1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অভিশংসন বিল পাশ

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪

বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদকে দিয়ে সংবিধানের ‘ষোড়শ সংশোধনী বিল-২০১৪’ পাশ হলো৷ এর মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এবং সাংবিধানিক পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তিদের অভিশংসনের ক্ষমতা ফিরে আসলো সাংসদদের কাছে৷

Bangladesch Parlament Gebäude in Dhaka
সংসদছবি: AP

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বুধবার রাত পৌনে ৮টার দিকে বিলটি সংসদে উত্থাপনের পর, স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরী তা সংসদ সদস্যদের আলোচনার জন্য উন্মুক্ত করেন৷ রাত সোয়া ১০টা পর্যন্ত সংসদ সদস্যরা আলোচনায় অংশ নেন৷ জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরা আলোচনায় বিলটি জনমত জরিপ এবং অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার কথা বলেন৷ এছাড়া সাতটি সংশোধনী প্রস্তাবও তোলা হয়৷ সংশোধনী প্রস্তাবগুলো কণ্ঠভোটে নাকচ হয়ে যায়৷ এরপর সেয়া ১১টার দিকে বিভক্তি ভোটে ষোড়শ সংশোধনী বিল পাশ হয়৷ বিলটির পক্ষে ৩২৭ এবং বিপক্ষে শূন্য ভোট পড়ে৷

বিল পাশের সময় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত ছিলেন৷ তাছাড়াও ছিলেন বিরোধী দলীয় নেত্রী রওশন এরশাদ ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ৷

স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরীছবি: DW/M. Mamun

নতুন আইনের ৯৬ অনুচ্ছেদের (১) দফায় বলা হয়েছে, এ অনুচ্ছেদের বিধানাবলী সাপেক্ষে কোনো বিচারক ৬৭ বত্‍সর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত স্বীয় পদে বহাল থাকবেন৷ (২) দফায় বলা হয়েছে, প্রমাণিত অসদাচরণ বা অসামর্থের কারণে মোট সদস্য-সংখ্যার অন্যূন দুই-তৃতীয়াংশ গরিষ্ঠতার দ্বারা সমর্থিত সংসদের প্রস্তাবক্রমে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতির আদেশ ব্যতিত কোনো বিচারককে অপসারিত করা যাবে না৷(৩) দফায় বলা হয়েছে, এই অনুচ্ছেদের (২) দফার অধীন প্রস্তাব সম্পর্কিত পদ্ধতি এবং কোনো বিচারকের অসাদাচরণ বা অসামর্থের সম্পর্কে তদন্ত সংসদে আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করবেন৷ (৪) দফায় বলা হয়েছে, কোনো বিচারপতি রাষ্ট্রপতিকে উদ্দেশ্য করে স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে স্বীয় পদ ত্যাগ করতে পারবেন৷

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৭-এর বিধান অনুযায়ী, প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ এবং তাদের পক্ষে এ ক্ষমতার প্রয়োগ কেবল সংবিধানের অধীন ও কর্তৃত্বে কার্যকর হবে৷

উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাছবি: Reuters

এর আগে নতুন এই আইনের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির প্রধান সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘কোনো বিচারপতির বিরুদ্ধে যদি অভিযোগ ওঠে তাহলেই কি তাঁকে অপসারণ করা হবে? তা নয়৷ এর জন্য ফলো-আপ আইন হবে৷ ঐ আইনে তদন্ত কমিটির বিধান থাকবে৷ সংশ্লিষ্ট, দায়িত্বশীল, প্রাসঙ্গিক লোকদের দিয়ে করা হবে৷ তাঁরা সংসদে বিষয়টি পাঠালে সংসদ শুধু অনুমোদন দেবে৷ অপসারণের ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির৷ তিনিই নিয়োগ দেন, সরাবেনও তিনি৷''

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সংসদে বলেন, জনগণের অধিকার, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখতেই এই আইন৷ তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলে বিচারপতিদের আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনো সুযোগ ছিল না৷ কিন্তু নতুন আইনে সব কিছু হবে স্বচ্ছতার সঙ্গে৷ সংসদ প্রমাণিত অভিযোগের পর শুধু অপসারণের অনুমোদ দেবে৷ আর সংসদের আইন দ্বারা তদন্ত কমিটি গুরুতর অভিযোগের তদন্ত করবে৷’’

গত ১৮ই আগস্ট মন্ত্রিসভা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বিল অনুমোদন করে৷ ৭ই সেপ্টেম্বর আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বিলটি সংসদে উত্থাপন করেন৷ উত্থাপনের পর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এক সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য বিলটি আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠান হয়৷ বৃহস্পতিবার প্রতিবেদন জমা দেয় সংসদীয় স্থায়ী কমিটি৷ তারও আগে ২রা সেপ্টেম্বর আইন মন্ত্রণালয় থেকে সংসদ সচিবালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখায় বিলটি পাঠানো হয়৷

১৯৭২-এর সংবিধানে বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদের হাতেই ছিল৷ ১৯৭৪ সালে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে এ ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে ন্যস্ত হয়৷ পরে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এলে ১৯৭৮ সালে সামরিক আদেশে বিচারপতিদের অভিশংসনের জন্য সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল-এর বিধান করা হয়৷ সর্বশেষ সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা আবারো সংসদের কাছে ফিরে গেল৷

তবে নতুন এই আইন নিয়ে দেশের সংবিধান বিশেষজ্ঞ এবং সুশীল সমাজের ভিন্নমত আছে৷ আইনটি পাশ করার আগে তাঁরা আরো ব্যাপক আলাপ-আলোচনার তাগিদ দিয়েছিলেন৷

‘‘অপসারণের ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির৷ তিনিই নিয়োগ দেন, সরাবেনও তিনি‘': সুরঞ্জিত সেনগুপ্তছবি: DW
স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ