1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাড়ছে ঈদের কেনাকাটা, ক্রেতাদের পছন্দ বিদেশি পোশাক

১ জুন ২০১৯

প্রতি বছরই ঈদের কেনাকাটার হার বাড়ছে৷ দেশের শপিংমলগুলোতে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে কেনাকাটার ধুম৷ সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বরাবরের মতো এবারও ক্রেতাদের পছন্দ বিদেশি পোশাক, বিশেষ করে ভারতীয় পোশাক৷

Deutschland - Eid Shopping in Germany: Einkaufen vor dem Opferfest
ছবি: DW/N. Sattar

শুধু তাই নয়, এ বছরও ক্রেতাদের অনেকেই পাশ্ববর্তী দেশে ভারতে ভিড় করছেন বলে জানা গেছে৷ কলকাতার ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সেখানকার শপিংমলগুলোতেও দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশি ক্রেতাদের ভিড়৷ চাহিদা মেটাতে সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও দোকান খোলা রাখছেন তাঁরা৷ শপিংমলগুলোর পাশাপাশি অনলাইনেও চলছে কেনাকাটা৷ অনেকে ক্রেতাই ঈদের কেনাকাটা সারছেন অনলাইন থেকে৷ 
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি এবং এফবিসিসিআই'র সাবেক সহ-সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘‘এবার ঈদের কেনাকাটা গত বছরের তুলনায় কমপক্ষে ১০ ভাগ বেড়েছে৷’’ এফবিসিসিআই-এর ২০১৭ সালের এক সমীক্ষা থেকে জানা গেছে, বাংলাদেশের ঈদের বাজারের আকার ১ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা৷ হেলালউদ্দিন মনে করেন, এই বাজার এখন দুই লক্ষ কোটি টাকার বেশি৷

‘ঈদের বাজারের আকার দুই লক্ষ কোটি টাকা’

This browser does not support the audio element.

ক্রেতাদের পছন্দ ভারতীয় পোশাক
ঈদে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাসহ বড় বড় শহরে ভারতীয় পোশাকের অনেক চাহিদা থাকে৷ এবারও তার ব্যতিক্রম নয়৷ আর নারী ক্রেতাদের কাছে ভারতীয় পোশাকের চাহিদাই বেশি বলে জানা গেছে৷ হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘‘মধ্যবিত্ত এবং উচ্চবিত্ত নারীদের ভারতীয় শাড়ি এবং অন্যান্য পোশাকের প্রতি আগ্রহ বেশি৷ আমি মনে করি ঈদের বাজারে নারীদের যে পোশাক বিক্রি হয় তার অর্ধেকই ভারতীয়৷ সেই হিসেবে ঈদে ১০-১২ হাজার কোটি টাকার ভারতীয় পোশাক কেনেন বাংলাদেশিরা৷ একই কথা বললেন অনলাইন শপিং ''সেভেরিস ক্লোদিং লাইন''-এর মালিক কাকলী তানভীর৷ এ বিক্রেতা বলেন, ‘‘আমি শাড়ি বিক্রি করি৷ আমার ক্রেতাদের শতকরা ৭০ ভাগই ভারতীয় শাড়ি কেনেন৷ বাকি ৩০ ভাগের পছন্দ বাংলাদেশি শাড়ি৷'' তিনি বলেন, ''আমি কয়েক বছর ধরেই ঈদে শাড়িসহ অন্যান্য পোশাকের প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ ও প্রবণতা লক্ষ্য করছি৷ আমি নিজে কোলকাতা থেকে শাড়ি আমদানি করি৷ আমার মনে হয় গত দুই-তিন বছরে ঈদের সময়টিতে ভারতীয় পোশাকের আমদানী ২৫-৩০ ভাগ বেড়েছে৷’’

কেন ভারতীয় পোশাক?
পণ্যের দাম ও মান এ দু'য়ের কারণে অনেক ক্রেতার কাছেই ভারতীয় পোশাক পছন্দের৷ এ বিষয়ে ফৌজিয়া আহমেদ বলেন, ‘‘কম দাম ও বিভিন্ন ধরণের ডিজাইনের জন্য অনেকেরই আগ্রহ থাকে ভারতীয় পোশাকের প্রতি৷ ক্রেতাদের ভারতীয় পোশাকের প্রতি কেন আগ্রহ এ বিষয়ে হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘‘বাংলাদেশে স্থানীয়ভাবে প্রস্তুতকৃত পোশাকের ভালো ব্র্যান্ডিং হয়নি৷ আড়ংসহ কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান ভালো করছে৷ কিন্তু তাদের ক্রেতা নির্দিষ্ট৷ সার্বজনীন ব্র্যান্ড বলতে যেটা বুঝায়, সেটা হয়নি৷ ভারতীয় পোশাকের ডিজাইনে ভেরিয়েশন অনেক বেশি৷ আর তা ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে৷’’
ভারতীয় পোশাকের এ বৈচিত্রতার বিষয়ে একই মত পোষণ করেন কাকলী তানভীরও৷ তিনি বলেন, ‘‘একই মানের একটি ভারতীয় শাড়ির দাম বাংলাদেশি শাড়ির চেয়ে কম হয়, কারণ আমাদের মার্কেটিং সিস্টেমে গলদ আছে৷ আমাদের উৎপাদন খরচ কম৷ কিন্তু ক্রেতা কম দামে পোশাক পায়৷ এই গলদের জন্য আমাদের পোশাকের দামও বেড়ে যায়৷ আর মানের বিষয় তো আছেই৷’’

‘পণ্য পৌঁছে দিই, মান ঠিক রাখি’

This browser does not support the audio element.

যাচ্ছেন বিদেশেও
ঈদের কেনাকাটা করতে অনেক ক্রেতাই যাচ্ছেন বিদেশে৷ জানা গেছে ভারতের কলকাতাসহ অন্যান্য শহরে এবং পাকিস্তানেও যাচ্ছেন অনেক বাংলাদেশি ক্রেতা৷ নিজের অভিজ্ঞতা থেকে হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘‘আমি খোঁজ নিয়ে জেনেছি, এবার ঈদ শপিংয়ে বাংলাদেশিরা ঢাকার গাউছিয়ার মতই ভিড় করছেন কোলকাতার নিউমার্কেটে৷ সেখানে এখন গভীর রাত পর্যন্ত পোশাকের দোকান খোলা থাকছে৷ তিনি জানান, ‘‘ঈদ শপিংয়ে কিছু লোক পাকিস্তানও যাচ্ছেন৷’’ এদিকে কোলকাতার ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ঈদের কেনাকাটার চাহিদা মেটাতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তারা৷ কোলকাতার নিউমার্কেটের লিন্ডসে স্ট্রিটের একটি পোশাকের দোকান ‘ময়রা’৷ দোকানের ম্যানেজার অভিলাষ চক্রবর্তী টেলিফোনে ডয়চে ভেলেকে জানান, ''এবার ঈদে বাংলাদেশ থেকে ক্রেতারা পোশাক কিনতে আগের মতই কোলকাতায় আসছেন৷ বিশেষ করে নারীদের পোশাকেরই চাহিদা বেশি এখানে৷ রবিবার বন্ধের দিন হলেও ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে আমরা দোকান খোলা রাখছি৷’’
কলকাতার এ ব্যবসায়ী আরো বলেন, বাংলাদেশে ভারতীয় পোশাকের দাম বেশি৷ যে কারণে, ক্রেতারা কোলকাতা থেকে পোশাক কিনতে পছন্দ করেন৷

বাড়ছে অনলাইনে কেনাকাটা
ঈদের কেনাকাটায় নতুনমাত্রা যোগ করেছে অনলাইন শপগুলো৷ অনেক ক্রেতাই অনলাইনে নিজেদের প্রয়োজনীয় কেনাকাটা সেরে ফেলতে চাইছেন৷ অনালাইনে এবার ঈদের শাড়ি কিনেছেন ধানমন্ডির বাসিন্দা আবিদা নাসরিন৷ তিনি বলেন, ‘‘যানজটসহ অন্যান্য ঝামেলা এড়াতে অনলাইনেই শাড়ি কিনেছি৷ দাম রিজনেবল, আবার মানও ঠিক আছে৷ তবে দোকানে গিয়ে কেনার মজাই আলাদা৷ ঈদে দোকানে গিয়ে পোশাক ছুঁইয়ে দেখার মধ্যে একটা আলাদা আনন্দ আছে৷’’
এ বিষয়ে হেলাল উদ্দিন বলেন, রাস্তায় ব্যাপক যানজট এবং ভোগান্তির কারণে অনলাইন শপিংয়ের প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ বাড়ছে৷ ভোগান্তি এড়াতে তারা এখন ঘরে বসেই ঈদের শাড়ি বা জামা কাপড় পেতে চান, বলেন তিনি৷ 
তবে কাকলী তানভীর বলছেন ভিন্ন কথা৷ তিনি বলেন, ‘‘দোকানদাদের একটি অংশ ক্রেতাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন, পণ্যের মান ও দামের মধ্যে সমন্বয় থাকে ন৷ এসব কারণে অনলাইনে কেনাকাটায় আগ্রহ বাড়ছে ক্রেতাদের৷’’ তিনি বলেন, ‘‘অনলাইনেও নানা প্রতারণা আছে৷ তবে আমাদের অনলাইন প্লাটফর্মে ক্রেতারা সব শাড়ি দেখতে পারেন৷ তাঁরা অর্ডার করলে আমরা তাঁদের বাসায় পণ্য পৌঁছে দিই৷ মান ঠিক রাখি৷’’

‘বাংলাদেশে ভারতীয় পোশাকের দাম বেশি

This browser does not support the audio element.

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ