বাড়িতে বসেই দায়িত্ব সামলাচ্ছেন মন্ত্রীরা
২৫ মার্চ ২০২০![](https://static.dw.com/image/52905653_800.webp)
করোনা ভাইরাসে আতঙ্কিত গোটা দেশ৷ সতর্কতামূলক বন্দোবস্ত হিসেবে ইতিমধ্যে সবকটি রাজ্য ৩১ মার্চ পর্যন্ত সম্পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা করেছে৷ কিন্তু অবাধ্য জনতাকে কাবু করতে না পেরে শেষমেশ দিল্লি ও পাঞ্জাব-সহ কয়েকটি রাজ্যে কার্ফু জারি করা হয়েছে৷ আগামী কয়েকদিনের মধ্যে আরো কয়েকটি রাজ্যে কার্ফু জারি হতে পারে৷ এতসবের মধ্যে অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, সমগ্র দেশে যখন লকডাউন চলছে, তখন সরকার, প্রশাসন চলছে কীভাবে?অথবা মন্ত্রী এবং নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি সাংসদরাই বা কী করছেন?
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দপ্তর সামলাচ্ছেন জনকল্যাণ মার্গে নিজের আবাসন থেকেই৷ ১৯ মার্চ ও ২৪ মার্চ দু-বার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন সেখান থেকেই৷ স্বরষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও ঝুঁকি নিচ্ছেন না৷ সাউথ ব্লকে মন্ত্রকে আসা বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি৷ আধিকারিক, আমলাদের ডেকে পাঠিয়ে বৈঠক সারছেন কৃষ্ণমেনন মার্গের বাড়িতে৷ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন দিল্লিতে নিজের বাড়িতে বসেই দপ্তর সামলাচ্ছেন৷ নিজের বাড়িতে স্বেচ্ছাবন্দি রয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভি মুরলীধরণ৷ বেশিরভাগ মন্ত্রী রাজধানী দিল্লিতে রয়েছেন৷ তবে, দপ্তরে খুব একটা যাচ্ছেন না৷ পরিস্থিতি পর্যালোচনা, প্রয়োজনে জরুরি নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে বাড়ি থেকেই৷ স্বাস্থ্যমন্ত্রকের উচ্চপদস্থ আধিকারিক থেকে ঝাড়ুদাররাও প্রায় ২৪ ঘন্টা ডিউটি করছেন৷ ঘন ঘন বৈঠক হচ্ছে শাস্ত্রী ভবনে৷ অন্য মন্ত্রক আপাতত ‘বাড়ি থেকে কাজ'চালু করেছে৷ তবে, ঘরে বসে থাকার উপায় নেই পুলিশের৷ কোথাও লকডাউন, কোথাও কার্ফু৷ একশ্রেণির মানুষ কোনো কিছুই মানছে না৷ তাই মানুষের প্রাণ বাঁচাতে মানুষকে একপ্রকার জোর করেই ঘরবন্দি করার দায় বর্তেছে পুলিশের ওপর৷ রাস্তায় নেমে টহল দেওয়া তো বটেই, সেইসঙ্গে আইন লঙ্ঘনকারীদের শায়েস্তা করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে পুলিশকর্মীদের৷
লকডাউন ঘোষণার আগেই স্বেচ্ছায় নিজেদের গৃহবন্দি করে নিয়েছিলেন সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন, সুখেন্দুশেখর রায়, মানস ভুঁইয়া, অনুপ্রিয়া প্যাটেল ও দুষ্মন্ত সিং৷ এই দুষ্মন্ত ভারতীয় জনতা পার্টির সাংসদ৷ তিনি বলিউডের গায়িকা কনিকা কাপুরের সঙ্গে একটি পার্টিতে যোগ দিয়েছিলেন৷ কনিকা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পেয়েই দুষ্মন্তের মতো অনেকে নিজেদের গৃহবন্দি করে রেখেছেন৷ তারপর সরকার একের পর এক রাজ্যে লকডাউন ঘোষণা করেছে৷ জারি হয়েছে কার্ফুও৷
তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার পেশায় চিকিৎসক৷ দিন কয়েক আগে তিনি যখন সংসদ ভবনে ঢুকতে যাচ্ছিলেন, থার্মাল স্ক্রিনিংয়ে শরীরে তাপমাত্রা ধরা পড়ে৷ সঙ্গে সঙ্গে তাকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলেন নিরাপত্তারক্ষীরা৷ বেরিয়ে যেতে হয় সংসদ থেকে৷ এখন তিনি কলকাতায় ফিরেছেন৷ বাড়িতেই রয়েছেন৷ তিনি জানালেন, ‘‘মাঝে মধ্যেই দপ্তরে গিয়ে বসতে হচ্ছে৷ আসলে এলাকার সাধারণ মানুষ কোনো সমস্যায় পড়লে পাশে দাঁড়াতে হয়৷ তবে, একজন চিকিৎসক হিসেবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মানুষের সঙ্গে কথা বলছি৷''
স্ত্রীর সঙ্গে বাড়িতে বসে দিনভর বই পড়ছেন আর রবীন্দ্রসংগীত শুনে দিন কাটাচ্ছেন রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়৷ কিছুতেই বাড়িতে থাকতে পারছেন না সাংসদ মানস ভুঁইয়া৷ স্ত্রী গীতাকে সঙ্গে নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে বসছেন৷ সর্বক্ষণ রোগী দেখে চলেছেন সাংসদ শান্তনু সেন৷ তিনি অল ইন্ডিয়া মেডিকেল অ্যাযোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট৷ করোনার সংকটজনক পরিস্থিতিতে দায়িত্ব কয়েক গুন বৃদ্ধি পাওয়ায় স্নান-খাওয়ারও সময় নেই শান্তনুর৷