ভারতে কি রাজনীতি ক্রমশ আরো বেশি ধর্মাশ্রিত হয়ে উঠছে? বিজেপিকে টেক্কা দিতেকংগ্রেসের মন্দির রাজনীতি এই প্রশ্নটা তুলে ধরেছে৷ এই প্রবণতায় উদ্বেগ পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মসূচিতেও দেখা যাচ্ছে একই প্রবণতা৷
বিজ্ঞাপন
দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ভারত ভাগ হয়েছিল৷ তবু আজকের ভারতের প্রতিষ্ঠাতারা এই দেশকে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসাবে দেখতে চেয়েছিলেন৷ সেই ভাবনা থেকেই ভারতের সংবিধান রচিত হয়েছিল৷ জনসমষ্টির ৮০ শতাংশ হিন্দু ধর্মাবলম্বী হওয়া সত্ত্বেও ভারত তাই হিন্দুরাষ্ট্র নয়৷ কিন্তু এই দেশের ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ ক্রমশ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে বলে মত পর্যবেক্ষকদের একাংশের৷ ভারতীয় রাজনীতিতে হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল বিজেপির মোকাবিলায় এতদিন যেখানে বিরোধীরা ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শের উপর জোর দিতো, সেখানে তারা ক্রমশ ধর্মকর্মের দিকে ঝুঁকে পড়ছে৷ সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশসহ বিভিন্ন রাজ্যের নির্বাচনে সেই প্রবণতাই দেখা গেল৷ প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের সভাপতি রাহুল গান্ধী অগুণতি মন্দির সফর করলেন৷ সেখানে পুজো দিলেন৷ সঙ্গে ছিলেন সংশ্লিষ্ট রাজ্যের শীর্ষ নেতৃত্ব৷ এই ছবি ফলাও করে প্রকাশিত হলো সংবাদপত্রে, দেখানো হলো টিভি চ্যানেলে৷ অথচ কিছুদিন আগেও কংগ্রেসের শীর্ষ নেতাদের এভাবে সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের নজর টানতে মন্দিরে যেতে দেখা যায়নি৷ নির্বাচনে কংগ্রেসের সাফল্যে প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি ভোটে জেতার একটি হাতিয়ার হিসাবে বিরোধীরাও এবার ধর্মকে এভাবে ব্যবহার করবে?
‘খুবই খারাপ লক্ষণ এটা’
কংগ্রেসের প্রাক্তন বিধায়ক অরুণাভ ঘোষ তাঁর দলের এই রণনীতির সঙ্গে সহমত নন৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এই রাজনীতিই আজ দস্তুর হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ খুবই খারাপ লক্ষণ এটা৷ অথচ এটা কংগ্রেসের পরম্পরা নয়৷ জওহরলাল নেহরু মন্দিরে যাননি ভোট পেতে৷ নরসিমা রাও থেকে হালের মনমোহন সিংয়ের ক্ষেত্রেও এ কথা বলা চলে৷'' আরেক প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী মন্দিরে গিয়েছেন, এ কথা স্বীকার করেও কংগ্রেস নেতা অরুণাভ বলেন, ‘‘ভারতীয় সংবিধানকে রক্ষা করতে রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের কথা মেনে চলতে হবে৷ তিনি বলেছিলেন, ধর্ম থাকবে মনে-কোণে-বনে৷ ধর্ম কখনো রাজনীতির বিষয় হতে পারে না৷ বিজেপির বিরুদ্ধে এ নিয়েই আমাদের লড়াই৷''
‘নিজস্ব কর্মসূচি ছেড়ে এই পথ নিতে হচ্ছে, এটা দুঃখের’
জাতীয় রাজনীতির মতো একই প্রবণতা আগে থেকেই দেখা যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে৷ এখানেও বিজেপির রামনবমীর মোকাবিলা করতে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস হনুমান জয়ন্তী পালন করছে৷ এটা যে বিজেপির রাজনীতির প্রভাবেই হচ্ছে, তা স্বীকার করেছেন তৃণমূল নেতা, প্রাক্তন বিধায়ক নির্বেদ রায়৷ তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার যখন সংবিধানবিরোধী কাজ করছে, তার মোকাবিলা করা জরুরি৷ মোকাবিলার পদ্ধতি কী হবে, সে ব্যাপারে নানা মত থাকতে পারে৷ হনুমান জয়ন্তী পালন, না অন্যভাবে সেটা করা হবে, ভাবতে হবে৷ তবে এটা ঠিক, কেন্দ্রের মোকাবিলায় আমাদের নিজস্ব কর্মসূচি ছেড়ে এই পথ নিতে হচ্ছে, এটা দুঃখের৷'' যদিও তৃণমূল কংগ্রেস ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ থেকে সরে এসেছে বলে তিনি মনে করেন না৷ নির্বেদ বলেন, ‘‘গান্ধীজি তাঁর সভায় হিন্দু ও ইসলামের ধর্মশাস্ত্র পাঠ করতেন৷ আমরা যদি হিন্দুদের উৎসব পালন করি, তাহলে যাঁরা মুসলিম তোষণের অভিযোগ তোলেন, তাঁরা কী বলবেন? আমরা সব সম্প্রদায়কে নিয়ে চলছি৷ এটা গান্ধীজির দেখানো পথ৷''
‘ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তির পক্ষে ক্ষতিকর’
মধ্যপ্রদেশের মতো বড় রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে দীর্ঘদিনের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা নিশ্চয়ই ছিল৷ কিন্তু তার সঙ্গে বিজেপির কট্টর হিন্দুত্বের মোকাবিলায় যে কংগ্রেসের ‘নরম হিন্দুত্ব' কাজে এসেছে, এ কথাও মেনে নিচ্ছেন রাজনীতির বিশ্লেষকরা৷ রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অমল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কংগ্রেস, তৃণমূলসহ বিরোধী দলগুলি ধর্মকে হাতিয়ার করছে, এই প্রবণতা দুর্ভাগ্যজনক৷ এটা আমাদের দেশের ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তির পক্ষে ক্ষতিকর৷ আমাদের সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শের কথা তুলে ধরা হলেও এটা স্পষ্টভাবে বলা হয়নি, কোনো দল প্রচারের ধর্মের আশ্রয় নিতে পারবে না৷ সেই সুযোগে ধর্মের প্রতি ঝোঁক বাড়ছে৷'' রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক উদয়ন বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলছেন, ‘‘মধ্যপ্রদেশের নির্বাচনে ধর্মের থেকে অর্থনৈতিক কারণ বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল৷ জিএসটি চালু থেকে কৃষকের সমস্যা বড় হয়ে দেখা দিয়েছে মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তিশগড়ের নির্বাচনে৷ তার সঙ্গে প্রতিষ্ঠানবিরোধিতার কারণটি রয়েইছে৷'' তবে বিজেপির হাতিয়ারকে ভোঁতা করতে সংখ্যালঘুদের কাছে টানার পাশাপাশি নরম হিন্দুত্বের প্রচার যে ক্রমশ ভারতীয় রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হয়ে উঠছে, এ কথা মানছেন অনেক পর্যবেক্ষক৷
‘বিজেপি এটা চিরকাল বিশ্বাস করে’
আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিরোধীরা আরো বেশি ঝুঁকতে পারে হিন্দুত্বের প্রচারের দিকে৷ তাহলে কি বিজেপির কৌশলে বদল আসবে? রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টই বলেছে, হিন্দুত্ব জীবনধারণের প্রণালী৷ বিজেপি এটা চিরকাল বিশ্বাস করে, নতুন নয়৷ এর সঙ্গে রাজনৈতিক কৌশলের সম্পর্ক নেই৷ বিরোধীরা যা করছে, সে সম্পর্কে একটি প্রবাদবাক্য বলা চলে— অতি ভক্তি চোরের লক্ষণ৷ যারা আজমল কাসাবকে সমর্থন করে, তাদের এই আচরণে মানুষ মত বদল করবে না৷ তবে মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়ে নিশ্চই কিছু ভুল-ভ্রান্তি আমাদের হয়েছে, তা আমরা শুধরে নেবো৷''
বিজেপিকে চিনে নিন
ভারতে অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপি৷ বর্তমানে জাতীয় ও রাজ্যস্তরে সর্বাধিক প্রতিনিধিত্ব রাখা দলটি সদস্য সংখ্যায় বিশ্বের বৃহত্তম৷ ঐতিহাসিকভাবে হিন্দু-জাতীয়তাবাদী অবস্থানের বিজেপির গল্প এই ছবিঘরে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/R. K. Singh
আদর্শগত উৎস
বিজেপিকে চিনতে হলে ‘সংঘ পরিবার’-এর অন্তর্গত হিন্দু জাতীয়তাবাদী সংগঠনগুলির উৎস আরএসএস অর্থাৎ রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘকে জানা দরকার৷ বিশ্বের বৃহত্তম এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা মারাঠি চিকিৎসক কেশব হেডগেওয়ার৷ ১৯২৫ সালে সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন তিনি৷ ভি ডি সাভারকরের ‘হিন্দুত্ব’ চিন্তাধারায় অনুপ্রাণিত হয়ে হিন্দু রাষ্ট্র নির্মাণই আরএসএস-এর প্রধান উদ্দেশ্য৷
ছবি: picture alliance/AP Photo
স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে দূরত্ব
কংগ্রেসের নেতৃত্বে চলা ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে দূরে ছিল আরএসএস৷ ১৯৪০-এর দশকে সংগঠনের নেতা হিসেবে এম এস গোলওয়ালকর হিন্দু রাষ্ট্র গড়তে ব্রিটিশ বিরোধিতার বদলে ধর্ম ও সংস্কৃতি রক্ষার ডাক দেন৷ উল্লেখ্য, পরবর্তীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়া অটলবিহারী বাজপেয়ী ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনের সময় সত্যাগ্রহীদের সাথে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন৷ লিখিত মুচলেকা দিয়ে আন্দোলনে জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে ছাড়া পান তিনি৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/M.Desfor
দেশভাগ ও আরএসএস
দেশভাগের সময় আরএসএস পশ্চিম পাঞ্জাব থেকে আসা হিন্দু উদ্বাস্তুদের সাহায্য করে৷ আরএসএস ও বর্তমানের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির কর্মীরা মনে করেন, দেশভাগ মুসলিমদের প্রতি নরম আচরণের ফল৷ এজন্য গান্ধী ও নেহরুকে বিশেষভাবে দায়ী মনে করেন তাঁরা৷ স্বাধীনতার পর কংগ্রেসকে ঠেকাতে ১৯৫১ সালে জনসংঘ প্রতিষ্ঠা করেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়৷ সেই জনসংঘই আসলে বিজেপির উৎস৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo
জরুরি অবস্থা ও জনতা পার্টির জন্ম
১৯৭৫ সালে ইন্দিরা গান্ধী জরুরি অবস্থা জারি করেন৷ বিক্ষোভে অংশ নেয়ার কারণে জনসংঘের অসংখ্য সমর্থককে গ্রেপ্তার করা হয়৷ ১৯৭৭ সালে জরুরি অবস্থা শেষে অনুষ্ঠিত হয় নির্বাচন৷ কংগ্রেসকে হারাতে অন্যান্য দলের সঙ্গে মিলে যায় জনসংঘ, জন্ম নেয় জনতা পার্টি৷ নির্বাচনে জিতেও যায় জনতা পার্টি৷ প্রধানমন্ত্রী হন মোরারজি দেশাই৷ স্বাধীন ভারতে সূচিত হয় হিন্দুত্ববাদীদের প্রথম গুরুত্বপূর্ণ জয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa
বিজেপির জন্ম
১৯৮০’র পর দল ও আরএসএসের দ্বৈত সদস্য হবার বিধান না থাকায় জন্ম নেয় ভারতীয় জনতা পার্টি৷ নতুন দলে নতুন সদস্য যোগ দিলেও, গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিল পুরোনোদের দাপট৷ প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হন বাজপেয়ী৷ মূলত, ইন্দিরা হত্যার পর ভোটে খারাপ করার কারণেই নেতৃত্বে এই পরিবর্তন৷ তবে বিজেপির উত্থান শুরু ১৯৮৪ সালে৷ সে বছর দলের সভাপতি হন লালকৃষ্ণ আডবানি৷ রাম জন্মভূমির দাবিকে ঘিরে তাঁর নেতৃত্বেই শক্তিশালী হতে থাকে বিজেপি৷
ছবি: Getty Images/AFP/Raveendran
ধর্মভিত্তিক রাজনীতি ও বাবরি মসজিদ
নব্বইয়ের দশকের শুরু থেকেই বিজেপি সরাসরি ধর্মের রাজনীতিতে নামে৷ বাবরি মসজিদের জায়গায় রাম মন্দির গঠনের দাবিতে সারা দেশ থেকে অযোধ্যার পথে রওয়ানা দেয় হাজার হাজার ‘করসেবক’৷ পুলিশের সাথে সংঘর্ষের ফলে বিশৃঙ্খলা দেখা দিলে উত্তেজিত জনতা বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলে৷ এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় নিহত হন দু’ হাজারেরও বেশি মানুষ৷
ছবি: Getty Images/AFP/D .E. Curran
সরকার গঠন ও জোটের রাজনীতি
সাম্প্রদায়িক আবেগকে হাতিয়ার করে ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে বিজেপি ১৬১টি লোকসভা আসনে জয়ী হয়৷ প্রধানমন্ত্রী পদে শপথ নেন অটলবিহারী বাজপেয়ী৷ কিন্তু ১৩ দিন পর, লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে ব্যর্থ হওয়ায় সরকার গঠন করতে পারেনি বিজেপি৷ ১৯৯৬ সালে আঞ্চলিক দলগুলির একটি জোট সরকার গঠন করে৷ কিন্তু সেই সরকারের স্থায়িত্ব দীর্ঘ হয়নি৷ ১৯৯৮ সালে আবার নির্বাচন হয়৷
ছবি: UNI
প্রথম এনডিএ সরকার
নির্বাচনে জিতে বিজেপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট (এনডিএ) সরকার গড়ে৷ জোটে অংশগ্রহণ করে সমতা পার্টি, অকালী দল, শিব সেনা, নিখিল ভারত আন্না দ্রাবিড় মুন্নেত্র কড়গম (এআইএআইডিএমকে), বিজু জনতা দল ও শিব সেনা৷ ১৯৯৯ সালে তাঁরা সংসদে ৩০৩টি আসন জিতলে বাজপেয়ী তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন৷ পাঁচ বছরের পূর্ণমেয়াদী এই জোট সরকার প্রতিরক্ষা ও সন্ত্রাসের মোকাবিলার পাশাপাশি নব্য-উদার অর্থনীতির ওপর জোর দেয়৷
ছবি: Imago/photothek/T. Koehler
দুর্নীতি ও দাঙ্গায় কোণঠাসা বিজেপি
বিজেপির জয়রথে প্রথম ‘বাধা’ গোধরা দাঙ্গা৷ তীর্থযাত্রীবাহী ট্রেনে আগুন লাগাকে ঘিরে প্রায় ২০০০ মানুষ মারা যান৷ তৎকালীন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীসহ আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিজেপি নেতার নাম এই দাঙ্গার সাথে জড়ায়৷ বিজেপি-প্রধান বঙ্গারু লক্ষ্মণের বিরুদ্ধে ওঠে দুর্নীতির অভিযোগ৷ সব মিলিয়ে বিপন্ন বিজেপিকে হারিয়ে কংগ্রেসের নেতৃত্বে ইউপিএ জোট ২০০৪ সালে নতুন সরকার গড়ে৷ প্রধানমন্ত্রী হন মনমোহন সিং৷
ছবি: AP
নেতৃত্বে কে? মোদী, না আডবাণী?
২০১৪’র লোকসভা নির্বাচনে জেতার পর নরেন্দ্র মোদীকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে মনোনীত করে বিজেপি৷ অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, দলের নেতৃত্বের দায়ভার বর্ষীয়ান নেতা এল কে আডবানির ওপর বর্তানোর কথা উঠলেও, বাস্তবে তা হয়নি৷
ছবি: AP
মোদীর উত্থান
বিজেপির ইতিহাসে ব্যক্তিকেন্দ্রীক নির্বাচনী প্রচার মোদীর ক্ষেত্রেই প্রথম৷ পূর্ববর্তী সরকারের দুর্নীতির সুযোগ নিয়ে মোদীর ‘গুজরাট মডেল’-কে আদর্শ হিসেবে তুলে ধরা হয় প্রচারে৷ সুবক্তা মোদী শীঘ্রই হয়ে ওঠেন তরুণ প্রজন্ম থেকে সংবাদমাধ্যম, সকলের প্রিয়পাত্র৷ নির্বাচনের আগে বিজেপি হিন্দু জাতীয়তাবাদকে যতটা সম্ভব এড়িয়ে গেলেও, মোদীর প্রাক-নির্বাচন বক্তব্যের বড় অংশ জুড়েই ছিল ‘হিন্দুত্ব’৷
ছবি: picture alliance/AA/M. Aktas
মোদী থেকে ‘মোদীজি’
২০১৪ সালে বিজেপি ২৮২টি আসন জিতে ক্ষমতায় আসে৷ ভোটারদের কংগ্রেসের প্রতি অনাস্থার পাশাপাশি বিজেপির সাফল্যের আরেকটি কারণ ছিল আরএসএসের নিঃশর্ত সমর্থন৷ নরেন্দ্র মোদীই হন প্রধানমন্ত্রী৷ পিউ গবেষণা কেন্দ্রের একটি সমীক্ষা জানাচ্ছে, প্রথম বছরের তুলনায় বর্তমানে মোদীর জনপ্রিয়তা আরো বেড়েছে, যা ২০১৯-র নির্বাচনে কংগ্রেস-সহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলির জন্যও নিঃসন্দেহে ভাবনার বিষয়৷