নতুনদিল্লি বইমেলা
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১২আজকের যুগে বই
কে বলে অডিও-ভিস্যুয়ালের যুগে বই পড়া কমে যাচ্ছে? নতুনদিল্লি বিশ্ব বইমেলা অন্তত সেকথা বলছেনা৷ সব বয়সের বই অনুরাগীদের ভিড় দেখার মত, বিশেষ করে কিশোর কিশোরীদের৷ এবারের মেলায় সমকালীন শিশু সাহিত্য একটা বড় জায়গা জুড়ে আছে৷ আছে ১৫টি ভাষায় সাহিত্য, বিজ্ঞান, ধর্ম, পরিবেশ, নাটকের বিশাল সম্ভার৷ আছে মোবাইল সাহিত্য- শ্রবণ ডিভাইস৷
দিল্লি বইমেলায় বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়েছে রবীন্দ্রনাথের সার্ধ শতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে রবীন্দ্র রচনাবলি, রাজধানী হিসেবে দিল্লি শহরের শতবার্ষিকী, দিল্লি প্যাভেলিয়ান এবং ভারতীয় সিনেমার শতবার্ষিকী প্যাভেলিয়ান৷ তুলে ধরা হয়েছে সিনেমা ও সাহিত্যের সাযুজ্য নিয়ে প্রায় ৪০০ বই৷
বইমেলায় জার্মানি
বইমেলায় জার্মানি অংশ নিয়েছে সরকারিভাবে ডয়চে ভেলে তার অন্যতম৷ ১০টি জার্মান প্রকাশনা সংস্থা এসেছে৷ ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলার পক্ষ থেকে জার্মান প্যাভেলিয়ানের প্রতিনিধি বইমেলা সম্পর্কে ডয়চে ভেলেকে বললেন, খুবই বড় বইমেলা এটি৷ আমরা এনেছি শিশু সাহিত্য, সমকালীন সাহিত্য ও বিজ্ঞানের বই৷ মনে হয় অনেক ভারতীয় প্রকাশক জার্মান বই-এ আগ্রহী হবেন৷ একইভাবে অনেক ভারতীয় বই বিশেষ করে ইংরেজি বই প্রকাশে আগ্রহী হবে জার্মান প্রকাশক৷ অনেক ভারতীয় প্রকাশকের কাছে ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলার এক বিশেষ স্থান আছে৷
পশ্চিমবঙ্গের উপস্থিতি
পশ্চিমবঙ্গের পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার সমিতির কিশোর চৌধুরী বললেন, বাংলা বই-এর চাহিদা নেই একথা বলবোনা৷ তবে কম৷ আগেকার দিনের রবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্র, বঙ্কিম সাহিত্যের পাঠকরা চাইছেন, তরুণ প্রজন্মকে বাংলা বইয়ের দিকে টেনে আনতে৷
আরেকজন প্রকাশক গৌতম দের মতে, বাংলা বই-এর বাজার যে নেই, তা নয়৷ বড় বড় প্রকাশকরা বাংলা বই-এর বাজার প্রসারিত করার চেষ্টা করছে৷ তবে এটা তো ঘটনা যে, অডিও-ভিস্যুয়াল মিডিয়ার যুগে মানুষের পড়ার অভ্যাসটা কমে যাচ্ছে৷ মানুষ পড়ার চেয়ে টিভি দেখা পছন্দ করছে৷ এতে সে অনায়াসে বিষয়বস্তুর কাছে পৌঁছে যেতে পারছেন৷
সিনেমা ও সাহিত্যের মেলবন্ধন সম্পর্কে প্রকাশক গৌতম দে বললেন, ‘‘আপনি দেখবেন, যদি জিজ্ঞাসা করি রবীন্দ্রনাথের ঘরে বাইরে পড়েছেন? সে বলবে না পড়িনি, সত্যজিৎ রায়ের সিনেমায় দেখেছি৷ এমন কী পথের পাঁচালি পড়িনি দেখেছি৷'' এই সব মানুষের সংখ্যা বেশি৷
ফিল্ম সব সময় সাহিত্য থেকেই ধার করে বেশি৷ কাহিনির যে বুনট সেটাই চলচ্চিত্রের প্রাণ৷ সেই স্টোরিলাইনটা আসে সাহিত্য থেকে বলেন ৷
বইমেলার উদ্বোধন করে মানব সম্পদ বিকাশ মন্ত্রী কপিল সিব্বাল বলেন, দিল্লি বইমেলা আফ্রো-এশিয়ার বৃহত্তম বইমেলা৷ এই বইমেলা যাতে প্রতিবছর হয় তার জন্য তিনি আয়োজকদের কাছে আবেদন রাখেন৷ ভারত সম্ভবত একমাত্র দেশ, যেখানে ৪০টি ভাষায় বই প্রকাশিত হয়৷ তিনি বলেন, প্রযুক্তি ও ইন্টারনেটের যুগে ছাপা অক্ষরের বই পিছনের সারিতে বসবেনা৷ একে অপরের পরিপূরক হয়ে থাকবে৷
প্রতিবেদন: অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুনদিল্লি
সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন