বায়ো-ডিজেলে ভারতের সাফল্য
২৪ মে ২০১৩জ্বালানি নিরাপত্তা, খনিজ তেলের ওপর অত্যধিক নির্ভরতা, ক্রম হ্রাসমান ফসিল তেলের সঞ্চয়, লাগাতার কার্বন নির্গমন, বিশ্ব উষ্ণায়নে তার নেতিবাচক প্রভাবের প্রেক্ষাপটে দেশ-বিদেশের বিজ্ঞানী আর প্রযুক্তিবিদরা এমন এক বিকল্প জ্বালানি উদ্ভাবনে কাজ করে চলেছেন, যা হবে নবায়নযোগ্য এবং পরিবেশ অনুকূল৷
সেই দিশায় দিল্লির কাছে ফরিদাবাদে ইন্ডিয়ান অয়েল কোম্পানির (আইওসি) গবেষণা ও উন্নয়ন বিভাগ জাট্রোফা নামক গাছের তেল থেকে বায়ো-ডিজেল তৈরির এক প্রযুক্তি উদ্ভাবনেই শুধু সফল হয়নি, পেট্রোলিয়াম শোধনাগারে বাণিজ্যিকভাবে তা প্রক্রিয়াজাত করে বায়ো-ডিজেল উৎপাদনেও সক্ষম হয়েছে৷ ইন্ডিয়ান অয়েল এবং ছত্তিসগড় রিনিউএবল এনার্জি ডেভালেপমেন্ট অথরিটির যৌথ সংস্থা ক্রিডা এজন্য মোট ২০০ টন জাট্রোফা তেল সরবরাহ করেছে৷
কী দিয়ে তৈরি হয় বায়ো-ডিজেল? বায়ো-ডিজেল সাধারণত তৈরি হয় ভেজিটেবল তেলবীজ থেকে৷ যেমন, রেপসিড, সয়াবিন বীজ, সূর্যমুখী ফুলের বীজ, পশু চর্বি এবং জাট্রোফা নামক এক বিষাক্ত গুল্মের ফল থেকে৷ বায়ো-ডিজেল জীবাশ্ম তেলের সঙ্গে মিশিয়ে পরিবহন শিল্পেও ব্যবহার করা যায়৷ বায়ো-ডিজেল পরিবেশ অনুকূল তো বটেই, কৃষিকাজেও এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে৷ বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে, এক কিলো বায়ো-ডিজেল তিন কিলো কার্বন নির্গম কম করে৷ যা প্রচলিত ডিজেলের তুলনায় ৬০ থেকে ৮০ ভাগ কম৷
অনেক গরিব দেশে বায়ো-ডিজেলের জন্য উর্বর জমিতে অ-ভোজ্য ভেজিটেবল তেলের চাষ বাড়িয়ে চলেছে বেশি দাম পাবার আশায়৷ যার ফলে ভোজ্য ভেজিটেবল তেলের যোগান কমে যাচ্ছে৷ কিন্তু জাট্রোফা চাষ করা যায় অনুর্বর জমিতে৷
ভারত সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগ জাট্রোফা ফলের শুকনো খোসা থেকে তেল নিষ্কাশনের জন্য কয়েকটি ইউনিট বসিয়েছে উত্তরপ্রদেশে৷ কী করে তেল বের করতে হয়, তার টেকনিক কৃষকদের হাতে-কলমে শেখানো হচ্ছে৷ সরকার এই সব ইউনিট বসাতে আর্থিক, কারিগরি ও অন্যান্য পরিকাঠামো সুবিধা দিচ্ছে৷ জাট্রোফা বীজ ও ফল গুঁড়ো করার পর বাই-প্রোডাক্ট হিসেবে পাওয়া যায় গ্লাইসেরিন৷ জাট্রোফা গুঁড়ো থেকে খইল বানিয়ে জমিতে জৈব সার হিসেবে ব্যবহার করা যায়৷