1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিজ্ঞান এদের শিরায়, প্রযুক্তি এদের ধমনীতে

২২ আগস্ট ২০১৭

‘বিশ্বের খুব কম দেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্ষেত্রে এই পরিমাণ অবদান রেখেছে'; জার্মানি সম্পর্কে মন্তব্যটি খোদ ইউরোপীয় কমিশনের৷ কেন, তা বুঝতে গেলে নোবেল প্রাইজ গোনার দরকার নেই, কয়েকটি প্রকল্প দেখলেই চলে৷

ছবি: picture alliance/CPA Media Co. Ltd

যে দেশে মিউনিখ, হাইডেলব্যার্গ বা বার্লিন ছাড়াও অসংখ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বোচ্চ পর্যায়েবিজ্ঞান-প্রযুক্তি নিয়ে পঠন-পাঠন ও গবেষণা চলে; যে দেশে হুমবোল্ট কিংবা ডয়চে ফর্শুংসগেমাইনশাফ্টের মতো নিধি গবেষণায় অর্থসংস্থান করে থাকে – সেই সঙ্গে সরকারের অর্থনীতি মন্ত্রণালয়; যে দেশে মাক্স প্লাঙ্ক, ফ্রাউনহোফার, হেল্মহলৎসের মতো বিশ্বখ্যাত গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলির বিভিন্ন ইনস্টিটিউটে বিজ্ঞান-প্রযুক্তির নানা বিষয় নিয়ে সর্বাধুনিক গবেষণা চলেছে – সেই আইনস্টাইন, হাইজেনব্যার্গ, শ্রোয়ডিঙ্গার-এর দেশে বৈজ্ঞানিক গবেষণার মান বোঝানোর জন্য বিশেষ কোনো পন্থা অবলম্বন না করে উপায় নেই৷ তবে দু'টি জিনিস আগে থেকে বলে নেওয়া দরকার৷

‘দ্বিবিধ'

প্রথমত, জার্মানির অর্থনীতি ও জার্মানির সমৃদ্ধি দাঁড়িয়ে রয়েছে বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও ব্যবহারিক শিল্পোৎপাদনের যৌথ ভিত্তির উপরে৷ তাত্ত্বিক গবেষণাতেও জার্মানরা এককালে মার্কিনিদের চেয়ে কম যেতেন না, কিন্তু প্রযুক্তি হলো জার্মানদের নিজেদের খেলার মাঠ, তাদের নিজেদের স্টেডিয়াম, যেখানে তাদের হারানো শক্ত৷

শিক্ষার ক্ষেত্রে যেমন তাদের ‘ডুয়াল' বা ‘দ্বিবিধ' শিক্ষাপ্রণালীর মাধ্যমে জার্মানরা শিক্ষার তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক, দু'টো দিককে মেলাতে পেরেছেন, ঠিক সেইভাবেই এদেশে বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি মন্ত্রণালয়, বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও ছোট-বড় নানা শিল্পসংস্থা, সকলে মিলে নতুন ও আধুনিকতর পণ্য সৃষ্টির প্রচেষ্টায় সামিল৷ কিন্তু গবেষণার চূড়ান্ত উদ্দেশ্য যে শেষমেষ কোনো না কোনোভাবে মানুষের ও সমাজের কাজে লাগা, সেটাও যেমন জার্মানরা ভোলেন না; সেইরকম গবেষণা যে অর্থসাপেক্ষ, গবেষণাকে যে শেষমেষ শিল্প-ব্যবসায়ের জন্য পণ্য বা পরিষেবা সৃষ্টি করে তার নিজের খরচ নিজেকেই পুষিয়ে নিতে হবে, জার্মানরা সেটাও ভোলেন না৷

ফ্লেক্সনেট অ্যান্ড কো.

বিষয়টা দৃষ্টান্ত ছাড়া বোঝানো কঠিন, তাই গিয়েছিলাম ইউরোপীয় কমিশনের ওয়েবসাইটে, ইউরোপীয় কমিশনের অর্থানুকুল্যে জার্মানিতে কী ধরনের গবেষণা প্রকল্প চলেছে, তার খোঁজে৷ স্বভাবতই এই সব প্রকল্পে বিভিন্ন জার্মান শিল্পসংস্থা ও গবেষণা সংস্থা এবং বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট৷ এদেশে সেটাই স্বাভাবিক৷ প্রথমেই নেওয়া যাক ‘ফ্লেক্সনেট' প্রকল্পটিকে৷ জার্মানির কেমনিৎস টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটি আরো ১৫টি ইউরোপীয় সহযোগীর সঙ্গে ইউরোপের ছোট ও মাঝারি আকারের শিল্পসংস্থাগুলির জন্য ‘‘অরগ্যানিক অ্যান্ড ফ্লেক্সিবল'' পদার্থ ব্যবহার করে এমন সব প্রযুক্তি ও পণ্য উদ্ভাবন করার চেষ্টা করছে, যা সোলার প্যানেল থেকে ব্যাটারি ও লাইটিং বা ডিসপ্লে অবধি নানাভাবে প্রয়োগ করা চলবে৷

অরুণ শঙ্কর চৌধুরী, ডয়চে ভেলেছবি: DW/P. Henriksen

ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থানুকুল্যে দ্বিতীয় যে প্রকল্পটি চলছে, তার নাম এসএমই রোবোটিক্স৷ এখানেও উদ্দেশ্য হলো ছোট ও মাঝারি শিল্পের জন্য এক নতুন ধরনের ম্যানুফ্যাকচারিং রোবট তৈরি করা, যার জটিল প্রোগ্রামিং-এর প্রয়োজন পড়বে না, বরং ঐ বুদ্ধিমান রোবটটি তার মানুষ সহকর্মীর কাছ থেকে নিজেই শিখে নেবে৷ প্রকল্পটির সমন্বয়ের দায়িত্বে রয়েছে জার্মানির ফ্রাউনহোফার ইনস্টিটিউট ফর ম্যানুফ্যাকচারিং ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অটোমেশন৷

এভাবেই ইউরোপীয় ইউনিয়ন আরেকটি প্রকল্পে অর্থসংস্থান করছে, যার নাম হল ‘ই-ব্রেনস'৷ জার্মানির ইনফিনিয়ন টেকনোলজিস কোম্পানির নেতৃত্বে একটি আন্তঃ-ইউরোপীয় কনসর্টিয়াম অতি ক্ষুদ্র, নানো পর্যায়ের সেন্সর তৈরি করছে, যা বাড়িতে প্রাত্যহিক জীবনে মিনিয়েচারাইজেশান ও ‘স্মার্ট' বেতার যোগাযোগ দ্রুততর করবে৷

আর ন্যানোতেও যদি না হয়, তাহলে রয়েছে ‘দ্য ডিয়ামান্ট' নামের একটি প্রকল্প৷ জার্মানির উল্ম বিশ্বদ্যালয়ের নেতৃত্বে এই প্রকল্পে সলিড স্টেট মলিকিউলার টেকনোলজি নিয়ে কাজ চলেছে: সহজ করে বলতে গেলে, একটি নানো পর্যায়ের হিরের জালির উপর নিখুঁতভাবে এক একটি করে অণু, অর্থাৎ অ্যাটম বসানোর প্রচেষ্টা চলেছে৷ এক্ষেত্রে ইউরোপীয় কমিশনও তাদের সংশ্লিষ্ট ওয়েবপেজে বলতে বাধ্য হয়েছে যে, এ ধরনের প্রযুক্তির আপাতত কোনো ব্যবহারিক প্রয়োগ না থাকলেও ‘‘নিকট ভবিষ্যতে'' এগুলি নিশ্চয় বাণিজ্যিক উপযোগিতা পাবে৷

আপনার কিছু বলার থাকলে লিখুন নীচে মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ