বিকল্প খুঁজে পাচ্ছে না বিএনপি, অবরোধ-হরতালে ক্লান্ত তারাও
হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা১৬ মার্চ ২০১৫
এর মধ্যে ঢাকার পরিস্থিতি প্রায় স্বাভাবিক হয়ে এসেছে, সারাদেশের অবস্থাও আগের মতো নেই৷ মাঝে-মধ্যে বাসে আগুন বা পেট্রোল বোমার খবর পাওয়া গেলেও, বিএনপি নেতা-কর্মীদের প্রকাশ্যে কোনো কর্মসূচি পালন করতে দেখা যাচ্ছে না৷
বিজ্ঞাপন
শুক্রবার সফল হবে না ভেবেই গণমিছিলের কর্মসূচিও দেয়া হয়নি৷ বিএনপির একাধিক নেতা বলেছেন, ‘‘আমাদের তো আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই৷ আর হরতাল-অবরোধেরও কোনো বিকল্প পাওয়া যাচ্ছে না৷ তাই হরতাল-অবেরোধ ছাড়া আর কী করতে পারি আমরা?''
বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ৬ই জানুয়ারি থেকে সারাদেশে লাগাতার অবরোধের ডাক দেন৷ এরপর যুক্ত হয় সাপ্তাহিক বন্ধের দু'দিন শুক্র ও শনিবার বাদ দিয়ে টানা হরতাল৷ তবে এই হরতাল-অবরোধের তেমন কোনো প্রভাব এখন আর নেই৷ রাজধানী ঢাকার জীবনযাত্রা স্বাভাবিক৷ সারাদেশের জনজীবনও স্বাভাবিক হয়ে আসছে৷ কিন্তু আতঙ্ক আছে৷ মাঝেমধ্যেই পেট্রোল বোমা হামলা হচ্ছে এখনো৷ যদিও মাঠে নেই বিএনপির নেতা-কর্মীরা৷
অবরোধ-হরতালে বিপর্যস্ত জনজীবন
বাংলাদেশে টানা অবরোধ ও হরতালের ফলে সাধারণ মানুষের জীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্দশা৷ ক্রেতার অভাবে বেচাকেনা প্রায় শূন্যের কোঠায় গিয়ে ঠেকেছে৷ শুধু অর্থনীতি নয়, চলমান রাজনৈতিক সহিংসতায় মুষড়ে পড়েছে পরিবহন ও শিক্ষা ব্যবস্থাও৷
ছবি: DW/M. Mamun
দাউ দাউ করে জ্বলছে আগুন
পুরনো ঢাকার বাবু বাজারে কাগজ বোঝাই একটি ট্রাকে জ্বলছে দুষ্কৃতিকারীদের দেয়া পেট্রোল বোমার আগুন৷ গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে চলছে বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের ডাকা অবরোধ৷ ডাকা হচ্ছে হরতালও৷ অবরোধ-হরতালে সবচেয়ে আলোচিত পেট্রোল বোমা৷ শুধু পেট্রোল বোমার আগুনেই পুড়ে মরেছে কমপক্ষে ৬৫ জন সাধারণ মানুষ৷
ছবি: DW/M. Mamun
পুলিশ প্রহরায় চলছে পরীক্ষা
ঢাকার মতিঝিল আইডিয়িাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে পুলিশ প্রহরা৷ চলমান এ অবরোধ-হরতালে যাঁরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত, তার মধ্যে শিক্ষার্থীরা অন্যতম৷ বর্তমানে সারা দেশে চলা এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন তাই অনেকটাই অনিশ্চয়তার মুখে৷ টানা অবরোধের মধ্যে ছুটির দিনগুলোতে চলছে পরীক্ষা৷ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে উদ্বিগ্ন অভিভাবকরাও৷
ছবি: DW/M. Mamun
দূরপাল্লার বাস নেই বললেই চলে
বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলির ডাকা অবরোধে বাংলাদেশের প্রধান সড়ক ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চিত্ত৷ দুপুর বেলায় তোলা এ ছবিতে মহাসড়কটি প্রায় যানবাহন শূন্য৷ কিন্তু সাধারণ সময়ে এ সড়কটি থাকে যানবাহনে ভরা৷ বাংলাদেশে চলমান অবরোধে দূর পাল্লার গাড়ি চলাচল কমে গেছে বহুলাংশে৷ একের পর এক পেট্রোল বোমার ঘটনায় ঝুঁকি নিয়ে বাস চালাচ্ছেন না অনেক মালিকই৷
ছবি: DW/M. Mamun
বিজিবি-র টহল পর্যাপ্ত নয়
অবরোধের মধ্যে বাংলাদেশের মহাসড়কগুলোয়, মানে ঢাকার বাইরে বিজিবি-র টহল থাকলেও, তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই সামান্য৷ এছাড়া সম্প্রতি রাত ন’টার পরে বাস চলাচলে সকলকে নিরুৎসাহ করার কারণে বাস মালিকদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে৷
ছবি: DW/M. Mamun
ঢাকায় অস্বাভাবিক নয় যানজট
বাংলাদেশে চলমান এই অবরোধে ঢাকার ভেতরের সড়কের দৃশ্য অবশ্য আলাদা৷ যান চলাচল অন্যান্য সময়ের চেয়ে তুলনামূলক কম হলেও, অনেক জায়গাতেই যানজট দেখা যাচ্ছে৷
ছবি: DW/M. Mamun
চরম দুর্ভোগে পড়েছেন অফিসযাত্রীরা
ঢাকার ফার্মগেটে অফিস শেষে গাড়ির অপেক্ষায় বাড়িমুখী মানুষের ভিড়৷ টানা অবরোধে গণ পরিবহন ব্যবস্থা বেহাল হলেও, অর্থাৎ গাড়িঘোড়ার চলাচল কম থাকাতে দুর্ভোগ বেড়েছে অফিসমুখী ও অফিস ফেরত মানুষের৷ অফিসে যেতে বা অফিস থেকে বাড়ি ফিরতে সাধারণ মানুষ তাই পড়ছেন দুর্ভোগে৷
ছবি: DW/M. Mamun
অবরোধে নদীপথের ভিন্ন চিত্র
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় নদীবন্দর ঢাকার সদরঘাটের চিত্র এটি৷ গত একমাসেরও বেশি সময়ের এই অবরোধে দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া উল্লেখযোগ্য বড় কোনো সহিংসতা ঘটেনি নদীপথে৷ তাই নদীপথে যান চলাচল প্রায় স্বাভাবিকই আছে৷ ঢাকা থেকে প্রধানত দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোয় নৌ-যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়নি৷
ছবি: DW/M. Mamun
যাচ্ছে না দূরপাল্লার বাসগুলো
বিএনপি ও সমমনা দলের জোটসমূহের ডাকা হরতাল-অবরোধে ঢাকার অন্যতম প্রধান বাস স্টেশন গাবতলীর দৃশ্য এটি৷ বেশিরভাগ দূর পাল্লার রুটের বাসই এ স্টেশনে পার্ক করে রাখা৷ হরতাল-অবরোধে দূর পাল্লার বাস চলাচল অনেকাংশেই বন্ধ আছে বাংলাদেশে৷
ছবি: DW/M. Mamun
খদ্দেরহীন এক রেস্তোরাঁ
ঢাকার গাবতলী বাস স্টেশনের খদ্দেরশূন্য মোহাম্মাদীয়া রেস্তোরাঁ৷ অবরোধের কারণে এ রেস্তোরাঁর লোকবল ১৬ জন থেকে ৮ জনে নামিয়ে আনা হয়েছে৷ বাকি যে আটজন আছেন তাঁদেরও নিয়মিত বেতন পরিশোধ করতে পারছেন না মালিক৷ গাবতলী স্টেশন থেকে দূর পাল্লার বাস চলাচল কম থাকায় এ রেস্তোরাঁটি দিনের বেশিরভাগ সময় খালি থাকছে৷
ছবি: DW/M. Mamun
বাড়ি ফেরা নিয়ে উদ্বিগ্ন মানুষ
অবরোধ আর হরতালকারীদের প্রধান লক্ষ্য সড়কে চলাচলকারী বাস আর ট্রাক৷ বাংলাদেশে এ পর্যন্ত যতগুলো হামলার ঘটনা ঘটেছে তার বেশিরভাগেই যাত্রীবাহী বাস কিংবা ট্রাকে৷ এতে কমপক্ষে ৬০ জন মানুষের প্রাণহানি ঘটলেও, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের বার্ন ইউনিটে পোড়ায় ক্ষত শরীর নিয়ে কাতরাচ্ছেন আরো শতাধিক সাধারণ মানুষ৷
ছবি: DW/M. Mamun
কমলাপুর রেল স্টেশনে অপেক্ষায় যাত্রীরা
অবরোধে ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন রুটে ট্রেন চলাচল করলেও, সময়সূচি ঠিক রাখতে পারছে না রেল কর্তৃপক্ষ৷ বিভিন্ন সময়ে অবরোধকারীদের রেল লাইনের ‘ফিশপ্লেট’ খুলে ফেলার কারণে কয়েকটি ট্রেনের লাইনচ্যুতির ঘটনায় ট্রেনের গতি কমিয়ে চালাতে হচ্ছে৷ তাই বেশিরভাগ ট্রেনই স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কমপক্ষে তিন-চার ঘণ্টা বিলম্বে ছেড়ে যাচ্ছে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন৷
ছবি: DW/M. Mamun
খেটে খাওয়া মানুষের দুর্দশা
টানা অবরোধ-হরতালে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন ফুটপাথের ভ্রাম্যমাণ দোকানদাররা৷ স্বল্প পুঁজির এ সব ব্যবসায়ীদের বিক্রি কমে যাওয়ায় পথে বসার উপক্রম হয়েছে অনেকেরই৷
ছবি: DW/M. Mamun
পুঁজি ভেঙে চলছে যাঁর সংসার
ঢাকার বায়তুল মোকাররম মসজিদ এলাকার ফুটপাথে কম্বলের ব্যবসা করেন গাজীরুল ইসলাম৷ দুপুরবেলা পর্যন্ত এ দিন তাঁর বিক্রি হয়েছে মাত্র ১৭’শ টাকার একটি কম্বল৷ তাও তার কেনা দামের থেকে ৩০০ টাকা কম৷ লাভ তো দূরের কথা সংসার চালাতে এখন পুঁজি টুকুনিই ভরসা৷
ছবি: DW/M. Mamun
অগ্নি নির্বাপক যন্ত্রই যখন ভরসা
ঢাকার নবাবপুর থেকে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র নিয়ে ফিরছেন এক গাড়ি চালক ও তাঁর সহকারী৷ টানা অবরোধ-হরতালে পেট্রোল বোমার ঘটনা মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ায় সতর্কতা হিসেবে নিজেদের গাড়িতে এখন থেকে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র রাখবেন তাঁরা৷
ছবি: DW/M. Mamun
14 ছবি1 | 14
ধারণা করা হচ্ছিল, শুক্রবার বিকেলের সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়া হরতাল-অবরোধ শিথিল করে নতুন কোনো কর্মসূচি দেবেন৷ বিএনপি নেতারা বিকল্প কর্মসূচি হিসেবে গণমিছিলের কথাও বলেছিলেন৷ কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি৷ খালেদা জিয়া অবরোধ-হরতাল অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সরকারকে সংকট নিরসনের আহ্বান জানিয়েছেন৷
বিএনপির একাধিক নেতা ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরাও মনে করছি অবরোধ-হরতাল আর তেমন কোনো প্রভাব ফেলতে পারছে না৷ কিন্তু বিকল্প কোনো কর্মসূচির কথাও চিন্তা করা যাচ্ছে না৷ কারণ গণমিছিল বা সমাবেশ বা ঘেরাও কর্মসূচি পালন করতে হলে নেতা-কর্মীদের মাঠে থাকা দরকার৷ হামলা মামলা এবং গ্রেপ্তারের ভয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা আত্মগোপন করে আছেন৷''
বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক রুহুল কবীর রিজভী আটক হন আন্দোলনের শুরুতেই৷ এরপর থেকে আরেক যুগ্ম সম্পাদক সালাহ উদ্দিন আহমেদ অজ্ঞাত স্থান থেকে বিবৃতির মাধ্যমে আন্দোলনের ঘোষণা দিতেন৷ গত সপ্তাহ থেকে তিনি নিখোঁজ৷ এখন বরকত উল্লাহ ভুলু দলীয় কর্মসূচি জানাচ্ছেন৷ তাও একই স্টাইলে, অজ্ঞাত স্থান থেকে৷ বিএনপি নেতারা বলেন, ‘‘ইলিয়াস আলীর খোঁজ এখনো পাওয়া যায়নি৷ সালাহ উদ্দিন আহমেদের কী পরিণতি হবে তা কেউ বলতে পারে না৷ হাইকোর্টের নির্দেশের পরও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাঁকে আদালতে হাজির করতে পারেনি৷ এখন বরকত উল্লাহ ভুলুর কী হয় তা দেখার বিষয়৷'' তারা বলেন, ‘‘এরপর হয়ত যে নেতা আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করবেন, তাঁকেই নিখোঁজ করে দেয়া হবে৷''
বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আহমেদ আযম খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে একটি আন্দোলন চললে তার গতি সমসময় এক থাকে না৷ মানুষ বাইরে বের হচ্ছে৷ যানবাহন কিছু হলেও চলছে৷ তাই বলে আন্দোলন ব্যর্থ বলা যাবে না৷ এই সরকারের বিরুদ্ধে দীর্ঘ মেয়াদে আন্দোলন চালাতে হবে৷ কারণ সরকার দমন-পীড়ন চালাচ্ছে৷''
অস্থির বাংলাদেশ
বাংলাদেশে দশম সংসদীয় নির্বাচনের বছরপূর্তিতে ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে৷ এতে একাধিক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে৷ ৫ই জানুয়ারি রাজনৈতিক অস্থিরতার কয়েকটি ছবি পাবেন এখানে৷
ছবি: picture alliance/ZUMAPRESS.com
অবরুদ্ধ খালেদা
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে তাঁর গুলশান কার্যালয়ে আটকে রেখেছে পুলিশ৷ যদিও সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে তাঁর নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে, তবে সোমবার তিনি বাইরে যেতে চাইলে পুলিশ তাঁর গেটে তালা লাগিয়ে দেয়৷ ফলে অবরুদ্ধ খালেদা জিয়া সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন গেটের মধ্যেই৷
ছবি: AFP/Getty Images
অবরোধ ঘোষণা
অবরুদ্ধ খালেদা জিয়া পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত সারা দেশে অবরোধের ঘোষণা দিয়েছেন৷ গুলশানের কার্যালয়ে সোমবার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘‘আজ আমাদের কালো পতাকা কর্মসূচি ছিল৷ সমাবেশ করতে দেওয়া হয় নাই৷ পরবর্তী কর্মসূচি না দেওয়া পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচি চলবে৷’’
ছবি: picture-alliance/epa/A. Abdullah
খালেদার কার্যালয় ঘিরে পুলিশ
প্রসঙ্গত, গত দু’দিন ধরে খালেদা জিয়ার কার্যালয় ঘিরে রেখেছে পুলিশ৷ ছবিতে পুলিশে একটি গাড়ি রাস্তায় আড়াআড়িভাবে রেখে রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে৷ এভাবে আরো কয়েকটি বালু এবং ইটভর্তি ট্রাকও রাখা হয়েছে৷
ছবি: picture alliance/Landov
গাড়িতে আগুন
রবিবার থেকেই ঢাকায় সভা, সমাবেশ, শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ করেছিল৷ কিন্তু তা সত্ত্বেও সমাবেশ করার সিদ্ধান্তে অটল থাকে বিএনপিসহ বিশ দল৷ ঢাকায় একটি সিএনজি এবং মোটর সাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেয়ার ছবি এটি৷ বিএনপি সমর্থকরা এটা করেছে বলে জানিয়েছে সংবাদসংস্থা৷
ছবি: picture alliance/ZUMAPRESS.com
পার্ক করা গাড়িতে আগুন
পার্ক করে রাখা একটি পিকআপ ভ্যানে আগুন দিচ্ছে বিএনপির সমর্থকরা৷ ছবিটি ঢাকা থেকে তোলা৷
ছবি: picture-alliance/epa/A. Abdullah
রাজপথে সরব আওয়ামী লীগ
পুলিশ সভা, সমাবেশ নিষিদ্ধ করলেও ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা জড়ো হন৷ বিষয়টি সমালোচনা করে ফেসবুকে সাংবাদিক প্রভাষ আমিন লিখেছেন, ‘‘...নিষেধাজ্ঞা কি শুধু বিএনপির জন্য? আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তো দেখি শহরজুড়ে মিছিল করছে, উল্লাস করছে, গান শুনছে, গান গাইছে৷’’ ছবিতে ঢাকায় বিএনপির এক সমর্থককে পেটাচ্ছে আওয়ামী লীগের কর্মীরা৷
ছবি: picture-alliance/epa/A. Abdullah
‘শান্তির পথে আসুন’
এদিকে সোমবার রাতে জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে বিএনপি নেত্রীকে শান্তির পথে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ তবে মধ্যবর্তী নির্বাচনের যে দাবিতে বিএনপিসহ বিশদল আন্দোলন করেছে, সেই দাবির প্রতি কোন নমনীয়তা দেখাননি তিনি৷ হাসিনা মনে করেন, সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনে অংশ না নেয়াটা বিএনপির রাজনৈতিক ভুল ছিল৷
ছবি: Oli Scarff/Getty Images
‘একতরফা’ নির্বাচন
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের পাঁচ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি দল অংশ নেয়নি৷ সেই নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৩টি আসনে কোন ভোটাভুটি হয়নি৷ বাকি আসনগুলোতে ভোটার উপস্থিতি ছিল বেশ কম৷ ইউরোপীয় ইউনিয়ন সেটিকে ‘একতরফা’ নির্বাচন আখ্যা দিয়েছে৷
ছবি: DW
8 ছবি1 | 8
তিনি বলেন, ‘‘বিকল্প কর্মসূচি দিতে হলে নেতা-কর্মীদের চাপমুক্ত করতে হবে৷ কিন্তু এই সরকার নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা হামলা অব্যাহত রেখেছে৷ বাইরে বের হয়ে কর্মসূচি পালনের সুযোগ রাখছে না৷ তাই সময় না আসা পর্যন্ত হরতাল-অবরোধ চালিয়ে যেতেই হবে৷''
আহমেদ আযম খান বলেন, ‘‘কেউ কেউ সমালোচনা করে বলেন, বিএনপি গুহার মধ্য থেকে কর্মসূচি ঘোষণা করছে৷ আমার কথা গুহার মধ্য থেকে কর্মসূচিও তো ঘোষণা করতে দেয়া হচ্ছে না৷ সালাহ উদ্দিন আহমেদকে নিখোঁজ করে দেয়া হয়েছে৷ এখন নতুন যাঁরা বিবৃতির মাধ্যমে কর্মসূচি দিচ্ছেন বা দেবেন, তাঁদের কী পরিণতি হয় কে বলতে পারে?''
তিনি বলেন, ‘‘গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সরকার এমন কঠোর অবস্থানে গেছে যে প্রকাশ্য গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পালন করা যায় না৷ তাই গোপনে বা বিবৃতির মাধ্যমে কর্মসূচি দেয়া হচ্ছে৷ গণমিছিল বা সমাবেশ তো এই সরকার করতে দেবে না৷ নেতা-কর্মীরা বাইরে বের হলে তো তাঁদের ধরে নিয়ে যাওয়া হবে৷''
বিএনপির টানা হরতাল-অবরোধের সোমবার ছিল ৬৯ দিন৷ আহমেদ আযম খান বলেন, ‘‘বিকল্প কর্মসূচি আমরা খুঁজে পাচ্ছি না এটা ঠিক নয়৷ সেই কর্মসূচি পালনের সুযোগ দিচ্ছে না সরকার৷''