আশা ছেড়ে দিয়েছেন সাগরের মা
৩ মে ২০১৩ সাগর সরওয়ার-মেহেরুন রুনি হত্যাকাণ্ডের পর এক বছরেরও বেশি সময় পার হয়েছে৷ কিন্তু এখনো তাদের প্রকৃত হত্যাকারীদের চিহ্নিত বা গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী৷ তখনকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুনের বেধে দেয় ২৪ ঘণ্টা পার হয়ে এখন ২৪ মাসের দিকে যাচ্ছে৷ কিন্তু ফলাফল শূন্য৷ শুরুতে সাগর-রুনির হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে সাংবাদিকরা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন৷ কিন্তু দেশের রাজনৈতিক বিভক্তির প্রভাব পড়েছে সেখানেও৷ ভেঙে গেছে সেই আন্দোলন৷ সাগরের মা সালেহা মনির দুঃখ করে ডয়চে ভেলেকে বলেন, এখন এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত নিয়ে সংবাদমাধ্যমে তেমন আর কোনো রিপোর্টও হয়না৷ আলোচনা হয়না ‘টক শো'-তে৷ আর তদন্তকারীরাও যোগাযোগ করেন না৷ জানান না তদন্তের কোনো অগ্রগতির খবর৷ সবাই যেন সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের কথা ধীরে ধীরে ভুলে যাচ্ছে৷
তিনি বলেন, তিনি এখন সাগর-রুনির হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার বা বিচারের আশা ছেড়ে দিয়েছেন৷ তাঁর দুঃখ যে তিনি আজও জানতে পারলেন না কেন তাঁর ছেলে এবং ছেলের বউকে হত্যা করা হলো৷ কারা হত্যা করল? হত্যাকারীরা প্রভাবশালী বলেই তাদের আড়াল করা হয়েছে বলে মনে করেন সালেহা মনির৷ তাঁর কথা, এখন আল্লাহর কাছে বিচার চাওয়া ছাড়া আর কোনো পথ দেখছেন না তিনি৷
রুনির ভাই নওশের রোমানও একই ধরনের কথা বলেন৷ তিনি জানান, তদন্তকারী সংস্থার লোকজন তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ তো করেনই না, এখন সাংবাদিক নেতারাও যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছেন৷ সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত এবং বিচার নিয়ে এখন যেন কারুর তেমন কোনো মাথা ব্যথা নেই৷ তাই হতাশ হয়ে বিচারের আশা ছেড়ে দেয়া ছাড়া তাঁদের আর কিই বা করার থাকতে পারে বলে জানান নওশের৷
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান জানান, সাংবাদিক ইউনিয়ন এখন আর আন্দোলনে নেই সত্য, তবে রিপোর্টার্স ইউনিটি সাগর-রুনির হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে৷ রবিবার তাঁরা এই দাবিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ঘেরাও-এর কর্মসূচি পালন করবেন৷ তিনিও অভিযোগ করেন, প্রভাবশালীদের রক্ষায় সরকার মামলাটি ধামা চাপা দেয়ার চেষ্টা করছে৷ আর সে কারণেই তদন্তের নামে সময় পার করছে৷
এদিকে, তদন্তকারী সংস্থা ব়্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান কর্নেল জিয়াউল হাসান ডয়চে ভেলেকে জানান, মামলার তদন্তে নতুন কোনো অগ্রগতি নেই৷ এ পর্যন্ত সন্দেহভাজন যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করছেন তারা৷
গত বছরের ১১ই ফেব্রুয়ারি ভোর রাতে সাগর-রুনি সাংবাদিক দম্পতি ঢাকায় তাঁদের নিজ বাসায় দুর্বৃত্তদের হাতে নিহত হন৷