কট্সওয়ল্ডস-কে বলা হয় ইংল্যান্ডের হৃদয়৷ চলুন, সেই ভেড়া আর পশম, সেই সঙ্গে অপূর্ব নিসর্গ আর দু'হাজার বছরের ইতিহাস মেশানো এলাকাটিকে একবার চোখে – ও চেখে দেখে আসা যাক!
বিজ্ঞাপন
ইংল্যান্ডের হৃদয়
02:54
ছবির বইয়ের মতো: কট্সওয়ল্ডস৷ ইংল্যান্ডের ঠিক মাঝামাঝি৷ এখানকার নিসর্গ আর স্থাপত্য নাকি জে আর আর টলকিয়েন-কে ‘‘দ্য লর্ড অফ দ্য রিংস'' লেখার প্রেরণা যুগিয়েছিল৷ দেখার মতো অনেক জায়গা রয়েছে, যেমন বাইবেরি গ্রামের একটি রাস্তা, আর্লিংটন রো, যা সপ্তদশ শতাব্দী যাবৎ অপরিবর্তিত; অথবা বুর্টন-অন-দ্য-ওয়াটার, যেখানকার ছোট ছোট খালগুলির জন্য জায়গাটির নাম হয়েছে ‘‘কট্সওয়ল্ডস-এর ভেনিস''৷
ছোট ছোট পাহাড়িতে ভরা কট্সওয়ল্ডস-কে ইংল্যান্ডের ‘‘হৃদয়'' বলে অভিহিত করা হয়ে থাকে৷ ১৯৬৬ সালে কট্সওয়ল্ডস-কে ‘‘অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এলাকা'' বলে ঘোষণা করা হয়৷ সাডেলি ক্যাসল-এর লেডি এলিজাবেথ অ্যাশকাম্ব বলেন, ‘‘এখানকার পাহাড়, নদী খুবই স্বাস্থ্যকর, তাই রোমানরা এখানে আসে ও কট্সওয়ল্ডস-এর সর্বত্র ভেড়া পালতে শুরু করে৷ গোটা রোমক সাম্রাজ্যের জন্য এখানে পশম উৎপাদন করা হতো৷''
২০১৬-র সেরা ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফার প্রতিযোগিতা
৯৫টি দেশ থেকে এসেছে ৫০ হাজারেরও বেশি ছবি৷ ৫২তম ‘ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফার অফ দ্য ইয়ার’ প্রতিযোগিতার বিজয়ী ঘোষণা করা হবে ১৮ই অক্টোবর৷ এখানে ফাইনালের জন্য বাছাই কিছু ছবি৷
ওয়দন রিকার্ডসেনের ছবি ‘স্প্লিটিং দ্য ক্যাচ’ বা ভাগাভাগি
সুমেরুর কাছে নরওয়ের সমুদ্রে একটি পুরুষ অর্কা বা কিলার হোয়েল একটি মাছধরার জাহাজের সংগ্রহে ভাগ বসাচ্ছে৷ অর্কাদের চেহারা যেমন ভীতিকর, বুদ্ধিতেও তারা দৃশ্যত তেমনি দড়৷
ধ্যায় শাহের ক্যামেরায় ‘গোল্ডেন রেলিক’ বা সোনার স্মৃতি
উত্তর-পূর্ব ভারতের উমানন্দ নামের মানুষের তৈরিএ কটি কৃত্রিম দ্বীপ এখন বিপন্ন গোল্ডেন লঙ্গুর বা হনুমানদের নিরাপদ আশ্রয়৷ এরা সাধারণত উঁচু গাছে চড়লেও, ফটোগ্রাফার এখানে মাটির বেশ কাছেই একটির দেখা পেয়েছেন৷
আলেক্সান্দ্র হেক-এর ‘ব্লাস্ট ফার্নেস’
হাওয়াই দ্বীপের কিলাওইয়া আগ্নেয়গিরিটি বিশ্বের সবচেয়ে সক্রিয় আগ্নেয়গিরিগুলির একটি৷ রাতের অন্ধকারে এক অদ্ভুত আতসবাজি! চারপাশে কোনো জীবজন্তু না থাকলেও, প্রকৃতি ও বন্যপ্রাণীদের উপর এর প্রভাব পড়ে বৈকি৷
ইয়াগো লিওনার্দো’র ‘দ্য কামোফ্লেজিং ফিশ’ বা ছদ্মবেশি মাছ
খেয়াল করে দেখবেন, একদল নয়, দু’দল মাছ! পেছনের মাছগুলোকে যেন প্রায় দেখাই যাচ্ছে না৷ এই মাছগুলোকে বলে লুকডাউন ফিশ; এদের আঁশ থেকে এক ধরনের প্রতিফলন ঘটে, যার ফলে এরা প্রায় অদৃশ্য হয়ে যায়৷ সামনের মাছগুলো সে তুলনায় আরো ঘন, ছাইরঙা৷
ছবি: Iago Leonardo
ইম্রে পোটিও-র ছবি ‘সোয়ার্মিং আন্ডার দ্য স্টার্স’ বা ‘তারাভরা আকাশের নীচে’
হাঙ্গেরির রাবা নদীতে বরাবরের মতোই মে মাসে অল্পজীবী পতঙ্গদের ঝাড় তাদের কীট অবস্থা থেকে বেরোচ্ছে৷
আইজ্যাক এইলওয়ার্ডের ‘থিশল-প্লাকার’ বা ফুল ছেঁড়া পাখি
বুলগেরিয়ার রিলা পাহাড়ে একটি সাধারণ লিনেট পাখি ফুল ছিঁড়ে ছিঁড়ে খাবার মতো বীজ বা দানা খুঁজছে৷ ফুলের নন্দনতত্ত্ব নিয়ে সে বেশি মাথা ঘামায় না!
ল্যান্স ফ্যান ডে ফাইফারের ক্যামেরায় ‘প্লেয়িং প্যাঙ্গোলিন’ বা প্যাঙ্গোলিন নিয়ে খেলা
দক্ষিণ আফ্রিকার সোয়ালু কালাহারি প্রাইভেট গেম রিজার্ভে এক সিংহ একটি প্যাঙ্গোলিন নিয়ে - না, খেলা করছে না৷ আসল কথা হল, বড় বড় শক্ত আঁশওয়ালা এই পিঁপড়েখেকো জীবটিকে ধরলেই, সে গোল হয়ে একটি বল হয়ে যায়৷ সে বল ভেঙে তাকে খাওয়া সিংহের পক্ষেও প্রায় অসম্ভব৷
স্যাম হবসনের ছবি ‘নোজি নেবার’ বা নাক-গলানো
ব্রিস্টল শহরে রাতে শেয়াল পণ্ডিত বেরিয়েছেন রোঁদে; দেয়ালের ওপর থাবা রেখে মাথা উঁচু করে দেখছেন, পাশের বাগানে কী পাওয়া যেতে পারে...
মারিও কেয়া’র ছবি ‘ক্রিস্টাল প্রিসিজন’ বা স্ফটিকের মতো নিখুঁত
স্পেনের সালামাঙ্কা অঞ্চলের একটি পোড়ো বাড়িতে ৩০টি পিপিস্ট্রেল বাদুড়ের বাসা৷ রোজ রাতে তারা প্রায় নব্বই হাজার পোকামাকড় ধরে৷ পুরোপুরি অন্ধ, অথচ শুধুমাত্র একো লোকেশেন বা ‘সোনার’ ব্যবহার করে উড়তে ও শিকার করতে পারে এই বাদুড়েরা৷ ছবিতে একটি পিপিস্ট্রেল বাদুড় জানলার ভাঙা কাচের ভেতর দিয়ে উড়ে যাচ্ছে৷
স্কট পিরেলি’র ক্যামেরার চোখে ‘কলেক্টিভ কোর্টশিপ’ বা যৌথ প্রেম
দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার আপার স্পেন্সার গাল্ফে জায়ান্ট কাটলফিশ মাছেরা সাথী খোঁজার জন্য একত্রিত হয়েছে৷ কাটলফিশ অক্টোপাস গোত্রীয় জীব৷ পুরুষ কাটলফিশেরা তিন ফুট অবধি লম্বা হতে পারে৷ চামড়ার রঙ ও নকশা বদলে তারা স্ত্রী কাটলফিশদের নজর কাড়ার চেষ্টা করে৷
উইলেম ক্রুগার-এর ছবি ‘টার্মাইট টসিং’ বা উই ধরা
বটসোয়ানা আর দক্ষিণ আফ্রিকার মাঝামাঝি গালাগদি আন্তঃসীমান্ত পার্কে একটি ধনেশ পাখি উই ধরছে আর খাচ্ছে - লম্বা ঠোঁটের ডগা দিয়ে ধরে, পরে পোকাটিকে ওপরে ছুঁড়ে দিয়ে... গলাধঃকরণ করছে!
ছবি: Willem Kruger
11 ছবি1 | 11
লেডি অ্যাশকাম্ব থাকেন সাডেলি ক্যাসলে – উইঞ্চকোম্ব শহরটি থেকে খুব বেশি দূরে নয়৷ তাঁর ক্যাসলটির ইতিহাস দ্বাদশ শতাব্দী অবধি চলে গেছে৷ গোটা এলাকাটাই যেন ইতিহাসের স্বাক্ষর বহন করছে৷ ক্যাসল-এর একাংশ আজকাল টুরিস্টদের জন্য খোলা৷ নয়ত ক্যাসলটা বহুকাল ধরে ইংরেজ রাজার সম্পত্তি ছিল, অষ্টম হেনরি স্বয়ং এখানে অতিথি হয়েছেন৷ লেডি অ্যাশকাম্ব বলেন, ‘‘অষ্টম হেনরির শেষ স্ত্রী ক্যাথরিন পার রাজার মৃত্যুর পর টমাস সিমুরকে বিবাহ করেন, যিনি ছিলেন এই ক্যাসল-এর মালিক৷ কাজেই ক্যাথরিন এই ক্যাসল-এই বসবাস করেছেন ও মৃত্যুবরণ করেছেন৷ বাগানের গির্জাতে তাঁকে সমাহিত করা হয়েছে৷''
পিকচারবুক ইংল্যান্ড দেখতে গেলে ব্রিটেনের একটি বিশেষত্বের সঙ্গে পরিচয় হওয়া দরকার: আফটারনুন টি, বা বিকেলের চা-জলখাবার৷ শসার স্যান্ডউইচ, স্ট্রবেরি মার্মালেড আর ‘‘ক্লটেড ক্রিম'' দিয়ে স্কোন্স, এ দু'টি জিনিস ছাড়া ব্রিটিশ আফটারনুন টি হয় না৷ ব্যাজার্স হল-এর ক্যারেন ওয়েন্স বলেন, ‘‘বিকেলের চা-জলখাবার চালু হয় কেননা আগে, ধরা যাক সপ্তদশ শতাব্দীতে, লাঞ্চ আর ডিনারের মধ্যে সময়টা বড় বেশি ছিল৷ কাজেই ডাচেস অফ বেডফোর্ড ঠিক করেন যে, তিনি ঐ দু'টোর মাঝে মিষ্টি কিছু মুখে দেবেন৷ সেটাই আজ আফটারনুন টি হয়ে দাঁড়িয়েছে৷''