বাংলাদেশে ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি আন্দোলনেই ভরসা করেছিল৷ বলেছিল ‘অবৈধ সরকারের’ পতন ঘটিয়ে দেশে নতুন নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হবে নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে৷ কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি৷
বিজ্ঞাপন
কথায় জোর আছে বিএনপি নেতাদের৷ সরকারের শুধু পতনই নয় টেনে-হিঁচড়ে গদি থেকে নামানোর কথাও বলেন তাঁরা৷ আর তা গুরুত্ব দিয়ে সংবাদ মাধ্যমে প্রচারও হয়৷ বক্তৃতা, বিবৃতি, টকশো আছে বলেই হয়তো ডিজিটাল মাধ্যমে আন্দোলনের গরম হাওয়ার কথা শোনা যায়৷ অথবা কাগুজে তেজ ছাপা হয় পত্রিকায়৷ কিন্তু বিএনপির মাঠের তেজ দেখা যায়না৷ এক শীত পেরিয়ে আরেক শীত দরজায় কড়া নাড়ছে৷ মাঝে চলে গেছে গ্রীষ্ম-বর্ষার মত আরো অনেক ঋতু৷ কিন্তু বিএনপির শীত আর কাটে না৷ যেন এক দীর্ঘ শীতনিদ্রায় আছে দলটি৷
মাঝে মাঝে যে বিএনপি তপ্ত হয় না, তা নয়৷ এই যে সর্বশেষ ছাত্রদলের নতুন কমিটি নিয়ে এক দফা হয়ে গেল৷ নিজেরাই নিজেদের প্রতিপক্ষ৷ পদ না পাওয়া ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা শুধু বিক্ষোভ বিদ্রোহই করেন নি৷ অফিসে তালাও লাগিয়ে দেন৷ তাহলে আর সরকারকে তালা দেবে কে? এর আগে ঢাকা মহানগর কমিটি গঠন করা হয়৷ সেখানেও একই অবস্থা৷ কমিটি দিয়ে আন্দোলন চাঙ্গা করার আশায় পানি পড়েছে৷ কারণ আহ্বায়ক মীর্জা আব্বাস মানতে পারছে না বয়সে তরুণ নেতা হাবিব উন নবী খান সোহেলকে৷ তাই এই দলের মহাগরের নেতা-কর্মীরা দুই ভাগ৷ বিভক্তিতে শক্তি ক্ষয়, আন্দোলন আর হয় না৷ ঘর সামলাতেই সময় কেটে যায়৷
অন্যরকম নির্বাচন
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ১৫৩টি আসনে একক প্রার্থী থাকায় রবিবার অর্ধেকের বেশি আসনে ভোট গ্রহণ হয়নি৷ নির্বাচনের দিনের কিছু ছবি দিয়ে সাজানো হয়েছে এই ছবিঘর৷
ছবি: DW/M. Mamun
নিরাপত্তা ব্যবস্থা
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন সফল করতে সরকার ব্যাপক নিরাপত্তা প্রস্তুতি গ্রহণ করে৷ এজন্য ৫৯ জেলায় বিভিন্ন বাহিনীর প্রায় সাড়ে চার লাখ সদস্য মোতায়েন করা হয়৷ বাকি পাঁচটি জেলায় নির্বাচনের প্রয়োজন পড়েনি৷
ছবি: DW/M. Mamun
অলস সময়
ভোটার না থাকায় ঢাকার মিরপুরের হাজী আশ্রাফ আলী হাইস্কুলে স্থাপিত ভোটকেন্দ্রের সামনে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের অলসভাবে সময় কাটাতে দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: DW/M. Mamun
ভোটারের জন্য অপেক্ষা
ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাকাডেমি ভোটকেন্দ্রের ছবি এটি৷ কেন্দ্রে প্রবেশ করতে ভোটারদের জন্য বাঁশ ও দড়ি দিয়ে নির্ধারিত স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে৷ কিন্তু ভোটার নেই৷
ছবি: DW/M. Mamun
এখানেও একই অবস্থা
ছবিটি হারম্যান মাইনার কলেজ কেন্দ্রের৷ পাশাপাশি স্থাপিত কয়েকটি বুথ যেন খাঁ-খাঁ করছে৷ জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক পরিষদ, জানিপপ-এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ ডয়চে ভেলেকে জানান, ভোটার উপস্থিতি কম হবে এটাই স্বাভাবিক৷ কারণ এটি একটি ভিন্ন ধরনের নির্বাচন৷ একতরফার সঙ্গে আছে ব্যাপক সহিংসতা এবং বিরোধী দলের হরতাল-অবরোধ৷
ছবি: DW/M. Mamun
বিড়ম্বনার শিকার
নির্বাচনে ভোট দিতে গিয়ে ভোটার তালিকায় নাম খুঁজে না পেয়ে অনেক ভোটার ফিরে গেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে৷ তবে কেউ কেউ অবশ্য কষ্টটা শিকার করেই ভোট দিয়েছেন৷ ছবিতে মিরপুরের একটি কেন্দ্রে ভোটারদের সিরিয়াল নম্বর খুঁজতে দেখা যাচ্ছে৷ তাঁদের সহায়তা করছেন নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা৷
ছবি: DW/S. Kumar Dey
ভোটাধিকার প্রয়োগ
ভোট দিচ্ছেন একজন ভোটার৷ অবশ্য তাঁর মতো ভাগ্যবান হতে পারেননি দেশের মোট ভোটারের শতকার ৫২ জন৷ অর্ধেকেরও বেশি প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় এসব ভোটারের ভোট দেয়ার সুযোগ ছিল না৷ এই কারণে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীও ভোট দিতে পারেননি৷
ছবি: DW/M. Mamun
নারী ভোটার
ঢাকার একটি কেন্দ্রে ভোট প্রয়োগের অপেক্ষায় কয়েকজন নারী ভোটার৷
ছবি: DW/M. Mamun
উৎসাহে কমতি নেই
আব্দুল হাকিম নামে ৮৯ বছরের এই ভোটার দুই ব্যক্তির সহায়তায় ঢাকার একটি ভোটকেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন৷
ছবি: DW/M. Mamun
সেনা সদস্যদের পাহারা
দুজন ভোটার ভোট দিতে যাচ্ছেন৷ কেন্দ্রের নিরাপত্তায় সেখানে ছিলেন সেনা সদস্যরা৷
ছবি: DW/M. Mamun
9 ছবি1 | 9
আর আছে সিনিয়র নেতাদের আভিজাত্য এবং কথিত ষড়যন্ত্র৷ নেতারা মাঠে নামেন না, মামলা আর পিটুনির ভয়ে৷ তারা ঘরে বসেই গরম কথা বলেন৷ আর কর্মীরা মাঠে নেতা না পেয়ে দিকহারা, অসহায়, বিভ্রান্ত৷ তার মাঝে মওদুদ আহমেদরা নতুন বই লিখে আলোচনার জন্ম দেন৷ দলের ভেতরেই ‘ষড়যন্ত্রকারীদের' আচরণে বিএনপি বিপাকে পড়ে৷ চলে নতুন করে বিবৃতি বক্তব্য৷ সরকারের দোসর খোঁজা হয় দলের মধ্যেই৷ তাহলে উপায়!
গত কয়েকদিনে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া আবার মাঠ গরম করার মত কথা বলেছেন৷ বলেছেন কঠোর আন্দোলন শুরুর৷ কিন্তু তাতেও কী ভরসা পাচ্ছেন নেতা-কর্মীরা৷ পাবেন কীভাবে! বুধবার এক জনসভায় চূড়ান্ত আন্দোলনের জন্য দেশবাসীকে প্রস্তুত হতে বললেও আন্দোলন কবে শুরু হবে তা বলেননি দলের চেয়ারপার্সন৷ খালেদা জিয়া অবশ্য বলেছেন ৫ জানুয়ারি আগে সারাদেশে আন্দোলন সফল হয়েছে৷ ব্যর্থ হয়েছে ঢাকা৷ তার ভাষায়, ‘‘আমরা ব্যর্থ হয়েছি৷ আপনারা ব্যর্থ হননি৷'' এবার নাকি ঢাকাও সফল হবে বলে তিনি আশাবাদী
আর এই চূড়ান্ত আন্দোলনের প্রতিশ্রুতি তিনি এর আগে বহুবার দিয়েছেন৷ যার মধ্যে রোজার পরে, ঈদুল ফিতরের পরে, ঈদুল আজহার পরে অন্যতম৷ এরপর হয়তো শোনা যাবে নতুন বছরের শুরুতে৷ দেখে শুনে মনে হচ্ছে বিএনপি হয়তো আন্দোলন শুরুর জন্য পঞ্জিকা নিয়ে গবেষণা করে শুভ দিনক্ষণ খুঁজে পাচ্ছে না৷
আর এই আন্দোলনের একটি সুতা আবার প্রবাসে৷ খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান লন্ডনে বসে সেই সুতা নাড়াচাড়া করেন৷ তিনি রোজার ঈদে দেশের নেতাকর্মীদের ঈদকার্ড এবং লিখিত বার্তা পাঠিয়ে ঈদের পর চূড়ান্ত আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে বলেছিলেন৷ ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছিলেন বিএনপির কয়েকজন সিনিয়র নেতার বিরুদ্ধে আন্দোলন বিমুখতার৷ কিন্তু তাঁর ঈদ কার্ড আন্দোলন বার্তায়ও চাঙ্গা হয়নি দল৷ হবে কীভাবে তারেক রহমান নাকি তাঁর বিশ্বস্ত কয়েক নেতাকে ‘সরকারের দুর্নীতির শ্বেতপত্র' তৈরির কাজ দিয়েছিলেন৷ তিনি আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করতে চেয়েছিলেন শ্বেতপত্র প্রকাশের মাধ্যমে৷ কিন্তু সেই শ্বেতপত্র আর হয়নি৷ নেতারা ফাঁকিবাজি করেছেন৷ তারা নাকি পেপারকাটিং থেকে তথ্য নিয়েই দায়িত্ব শেষ করেছেন৷ যা তারেক রহমানকে যারপরনাই আশাহত করেছে৷ আর এখন তো তিনি নতুন করে উপদেষ্টা বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন৷ তাঁর উপদেষ্টা ব্যারিষ্টার আবু মোহাম্মদ সায়েম ২১ অক্টোবর লন্ডনে আটক হন জালিয়াতির অভিযোগে৷ অবশ্য ছাড়া পেয়ে তিনি উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন৷
ভোটকেন্দ্রে হামলা, ভাঙচুরের ছবি
দশম জাতীয় নির্বাচনের ভোট গ্রহণের সময় ব্যাপক সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে৷ পাঁচ জানুয়ারি বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে হামলা, ভাঙচুর এবং জনপ্রতিক্রিয়ার কিছু ছবি পেয়েছে ডয়চে ভেলে৷ পাঠকের জন্য গ্যালারি আকারে সেসব ছবি প্রকাশ করা হলো৷
ছবি: STRINGER/AFP/Getty Images
আওয়ামী লীগ সমর্থকদের মারধর
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণের দিন রাজশাহীর বাগমারায় নির্বাচনকেন্দ্রিক সংঘর্ষ চলাকালে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের পেটায় বিএনপি সমর্থকরা৷ পাঁচ জানুয়ারি ভোট গ্রহণের সময় বিরোধী দলের সঙ্গে ক্ষমতাসীন দল এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন বেশ কয়েকজন৷
ছবি: picture-alliance/dpa
সংঘর্ষে আহতকে সহায়তা
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় নির্বাচন চলাকালে সংঘর্ষে আহত এক ব্যক্তিকে সহায়তা করছেন অন্যরা৷ নির্বাচন চলাকালে একশো’র বেশি ভোটকেন্দ্রে হামলা চালায় নির্বাচন বিরোধীরা৷ সহিংসতা এবং ভোটকেন্দ্র পুড়িয়ে দেয়ার কারণে ১৩৯টি ভোটকেন্দ্রের নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo
আগুনে পোড়া ভোট কেন্দ্র
নির্বাচনের দিন চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার আজিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্র পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা৷
ছবি: DW
পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ
গাইবান্ধায় ভোট গ্রহণ চলাকালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় স্লোগান দিচ্ছে নির্বাচন বর্জন করা বিরোধী দলের সমর্থকরা৷ বিরোধী দলবিহীন রবিবারের নির্বাচনে ভোটারের উপস্থিতি কম ছিল৷ তাছাড়া এই নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে ইতোমধ্যে দেশি-বিদেশি মহলে প্রশ্ন উঠেছে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কমনওয়েলথ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচন পর্যবেক্ষণ থেকে বিরত থেকেছে৷
ছবি: Reuters
আহতকে সেবা
গাইবান্ধায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত এক ব্যক্তিকে ঘিরে রেখেছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দারা৷ রবিবারের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পর বিরোধী দল বিএনপি ‘‘নির্বাচনের ফলাফল বাতিল ও ভোটের দিন সারা দেশে নেতা-কর্মীদের হত্যার প্রতিবাদে’’ সোমবার সকাল ছ’টা থেকে ৪৮ ঘণ্টার হরতাল আহ্বান করেছে৷
ছবি: Reuters
ভোটকেন্দ্রে হামলা
বগুড়ার একটি ভোটকেন্দ্রে হামলা চালায় নির্বাচন বিরোধীরা৷ এসময় তারা ভোটকেন্দ্রে রাখা ব্যালট বাক্স ভাঙচুর করে এবং তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়৷ প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মস্থান বগুড়া৷
ছবি: STRINGER/AFP/Getty Images
ভোটকেন্দ্রের সামনে আগুন
বগুড়ার একটি ভোটকেন্দ্রের সামনে নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন দ্রব্যে আগুন ধরিয়ে দেয় নির্বাচন বিরোধীরা৷
ছবি: STRINGER/AFP/Getty Images
লাঠিসোঁটা নিয়ে উচ্ছ্বাস
বগুড়ার একটি ভোটকেন্দ্রে নির্বাচন বিরোধীরা হামলা চালানোর পর লাঠিসোঁটা নিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দারা৷ ঐতিহাসিকভাবে বগুড়া বিএনপির শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত৷
ছবি: STRINGER/AFP/Getty Images
সন্দেহভাজনকে আটক
বগুড়ায় একটি ভোটকেন্দ্রে হামলায় সন্দেহভাজন এক ব্যক্তিকে আটক করছে পুলিশ৷ নির্বাচন চলাকালে অনেক ভোটকেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে নির্বাচন বিরোধীরা৷ এসময় হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে৷
ছবি: STRINGER/AFP/Getty Images
বাদ যায়নি বাড়িও
বগুড়ার এক আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে হামলা চালায় নির্বাচন বিরোধীরা৷ হামলার পর আগুনে পোড়া অবশিষ্টের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কিছু পাওয়া যায় কিনা, তা খুঁজে দেখছেন সেই নেতার এক আত্মীয়া৷
ছবি: STRINGER/AFP/Getty Images
টায়ার জ্বেলে অবরোধ সৃষ্টি
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন নারায়ণগঞ্জে সড়কে টায়ার জ্বেলে অবরোধ সৃষ্টি করে জামায়াত-শিবির কর্মীরা৷
ছবি: DW
আহত ভোটার
ঢাকায় বিরোধী দলের সমর্থকদের ছোড়া হাতে তৈরি বোমার আঘাতে আহত এক ভোটার৷ ভোট গ্রহণ চলাকালে নির্বাচন বিরোধীরা বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ভোটকেন্দ্রে বোমা ফাটিয়েছে৷
ছবি: STRINGER/AFP/Getty Images
12 ছবি1 | 12
৫ জানুযারির নির্বাচনের পর বিএনপি একবার হরতাল করেছে৷ তাও আবার জামায়াতের হরতালের সঙ্গে মিলিয়ে৷ জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর আমৃত্যু কারাদণ্ডের প্রতিবাদে ১৮ ও ২১ সেপ্টেম্বর হরতাল পালন করে জামায়াত৷ বিএনপি হরতাল পালন করে ২২ সেপ্টেম্বর৷ এই হরতাল ডাকে বিএনপি হঠাত্ করেই৷ তা আবার নির্বাচনের দাবিতে নয়, সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী পাশের বিরুদ্ধে৷
আর রবিবার আরেকটি হরতাল ডেকেছে বিএনপিপন্থি ইসলামী দলগুলো৷ তারা হজ নিয়ে মন্তব্যকারী সদ্য সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকীতে গ্রেফতারের দাবিতে এই হরতাল ডেকেছেন৷ সিদ্দিকী মন্তব্য করে তিনি মন্ত্রীত্ব হারিয়েছেন, দল থেকে বহিস্কার হয়েছেন৷ আর এখন ভারতে অবস্থান করছেন৷ তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করা হয়েছে৷ সরকারের মন্ত্রীরা এরইমধ্যে অভিযোগ করেছেন এই হরতাল ডাকিয়েছে বিএনপি৷ কারণ রবিবার একটি দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়ার আদালতে হাজিরার তারিখ রয়েছে৷
তবে বিএনপির ইন্ধন থাকলেও এই হরতাল যে তেমন কার্যকর হবে তা আশা করা যায় না৷ কারণ বিএনপি ২২ সেপ্টেম্বরের হরতালও সফল করতে পারেনি৷
বিএনপি নেতারা প্রকাশ্যে বলেন, সরকারের অত্যাচার, নির্যাতন ও মামলা হামলার কারণে নেতাকর্মীরা কোনঠাসা৷ তাই তারা মাঠে নামতে পারছেন না৷ তবে তাদের ধারণা দেশের মানুষই সরকারকে বিদায় করবে৷ তাদের কথা দিন তারিখ দিয়ে আন্দোলন হয় না৷ সময় এলেই আন্দোলন হবে৷ তবে তাদের ভিতরের কথা আলাদা৷ তারা মনে করেন, দলকে আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত করতে আরো অনেক সময় লাগবে৷ কারণ নেতাকর্মীরা এখন আর ভরসা পাচ্ছে না৷ সরকারের পতন না হলে আবার আন্দোলনে নেমে কেউ বিপদে পড়তে চাইছে না৷ তার তাই কূটনৈতিক তত্পরতা বাড়ানোর ওপর জোর দিচ্ছেন৷
বিএনপির এই আন্দোলন অসারতা নিয়ে সরকারী দলের মন্ত্রীরাও বেজায় খুশি৷ তারা বার বারই বলছেন বিএনপির আন্দোলন করার ক্ষমতা নেই৷ বিএনপি কোন কর্মসূচি সফল করতে পারবে না৷ আর তাই নির্বাচনতো দূরের কথা বিএনপিকে সংলাপেরই সুযোগ দিতে চাইছে না সরকার৷ বলছে নির্বাচনের জন্য পাঁচ বছর অপেক্ষা করতে৷ সরকার বিএনপিকে অপেক্ষায় রাখছে আর বিএনপি আছে আন্দোলনের অপেক্ষায়৷