1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বায়ুশক্তি উৎপাদনের ক্ষেত্রে অভাবনীয় উন্নতির সম্ভাবনা

১ ডিসেম্বর ২০২০

সাহস না করলে সাফল্য মেলে না – এমন বুলি সম্বল করে সুইজারল্যান্ডের এক উদ্ভাবক এক অভাবনীয় উইন্ড টারবাইন তৈরি করেছেন৷ বাস্তবেও সেটি পুরোপুরি কার্যকর করে তুলে তিনি সাফল্য পেতে বদ্ধপরিকর৷

উইন্ড টার্বাইন
ছবি: Paul Trummer/TravelLightart/picture-alliance

এক দিকে প্রচলিত উইন্ড টারবাইন, অন্যদিকে সম্ভবত ভবিষ্যতের টারবাইন তিনটি রটার ব্লেড নিজস্ব অক্ষের উপর খাড়া হয়ে ঘুরতে থাকে৷ কিন্তু সমস্যা হলো, এখনো পর্যন্ত কেউ ১০০ মিটার উঁচু ভার্টিকাল টারবাইন দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে নি৷

তবে উদ্ভাবক হিসেবে পাট্রিক রিশটার ও তাঁর টিম এর সমাধানসূত্রের খুব কাছাকাছি এসে গেছেন বলে মনে করেন৷ ছয় বছরেরও বেশি সময় ধরে নেহাত শখের বশে তিনি এই কাঠামো নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করেছেন৷ বিজ্ঞানীদের সাহায্যে আরও ছয় বছর পর তিনি একটি প্রোটোটাইপ তৈরি করতে পেরেছেন৷ রিশটার বলেন, ‘‘অনেক দিন ধরে আমরা এই লক্ষ্যে কাজ করছি৷ এটি আমাদের প্লান্টের গুরুত্বপূর্ণ অংশ৷ ছাঁচ থেকে কী বের হবে, আমরা প্রথমবার তা দেখতে পাবো৷’’

সুইজারল্যান্ডের জুরিখ শহরের কাছে একটি হ্যাঙারের মধ্যে প্রোটাটাইপ তৈরি করা হয়েছে৷ রটার ব্লেডের প্রথম অংশ ২৭ মিটার দীর্ঘ ও ২ টন ভারি৷ বাস্তবে পরীক্ষার জন্য সেটি প্রস্তুত৷ বিশাল এক ছাঁচের মধ্যে ফাইবার গ্লাসের তৈরি রটার ব্লেড এবং কৃত্রিম রেজিন বা রজন জুড়ে চেপে দেওয়া হয়েছে৷

খাড়া এই উইন্ড টারবাইন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পেয়েছে৷ জার্মানির পশ্চিমে নর্থরাইন ওয়েস্টফেলিয়া রাজ্যে ১০৫ মিটার উঁচু টাওয়ার গড়ে তোলা হয়েছে৷ তার উপর টার্বাইন লাগিয়ে উদ্ভাবক হিসেবে পাট্রিক বিশেষ করে আশেপাশের পরিবেশের জন্য সেটির কার্যকারিতা প্রমাণ করতে চান৷ তিনি মনে করিয়ে দেন, ‘‘এটি যেমন পাখির জন্যও মনোরম৷ পাখি এর অস্তিত্ব টের পায়, বাদুড়ও এটির আশেপাশে ওড়ে৷ ফলে পাখি আহত হয় না৷ প্রচলিত উইন্ড টারবাইনের তুলনায় এটি তিন গুণ কম শব্দ করে, যেটি অত্যন্ত বড় বিষয়৷ খুব কাছে এলেও প্রায় কোনো শব্দ শোনা যায় না৷ এই টাওয়ার ধীর গতিতে ঘুরে চলে বলে এমন অনেক জায়গায় সেটি বসানো সম্ভব, যেখানে প্রচলিত উইন্ড টারবাইন একেবারেই উপযুক্ত নয়৷’’

২০১১ সালে সুইজারল্যান্ডের ড্যুবেনডর্ফ বিমানবন্দরের রানওয়েতে বিশেষ এক পরীক্ষামূলক দৌড়ের সময়ে পাট্রিকের প্রকল্প সবার সামনে চলে এসেছিল৷

২০১২ সালে দ্বিতীয় পরীক্ষার সময় তিনি কিছুটা দমে গিয়েছিলেন৷ ১২টি ডানাসহ উইন্ডমিল তেমন শক্তি উৎপাদন করতে পারে নি৷ বিশেষ করে ঝড়ের কারণে বস্তুটির ক্ষতি হওয়ায় অনেকের মতো পাট্রিক রিশটারও প্রায় পরাজয় স্বীকার করতে বসেছিলেন৷ সেই অভিজ্ঞতা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘গড়ে তোলার দশ দিন পর এমন বিপর্যয় সত্যি হতাশ করেছিল৷ এর ফলে আমরা অনেকটা পিছিয়ে পড়েছিলাম৷ শনিবার সকালে পুলিশের ডাকে ঘুম ভাঙা বেশ অদ্ভুত অভিজ্ঞতা বটে৷’’

আট বছরের গবেষণা ও ল্যাবে অনেক পরীক্ষার পর পাট্রিক রিশটার ও তার টিম রটার ব্লেডের সমস্যার সমাধান করতে পারলেন৷ আজও তাঁরা বাতাসের গতিপথ অনুযায়ী সবকিছু স্থির করেন৷ তবে মাত্র তিনটি মোটর সেই দায়িত্ব পালন করে৷ এই সমাধানসূত্রই উদ্ভাবনের মূল বৈশিষ্ট্য৷ পাট্রিক রিশটার বলেন, ‘‘যে কোনো অবস্থানেই রটার ব্লেড যাতে আদর্শ অবস্থায় থাকে, মোটর তা নিশ্চিত করে৷ ফলে বাতাসের প্রবাহ রটার ব্লেডে ফসকে যায় না৷ রটার ব্লেডও গোটা কাঠামোটিকে সব সময়ে একই দিকে টেনে নেয়৷ এভাবে সেটি অত্যন্ত ধীর গতিতে ও কম শব্দ করে ঘোরে এবং এমন প্লান্ট বড় করে তোলা যায়৷’’

এই প্রোটোটাইপ সম্বল করে পাট্রিক এবার বাজারে পা রাখতে চান৷ এশিয়া ও অ্যামেরিকায় প্রকল্পের পরিকল্পনা শুরু হয়ে গেছে৷ প্রোটোটাইপ তৈরি করতে তিনি ঝুঁকি নিয়ে এক কোটি আশি লাখ ইউরো ব্যয় করেছেন৷ ফলে সাফল্যের চাপ কম নয়৷ পাট্রিক রিশটার মনে করেন, ‘‘সাহস না করলে কিছুই মেলে না৷ সারা জীবন পথপ্রদর্শক হতে চেয়েছিলাম৷ বাবা-মাও সে রকমই কিছু করতে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন৷ আগে কেউ করে নি, আমি সব সময়ে সত্যি সে রকম কিছুর খোঁজ করতাম৷ তারপর নিজেই সে রকম চেষ্টা করলে এবং প্রচলিত উইন্ড মিলের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করলে হাল ছেড়ে দেবার বাসনা জাগে৷ তবে এমন সাফল্যের মুহূর্ত সে সব ম্লান করে দেয়৷’’

পাট্রিক রিশটার আর পিছনে ফিরে দেখছেন না৷ সাফল্যের সঙ্গে প্রথম ভার্টিকাল উইন্ড প্লান্ট নির্মাণের কাজ সবে শেষ হয়েছে৷ ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে সেটি চালু হয়ে গেছে৷

মাটিয়াস টোমি/এসবি

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ