1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বাড়ছে চাল, আটার দাম; যুদ্ধের প্রভাব পড়ার শঙ্কা!

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
১২ মার্চ ২০২২

বাংলাদেশে আটার দাম বৃদ্ধি নিয়ে শঙ্কা তৈরি হচ্ছে৷ এরইমধ্যে প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) আটার দাম ২৫০ টাকা বেড়ে গেছে৷

Lebensmittel in Markt in Bangladesch
ছবি: DW

বেড়েছে চালের দামও৷ চিকন চালের দাম কেজিতে ৩-৪ টাকা বেড়েছে৷ তবে মোটা চালের দাম আগের মতই আছে৷

আটার জন্য গম আমানিতে বাংলাদেশ অনেকটাই রাশিয়া ও ইউক্রেনের উপর নির্ভরশীল৷ জানা গেছে, দেশের মোট চাহিদার  অর্ধেক আসে রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে৷

তবে এই মুহূর্তে দেশে যে পরিমাণ গম মজুত আছে তা দিয়ে আপাতত পরিস্থিতি মোকাবিলা করা গেলেও যুদ্ধের কারণে দীর্ঘ মেয়াদে আন্তর্জাতিক বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করলে দেশের বাজারে তা প্রভাব ফেলতে পারে৷  

জানা গেছে, দেশে এখন ২০ লাখ টন গম মজুত আছে৷  ভোক্তা অধিদপ্তর জানায়, আপাতত এটা নিয়ে সংকট হওয়ার কথা নয়৷ এটা নিয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয় কাজ করছে বলে জানা গেছে৷ তবে শুধু গম নয়, আমদানি নির্ভর সব পণ্যের জন্যই বিকল্প উৎসের সন্ধান করা হচ্ছে৷

অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান জানান, ‘‘যুদ্ধের প্রভাবে সব কিছুর দামই বেড়ে গেছে৷ আন্তর্জাতিক বাজারেও বেড়েছে৷ তবে এখানে যেটা হয়েছে  তা হলো খুচরা, পাইকারি এবং মিল সব পর্যায়েই দাম 'ম্যানুপুলেট' করা হয়েছে৷’’

এখন চালের দাম বাড়তে শুরু করেছে৷ চিকন চালের দাম কেজিতে ৩-৪ টাকা বেড়েছে৷ দাম বেড়েছে আটা মসুর ডাল, ছোলা, মুরগি, ডিম এবং শাক সবজির৷ তবে পেঁয়াজের দাম গত সপ্তাহের তুলনায় কমেছে৷

‘যুদ্ধের প্রভাবে সব কিছুর দামই বেড়ে গেছে’

This browser does not support the audio element.

কলাবাগানের মুদি দোকানদার মো. মিন্টু মিয়া জানান, সব কিছুর দামই বাড়ছে৷ সামনে আরো বাড়বে বলে আশঙ্কা করছি৷ আটার দামও বাড়তে শুরু করেছে৷ কেজিতে তিন-চার টাকা বেড়ে গেছে৷ চালের দাম বাড়ছে৷ মশুর ডাল কেজিতে বেড়েছে ১০টাকা৷

তার কথা, ‘‘ব্যবসায়ীরা বলছে যুদ্ধের কারণে দাম বাড়বে৷ তাই বাজারে একটা আতঙ্ক তৈরি হয়েছে৷''

এদিকে যুদ্ধের প্রভাবে বাংলাদেশের ব্যবসায়ী ছাড়াও সুযোগসন্ধানী দলের তৎপরতা দেখা যাচ্ছে৷ 

পুলিশ শনিবার লালমাটিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক এক কর্মকর্তার বাসায় অভিযান চালিয়ে ৫১২ লিটার সয়াবিন তেল উদ্ধার করেছে৷ পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার জানান,  ‘‘লায়েকুজ্জামান নামের ওই সাবেক সরকারি কর্মকর্তা  ভবিষ্যতে বেশি দামে বিক্রির আশায় ৬ মার্চ ৫১২ লিটার সয়াবিন তেল কিনে তার বাসায় স্টক করে রেখেছিলেন৷ ওই তেল উদ্ধার এবং তাকে আটক করা হয়েছে৷''

তার আশঙ্কা,  এমন আরো অনেক ব্যবসায়ী এবং সুযোগসন্ধানী দল সয়াবিন তেলসহ নানা ভোগ্যপণ্য স্টক করেছেন৷  তাদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনার জন্য গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ জোরদার করা হয়েছে বলে জানান তিনি৷

এর আগে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে মুরগির খামার, বাথরুমসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে স্টক করা সয়াবিন তেল উদ্ধার করা হয়েছে৷

সরকার ভোজ্য তেলসহ আরো অনেক ভোগ্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখতে বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে৷ এরমধ্যে আছে এক কোটি পরিবারকে ন্যায্যমূল্যে টিসিবি সয়াবিন তেলসহ চারটি পণ্য দেয়ার সিদ্ধান্ত৷ ঢাকায় এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে৷ ঢাকার বাইরে শুরু হবে ১৫ মার্চ থেকে৷ এছাড়া সয়াবিন, চিনি ও ছোলার উপর থেকে ভ্যাট প্রত্যাহার করার ঘোষণাও দেয়া হয়েছে৷  সয়াবিনের ওপর থেকে শতকরা ২০ ভাগ ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়েছে৷ কিন্তু বাজারে এর প্রভাব খুব বেশি পড়েনি৷ এর বাইরে ভোক্তা অধিদপ্তর ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ঢাকাসহ সারাদেশে অভিযান পরিচালনা করছে৷

‘সুযোগসন্ধানীরা ভোগ্যপণ্য স্টক করেছেন’

This browser does not support the audio element.

ভ্যাট প্রত্যাহারের ঘোষণার পর সয়াবিন তেলের দাম কিছুটা কমে এসেছে৷ তবে তা সহনীয় পর্যায়ে এখনো আসেনি৷

বাজারে খোলা সয়াবিন তেলের  দাম লিটারে ৪ থেকে ৫ টাকা কমেছে৷ কিন্তু সেটা প্রকৃত দামের চেয়ে অনেক বেশি৷ খোলা সয়াবিন তেলের প্রতি লিটারের সরকার নির্ধারিত দাম ১৪৩ টাকা৷ কিন্তু সেটা এখনো ১৬৫ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না৷ বোতলজাত সয়াবিনের দামও কমেছে৷ কিন্তু ভ্যাট প্রত্যাহারের পর বোতলজাত প্রতিলিটার সয়াবিন তেলের দাম ১৬৮ টাকা থেকে কমে ১৬০ টাকা হওয়ার কথা৷ কিন্তু এখনো তা ১৭০ টাকা লিটার বিক্রি হচ্ছে৷

কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের(ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসেন বলেন, ‘‘সরকার আসলে ব্যবসায়ীদের এতদিন আশকারা দেয়ার ফলে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে৷ তারা সরকারের নির্দেশ মানছে না৷ আমদানি পণ্যের দুই মাসের মজুত থাকার পরও তারা ইচ্ছেমত দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে৷ আর এর প্রভাব পড়ছে সব কিছুর ওপর৷ ভোজ্য তেলের দাম বাড়িয়ে দেয়ায় অন্য পণ্যের ব্যবসায়িরা মনে করছেন আমরা বসে থাকব কেন? তারাও দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন৷ আসলে সরকারের কোনো মনিটরিং নেই৷ কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই৷’’

তার কথা, ‘‘ভ্যাট প্রত্যাহারের পর সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৩০ টাকা কমা উচিত ছিলো৷ কিন্তু কমেছে চার-পাঁচ টাকা৷ ব্যবসায়ীরা এখন বলছে আগে আমরা বেশি দামে কিনেছি তাই কমাতে পারছি না৷ তো কম দামে কেনা তেলের দাম তারা কেন বাড়ালো? এগুলো কে দেখবে?’’

তবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর মনে করে, ভ্যাট প্রত্যাহারের প্রভাব বাজারে পড়তে আরো সময় লাগবে৷ কারণ এখনো এসআরও জারি হয়নি৷ আর সে অসাধু সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে৷ সিন্ডিকেট ভেঙে গেলে বাজার আরো সহনীয় হবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ