1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বায়ার্ন থেকে রেয়ালে!

অরুণ শঙ্কর চৌধুরী (এএফপি, এপি)২৭ মে ২০১৩

ওয়েম্বলেতে বায়ার্ন ডর্টমুন্ডকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছে৷ রবিবার জার্মান কাপের ফাইনালে জিততে পারলে বায়ার্নের ত্রিমুকুট হবে৷ কিন্তু আসল খবর হলো: বায়ার্নের বিদায়ী কোচ ইয়ুপ হাইনকেস নাকি রেয়াল মাদ্রিদে যেতে ইচ্ছুক৷

Bayern Munich players and staff celebrate with the trophy after winning the Champions League final soccer match at Wembley stadium in London May 25, 2013. Bayern Munich beat Borussia Dortmund 2-1 in an all-German Champions League final on Saturday to become European champions for the fifth time. REUTERS/Michael Dalder (BRITAIN - Tags: SPORT SOCCER)
ছবি: Reuters

চলতি মরশুমে বায়ার্নের কাহিনি যদি একটি মহাকাব্যের মতো হয়, তবে সেই মহাকাব্যের আসল নায়ক ৬৮ বছর বয়সি ইয়ুপ হাইনকেস৷ তাঁর খেলোয়াড়ি জীবন থেকে শুরু করে কোচ হিসেবে উত্থান-পতন, এ সব কিছুর এতো চর্ব্বিত-চর্বণ হয়ে গেছে যে, তার পুনরাবৃত্তি করার কোনো প্রয়োজন নেই৷ তবে ইয়ুর্গেন ক্লিনসমানকে বিদায় দেবার পর বায়ার্নের বস উলি হোয়েনেস সরাসরি বায়ার্নের এক পুরনো কোচ – এবং হোয়েনেসের নিজের বন্ধুপ্রতিম ইয়ুপ হাইকেসকে টেলিফোনে আহ্বান জানান: এসো ভাই, নাও সামলাও৷

অপরদিকে হাইনকেস যে মিউনিখে ফিরেই কিছু ভেলকি দেখাতে শুরু করেন, এমন নয়৷ কিন্তু গতবছর ঐ আলিয়ানৎস অ্যারেনাতেই চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে চেলসির কাছে পেনাল্টি শুটআউটে হারার পর বায়ার্নের প্লেয়ারদের যেন রোখ চেপে যায়৷ তারা একাই যেন বিশ্বজয় করতে যাবে৷ সেই সময়ে যদি আবার হাইনকেসের মতো একজন অভিজ্ঞ, প্রবীণ, রেয়ালের সঙ্গে একবার চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতা, যুগপৎ পিতৃপ্রতিম কোচ এসে লাগাম ধরেন, তবে এ সব প্রতিভাধর ছেলেদের আর পায় কে!

চলতি মরশুমে বায়ার্নের কাহিনি যদি একটি মহাকাব্যের মতো হয়, তবে সেই মহাকাব্যের আসল নায়ক ৬৮ বছর বয়সি ইয়ুপ হাইনকেসছবি: picture-alliance/dpa

হাইনকেসের স্ট্র্যাটেজি

ভাষ্যকাররা বার বার যে কথাটা বলছেন সেটা হলো, হাইনকেস মূলত কা-কে মাঠে নামাচ্ছেন অথবা নামাচ্ছেন না, শুধু সে টুকু লাগাম টানা কি ছাড়া দিয়েই তিনি বায়ার্নের জুড়িগাড়ি হাঁকিয়ে গেছেন৷ যার শ্রেষ্ঠ উদাহরণ হল খোদ আরিয়েন রবেনকে বেঞ্চে বসিয়ে রেখে টোনি ক্রোসকে অগ্রাধিকার দেওয়া৷ পরে টোনি ক্রোসের ইনজুরিই আবার রবেনকে মাঠে নামার সুযোগ করে দেয়৷ এবং রবেন সে সুযোগের চরম সদ্ব্যবহার করে ঋণ পরিশোধ করেন চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে: বায়ার্নের দু'টি গোলের মধ্যে প্রথমটি হয় তাঁর পাসে; দ্বিতীয়টি তিনি নিজেই করেন, রিবেরির হিল করা পাস থেকে৷

হাইনকেসের কথায় ফিরতে গেলে: হাইনকেস দেখিয়েছেন ফুটবলার হিসেবে অভিজ্ঞতার সঙ্গে মানুষ হিসেবে অভিজ্ঞতার গাঁটছড়া পড়া প্রয়োজন৷ ইয়ং ছেলেপিলেদের মধ্যে প্রতিযোগিতার ভাবটা প্রবল হয়, আর হয় তাদের মান-অভিমান৷ মান রাখতে তারা জান লড়াতে প্রস্তুত৷ আবার পরস্পরের সঙ্গে প্রতিযোগিকার মাধ্যমেই তারা একক প্লেয়ার থেকে একটা টিম হয়ে ওঠে, মাঠে নামলে যে টিম হয় মোক্ষম অস্ত্র৷

হাইনকেসের প্রতিশোধ?

বায়ার্ন এ মরশুমে ২৫টা বুন্ডেসলিগার রেকর্ড ছুঁয়েছে, নয়ত ভেঙেছে৷ এবার জার্মান কাপ জিতলে তারাই হবে ত্রিমুকুট জয়ী প্রথম জার্মান দল৷ হাইনকেসের এই ‘গ্লোরিয়াস সানসেট'-এর পিছনে কিন্তু খানিকটা ক্ষোভও লুকিয়ে আছে, বলে পর্যবেক্ষকদের ধারণা৷ বায়ার্নের ‘কু' হিসেবে পেপ গুয়ার্দিওলাকে বার্সেলোনা থেকে মিউনিখে তুলে আনার কথাটা হাইনেকেসের বর্তমানেই, তাঁকে প্রায় বাদ দিয়ে যেভাবে ঘোষণা করা হয়, তা-তে হাইনকেসের মতো মানুষ – এবং কোচের – বিশেষ খুশি হবার কথা নয়৷

রবেনের গোলে জয় নিশ্চিত করে বায়ার্নছবি: Reuters

অপরদিকে আগুন নেভাতে আসা দমকলের মতো হাইনকেসের মিউনিখে শেষ সিজনের আশ্চর্য় সাফল্য নিশ্চয় তাঁর চেয়ে ২৬ বছরের ছোট পেপ গুয়ার্দিওলাকে চিন্তায় ফেলেছে: আরো ক্ষুদ্র মৌচাক রচো দেখে যাই৷ ব্যাপারটা তাও সেখানে শেষ করে দেওয়া যেতো যদি না বোমাটা ফাটতো একেবারে মাদ্রিদ থেকে: না, রেয়াল মাদ্রিদ নয়, কিন্তু রেয়াল মাদ্রিদ সংক্রান্ত বটে৷ খবরটা ফাঁস করেছেন হাইনকেসের স্প্যানিশ এজেন্ট এনরিকে রাইয়েস৷

প্রস্তাবটা কার?

রাইয়েস একটি স্প্যানিশ রেডিও স্টেশনকে বলেছেন, ‘‘ইয়ুপ রেয়াল মাদ্রিদে ফিরতে চান এবং সেখানে ফিরতে পারলে খুব খুশি হবেন৷ (রেয়ালের প্রেসিডেন্ট) ফ্লোরেন্তিনো পেরেস আমাদের টেলিফোন করলে আমরা নিশ্চয় তাঁর অফার অ্যাক্সেপ্ট করব৷ (ইয়ুপ হাইনকেস) এখন শুধু বুন্ডেসলিগা থেকে রিটায়ার করছেন৷''

রাইয়েস আরো একটি মারাত্মক কথা যোগ করেছেন: ‘‘হাইনকেস নয়, পেরেসকেই প্রস্তাবটা গ্রহণ করতে হবে৷'' রেয়াল মাত্র গত সপ্তাহে কনফার্ম করেছে যে, জোসে মুরিনিও এ মরশুমের শেষে মাদ্রিদ ছাড়ছেন৷ তবে জোর গুজব যে, প্যারি সাঁ-জার্মার কোচ কার্লো আন্সেলোত্তি এখনও পেরেস এবং মাদ্রিদের ফেবারিট৷ তবুও, রাইয়েসের কথা যদি সত্য হয়, তা হলে রেয়ালকে হাইনকেসের ‘‘প্রস্তাবই'' এক হিসেবে বায়ার্নকে কলা দেখানো৷

ছবিই বলে দিচ্ছে সবকিছুছবি: Reuters

হাইনকেস যেন বলছেন: এর নাম ফুটবল৷ আমি স্প্যানিশ ফুটবলকে চিনি, রেয়ালকেও চিনি৷ এ বছর বায়ার্ন, ডর্টমুন্ড, জার্মান ফুটবলের বছর গেল – কিন্তু আগামী বছর? বায়ার্ন গুয়ার্দিওলাকে আনছে কোচ করে৷ বুন্ডেসলিগায় বায়ার্নের যে আধিপত্য, আভিজাত্য, অর্থবল, তা অন্য কোনো দলের নেই৷ কাজেই বায়ার্ন ডর্টমুন্ডের মারিও গোয়েটৎসে, এমনকি রবার্ট লেভান্ডোভস্কিকে চাইলেই ভাঙিয়ে আনতে পারে৷ কিন্তু তার মানেই ইউরোপীয় ফুটবলে বায়ার্নের কায়েমি শাসন, কায়েমি বন্দোবস্ত নয়৷ আরো বড় কথা, বায়ার্নের স্ট্র্যাটেজিই ডর্টমুন্ডের কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপের মতো তরুণ তুর্কিদের বাতলে দেবে, তৃণমূলের ফুটবল খেলে কিভাবে বায়ার্নের মতো পরাশক্তিদের ঠেকানো যায়৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ