১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকা রেসকোর্স ময়দানে (এখন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) মিত্রবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনী । সারা দেশে উড়েছিল বিজয়ের পতাকা৷ এসেছে বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের মাহেন্দ্রক্ষণ৷
বিজ্ঞাপন
নয় মাসের যুদ্ধে বিজয় ছিনিয়ে আনতে অনেক হারাতে হয়েছিল বাংলাদেশকে৷ লাখো শহিদের রক্ত কি বৃথা গেছে? নাকি যে আকাঙ্খা নিয়ে অস্ত্র হাতে নিয়েছিল লাখো মানুষ, তাদের সব আকাঙ্খা পূরণ হয়েছে? এক কথায় কোনো প্রশ্নের উত্তরই দেয়া সম্ভব নয়৷
বিজয়ের চার বছর পূর্তির আগেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ও তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্য এবং চার জাতীয় নেতাকে হত্যার মাধ্যমে দেশের রাজনীতিতে যে ঘনঘোর লেগেছিল, সেই ঘনঘোর বিজয়ের পঞ্চাশ বছরেও কাটেনি৷
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিময় স্থাপনা
দীর্ঘ ন’মাসের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতার সূর্য উঠেছিল বাংলাদেশে, যাতে ৩০ লাখ নিরীহ বাঙালিকে হত্যা করে পাক বাহিনী৷ প্রাণ বিসর্জন দেওয়া সেইসব শহিদদের স্মরণে দেশের বিভিন্ন স্থানে তৈরি করা হয়েছে স্মৃতিসৌধ ও ভাস্কর্য৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
স্বাধীনতা স্তম্ভ ও স্বাধীনতা জাদুঘর
ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ ও স্বাধীনতা জাদুঘর৷ ১৯৭১-এর ৭ মার্চ এখানে দাঁড়িয়েই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা করেছিলেন স্বাধীনতা অর্জনের দৃঢ় প্রত্যয়৷৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধের বিজয় দলিলও স্বাক্ষরিত হয়েছিল এখানেই৷ স্বাধীনতা স্তম্ভের পাশে আছে বাঙালি জাতিসত্তার অমরতার প্রতীক ‘শিখা চিরন্তনী’৷ স্বাধীনতা স্তম্ভটি বস্তুত ১৫০ ফুট উঁচু একটি গ্লাস টাওয়ার৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
অপরাজেয় বাংলা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবন চত্ত্বরে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য ‘অপরাজেয় বাংলা’৷ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বাংলার নারী-পুরুষের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ এবং বিজয়ের প্রতীক এই ভাস্কর্যটির স্থপতি সৈয়দ অব্দুল্লাহ খালিদ৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
বাংলাদেশের গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত নিদর্শন ও স্মারকচিহ্নসমূহ সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের জন্য ১৯৯৬ সালের ২২ মার্চ ঢাকা শহরের সেগুনবাগিচার একটি পুরানো ভাড়া বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত হয়৷ সম্পূর্ণ বেসরকারি উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধের তথ্য, প্রমাণাদি, নিদর্শন, রৈকর্ডপত্র ইত্যাদি সংগ্রহ করে এখানে রাখা হয়৷ ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে এ জাদুঘর স্থানান্তরিত হয় ঢাকার আগারগাঁও এলাকার নিজস্ব ঠিকানায়৷
ছবি: bdnews24.com/A. M. Ove
বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ
ঢাকার মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধের পাশেই শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ৷ ১৯৭১ সালের ১৪ই ডিসেম্বর দেশের প্রখ্যাত সন্তানদের নির্মমভাবে হত্যা করে এই স্থানের পরিত্যক্ত ইটের ভাটার পেছনের জলাশয়ে ফেলে রাখে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দোসররা৷ নিষ্ঠুর এই হত্যাকাণ্ড স্মরণীয় করে রাখার জন্য ইটের ভাটার আদলে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয় জায়গাটিতে৷ এর স্থপতি ফরিদ উদ্দীন আহমেদ৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ
ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ৷ ১৯৭১ সালের ১৪ই ডিসেম্বর পাক হানাদার বাহিনী রাজাকার আলবদরদের সহায়তায় এ দেশের সূর্যসন্তান বুদ্ধিজীবীদের নির্বিচারে হত্যা করে৷ তাঁদের স্মরণে ৭১ সালের ২২ ডিসেম্বর মিরপুরে এ স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়৷ এর স্থপতি ফরিদ ইউ আহমেদ ও জামি আল শাফি৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
জাতীয় স্মৃতিসৌধ
ঢাকা থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দূরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে সাভারের নবীনগরে জাতীয় স্মৃতিসৌধ৷ স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রাণ উৎসর্গকারী শহিদদের স্মরণে ১৯৭২ সালের ১৬ই ডিসেম্বর প্রথম বিজয় দিবসে এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান৷ স্থপতি সৈয়দ মঈনুল হোসেনের নকশায় এর নির্মাণ কাজ শেষ হয় ১৯৮২ সালে৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
জাগ্রত চৌরঙ্গী
ঢাকার অদূরে গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর চৌরাস্তার সড়কদ্বীপে অবস্থিত৷ ১৯৭৩ সালে নির্মিত এই ভাস্কর্যের স্থপতি আব্দুর রাজ্জাক৷ ডান হাতে গ্রেনেড, বাঁ হাতে রাইফেল, লুঙ্গি পরা, খালি গা, খালি পা আর পেশিবহুল এক মুক্তিযোদ্ধার ভাস্কর্য এটি৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ
মুক্তিযুদ্ধের শহিদদের স্মরণে ময়মনসিংহের শম্ভুগঞ্জে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর কাছেই এই স্মৃতিসৌধটি নির্মাণ করেছে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসন৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
বিজয় ৭১
ময়মনসিংহের কৃষিবিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য ‘বিজয় ৭১’৷ মহান মুক্তি সংগ্রামে বাংলাদেশের সকল শ্রেণির মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মূর্ত প্রতীক এ সৌধ৷ ভাস্কর্যটিতে একজন নারী, একজন কৃষক ও একজন ছাত্র মুক্তিযোদ্ধার প্রতিকৃতি রয়েছে৷ ভাস্কর্যটির দেয়াল জুড়ে আছে পোড়া মাটিতে খোদাই করা মুক্তিযুদ্ধের নানান ঘটনাবলী৷ ২০০০ সালে নির্মিত এ ভাস্কর্যের শিল্পী শ্যামল চৌধুরী৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
মুজিবনগর স্মৃতিসৌধ
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত অন্যতম একটি স্থান মেহেরপুরের মুজিবনগর৷ ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের বৈদ্যনাথ আম্রকাননে বাংলাদেশের অন্তরবর্তীকালীন সরকার শপথ গ্রহণ করেছিল৷ ১৯৭১ সালের এ ঘটনাকে চিরস্মরণীয় করে রাখতে ১৯৮৭ সালের ১৭ এপ্রিল সেখানে উদ্বোধন করা হয় এ স্মৃতিসৌধ৷ স্মৃতিসৌধটির নকশা করেন স্থপতি তানভীর করিম৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
সাবাশ বাংলাদেশ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতিহার চত্বরের মুক্তাঙ্গনের উত্তর পাশে অবস্থিত৷ রাকসু এবং দেশের ছাত্রজনতার অর্থ সাহায্যে শিল্পী নিতুন কুন্ডু এই ভাস্কর্য বিনা পারিশ্রমিকে নির্মাণ করেন৷ ১৯৯২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি এর উদ্বোধন করেন শহিদ জননী জাহানারা ইমাম৷ এই স্মৃতিস্তম্ভে আছে দু’জন মুক্তিযোদ্ধার মূর্তি৷ একজন অসম সাহসের প্রতীক, অন্য মুক্তিযোদ্ধার হাত বিজয়ের উল্লাসে মুষ্টিবদ্ধ হয়েছে পতাকার লাল সূর্যের মাঝে৷
ছবি: DW/M. M. Rahman
11 ছবি1 | 11
বরং যে দেশের মানুষ বাঙালি জাতীয়তাবাদকে সামনে রেখে শুরু করা স্বাধিকারের আন্দোলনকে স্বাধীনতায় রূপ দিয়েছিল, সে দেশের মানুষের মাঝে বপন করা হয়েছে ‘বাঙালি না বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ'-এর দ্বন্দ্ব৷
বিশ্বের প্রথম ধর্মনিরপেক্ষ দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং জনসংখ্যা বিবেচনায় বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতন্ত্রের দেশ ভারতসহ আরো কিছু দেশের মতো বাংলাদেশও স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর সাংবিধানিকভাবেও ধর্মনিরপেক্ষ দেশ হয়েছে৷ তবে ক্ষমতার পালাবদলে শাসকের ইচ্ছাপূরণের রাজনীতিতে ধর্মনিরপেক্ষতার পাশে রাষ্ট্রধর্মও যোগ হয়েছে সংবিধানে৷
বিরল ছবিতে বাংলাদেশের ইতিহাস পরিক্রমা
৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ৭১- এর মুক্তিযুদ্ধ এবং ৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন বাংলাদেশের ইতিহাসে গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়৷ এসব অধ্যায় অনেকটাই ফুটে উঠেছে এই ছবিগুলোতে৷
ছবি: Journey/M. Alam
ভাষা আন্দোলন
১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলনে শহিদদের খবর প্রকাশিত হয় পত্রিকায়৷ ছবিটি ফটোগ্রাফার রফিকুল হকের তোলা৷
ছবি: Journey/R. Hoque
একুশের প্রভাতফেরি
১৯৫৩ সালে একুশের প্রথম প্রভাতফেরি৷ সেখানে নারীদের সাহসী পদচারণার ছবিটিও তুলেছেন রফিকুল হক৷
ছবি: Journey/R. Hoque
৬৬’র ছাত্র আন্দোলন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসে ১৯৬৬ সালের ছাত্র আন্দোলনের ছবিটি তুলেছেন আজমল হক৷
ছবি: Journey/A. Hoque
মধুর ক্যান্টিন
মধুর ক্যান্টিন৷ বাংলাদেশের অনেক আন্দোলনের সূত্রপাতই এখান থেকে৷ ১৯৬৭ সালে ছবিটি তুলেছেন ফটোগ্রাফার রশিদ আহমেদ৷
ছবি: Journey/R. Ahmed
৬৯-এর প্রভাতফেরি
১৯৬৯ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারির প্রভাতফেরির ছবিটি তুলেছেন এনামুল হক৷
ছবি: Journey/A. Hoque
৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান
১৯৬৯ সালের জানুয়ারিতে পল্টন ময়দানে বক্তব্য রাখছেন তৎকালীন ছাত্রনেতা তোফায়েল আহমেদ৷ ছবিটি তুলেছেন বিখ্যাত ফটোগ্রাফার রশীদ তালুকদার৷
ছবি: Journey/R. Talukder
বঙ্গবন্ধু’র ঐতিহাসিক উচ্চারণ
‘‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম’’৷ ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণের সময় বঙ্গবন্ধুর এ ছবিটি তুলেছেন মোহাম্মদ আলম৷
ছবি: Journey/M. Alam
মুক্তিযুদ্ধে আদিবাসীরা
ছবিটি ১৯৭১ সালে রেসকোর্স ময়দানে তোলা৷ তীর, ধনুক হাতে সেদিন উপস্থিত হয়েছিলেন আদিবাসীরাও৷ ছবিটি তুলেছেন মোহাম্মদ আলম৷
ছবি: Journey/M. Alam
প্রতিবাদী শিল্পীরা
পশ্চিম পাকিস্তানীদের শোষনের বিরুদ্ধে সোচ্চার শিল্পী সমাজ৷ ১৯৭১ সালের ২৪শে মার্চ ছবিটি তোলেন রশীদ তালুকদার৷
ছবি: Journey/R. Talukder
পত্রিকায় ২৫শে মার্চ
১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ পাকিস্তান সেনাবাহিনী ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নাম দিয়ে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর যে বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছিল সেই তথ্য৷
ছবি: Journey
কারফিউ ভঙ্গের অভিযোগে শাস্তি
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে কারফিউ ভাঙার অপরাধে এক বাঙালিকে শায়েস্তা করছে পাকবাহিনী৷ ছবিটি তুলেছেন ফটোগ্রাফার রশিদ আহমেদ৷
ছবি: Journey/R. Ahmed
বধ্যভূমিতে বুদ্ধিজীবীদের মৃতদেহ
১৮ ডিসেম্বর, ১৯৭১৷ রায়েরবাজারের বধ্যভূমিতে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের লাশ পড়ে আছে৷ ১৯৭১ সালের ১৮ই ডিসেম্বর ছবিটি তোলেন ফটোগ্রাফার এনামুল হক৷
ছবি: Journey/A. Hoque
অস্ত্র সমর্পণ
১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারির ছবি এটি৷ ঢাকা স্টেডিয়ামে অস্ত্র সমর্পণ অনুষ্ঠান৷ বঙ্গবন্ধুর কাছে অস্ত্র সমর্পণ করছেন একজন মুক্তিযোদ্ধা৷ ছবিটি তুলেছেন মোহাম্মদ আলম৷
ছবি: Journey/M. Alam
মিত্র বাহিনীর বিদায়
১২ মার্চ, ১৯৭২ সাল৷ মিত্র বাহিনীর বিদায় অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান৷ সঙ্গে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডার জগজিত সিং অরোরা৷ ঐতিহাসিক এই ছবিটি তুলেছেন ফটোগ্রাফার মোহাম্মদ আলম৷
ছবি: Journey/M. Alam
শহিদ মিনারের পরিবর্তে মসজিদের পরিকল্পনা
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭১-এর ১৮ ডিসেম্বর বিধ্বস্ত শহিদ মিনারের সামনে দাঁড়িয়ে ডাকসুর তৎকালীন জিএস আব্দুল কুদ্দুস মাখন৷ পাশে মসজিদ লেখাটি দেখা যাচ্ছে৷ পাকিস্তানিরা শহিদ মিনার গুঁড়িয়ে দিয়ে এখানে মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিল৷ ছবিটি তুলেছেন এনামুল হক৷
ছবি: Journey/A. Hoque
শহিদ মিনার পুনর্নিমাণ
পাকিস্তানি সেনারা মুক্তিযুদ্ধের সময় শহিদ মিনার ভেঙে ফেলে৷ ১৯৭২ সালে শহিদ মিনার পুনর্নিমাণের ছবিটি তুলেছিলেন আলোকচিত্রী এনামুল হক৷
ছবি: Journey/A. Hoque
অপরাজেয় বাংলার উদ্বোধন
১৯৭৮ সালে ডাকসুর উদ্যোগে নির্মিত অপরাজেয় বাংলা উদ্বোধনের ছবি এটি৷ উদ্বোধন করেন দুই যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা৷ ছবিটি তুলেছেন ফটোগ্রাফার আজমল হক৷
ছবি: Journey/A. Hoque
স্বৈরাচার পতনের আন্দোলন
এরশাদের স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটাতে সারাদেশে তখন গণজোয়ার৷ ১৯৯০ সালের ২৮শে নভেম্বর ছবিটি তুলেছেন ইউসুফ সাদ৷
ছবি: Journey/Y. Saad
18 ছবি1 | 18
খুঁজলে আরো বিতর্ক, আরো বৈপরিত্যের উল্লেখ করা যাবে, যেগুলো '৭১-এর শহিদ, মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিকামী সাধারণ মানুষদের স্বপ্নে ছিল না৷ সেখানে উদার গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার কথা নিশ্চয়ই আসবে৷ অবাধ ভোটের অধিকার নিশ্চিত করার মাধ্যমেই কেবল তা সম্ভব হতে পারে৷ এছাড়া '৫২-র ভাষা আন্দোলন এবং '৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের চেতনার যোগফলে ভাষা এবং সংস্কৃতিকে সব জায়গায় অগ্রাধিকার দেয়ায় সাফল্য-ব্যর্থতার প্রসঙ্গটিও খুব বড় হয়ে উঠবে অবশ্যই৷
এসব অপ্রাপ্তিকে সাথে নিয়েই করোনাকালে বিজয়ের সুবর্ণ জয়ন্তীর শুভলগ্নে বাংলাদেশ৷ এ দেশে বিশ্বব্যাংক তাকিয়ে দেখে পদ্মা সেতু৷ দুর্নীতির ধারাবাহিকতা বা আরো বাড়বাড়ন্তের মাঝেও একটি বিষয়ে অন্তত খুব গর্ব করতে পারে বাংলাদেশ- অর্থনীতির অনেক সূচকে '৭১-এর শত্রুপক্ষ পাকিস্তানের চেয়ে তো বটেই, এমনকি ‘মিত্র' ভারতের চেয়েও অনেক এগিয়ে বাংলাদেশ৷
‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’
বাংলাদেশের ৪৪তম বিজয় দিবস উদযাপন হয়েছে মহাসমারোহে৷ দিনটি উপলক্ষ্যে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ভীড় করেন অসংখ্য মানুষ৷ রাজনীতিবিদরা স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে মুক্তিযুদ্ধে বীর শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান৷
ছবি: DW
লাল-সবুজে ছেয়ে গেছে বাংলাদেশ
ঢাকার অদূরে সাভারে সারাদিন ছিল লাল-সবুজের ভিড়৷ স্মৃতিসৌধে শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে আসা অধিকাংশ মানুষের হাতে ছিল ছোট বড় পতাকা৷ লাল-সবুজের ভিড়ে পুরো স্মৃতিসৌধ এলাকায় গড়ে ওঠে উৎসবের আমেজ যা কার্যত গোটা বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছে৷
ছবি: DW
বিজয় দিবসের সেলফি
সেলফি তোলার ক্রেজ এখন গোটা বিশ্বে৷ বাংলাদেশের তরুণ-তরুণীরা কি সেই ট্রেন্ডের বাইরে থাকতে পারে? বিজয় দিবসে সাভারে তাই অনেককে দেখা গেছে এভাবে সেলফি তুলতে৷
ছবি: DW
ভিনদেশিদের আগমন
বলাবাহুল্য, বাংলাদেশে চলতি বছর ব্লগার, বিদেশিদের উপর বেশ কয়েকটি হামলার ঘটনা ঘটেছে৷ এতে প্রাণ হারিয়েছেন চার ব্লগার, দুই বিদেশি নাগরিক৷ ফলে দেশটিতে বিদেশিদের চলাফেলায় সতর্কতা জারি করে পশ্চিমা কয়েকটি দেশ৷ তা সত্ত্বেও বিজয় দিবসে সাভারে হাজির হন বিদেশিরা৷ যেন বিজয় উদযাপনে নিরাপত্তা কোনো ইস্যুই নয়৷
ছবি: DW
হাজির ভবিষ্যত প্রজন্ম
এভাবেই বাবার কাঁধে করে সাভারের স্মৃতিসৌধে এসেছে ভবিষ্যত প্রজন্মের অনেক প্রতিনিধি৷ বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃতি ইতিহাস দীর্ঘ সময় ধরে পরিবর্তন করা হয়েছে৷ যখন যে দল ক্ষমতায় আসে, সেই দল তাদের মতো করে বিজয়ের ইতিহাস প্রকাশের চেষ্টা করে৷ তবে বর্তমানে ইন্টারনেটের কারণে স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস সহজে জানা যাচ্ছে৷
ছবি: DW
অনুষ্ঠান সারাদেশে
শুধু সাভার নয়, বিজয় দিবস উদযাপন হয়েছে সারাদেশে৷ বাংলাদেশে দিনটি সরকারি ছুটির দিন৷ ঢাকার সোহরওয়ার্দি উদ্যান, যেখানে পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পন করেছিল, সেখানে এক অনুষ্ঠানে সমবেত স্বরে গাওয়া হয়েছে ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি৷’
ছবি: DW
৪৪তম বিজয় দিবস
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর ঢাকায় আত্মসমপর্ন করে পাকিস্তানি বাহিনী৷ শেষ হয় নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ৷ বাংলাদেশ অর্জন করে চূড়ান্ত বিজয়৷