বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির নেতারা অভিযোগ করছেন, ডিসেম্বরের মধ্যে তাদের নির্বাচনের দাবিকে সুকৌশলে অপরাধের মতো করে তুলে ধরা হচ্ছে।
ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চায় বিএনপি। ছবি: Munir Uz Zaman/AFP
বিজ্ঞাপন
শুক্রবার আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি)-র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রধান অতিথি হিসাবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, "আমরা খেয়াল করছি, গত কিছুদিন ধরে অত্যন্ত সুকৌশলে এমন একটি আবহাওয়া তৈরি করা হচ্ছে, যেখানে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি করাটাই যেন একটা অপরাধ।''
বিএনপির কয়েকজন নেতা মনে করেন, নির্বাচন নিয়ে এখন নানা ধরনের তৎপরতা চলছে। ডিসেম্বরে যাতে নির্বাচন না হয় তার জন্য একটি পক্ষ দাঁড়িয়ে গেছে। তাদের সঙ্গে সরকারের কথার মিল পাওয়া যায়। তারা এমনও বলছেন যে, বিএনপিও দ্রুত নির্বাচন চায়, ভারতও দ্রুত নির্বাচন চায়। এটা দিয়ে একটি সমীকরণ তৈরি করা হচ্ছে। আবার বিএনপিকে সংস্কারবিরোধী ট্যাগ লাগিয়েও একটি বয়ান তৈরির চেষ্টা চলছে।
‘কোনো ‘মহামানব’ তৈরির জন্য মানুষ জীবন দেয়নি’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, "অতীতেও অনেক মহামানব তৈরি করা হয়েছে, যার ফলাফল কী হয়েছে, সেটা দেশের মানুষ দেখতে পেয়েছে। এখানে ব্যক্তিবিশেষের বিষয় নয়, কোনো ‘মহামানব' তৈরির জন্য মানুষ জীবন দেয়নি, দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য জীবন দিয়েছে।”
তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, "তারেক রহমান যা বলেছেন, তার তো কারণ আছে। একটি অনির্বাচিত সরকারকে দীর্ঘায়িত করার চেষ্টা চলছে। এতে কারো কারো লাভ আছে। এখন দরকার নির্বাচন। আমরা তো যেসব সংস্কারের বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য বলছি। কিন্তু নতুন নতুন ইস্যু তৈরি করে নির্বাচনকে দীর্ঘায়িত করার চেষ্টা দেখছি। আমরা নির্বাচনের কথা বললেই অমাদের সংস্কারবিরোধী বলে অভিহিত করা হচ্ছে।”
নির্বাচনের কথা বললেই নানা ধরনের অপবাদ দেয়া হয়: এমরান সালেহ
This browser does not support the audio element.
বিএনপির একাধিক নেতা ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, কেউ কেউ বলছেন বিএনপিকে ক্ষমতায় পাঠানোর জন্য অভ্যুত্থান হয়নি। নির্বাচন করা নাকি এই সরকারের প্রধান কাজ নয়। বিএনপিকে ইঙ্গিত করে বলা হয়, একটি দল এখন ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য পাগল হয়ে গেছে। এর মধ্য দিয়ে বিএনপিকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে। সরকারের কিছু উপদেষ্টা ছাড়া বিভিন্ন গোষ্ঠী ও কিছু রাজনৈতিক দল এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, "প্রফেসর ইউনূসের ওপর আমাদের এখনো আস্থা আছে। আমি মনে করি, তার পক্ষে একটি সর্বোত্তম নির্বাচন দেয়া সম্ভব। কিন্তু তার উপদেষ্টা পরিষদের অনেকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন আছে, সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন আছে। উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন করা দরকার।”
তার কথা, "সরকারের কোনো কাজ বা কথা নির্বাচন বিলম্বিত করার যদি ইঙ্গিত দেয়, তাহলে তা তো দুঃখজনক।”
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সের মতে, ‘‘এমন একটি প্রেক্ষাপট তৈরি করা হয়েছে যে, নির্বাচনের কথা বললেই নানা ধরনের অপবাদ দেয়া হয়।'' তার কথা, "আসলে নির্বাচন চাওয়ার কারণে আমাদের সংস্কারের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করানো হচ্ছে। বলা হচ্ছে, বিএনপি নির্বাচন চায়, ভারতও নির্বাচন চায়।”
তিনি বলেন, "আমরাও সংস্কারের পক্ষে। আমরা তো বলেছি, রাজনৈতিক দলগুলো যেসব বিষয়ে একমত হয়েছে, সেগুলো প্রকাশ করা হোক, দ্রুত নির্বাচন দেয়া হোক। কিন্তু সরকারের কিছু লোক এবং তাদের সমর্থক কয়েকটি রাজনৈতিক দল আমরা নির্বাচন চাইলেই নানা সংস্কার সামনে আনে, গণভোট সামনে আনে, সংবিধান পাল্টে দেয়ার কথা বলে, বিচারের কথা বলে। বলা হয়, বিএনপি আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করতে চায়। কিন্তু আমরা তো বলেছি ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ শেষ হয়ে গেছে। গণহত্যার বিচার হতে হবে। কিন্তু তার বিপরীতে নির্বাচনকে দাঁড় করানো হচ্ছে। বিএনপিকে হেয় করা হচ্ছে। সরকারই তো আইনে সংগঠনের বিচারের ব্যবস্থা রাখে নাই।”
বিএনপির চার দশক
৪৬ বছরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল, বিএনপি৷ দেশের অন্যতম বড় রাজনৈতিক দলটির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া৷ যুক্তরাজ্যে নির্বাসিত আছেন সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান৷ এত বছরে কী ছিল দলটির পথচলা?
ছবি: Getty Images/Keystone
প্রেক্ষাপট
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সেনা সদস্যদের গুলিতে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিহত হন৷ এরপর প্রায় তিন বছর বাংলাদেশে ছিল অনির্বাচিত সরকার৷ সে সময় দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেন তৎকালীন সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান৷ পরে ১৯৭৯ সালের দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন এগিয়ে এলে রাজনৈতিক দল গঠন করেন৷
ছবি: imago/Belga
প্রতিষ্ঠা
বিএনপি গঠন করার আগে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল (জাগদল) নামে আরেকটি দল তৎকালীন উপ-রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তারকে সভাপতি করে গঠন করা হয়েছিল৷ পরে তা বিলুপ্ত করে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে প্রধান করে গঠিত হয় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল, বিএনপি৷ ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর রমনা রেস্তোরাঁয় আনুষ্ঠানিক ঘোষণাপত্র পাঠ করে দলের যাত্রা করেন জিয়াউর রহমান৷
ছবি: imago/United Archives International
নির্বাচন ও মৃত্যু
জিয়া রাষ্ট্রপতি থাকা অবস্থাতেই ১৯৭৯ সালে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচন৷ এ নির্বাচনে বিএনপি ২৯৮টি আসনের মধ্যে ২০৭টিতে জয়লাভ করে৷ তখন মালেক উকিলের নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ ৩৯টি ও মিজানুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ ২টি আসনে জেতে৷ নির্বাচিত হয়ে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেবার মাত্র দুই বছরের মাথায় ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামের সার্কিট হাউসে এক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে নিহত হন৷
ছবি: Getty Images/Keystone
খালেদার রাজনীতিতে আসা
জিয়ার মৃত্যুর পর নেতাকর্মীদের আহ্ববানে তিনি ১৯৮২ সালের ৩ জানুয়ারি বিএনপিতে যোগ দেন৷ ১৯৮৩ সালের মার্চ মাসে তিনি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হন৷ ১৯৮৩ সালের ১ এপ্রিল দলের বর্ধিত সভায় প্রথম বক্তৃতা করেন৷ ১৯৮৪ সালের ১০মে পার্টির চেয়ারপার্সন নির্বাচিত হন৷
ছবি: AP
এরশাদবিরোধী আন্দোলন ও খালেদা জিয়া
জিয়ার মৃত্যুর পর উপরাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তার রাষ্ট্রপতি হন৷ তবে তাঁকে হটিয়ে ১৯৮৩ সালে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ রাষ্ট্রক্ষমতায় আসেন৷ বিএনপি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে স্বৈরাচারী এরশাদ সরকার বিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে৷ এই আন্দোলনে বেগম জিয়া ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দু’জনই ছিলেন, যদিও আপোষহীনতার কারণে খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তা বেড়ে যায়৷
ছবি: Getty Images/AFP/FARJANA K. GODHULY
সরকার গঠন
১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচন৷ এ নির্বাচনে জয়লাভ করে সরকার গঠন করে বিএনপি৷ ১৯৯৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল প্রশ্নবিদ্ধ আরেকটি নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন করে৷ কিন্তু আওয়ামী লীগসহ বিরোধী দলগুলোর প্রতিবাদে মাত্র ৪৫ দিন টিকতে পারে সেই সরকার৷
ছবি: AP
শেষবার সরকারে
২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় নির্বাচনে জিতে আবারো সরকার গঠন করে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট৷এই সরকারই ছিল বিএনপির শেষ সরকার৷ এই সরকারের মেয়াদ শেষ হবার পর নানা বিতর্ক ও ঘটনার প্রেক্ষাপটে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় ছিল প্রায় দুই বছর৷ সে সময় খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনা উভয়কেই জেলে যেতেও হয়েছিল৷ পরে অবশ্য দু’জনই ছাড়া পান৷
ছবি: Getty Images
জোটের রাজনীতি
বিএনপি এ পর্যন্ত বারবার জোট করেছে৷ প্রথম সাতদলীয় জোট করে এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে৷ এরপর জামায়াতে ইসলামীসহ গড়ে চারদলীয় জোট৷ পরবর্তীতে জোটে দলের সংখ্যা বাড়তে থাকে৷ সেটি ঠেকে বিশ দলীয় জোটে৷
ছবি: bdnews24.com
রাজনৈতিক ভুল ও কারাগারে খালেদা
সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের পর আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে অংশ নেয়নি বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট৷ এই নির্বাচনে অংশ না নেয়াকে অনেকেই রাজনৈতিক ভুল বলে মনে করেন৷ তাঁর বিরুদ্ধে থাকা নানা মামলার মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আদালত তাঁকে কারাদণ্ড দেয়৷
ছবি: picture-alliance/epa/A. Abdullah
বিদেশে তারেক রহমান
মানি লন্ডারিংসহ নানা মামলার কারণে যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয়ে আছেন জিয়াপুত্র ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান৷
ছবি: AP
10 ছবি1 | 10
‘‘একটা বিতর্কিত পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে নিবাচন নিয়ে। বয়ান তৈরি করা হচ্ছে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো, নির্বাচন বিলম্বিত করা, তারেক রহমান সাহেব তার কথায় সেটাই তুলে ধরেছেন বলে আমি মনে করি,” বলেন তিনি।
বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, "একটি মহল সূক্ষ্মভাবে নির্বাচন আগে না সংস্কার আগে-এই ধরনের একটি বিতর্ক তৈরি করছে। ফ্যাসিস্ট হাসিনা যেরকম বলেছে, ‘উন্নয়ন, না নির্বাচন'। একটি ভেস্টেড কোয়ার্টার নির্বাচনকেই বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে। তারেক রহমান সাহেব সেই কথাই বলার চেষ্টা করেছেন।”
কতটুকু সংস্কারে রাজী বিএনপি?
আর রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. জাহেদ উর রহমান মনে করেন, যতটা না সরকার তার চেয়ে বেশি নতুন দল এনসিপি নির্বাচনের সঙ্গে সংস্কার ছাড়াও কতগুলো শর্ত জুড়ে দিচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কয়েকজন ইনফ্লুয়েন্সারও এই কাজ করছেন। জামায়াতও কখনো কখনো বলছে। তারা আরো এগিয়ে গিয়ে বলছে ভারতও নির্বাচন চায়, বিএনপিও নির্বাচন চায়। কেউ যখন নির্বাচনের কথা বলছে, তখন ‘ভারতের দালাল' ট্যাগ লাগিয়ে দেয়া হচ্ছে। বিএনপির জন্য এই ধরনের একটি পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে।
‘‘সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ‘কেউ তো আমাদের চলে যেতে বলছে না। মানুষ অন্তর্বর্তী সরকারকে এখনকার জন্য সমাধান মনে করছে। আমার মনে হয়, বাইরে আলাপ হচ্ছে আগে সংস্কার, পরে নির্বাচন।' প্রধান উপদেষ্টা এসব কথার মধ্য দিয়ে ইনফ্লুয়েন্স করছেন। যদিও তিনি আল জাজিরার সাথে সাক্ষাৎকারে ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনের কথাও বলেছেন,” বলেন এই বিশ্লেষক।
বিএনপি চায় নির্বাচনের জন্য যতটুকু সংস্কার প্রয়োজন ততটুকু করে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন। আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, "ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে তো আমরাসহ আরো অনেক রাজনৈতিক দল কথা বলেছে। সরকার সেটা প্রকাশ কললেই হয়। সবাই যেসব ব্যাপারে একমত হয়েছে, সেইসব বিষয়ে সংস্কারে আমাদের আপত্তি নাই। ওই সংস্কার করে ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন দিতে হবে।”
জাতীয় ঐকমত্য কশিনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ রোববার বলেছেন, "আগামী ১৫ মে'র মধ্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রাথমিক আলোচনা শেষ হবে, এরপরে শুরু হবে দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা। আর যেসব বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য হবে, সেগুলোর ভিত্তিতে জাতীয় সনদ তৈরি হবে।”
‘‘আমাদের সবাইকে এক জায়গায় আসতে হবে। আমরা সব বিষয়ে একমত হতে পারবো না, কিন্তু রাষ্ট্র গঠনের মৌলিক জায়গায় আমাদের একমত হয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে,'' বলেন তিনি।
খালেদা জিয়ার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা সম্ভব: জাহেদ উর রহমান
This browser does not support the audio element.
খালেদার ফেরা ও বিএনপির রাজনীতি
চিকিৎসা শেষে প্রায় চার মাস পর লন্ডন থেকে মঙ্গলবার দেশে ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। তার এই দেশে ফেরার খবরে নেতা-কর্মীদের মধ্যে আছে ব্যাপক উচ্ছাস। খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জে এম জাহিদ হোসেনও খালেদা জিয়ার সঙ্গে লন্ডন গিয়েছিলেন। ফিরেছেন তার সঙ্গেই। তিনি ডয়চে ভেলেকে জানান, "বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে অনেক ভালো। দেশে ফেরার পর লন্ডনের চিৎিসকদের পরামর্শেই চলবেন তিনি। তিনি মানসিকভাবেও বেশ উৎফুল্ল আছেন।”
খালেদা জিয়া ফিরে আসায় বিএনপির রাজনীতি আরো গতি পাবে বলে মনে করছেন বিএনপির অনেক নেতা। বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, "তিনি সুস্থ হয়ে ফিরে এসেছেন, এটা আমাদের উজ্জীবিত করছে। তিনি তো আমাদের অবিসংবাদিত নেতা। তিনি রাজনীতিতেই আছেন। তিনি এখন আরো সক্রিয় হলে সেটা আমাদের দলের জন্য আরো সহায়ক হবে।”
যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেকও খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেশে ফিরেছেন। তিনি বলেন, "আমরা আশা করছি, খালেদা জিয়া রাজনীতিতে আরো সক্রিয় হতে পারবেন। তিনি অসুস্থ অবস্থায়ও দলের হাল ধরে ছিলেন। এখন আরো সময় দিতে পারবেন। বিএনপিকে অতীতেও কেউ ভাঙতে পারেনি, ভবিষ্যতেও পারবে না। সামনে নির্বাচনে তার বড় ভূমিকা থাকবে বলে মনে করছি। আর আমরা বড় জয় পাবো।”
বিএনপির রাজনীতিতে তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানকে নিয়েও উচ্ছ্বাস আছে। মালেক বলেন, "আমরা তো চাই ডা. জোবায়দা রহমান রাজনীতিতে যোগ দেবেন। তিনি যোগ দিলে বিএনপি লাভবান হবে। তবে তিনি রাজনীতিতে আসবেন কিনা তা বলা যাচ্ছে না। আমি যতদূর জানি তিনি চিকিৎসা পেশায় খেকেই দেশের মানুষের সেবা করতে চান।”
খালেদা জিয়ার দেশে ফেরা প্রসঙ্গে সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, " চিকিৎসা শেষে খালেদা জিয়ার দেশে ফেরা বিএনপির রাজনীতিকে আরো উজ্জীবিত করবে এবং সাহস যোগাবে। তার কথা, তার হাসি আমাদের সাহস দেয়। তিনি কোনো সিদ্ধান্ত দিলে নেতা-কর্মীরা মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তার আরো সক্রিয় উপস্থিতি আমরা চাই।”
আর রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. জাহেদ উর রহমান বলেন, ‘‘খালেদা জিয়া কতটুকু সুস্থতা নিয়ে দেশে ফিরেছেন, সে বিষয়ে আমি নিশ্চিত নই। তবে তিনি যদি মোটামুটি সুস্থ থাকেন, তাহলে বিএনপিতে তার একটি বড় ভূমিকা থাকবে। যেহেতু তারেক রহমান দেশে নাই, তাই বিএনপিতে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা সম্ভব। এবং এটা বিএনপিকে অনেক উজ্জীবীত করবে। বিএনপির রাজনীতিতে অবশ্যই গুণগত পরিবর্তন আনবে।”
তারেক রহমান ফিরবেন কবে?
তারেক রহমান ‘সহসাই ফিরবেন' বা ‘সময় হলেই ফিরবেন' এ ধরনের কথা চলছে বেশ বিছুদিন ধরে। যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক বলেন, "দেশের মানুষও চায় তিনি দেশে ফিরুন। আর তিনিও ফেরার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছেন। তিনি সহসাই ফিরবেন বলে আমরা আশা করি। তার বিরুদ্ধে এখন কোনো মামলা নাই। ফলে ফিরতে তার কোনো বাধা নাই।”
তবে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে তার বিরুদ্ধে যে ৮২টি মামলা হয়েছিল, তারমধ্যে একটি মামলা এখানো নিস্পত্তি হয়নি। ওই মামলায় তার দণ্ডাদেশ আছে। আদালতে আত্মসমর্পণ করে আপিল করার শর্তে ওই মামলাটির দণ্ডাদেশ স্থগিত করা হয় গত বছরের ২ অক্টোবর। বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, "তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলা আমরা আইনগত এবং সাংবিধানিকভাবেই মোকাবেলা করে আসছি। আমরা সিআরপিসি অনুযায়ী ডিল করছি। ওই মামলাটিও আমরা আইনতগভাবে দেখবো। এটাকে আমরা অন্য কোনোভাবে দেখছি না। তারেক রহমান দেশে ফিরে আসবেন। দেশের ফেরার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ যথা সময়ে নেবেন।”
তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমান ১৭ বছর পর তার শাশুরি খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেশে ফিরেছেন। তার জন্য চার স্তরের নিরাপত্তার আবেদন করা হয়েছে পুলিশের কাছে। বিএনপির এক নেতা জানান, তার নিরাপত্তার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপুর্ণ, যেহেতু তিনি তারেক রহমানের স্ত্রী। একইভাবে তারেক রহমানের নিরাপত্তার বিষয়টিও অনেক গুরুত্বপূর্ন। তার দেশে ফেরার সঙ্গে নিরাপত্তা ইস্যুটিও খুবই জড়িত।”
অন্যদিকে গত ২৯ এপ্রিল খালেদা জিয়ার ভাগ্নে ও তারেক রহমানের খালাতো ভাই শাহরিন ইসলাম তুহিন দুর্নীতির দুইটি মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। ওই দুইটি মামলায় তিনি বিচারিক আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত।
এগুলো সরকারের দিক থেকে বিএনপির ওপর কোনো চাপ কী না জানতে চাইলে বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, "ওগুলো কিছু না। ওগুলোকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি না।”
বাংলাদেশে ১২ সংসদ: সরকার, বিরোধী ও গণতন্ত্র
কখনো সংসদে নেই বিরোধী দল, কখনো নেই নির্বাচনেই। কখনো নামকাওয়াস্তে বিরোধী দল, কখনো একই দল বিরোধী এবং সরকারের ভূমিকায়। নির্বাচনে নানা ধরনের নাটকীয়তার তথ্য জানুন ছবিঘরে।
ছবি: AFP
১৯৭৩: প্রথম সংসদে ছিল না বিরোধী নেতা
৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৩ আসনে জয় পায় আওয়ীমী লীগ। জাসদ একটি, জাতীয় লীগ একটি এবং স্বতন্ত্ররা পান পাঁচটি আসন। ভোট পড়েছিল ৫৪.৯। উল্লেখযোগ্য আসন না থাকায় ছিলেন না কোনো বিরোধী দলীয় নেতা। সেই সময় সাতজন সংসদ সদস্য বিরোধী দল গঠনের দাবি করলেও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তা প্রত্যাখ্যান করেন। আড়াই বছর পর সংসদ ভেঙে দিয়ে চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার প্রবর্তন করা হয়, গঠন করা হয় একক দল বাকশাল।
৫১.৩% ভোটার উপস্থিতিতে নির্বাচনের মাত্র ছয় মাস আগে গঠিত বিএনপি ২০৭ আসন জিতে সরকার গঠন করে। ৫৪ আসন জিতে আওয়ামী লীগ প্রধান বিরোধী দলের অবস্থান নেয়, দলের সভাপতি আসাদুজ্জামান খান হন বিরোধী নেতা। মুসলিম লীগ ২০টি, জাসদ ৮টি এবং অন্যান্য দল পায় ১০টি আসন। ১৯৮১ সালে সেনা কর্মকর্তাদের হাতে জিয়াউর রহমান নিহত হন। ১৯৮২ সালের মার্চের পর দ্বিতীয় সংসদ ভেঙে দেয়া হয়, ক্ষমতা দখল করেন সেনাপ্রধান হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ।
ছবি: imago/Belga
১৯৮৬: বিএনপির বর্জন, বিরোধী আওয়ামী লীগ
নিজের দল জাতীয় পার্টি গঠন করে তৃতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দেন এরশাদ। ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ১৫৩টি, আওয়ামী লীগ ৭৬টি আর জামায়াতে ইসলামী ১০টি আসন পায়৷ বিএনপি এই নির্বাচন বর্জন করেছিল৷ নির্বাচনে ভোট পড়েছিল ৬১.১%। আন্দোলনের মুখে ৭ ডিসেম্বর ১৯৮৭ সালে এই সংসদ বাতিল করেন এরশাদ।
ছবি: imago/Xinhua
১৯৮৮: প্রধান বিরোধীদের বর্জন, সম্মিলিত বিরোধী দল
আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, সিপিবি, ওয়ার্কার্স পার্টিসহ প্রায় সবকয়টি প্রধান বিরোধী দল এরশাদের অধীনে নির্বাচন বয়কট করে। জাতীয় পার্টি পায় ২৫১টি আসন। বেশ কয়েকটি নতুন তৈরি হওয়া দলের হয়ে নির্বাচিত হয়ে আসা সংসদ সদস্যদের নিয়ে তৈরি হয় ১৯ সদস্যের সম্মিলিত বিরোধী দল। কম্বাইন্ড অপজিশন পার্টি-কপ নামের ওই বিরোধী দলের নেতা করা হয় আ স ম আবদুর রবকে। নির্বাচনে ভোটের হার ছিল ৫২.৫%।
ছবি: bdnews24.com
১৯৯১: নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন
ব্যাপক আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেন এরশাদ। সংবিধানে তখনও ছিল না নিরপেক্ষ সরকারের বিধান। কিন্তু সব দলের সম্মতিতে নির্দলীয় সরকারের অধীনে হয় নির্বাচন। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি জয় লাভ করে ১৪২ আসনে, আওয়ামী লীগ ৮৮টি আসন পেয়ে সংসদে বিরোধী দলের মর্যাদা পায়, বিরোধীদলীয় নেতা হন শেখ হাসিনা। নির্বাচনে ভোট পড়েছিল ৫৫.৪%। এছাড়া, জাতীয় পার্টি ৩৫ এবং জামায়াতে ইসলামী পেয়েছিল ১৮টি আসন।
ছবি: Getty Images/AFP/FARJANA K. GODHULY
১৯৯৬: আবার বর্জন, বিরোধী নেতা বঙ্গবন্ধুর খুনি
এই নির্বাচন বেশি পরিচিত ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন নামেই। অধিকাংশ বিরোধী দল নির্বাচনটি বর্জন করে, ভোটদানের হার ছিল মাত্র ২১%। বিএনপি জিতেছিল ২৭৮ আসনে। ফ্রিডম পার্টির হয়ে একটি আসন জিতেছিলেন বঙ্গবন্ধুর খুনি কর্নেল (অব.) খন্দকার আবদুর রশিদ৷ স্বতন্ত্ররা জয়ী হয়েছিলেন ১০ আসনে। বাকি ১১টির মধ্যে ১০টি আসনের ফলাফল ‘অসমাপ্ত' থাকে ও আদালতের রায়ে একটি আসনের নির্বাচন স্থগিত করা হয়।
ছবি: Getty Images
১৯৯৬: তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রবর্তন
আগের সংসদ টিকেছিল মাত্র ১১ দিন। ব্যাপক আন্দোলনের মুখে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তন করে ১২ জুন দেয়া হয় সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ১৪৬ আসনে জেতে আওয়ামী লীগ, ১১৬ আসন পায় বিএনপি। ৩২ আসন পাওয়া জাতীয় পার্টির সমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ, বিরোধী দলের নেতা হন খালেদা জিয়া।
ছবি: Anupam Nath/AP/picture alliance
২০০১: জোটের নির্বাচনে বিএনপি
এটি ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দ্বিতীয় নির্বাচন। ১৯৯৯ সালেই জাতীয় পার্টি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী ঐক্যজোটকে সঙ্গে নিয়ে চার দলীয় জোট গঠন করে বিএনপি। এরশাদ জোট ত্যাগ করলেও নাজিউর রহমান মঞ্জু জাতীয় পার্টির একটি অংশ থেকে যায় জোটে। বিএনপি একাই ১৯৩ আসনে জয় পায়, ইসলামী ঐক্যজোট ২টি এবং জামায়াত পায় ১৭ আসন। আওয়ামী লীগ পায় ৬২ আসন। বিএনপির সঙ্গে সরকারে যোগ দিয়েছিল জামায়াত।
সংবিধান সংশোধন করে বিচারপতিদের অবসরের বয়সসীমা বাড়ায় বিএনপি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার পরিবর্তনের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে আওয়ামী লীগ। রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করে সেনাবাহিনী, গঠিত হয় সেনাসমর্থিত সরকার। গ্রেপ্তার করা হয় শেখ হাসিনা এবং খালেদা জিয়াকে, অভিযোগ ওঠে এই দুই নেতাকে রাজনীতি থেকে বাদ দেয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। মহাজোট গঠন করে আওয়ামী লীগ পায় ২৩০, জাতীয় পার্টি পায় ২৭ আসন। চার দলীয় জোটে বিএনপি পায় ৩০ আসন।
ছবি: picture-alliance/dpa
২০১৪: বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা
বিএনপিসহ অধিকাংশ বিরোধী দল দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করে। কোনো প্রতিপক্ষ না থাকায় ১৫৩টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা। ফলে নির্বাচনের আগেই সরকার গঠন নিশ্চিত ছিল আওয়ামী লীগের। রওশন এরশাদের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি পায় ৩৪ আসন। এই সংসদে জাতীয় পার্টি একই সঙ্গে ছিল বিরোধী দল এবং সরকারে। রওশন এরশাদ হন সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা, মন্ত্রিসভায় ছিলেন তার দলেরই তিন জন।
ছবি: picture-alliance/AP Photo
২০১৮: বিএনপির অংশগ্রহণ, ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ
বিএনপি, গণফোরাম, নাগরিক ঐক্য ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সমন্বয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামে একটি রাজনৈতিক ঐক্য গঠন করা হয়। এরশাদ বারবার মহাজোট ছাড়ার ঘোষণা দিলেও শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সঙ্গেই নির্বাচন করেন। আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও জোটসঙ্গীরা ২৮৮টি আসন পায়। আর বিএনপি এবং ঐক্যফ্রন্ট পায় মাত্র সাতটি। ২০১৯ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বিরোধী নেতা ছিলেন এরশাদ, এরপর তার স্ত্রী রওশন এরশাদ।
২০২৪: ইতিহাসের সর্বোচ্চ স্বতন্ত্র
বাংলাদেশের সংসদ নির্বাচনের ইতিহাসে এত স্বতন্ত্র প্রার্থী কখনো নির্বাচিত হননি। আওয়ামী লীগ জিতেছে ২২২ আসন, স্বতন্ত্ররা ৬২ আসন এবং জাতীয় পার্টি জিতেছে ১১ আসনে। বিএনপিসহ কয়েকটি দলের বর্জন করা নির্বাচনে স্বতন্ত্র হিসাবে লড়াই করে জয়ী হওয়াদের বেশিরভাগই বিভিন্ন পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতা। দুটি আসনে নির্বাচন স্থগিত হয়েছে। এবারও জাতীয় পার্টিই বিরোধী দল হবে, নাকি স্বতন্ত্ররাই জোট করবেন তা এখনো জানা যায়নি।