে ট্রাম্পের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হলো বলে তারা মনে করছেন। এর সুবিধা কি ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পাবেন? ট্রাম্প-বিরোধীরা মনে করছেন, তার ভাবমূর্তি করোনা ও কৃষ্ণাঙ্গ-হত্যার ফলে যে জায়গায় নেমেছে, সেখান থেকে ওঠার আশা কম।
ছবি: Reuters/T. Brenner
8 ছবি1 | 8
মার্কিন নৌবাহিনীও বাহরাইনে আছে। তারা এখান থেকেই মধ্য প্রাচ্যের সমুদ্রে নজরদারি চালায়। অতীতে তাদের উপর আক্রমণ হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন নৌবাহিনীর কর্তারা।
সম্প্রতি ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছে বাহরাইন। সংযুক্ত আরব আমিরাতও করেছে। ইরানতার তীব্র সমালোচনা করেছে। তা নিয়ে ওই অঞ্চলে উত্তেজনা আছে।
এদিকে বাহরাইনের শিয়ারা মনে করেন সুন্নিরা তাঁদের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসাবে দেখেন। ২০১১-তে শিয়ারা গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনও করেছিল। কিন্তু সৌদি ও আমিরাতের সেনার সাহায্যে সেই আন্দোলন দমন করা হয়।