1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মানবাধিকার প্রতিবেদন

হারুন উর রশীদ স্বপন, ঢাকা২৬ জুন ২০১৫

মার্কিন মানবাধিকার প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক ও গতিশীল নাগরিকদের দেশ হিসেবে উল্লেখ করা হলেও, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও গুমকে অন্যতম মানবাধিকার সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়৷

Bangladesch - Landesweiter Streik
ছবি: Getty Images

বৃহস্পতিবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ২০১৪ সালের মানবাধিকার প্রতিবেদন প্রকাশ করে৷ ওয়াশিংটনের ঐ অফিসে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি এই বার্ষিক প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন৷ জন কেরির কথায়, ‘‘যখন কোনো দেশের নাগরিকরা তাদের ন্যায্য অধিকার ও স্বাধীনতা সম্পূর্ণভাবে ভোগ করতে পারে, তখনই একটি দেশকে ভালো বলা যায়৷ কিন্তু বর্তমান বিশ্বে সন্ত্রাসবাদ এবং সহিংসতা মানবাধিকারের জন্য প্রধান হুমকি হয়ে উঠেছে৷''

প্রতিবেদনে আইন ও সালিশ কেন্দ্র ‘আসক'-এর উদ্ধৃতি দিয়ে জানানো হয় যে, গত বছরের প্রথম আট মাসে র‌্যাবসহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে বাংলাদেশে মোট ১১৩টি হত্যার ঘটনা ঘটেছে৷ যেখানে ২০১৩ সালে ১৭৯টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল৷

মানবাধিকার সংস্থা ‘অধিকার'-এর বরাত দিয়ে জানানো হয়, গত বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত মোট ৩৫টি গুমের ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশে৷ এগুলির সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা জড়িত বলেও দাবি করা হয়৷ এছাড়া প্রতিবেদনে ধর্মীয় ও সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ওপর নির্যাতন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে অন্তঃকোন্দলের বিষয়টিকেও সমস্যা বলে উল্লেখ করা হয়৷ শুধু তাই নয়, সংবাদমাধ্যমের ওপর নিয়ন্ত্রণ, নাজুক শ্রম অধিকার পরিস্থিতি ও অনলাইনে মত প্রকাশের সীমাবদ্ধতাকেও বাংলাদেশের অন্যতম সমস্যা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয় প্রতিবেদনে৷ বলা হয়, বিভিন্ন বেসরকারি সাহায্য সংগঠন বা এনজিও তাদের কার্যক্রম পরিচালনায় বাংলাদেশে ক্রমাগত বাধার সম্মুখিন হচ্ছে৷

মার্কিন মানবাধিকার প্রতিবেদনের ব্যাপারে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পরিচালক এবং মানবাধিকার নেতা নূর খান ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এই প্রতিবেদনে যে পরিস্থিতির কথা বলা হয়েছে, তা যথার্থ৷'' তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ উদার, গণতান্ত্রিক এবং ধর্মনিরপেক্ষ৷ কিন্তু শাসন ব্যবস্থা বা শাসকরা যখন এর বিপরীতে অবস্থান নেয়, তখন এক অসহনীয় পরিবেবেশের সৃষ্টি হয়৷ বাংলদেশেও তাই হয়েছে৷''

তার কথায়, ‘‘বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং গুম এখন যেন একটি স্বাভাবিক ঘটনা বাংলাদেশে৷ আগের সরকারের আমলে হয়েছে, এখনো হচ্ছে, থামছে না৷ তার ওপর এখন নতুন করে যুক্ত হয়েছে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের গুমের ঘটনা৷ কাউকে কাউকে আবার অপহরণের কয়েক মাস পর অস্ত্র বা বোমাসহ গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে৷''

‘‘গত বছরের প্রথম আট মাসে র‌্যাবসহ অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে বাংলাদেশে মোট ১১৩টি হত্যার ঘটনা ঘটেছে’’ছবি: AFP/Getty Images/M. Uz Zaman

নূর খান বলেন, ‘‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা রাজনৈতিকভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন৷ তাই পরিস্থিতি অনুযায়ী সংখ্যালঘু নির্যাতন বাড়ে, আবার কমে৷ একইভাবে রাজনৈতিক কারণেও বাড়ে পেট্রোল বোমার ব্যবহার, যার শিকার হন সাধারণ মানুষ৷''

তিনি জানান, ‘‘শুধু এনজিও বা মানবাধিকার সংগঠন নয়, যাঁরাই সরকারের সমালোচনা করেন, তাঁরাই সরকারের নিয়ন্ত্রণ বা চাপের মুখে পড়েন৷ সংবাদমাধ্যম বা সাংবাদিকরা এর বাইরে নয়৷''

নূর খানের মতে, ‘‘বাংলাদেশের বর্তমান শাসন ব্যবস্থায় গণতন্ত্র, জবাবদিহিতা এবং স্বচ্ছতা প্রকটভাবে অনুপস্থিত৷''

অন্যদিকে আন্তর্জাতিক সংস্থা ইনস্টিটিউট ফর ইকোনোমিকস অ্যান্ড পিস-এর ‘গ্লোবাল পিস ইনডেক্স' (জিপিআই) অনুসারে, দক্ষিণ এশিয়ার সাতটি দেশের মধ্যে শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে তৃতীয় অবস্থানে আছে বাংলাদেশ৷ বাংলাদেশের পরের অবস্থানে রয়েছে শ্রীলঙ্কা, ভারত, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান৷ বাংলাদেশের আগের অবস্থান ভুটান ও নেপালের৷ এছাড়া বিশ্বের ১৬২টি দেশের মধ্যে শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অবস্থান ৮৪তম৷ শান্তির সূচকে যুক্তরাষ্ট্রের (৯৪) চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ৷ চলতি সপ্তাহে এই রিপোর্টটিও প্রকাশ করা হয়৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ