জার্মানিতে জ্বালানির অন্যতম উৎস হলো বায়ু বিদ্যুৎ৷ তবে বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত ফ্রাংকফুর্ট বিমানবন্দরের কাছে একটি বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপন নিয়ে সমস্যা দেখা দিয়েছে৷
বিজ্ঞাপন
‘আবোভিন্ড' নামে একটি বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রকৌশলী অলিভার বিবার৷ গত কয়েক মাস ধরে তিনি ফ্রাংকফুর্ট আম মাইনের একটি ‘উইন্ডপার্ক' নিয়ে চিন্তিত৷ কেননা বিমানবন্দরের কাছে হওয়ার কারণে সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে কোম্পানিকে৷
এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল কর্তৃপক্ষ মনে করে এর ফলে বিমান চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে৷ জার্মানির এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল কর্তৃপক্ষ বা ডিএফএস-এর মুখপাত্র আক্সেল রাব বলেন, ‘‘একটা বিমান যখন এয়ারপোর্টের কাছে চলে আসে, তখন বিমানবন্দরে ট্রাফিক বেশি থাকলে সাবধান হয়ে যেতে হয়৷ লক্ষ্য রাখতে হয়, যেন দুটো বিমানে সংঘর্ষ না বাধে, দুর্ঘটনা না ঘটে৷ এই বিষয়টা আমাদের খুব ভালোভাবে খেয়াল রাখতে হয়৷''
সঠিক পথে থাকতে বিমানকে নিয়মিতভাবে ন্যাভিগেশন সিগনাল রিসিভ করতে হয়৷ তাই এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারকে সতর্ক থাকতে হয়৷ কিন্তু উইন্ড টারবাইনের কারণে সিগনাল পরিবর্তন হতে পারে৷ সেক্ষেত্রে বিমান ভুল সিগনাল পেতে পারে৷ এজন্য প্রতিটা ট্রান্সমিটারে একটা ‘নিরাপত্তা জোন' থাকে, যেটা উইন্ড টারবাইনের মতো বাধা সৃষ্টিকারী বিষয়গুলো অকার্যকর করে দেয়৷
বাংলাদেশে সৌরশক্তির ব্যবহার দ্রুত বাড়ছে
বাংলাদেশে গ্রামীণ শক্তি কার্যত নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিপ্লব এনেছে৷ ইতোমধ্যে দশ লাখ সোলার সিস্টেম স্থাপনের রেকর্ড গড়েছে প্রতিষ্ঠানটি৷ ৬৪ জেলাতেই চলছে তাদের কার্যক্রম৷ এই বিষয়ে আমাদের ছবিঘর৷
ছবি: MUNIR UZ ZAMAN/AFP/Getty Images
সৌরবিপ্লব
বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে কার্যত বিপ্লব এনেছে গ্রামীণ শক্তি৷ গত বছরের শুরুতে দশ লাখ সোলার সিস্টেম স্থাপনের রেকর্ড গড়ে তারা৷ ২০১৫ সাল নাগাদ আরো দশ লাখ সোলার সিস্টেম স্থাপনের রেকর্ড গড়তে চায় তারা৷
ছবি: picture-alliance/dpa
শুরুর কথা
বাংলাদেশে গ্রামীণ শক্তির যাত্রা শুরু হয় ১৯৯৬ সালে৷ নবায়নযোগ্য জ্বালানির সুবিধা সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি৷ শান্তিতে নোবেলজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান৷
ছবি: picture-alliance/dpa
৬৪ জেলায় কার্যক্রম
বাংলাদেশে ৬৪ জেলাতেই কাজ করছে গ্রামীণ শক্তি৷ ২০১৩ সালে প্রকাশিত হিসেব অনুযায়ী, ইতোমধ্যে ৫০ হাজার গ্রামে সেবা পৌঁছে দিয়েছে সংস্থাটি৷ গ্রামীণ শক্তির মাধ্যমে পাওয়া সৌর প্যানেল ব্যবহার করে লাভবানের সংখ্যা আট মিলিয়নের বেশি৷
ছবি: MUNIR UZ ZAMAN/AFP/Getty Images
শুধু গ্রামীণ শক্তি নয়
গ্রামীণ শক্তি ছাড়াও আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে সৌরশক্তি সেবা প্রদান করছে৷ রয়েছে সরকারি উদ্যোগও৷ সরকারি বিভিন্ন ভবনে সৌরশক্তি ব্যবহারের উদ্যোগও শুরু হয়েছে৷ ঢাকায় পরিসংখ্যান ব্যুরো ভবনের ছাদে সোলার প্যানেল বসানো হয়েছে গত বছর৷ (ফাইল ফটো)
ছবি: MUNIR UZ ZAMAN/AFP/Getty Images
জাতীয় গ্রিডের জন্য সৌরশক্তি
সৌরশক্তি থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে বেসরকারি সংস্থা ‘রহিমআফরোজ রিনিউবেল এনার্জি’৷ প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যে ঢাকার সচিবালয়ের ছাদে সোলার প্যানেল বসিয়েছে৷ তাদের উৎপাদিত বিদ্যুৎ মেগাওয়াট প্রতি নির্দিষ্ট দামে কিনে নেবে ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কর্তৃপক্ষ৷ (ফাইল ফটো)
ছবি: ROBYN BECK/AFP/Getty Images
সহায়তায় জার্মানি
বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিশেষ করে সৌরশক্তির ব্যবহার বাড়াতে সহায়তা করছে জার্মান আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থা জিআইজেড৷ সোলার প্যানেলে মূল্য বেশি হওয়ায় শুরুতে ভর্তুকিও দিয়েছে জিআইজেড৷ তবে কিস্তিতে সোলার প্যানেল কেনার সুবিধা থাকায় প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ সহজেই সেগুলো ব্যবহার করতে পারছে৷ (ফাইল ফটো)
ছবি: Centro de Energía Chile
লক্ষ্য অর্ধেক জনশক্তি
২০২১ সাল নাগাদ বাংলাদেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠীর কাছে সৌরশক্তির সুবিধা পৌঁছে দিতে চান এই খাতের সংশ্লিষ্টরা৷ ডয়চে ভেলেকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে একথা জানান বাংলাদেশে সৌরশক্তি জনপ্রিয় করার অন্যতম কারিগর দীপাল চন্দ্র বড়ুয়া৷
ছবি: MUNIR UZ ZAMAN/AFP/Getty Images
7 ছবি1 | 7
তবে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষণ কর্তৃপক্ষের অধ্যাপক ড. নিকোলাউস হ্যার্মান বলেন, ‘‘টারবাইনগুলো তৎক্ষণাৎ বড় সমস্যার সৃষ্টি করে, বিষয়টা এমন নয়৷ তবে অতিরিক্ত কিছু ঝামেলা হতে পারে, যা নির্ভর করে এর পরিমাণের উপর৷ যেমন রাস্তায় যদি লেন ঠিক করে দেয়া চিহ্নগুলো না থাকে, তাহলে যে দুর্ঘটনা ঘটবেই, ব্যাপারটা সেরকম নয়৷ তবে এর ফলে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হতে পারে৷''
বিমানে থাকা কম্পিউটার ভুল সিগনাল ঠিক করতে পারে৷ কিন্তু উইন্ড টারবাইনের কারণে সৃষ্ট বাধা দূর করা কঠিন৷ ফ্রাউয়েনহোফার ইনস্টিটিউট ফর কমিউনিকেশন টেকনলজিতে এ বিষয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে৷ ইনস্টিটিউটের ড. স্টেফান হাওলিটৎস্কা বলেন, ‘‘টারবাইনগুলো বাতাসের গতি অনুযায়ী বিভিন্নভাবে ঘুরতে থাকে৷ এটা বিমান চলাচলের নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ৷''
বড় বিমানবন্দরের কাছে উইন্ড টারবাইনের উপস্থিতি বিমান চলাচলে নিরাপত্তার জন্য এক ধরনের হুমকি৷ তাই অলিভার বিবারকে তাঁর বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ হয়ত বন্ধ রাখতে হতে পারে৷