1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

নিষ্ঠুরতার চূড়ান্ত দৃষ্টান্ত দেখাচ্ছে আইএস

গ্রেহেম লুকাস/এসিবি৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫

ইসলামিক স্টেট যে একটি অপশক্তি সে বিষয়ে যাদের বিন্দুমাত্র সংশয় ছিল, জর্ডানের এক বৈমানিককে পুড়িয়ে মারার ঘটনা সে সংশয় মুছে দেবে৷ গ্রেহেম লুকাস মনে করেন, নিষ্ঠুরতা এবং বিকৃতির চূড়ান্ত দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে আইএস৷

Libyen Islamisten Demo in Bengasi 31.10.2014
ছবি: picture-alliance/AP Photo/M. Hannon

ইসলামিক স্টেট ভয়ংকর নিষ্ঠুরতা এবং বিকৃত মানসিকতার এমন সব দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে, যা যে কোনো স্বাভাবিক মানুষকেই হতবুদ্ধি করে দেবে৷ মূলধারার সংবাদমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে গত কয়েকমাস ধরে এ বিষয়ে লেখালেখি হচ্ছে৷ আল-কায়েদার সাবেক নেতা আবু বকর আল-বাগদাদির নেতৃত্বে সুন্নি মুসলমানদের জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট ইরাক আর সিরিয়ায় কী বিভৎস আতঙ্ক ছড়াচ্ছে – তার খবর ক্লান্তিকরভাবে লিখে যেতে হচ্ছে৷ মানুষকে জিম্মি করে তাঁর শিরশ্ছেদ করা, পুড়িয়ে মারা, যুদ্ধক্ষেত্রের বন্দিদের গণহারে হত্যা, শিয়া মুসলমান বা খ্রিষ্টান নারীদের আটকে রেখে ধর্ষণ, ধনসম্পদ লুট – কী করছে না তারা! মিডিয়ায় প্রতিদিন আসছে এ সব৷ আইএস-এর এ সমস্ত নৃশংসতার সঙ্গে ধর্মের কোনো সম্পর্ক নেই৷ এটা যে কোনো মূল্যে ক্ষমতায় যাওয়া এবং নিষ্ঠুরভাবে আধিপত্যবাদ কায়েমের চেষ্টা মাত্র৷

গ্রেহেম লুকাসছবি: DW/P. Henriksen

আইএস-এর নৃশংসতাকে পশুর কাজ বললেও ভুল বলা হবে৷ পশুরা তো ক্ষুধা নিবারণ কিংবা টিকে থাকার জন্য হত্যা করে৷ পশুদের জগতটাই দু-ভাগে ভাগ করা, একদিকে শিকারি, অন্যদিকে শিকার৷ কিন্তু এই মানবসমাজে কী দেখছি আমরা! আমরা যেন সেই সময়ে ফিরে গেছি, যখন কিছু বিকৃত মানসিকতার মানুষ কল্যাণের কথা বলে হত্যা করতো৷ ইসলামিক স্টেট হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে ইসলামি খেলাফত কায়েমের কথা বলে৷ কিন্তু সত্যি কথাটা হলো, তাঁদের নিজেদের ধর্মও এমন হত্যার নিন্দা জানায়৷

ইসলামিক স্টেট অবর্ণনীয় এক ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে৷ সীমাহীন এক ত্রাসের রাজত্ব৷ ভয়ংকর নিষ্ঠুরতা আর আতঙ্কের রাজত্ব৷ এর চেয়ে জঘণ্য কিছু আর হয় না৷ এদের কাণ্ড-কীর্তি ২০০৪-এর দিকের আল-কায়েদা নেতা মুহাম্মদ খলিল আল-হাকায়মার চালানো বর্বরতার সঙ্গে বেশ মিলে যায়৷ মুহাম্মদ খলিল আল-হাকায়মার ‘অসভ্য ব্যবস্থাপনা'-র মূল কথাই ছিল, জিহাদিরা এমন বর্বরতা, নিষ্ঠুরতা চালাতে থাকবে যাতে পশ্চিমা শক্তি সামরিক শক্তি প্রয়োগে বাধ্য হয়৷ তারা মনে করতো, পশ্চিমা শক্তি সামরিক হস্তক্ষেপ করলে জাতিগত, ধর্মীয় উত্তেজনা সৃষ্টি হবে এবং এর ফলে জিহাদিদের হারানো আরো কঠিন হবে৷ বরং একটা অরাজক পরিস্থিতি তৈরি হলে তাদের জন্য ইসলামি খেলাফত কায়েম করা সহজ হবে৷

ইসলামিক স্টেট-এর নেতা আবু বকর আল-বাগদাদিরও যে এমন কৌশল নিয়েই কাজ করছেন, তা ভাবার যথেষ্ট কারণ আছে৷ আর এ অনুমান যদি ঠিক হয়, তাহলে পশ্চিমা দেশ এবং কয়েকটি আরব দেশের প্রতিও এই উসকানি দিন দিন আরো বাড়বে এবং বাড়তে বাড়তে আরো ভয়ংকর অবস্থায় পৌঁছাবে৷ বাগদাদি জানেন, যেহেতু পদাতিক বাহিনী হামলায় অংশগ্রহণ করলে জনগণ তা মেনে না-ও নিতে পারে, তাই পশ্চিমা দেশগুলো এবং তাদের আরব মিত্ররা আইএস-এর বিরুদ্ধে বিমান হামলার মধ্যেই নিজেদের সীমাবদ্ধ রাখবে৷ আর সমর বিশেষজ্ঞরা তো কতবারই বলেছেন, শুধু বিমান হামলা চালিয়ে ইসলামিক স্টেটকে হারানো সম্ভব নয়৷

তাই মানবসভ্যতা মনে হয় সবচেয়ে বর্বর নিষ্ঠুরতার দৃষ্টান্ত অবলোকন করতে যাচ্ছে৷ তবে ইনলামিক স্টেট নিজের আগুনে যেদিন পুড়বে, সেদিন এ সবের শেষও হবে৷ অনেক বছর হয়ত লাগবে, তবে সেদিন নিশ্চয়ই আসবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

বাংলাদেশ