মিশর
৯ ডিসেম্বর ২০১২প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপত্তি তোলার সুযোগ বন্ধ করে পূর্বঘোষিত আদেশ থেকে সরে এসেছেন মোহাম্মেদ মুরসি৷ ২২শে নভেম্বর তাঁর সেই আদেশ জারির পর থেকেই বিক্ষোভ আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সমঝোতা আলোচনার ডাক দিয়েছিলেন মুরসি৷ তাঁর আলোচনার ডাকে সাড়া দেননি প্রধান বিরোধী জোটের নেতারা৷ তবে কিছু ছোট ছোট দলের সাথে শনিবার আলোচনায় বসেন মুরসি৷ এই আলোচনা শেষে শনিবার মাঝরাতে নতুন আদেশ জারি করেন মুরসি৷ নতুন আদেশে তিনি ২২শে নভেম্বরের আদেশে থাকা বেশ কিছু বিষয় সংশোধন করেছেন৷ বিশেষ করে বিরোধীদের আপত্তি ছিল যেসব বিষয়ে সেগুলোতেই সংশোধন করা হয়েছে৷ এছাড়া নতুন আদেশে বলা হয়েছে, বর্তমান সংবিধানের খসড়া গণভোটে প্রত্যাখ্যাত হলে নতুন করে খসড়া তৈরি করতে একটি পরিষদ গঠন করা হবে৷
তবে শনিবারের আলোচনার পরও ১৫ই ডিসেম্বরের গণভোট আয়োজনের ব্যাপারে দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে মুরসি প্রশাসন৷ আলোচনায় অংশগ্রহণকারী দলগুলোর মুখপাত্র মোহামেদ সেলিম আল-আওয়া বলেন, বৈঠকে গণভোট স্থগিত করার বিষয়ে আলোচনা হলেও এক্ষেত্রে আইনি বাধা থাকায় আগামী শনিবারই গণভোট আয়োজন করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত বহাল রাখা হয়েছে৷ তাদের দাবি, স্বৈরশাসক হোসনি মুবারকের পতনের পর গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সম্পূর্ণতার জন্য নির্ধারিত সময়েই গণভোট আয়োজন করা জরুরি৷
প্রেসিডেন্ট মুরসি তাঁর পূর্বের আদেশ থেকে সরে আসলেও উদারপন্থী প্রধান বিরোধী জোট তাতে সন্তুষ্ট নয়৷ তাদের দাবি, ১৫ই ডিসেম্বরের গণভোট স্থগিত করতে হবে৷ ন্যাশনাল স্যালভেশন ফ্রন্ট এর অন্যতম শীর্ষ নেতা এবং ফ্রি ইজিপশিয়ান্স পার্টির প্রধান আহমেদ সায়েদ বলেন, বিতর্কিত খসড়া সংবিধানের উপর গণভোট আয়োজনের সিদ্ধান্ত বহাল রাখা ‘দুঃখজনক' এবং এর ফলে সংকট আরো ঘনীভূত হবে৷ তিনি বলেন, ‘‘আমি বুঝি না যে, জনগণের বিরোধিতা সত্ত্বেও এমন একটি সংবিধানের জন্য কেন গণভোট আয়োজন করা হবে যাতে মিশরের মানুষের দাবি-দাওয়ার প্রতিফলন ঘটেনি৷''
মুরসির নতুন ঘোষণার প্রেক্ষিতে অন্যতম জনপ্রিয় বিরোধী নেতা এবং জাতিসংঘের আণবিক শক্তি সংস্থার সাবেক প্রধান মোহামেদ এলবারাদেই টুইট বার্তায় লিখেছেন, ‘‘যে সংবিধানে আমাদের অধিকার এবং স্বাধীনতা খর্ব করা হয়েছে, সেই সংবিধান আমরা অনুমোদিত হতে দেবো না৷'' এছাড়া ‘এপ্রিল ৬ যুব আন্দোলন' নামের অপর বিরোধী গোষ্ঠী ‘জনগণকে ধোঁকা দিতে মুরসির রাজনৈতিক চাল' বলে এর সমালোচনা করেছে৷ তারা তাদের ভাষায় ‘মুসলিম ব্রাদারহুডের সংবিধান অনুমোদনে গণভোট' বন্ধে বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে৷
এএইচ / আরআই (রয়টার্স, এএফপি)