সরকারবিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে লাগাতার অবরোধ বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোট আর কতদিন চালিয়ে যেতে পারবে তা নিয়ে দ্বিমত থাকলেও, খালেদা জিয়া অনড়৷ তাই অবরোধের সঙ্গে হরতাল এবং গণমিছিলের কর্মসূচি নিতে চলেছে দলটি৷
বিজ্ঞাপন
অবরোধের ২৪তম দিন, অর্থাৎ বৃহস্পতিবার, ঢাকা মহানগরীসহ ন'টি জেলায় ২৪ ঘণ্টার হরতাল চলছে৷ এর আগেও অবরোধের মধ্যেই টানা ৪৮ ঘণ্টার হরতাল পালন করেছে বিএনপি জোট৷ এর সঙ্গে অবরোধ অব্যাহত রেখে সহসাই গণমিছিল বা গণসমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারে বিএনপি৷ বিএনপি নেতারা মনে করছেন, টানা অবরোধ চালিয়ে যেতে হরতাল, গণমিছিল বা গণসমাবেশের মতো কর্মসূচি সহায়ক ভূমিকা পালন করবে৷ এর কারণ, রাজধানী ঢাকা এর মধ্যেই অবরোধের চরিত্র হারিয়েছে৷ দেশের অন্যান্য স্থানেও অবরোধ চলছে ঢিলেঢালাভাবে৷ তাই অবরোধের মধ্যেই বিকল্প কর্মসূচি দিয়ে অবরোধকে চাঙ্গা রাখার কৌশল অবলম্বন করার চিন্তা-ভাবনা করছে বিএনপি নেতারা৷
তাঁরা মনে করছেন, সরকারের কঠোর মনোভাব এবং নতুন করে ক্রসফায়ার বেড়ে যাওয়া অবরোধে সক্রিয় নেতা-কর্মীদের মনোবল ভেঙে দিচ্ছে৷ এছাড়া পেট্রোলবোমাসহ বাস পোড়ানো ও নাশকতা সরকারবিরোধী আন্দোলনকে সমালোচনার মুখে ঠেলে দিচ্ছে প্রতিনিয়ত৷ তাই জনসম্পৃক্তা বাড়িয়ে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির কোনো বিকল্প নেই৷ বিশেষ করে খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর জানাজায় বিপুল সংখ্যক মানুষের অংশগ্রহণ তাঁদের উত্সাহিত করেছে৷ তাই তাঁরা মনে করছেন, অবরোধ অব্যাহত রেখে জনসম্পৃক্ত কর্মসূচি দিলে তাতে লোক সমাগম হবে৷
অস্থির বাংলাদেশ
বাংলাদেশে দশম সংসদীয় নির্বাচনের বছরপূর্তিতে ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে৷ এতে একাধিক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে৷ ৫ই জানুয়ারি রাজনৈতিক অস্থিরতার কয়েকটি ছবি পাবেন এখানে৷
ছবি: picture alliance/ZUMAPRESS.com
অবরুদ্ধ খালেদা
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে তাঁর গুলশান কার্যালয়ে আটকে রেখেছে পুলিশ৷ যদিও সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে তাঁর নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে, তবে সোমবার তিনি বাইরে যেতে চাইলে পুলিশ তাঁর গেটে তালা লাগিয়ে দেয়৷ ফলে অবরুদ্ধ খালেদা জিয়া সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন গেটের মধ্যেই৷
ছবি: AFP/Getty Images
অবরোধ ঘোষণা
অবরুদ্ধ খালেদা জিয়া পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত সারা দেশে অবরোধের ঘোষণা দিয়েছেন৷ গুলশানের কার্যালয়ে সোমবার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘‘আজ আমাদের কালো পতাকা কর্মসূচি ছিল৷ সমাবেশ করতে দেওয়া হয় নাই৷ পরবর্তী কর্মসূচি না দেওয়া পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচি চলবে৷’’
ছবি: picture-alliance/epa/A. Abdullah
খালেদার কার্যালয় ঘিরে পুলিশ
প্রসঙ্গত, গত দু’দিন ধরে খালেদা জিয়ার কার্যালয় ঘিরে রেখেছে পুলিশ৷ ছবিতে পুলিশে একটি গাড়ি রাস্তায় আড়াআড়িভাবে রেখে রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে৷ এভাবে আরো কয়েকটি বালু এবং ইটভর্তি ট্রাকও রাখা হয়েছে৷
ছবি: picture alliance/Landov
গাড়িতে আগুন
রবিবার থেকেই ঢাকায় সভা, সমাবেশ, শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ করেছিল৷ কিন্তু তা সত্ত্বেও সমাবেশ করার সিদ্ধান্তে অটল থাকে বিএনপিসহ বিশ দল৷ ঢাকায় একটি সিএনজি এবং মোটর সাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়ার ছবি এটি৷ বিএনপি সমর্থকরা এটা করেছে বলে জানিয়েছে সংবাদসংস্থা৷
ছবি: picture alliance/ZUMAPRESS.com
পার্ক করা গাড়িতে আগুন
পার্ক করে রাখা একটি পিকআপ ভ্যানে আগুন দিচ্ছে বিএনপির সমর্থকরা৷ ছবিটি ঢাকা থেকে তোলা৷
ছবি: picture-alliance/epa/A. Abdullah
রাজপথে সরব আওয়ামী লীগ
পুলিশ সভা, সমাবেশ নিষিদ্ধ করলেও ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা জড়ো হন৷ বিষয়টি সমালোচনা করে ফেসবুকে সাংবাদিক প্রভাষ আমিন লিখেছেন, ‘‘...নিষেধাজ্ঞা কি শুধু বিএনপির জন্য? আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তো দেখি শহরজুড়ে মিছিল করছে, উল্লাস করছে, গান শুনছে, গান গাইছে৷’’ ছবিতে ঢাকায় বিএনপির এক সমর্থককে পেটাচ্ছে আওয়ামী লীগের কর্মীরা৷
ছবি: picture-alliance/epa/A. Abdullah
‘শান্তির পথে আসুন’
এদিকে সোমবার রাতে জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে বিএনপি নেত্রীকে শান্তির পথে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ তবে মধ্যবর্তী নির্বাচনের যে দাবিতে বিএনপিসহ বিশদল আন্দোলন করেছে, সেই দাবির প্রতি কোন নমনীয়তা দেখাননি তিনি৷ হাসিনা মনে করেন, সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনে অংশ না নেয়াটা বিএনপির রাজনৈতিক ভুল ছিল৷
ছবি: Oli Scarff/Getty Images
‘একতরফা’ নির্বাচন
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের পাঁচ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি দল অংশ নেয়নি৷ সেই নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৩টি আসনে কোন ভোটাভুটি হয়নি৷ বাকি আসনগুলোতে ভোটার উপস্থিতি ছিল বেশ কম৷ ইউরোপীয় ইউনিয়ন সেটিকে ‘একতরফা’ নির্বাচন আখ্যা দিয়েছে৷
ছবি: DW
8 ছবি1 | 8
জানা গেছে, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া এবারের আন্দোলনকে ‘বাঁচা-মরার লড়াই' হিসেবে দেখছেন৷ তিনি তাই কোনোভাবেই অবরোধ থেকে সরে আসতে চাইছেন না৷ বিএনপির মধ্যে যাঁরা অবরোধ স্থগিত করে অন্য কর্মসূচির কথা বলার চেষ্টা করছেন, তাঁরা খালেদার তোপের মুখে পড়ছেন, বিরাগভাজন হচ্ছেন৷
গুলশান কার্যালয়ে টানা ১৬ দিন অবরুদ্ধ থাকার পর মুক্ত হয়ে ১৯শে জানুযারি বিকেলে দলের স্থায়ী কমিটির জরুরি বৈঠক ডাকেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া৷ বৈঠকে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামের ন'জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন৷ তাঁদের মধ্যে প্রবীণ কয়েকজন সদস্য রাজনৈতিক সংকটময় পরিস্থিতি নিয়ে দলের করণীয় সম্পর্কে তেমন কোনো মন্তব্য করেননি৷ বাকি কয়েকজন অবশ্য নিজ নিজ বক্তব্য তুলে ধরেন৷ আর টানা অবরোধের বিপক্ষে দেওয়া নেতাদের বক্তব্য ‘কঠোর ভাষায়' খণ্ডন করে অবরোধের পক্ষে ‘অনড়' অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন খালেদা জিয়া৷
তিনি বলেন, ‘ডু অর ডাই'৷ যা হবার তাই হবে৷ টানা অবরোধ ছাড়া সরকারকে দাবি আদায়ে বাধ্য করা যাবে না৷ তিনি আরও বলেন যে, অতীতের ভুল পথে তিনি আর পা দিতে চান না৷ বলা বাহুল্য, চেয়ারপার্সনের এহেন কঠোর মনোভাবে নিশ্চুপ হয়ে যান টানা অবরোধবিরোধী নেতারা৷
এদিকে বিএনপির বহু কর্মসূচির ব্যাপারেই শীর্ষ নেতাদের অনেকেই তেমন কিছু জানেন না৷ যেমন ২১শে জানুয়ারি থেকে বিএনপির অরোধের মধ্যে ৪৮ ঘণ্টার হরতাল দলের স্থায়ী কমিটি বা শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই ঘোষণা করা হয়৷ আবার বৃহস্পতিবার থেকে ডাকা ঢাকাসহ ন'টি জেলার হরতালে ঢাকা মহানগরী অন্তর্ভূক্তই ছিল না৷ পরে বিবৃতি দিয়ে ঢাকা মহানগরীকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়৷ তাছাড়া সময়সীমাও ১২ ঘণ্টা থেকে বাড়িয়ে ২৪ ঘণ্টা করা হয়৷ আর এই কর্মসূচিও দেয়া হয় এককভাবে৷
জানা গেছে, খালেদা জিয়া লন্ডনে অবস্থানরত তাঁর বড় ছেলে এবং বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে কথা বলেই কর্মসূচি ঠিক করছেন৷ দু'জনই অবরোধ অব্যাহত রেখে আন্দোলন চালিয়ে যেতে অনড়৷ এ কারণে খালেদা নিজের ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর জানাজার দিনও অবরোধ শিথিল করতে রাজি হননি তাঁরা৷
তাঁরা মনে করছেন, অব্যাহতভাবে এই আন্দোলনে পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা একমসয় ক্লান্ত হয়ে পড়বে৷ সরকারের ওপরও দেশি-বিদেশি চাপ বাড়বে৷
বিএনপির এক নেতা উদাহরণ দিয়ে বলেন, কোকোর জানাজায় অনেক মানুষ হওয়ায় সরকার কিছুটা হলেও চিন্তায় পড়েছে৷ তাই আওয়ামী লীগ অবরোধে নিহতদের গায়েবানা জানাজার কর্মসূচি দিয়েছে শুক্রবার৷ অবশ্য এর বিকল্প হিসেবে বিএনপি আহত ও নিহতদের পরিবারের সদস্যদের আর্থিক সহয়াতা দেয়ার চিন্তা করছে৷
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান আন্দোলনের সার্বিক বিষয় নিয়ে ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এটা নিশ্চিত যে আন্দোলন যৌক্তিক পরিণতিতে যাওয়ার আগে অবরোধ প্রত্যাহার হচ্ছে না৷ আর অবরোধের মধ্যেই জেলায় জেলায় হরতাল বা সারাদেশে হরতাল ডাকা আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার একটা কৌশল৷''
পুড়ছে মানুষ, পুড়ছে মানবতা
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি আদায়ের জন্য বিরোধীদলের কর্মসূচিতে পুড়ছে যানবাহন, ধ্বংস হচ্ছে সম্পদ, মরছে মানুষ৷ হরতাল-অবরোধের নামে পোড়ানো অনেকে এখনো যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে৷
ছবি: Mustafiz Mamun
সারি সারি পোড়া মানুষ
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ১ নম্বর বার্ন ইউনিট এখন হরতাল-অবরোধের নামে পোড়ানো জীবিকার তাগিদ কিংবা দৈনন্দিন প্রয়োজনে রাস্তায় নামা মানুষে ভরে গেছে৷
ছবি: Mustafiz Mamun
শিশুর কষ্ট বোঝেনা তারা!
কোলের শিশুও বাঁচতে পারছেন না জ্বালাও-পোড়াওয়ে হাত থেকে৷ প্রতিপক্ষের আদর্শকে ভুল প্রমাণ করে শ্রেয়তর আদর্শ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা নয়, প্রতিপক্ষকে আঘাত করে, হত্যা করে লক্ষ্যে পৌঁছানোর চেষ্টা অনেক দেখেছে বাংলাদেশের মানুষ৷ স্বাধীন দেশে নিরীহ মানুষকে নির্বিচারে পোড়ানোও দেখতে হচ্ছে৷ ৩ নভেম্বর আট বছরের সুমি দাদীর সঙ্গে নেত্রকোনা থেকে ঢাকা আসছিল৷ জয়দেবপুর চৌরাস্তায় তাদের বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়৷
ছবি: Mustafiz Mamun
বোবা কান্না...
নির্মমতার আরেকটি ছবি হয়ে আছে মজিবরের পোড়া শরীর৷ মজিবর বাকপ্রতিবন্ধী৷ কুমিল্লার দেবিদ্বারের এক ট্রাকের হেলপার৷ পিকেটারদের বোমা হামলায় বাসের সঙ্গে তাঁর শরীরও পুড়েছে৷ সবাই শুনে বুঝবে এমনভাবে কথা তিনি বলতে পারেন না, বোবা কান্নায় শুধু পারেন অসহায়ত্ব প্রকাশ করতে, আর্তনাদ করতে আর এ অন্যায়ের প্রতিকার আশা করতে৷
ছবি: Mustafiz Mamun
মেয়েকে দেখতে গিয়ে মা হাসপাতালে
জাহানারা বেগম৷ বয়স ৫২৷ পেশা – ফেরি করে কাপড় বিক্রি করা৷ হরতাল-অবরোধ থাকলে বিক্রি কমে যায় বলেই হয়তো সেদিন কাপড় নিয়ে বাড়ি বাড়ি না ঘুরে জাহানারা গিয়েছিলেন শ্যামপুরে৷ সেখানে তাঁর মেয়ের বাড়ি৷ মেয়েকে দেখে অটো রিক্সায় ফেরার সময়েই বিপদ৷ বিরোধী দলের কিছু সমর্থক সেই অটোরিক্সাতেও ছুড়ে মারে পেট্রোল বোমা৷ সন্তানের প্রতি অপত্য স্নেহের মূল্য আগুনে পুড়ে চুকাচ্ছেন জাহানারা বেগম!
ছবি: Mustafiz Mamun
তালহার অসহায়ত্ব
২৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে বাসে পেট্রোল বোমা ছুড়ে মারে দুর্বৃত্তরা৷ শরীরের ৩০ শতাংশ পুড়ে যাওয়ায় আবু তালহা সেই থেকে ১ নম্বর বার্ন ইউনিটে৷
ছবি: Mustafiz Mamun
রাজমিস্ত্রী
রাজমিস্ত্রী ও ঠিকাদার আবুল কালাম আজাদের শরীর পুড়েছে গত ১২ নভেম্বর৷ সেদিন ঢাকার রায়েরবাগেও একটি চলন্ত বাসে ছোড়া হয় পেট্রোল বোমা৷ সেই থেকে তাঁরও ঠিকানা ঢাকা মেডিকেল কলেজের ১ নম্বর বার্ন ইউনিট৷
ছবি: Mustafiz Mamun
বাসচালক
২৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় শাহবাগে পেট্রোল বোমা ছুড়ে পোড়ানো সেই বাসটি চালাচ্ছিলেন মাহবুব৷ যাত্রীদের মতো তাঁর শরীরও পুড়েছে৷ তাঁর দেয়া তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের স্বাধীনতা যু্দ্ধের সময়, অর্থাৎ ১৯৭১ সালেই জন্ম মাহবুবের৷ স্বাধীনতার ৪২ বছর পর দেশ পুড়ছে, তিনিও পুড়েছেন৷
ছবি: Mustafiz Mamun
ঘুমের মাঝেই আগুন...
৭ ডিসেম্বর মুন্সীগঞ্জ জেলার মাওয়া ফেরিঘাটে বাসে ঘুমাচ্ছিলেন হেলপার আলমগীর৷ থামানো বাসেই দেয়া হয় আগুন৷ পোড়া দেহ নিয়ে এখন তিনি হাসপাতালে৷
ছবি: Mustafiz Mamun
লেগুনার যাত্রী
১০ নভেম্বর ঢাকার লক্ষীবাজারে পেট্রোল বোমা ছুড়ে পোড়ানো হয় একটি লেগুনা৷ লেগুনা পুড়ে শেষ, লেগুনার যাত্রী কামাল হোসেন ভাগ্যগুণে বেঁচে গেছেন৷ তবে শরীরের ৩৫ ভাগেরও বেশি অংশ পুড়ে গেছে৷ ৩৬ বছরের এ তরুণ লড়ছেন মৃত্যুর সঙ্গে৷ চিকিৎসকদের চেষ্টা এবং সুস্থ মানসিকতার প্রতিটি মানুষের শুভকামনায় তিনি শিগগিরই হয়তো ফিরবেন স্বাভাবিক জীবনে৷ কিন্তু এই দুর্ভোগ, এই দুঃস্বপ্নের দিনগুলো কি কোনোদিন ভুলতে পারবেন?
ছবি: Mustafiz Mamun
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শুভও ছিলেন রায়েরবাগের সেই বাসে৷ তাই ১২ নভেম্বর থেকে তিনিও পোড়া শরীর নিয়ে পড়ে আছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের বিছানায়৷
ছবি: Mustafiz Mamun
10 ছবি1 | 10
তিনি বলেন, ‘‘ম্যাডাম খালেদা জিয়া এই আন্দোলন নিয়ে লন্ডনে অবস্থানরত দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে নিয়মিত কথা বলেন৷ কারণ তিনি দলের দ্বিতীয় ব্যক্তি৷ এছাড়া কর্মসূচি গোপন রেখে সময়মত ঘোষণা করাও একটি কৌশল৷'' তিনি বলেন, ‘‘খালেদা জিয়া কর্মসূচি নিয়ে দলের নির্ভরযোগ্য সিনিয়র নেতাদের সঙ্গেও কথা বলেন৷ তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত খালেদা জিয়াই নেন৷''
আহমেদ আযম খান বলেন, ‘‘টানা অবরোধ চালিয়ে নিতে গণমিছিল বা গণসমাবেশ ছাড়াও আরো নতুন কর্মসূচি আসতে পারে৷ তবে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি৷ আর তা চূড়ান্ত হলেও আগেভাগে জানার কোনো সুযোগ নেই৷ তবে সময় মতোই জানানো হবে৷''
তিনি দাবি করেন, ‘‘এই আন্দোলনের সঙ্গে জনগণ আছে৷ তার বড় প্রমাণ আরাফাত রহমান কোকোর ঢাকার জানাজায় বিপুল মানুষের উপস্থিতি৷ তাই আন্দোলনের কৌশল হচ্ছে অবরোধ অব্যাহত রেখে সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করার কর্মসূচি ঘোষণা করা৷''
তিনি বলেন, ‘‘কর্মসূচি ঘোষণায় দলের মধ্যে কোনো সমন্বয়হীনতা নেই, তবে গোপনীয়তা আছে৷ পরিস্থিতির কারণেই এ কৌশল নিতে হচ্ছে বিএনপিকে৷''
আন্দোলনের চূড়ান্ত পরিণতি বলতে কী মনে করছেন জানতে চাইলে আহমেদ আযম খান বলেন, ‘‘অবশ্যই নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচন ঘোষণা৷''