ইউরোপীয় ইউনিয়নের সর্বোচ্চ আদালত বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, বহিষ্কার বা বিতাড়নের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, এমন বিদেশি নাগরিকদের বিশেষ ডিটেনশন সেন্টার না থাকার অজুহাতে কারাগারে আটক রাখা যাবে না৷
বিজ্ঞাপন
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর ক্ষেত্রে এই নির্দেশ প্রযোজ্য হবে৷ লুক্সেমবুর্গে অবস্থিত ইউরোপিয়ান কোর্ট অফ জাস্টিস জানিয়েছে, বিশেষ ডেটেনশন সেন্টার নেই এমন অজুহাতে ইইউ-র কোনো সদস্য রাষ্ট্র বহিষ্কার বা বিতাড়নের অপেক্ষায় থাকা বিদেশিদের কারাগারে রাখতে পারবে না৷ এমনকি যদি সেই ব্যক্তি কারাগারে থাকতে আগ্রহী হয়, তাহলেও সেটা করা যাবে না বলে জানিয়েছে আদালত৷
জার্মানিতে রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য কিছু তথ্য
জার্মানিতে এসে যাঁরা রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেন, তাঁদের আমলাতন্ত্রিক নানা জটিলতার মধ্যে পরতে হয়৷ ফলে তাঁরা দিশেহারা হয়ে যান৷ তাঁদের সুবিধার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবার কমিক্স আকারে এই তথ্য পুস্তিকাটি রের করেছে৷
ছবি: SMI Sachsen
কিভাবে এগোবেন
গত বছরের নভেম্বর পর্যন্ত এক লাখ ১৫ হাজার ৫৭৬ জন বিদেশি জামানিতে এসে রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেছেন৷ তাঁরা যাতে কোনো রকম আমলাতান্ত্রিক জটিলতার সম্মুখীন না হন, সেজন্য স্যাক্সনি রাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জার্মানি সম্পর্কে তিনটি ভাষায় একটি তথ্যপুস্তিকা প্রকাশ করেছে৷ যাতে রয়েছে সহজ ভাষায় ডাক্তারের কাছে যাওয়া থেকে শুরু করে বাচ্চাকে স্কুলে পাঠানো পর্যন্ত নানা তথ্য৷
ছবি: SMI Sachsen
ভদ্রভাবে চলা
বিভিন্ন অফিস-আদালত বা কতৃপক্ষকে কোনো উপহার দেওয়া এ দেশে মোটেই ভদ্রতার মধ্যে পরে না বরং তাঁরা এতে বিরক্ত বোধ করেন৷ কাজেই সে ধরণের কোনো আচরণ না করাই ভালো৷ অন্যদিকে, কতৃপক্ষ কোনো উপহার নিলে কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাঁদেরও শাস্তি পর্যন্ত ভোগ করতে হয়৷
ছবি: SMI Sachsen
সহানুভূতিশীল
জার্মানিতে এসে যাঁরা রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী হন, তাঁদের থাকার জন্য আলাদা বাড়ির ব্যবস্থা রয়েছে৷ সেসব বাড়িতে অনেকে একসাথে থাকেন এবং সেখানে থাকতে তাঁদের কারও যেন কোনো অসুবিধা না হয়, সেজন্য সবাইকেই বেশ কিছু নিয়মকানুন মেনে চলতে হয়৷ তথ্য পুস্তিকাটিতে বিশেষভাবে লেখা রয়েছে যে, একে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থাকতে হবে এবং নিজের কারণে যেন অন্যের অসুবিধা না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে৷
ছবি: SMI Sachsen
সময় সচেতনতা
সময় সচেতনতা সম্পর্কে জার্মানির খ্যাতি রয়েছে৷ কারুর যদি ডাক্তারের কাছে যাওয়ার নিদিষ্ট সময় দেওয়া থাকে আর তিনি যদি কোনো কারণে সে সময় সেখানে না যেতে পারেন, তাহলে অবশ্যই ডাক্তারকে ফোন করে জানিয়ে দিতে হবে৷ তাছাড়া ডাক্তারি পরীক্ষা ছাড়া আশ্রয়প্রার্থীকে জার্মানিতে থাকার জরুরি কাগজ-পত্র বা টাকাও দেওয়া হবে না৷ জার্মানরা সময় সচেতন হলেও আজকাল মাঝেমাঝেই অবশ্য ট্রেনের সঠিক সময় রক্ষা করা যাচ্ছে না৷
ছবি: SMI Sachsen
স্কুলে যাওয়া বাধ্যতামূলক
জার্মানিতে তিন বছর বয়সি প্রতিটি শিশুর কিন্ডারগার্টেনে জায়গা পাওয়ার অধিকার রয়েছে৷ রাজনৈতিক আশ্রয়পার্থীদের বাচ্চাদের স্কুলের খরচ বহন করে জার্মান সরকার৷ জার্মানিতে ছয় বছর বয়স হলে বাচ্চাদের স্কুলে যাওয়া বাধ্যতামূলক৷ এছাড়া, স্কুলে বিদেশি বাচ্চাদের জার্মান ভাষা শেখার জন্য বাড়তি সুযোগ-সুবিধাও দেওয়া হয়ে থাকে৷
ছবি: SMI Sachsen
চিকিৎসা ব্যবস্থা
রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য বিনা খরচে ডাক্তার দেখানোর ব্যবস্থাও রয়েছে জার্মানিতে৷ সেক্ষেত্রে ডাক্তারের পুরো খরচ বহন করে জার্মান সরকার৷ কোনো রকম মানসিক সমস্যা হলে তাঁদের মনোবিজ্ঞানীর কাছে যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়৷ এ সব ক্ষেত্রে কারো ভাষাগত সমস্যা হলে, দোভাষীর ব্যবস্থাও করা হয়ে থাকে৷
ছবি: SMI Sachsen
6 ছবি1 | 6
মূলত জার্মানির বাভেরিয়া এবং হেসে রাজ্যের তিনটি ঘটনার প্রেক্ষিতে এই নির্দেশ প্রদান করেছে কোর্ট অফ জাস্টিস৷ জার্মানির বিচার বিভাগীয় কর্তৃপক্ষই বিষয়টি জানতে চেয়েছিল৷ বর্তমানে নারীদের আলাদা ডিটেনশন সেন্টারের অভাবের কারণে এক সিরীয় নারী কারাগারে রয়েছেন৷ মিউনিখে কোনো সেন্টার না থাকায় সেখানকার কারাগারে রয়েছেন এক মরোক্কান নাগরিক৷ অন্যদিকে এক ভিয়েতনামি নাগরিক নিজেই কারাগার বেছে নিয়েছেন৷
বলাবাহুল্য, জার্মানিতে বিতাড়ন বা বহিষ্কারের অপেক্ষায় থাকা মানুষদের রাখার দায়িত্ব তারা যে অঞ্চলে রয়েছেন সেই অঞ্চলের কর্তৃপক্ষের উপর বর্তায়৷ এখন ইউরোপীয় আদালত বলছে, যদি কোনো অঞ্চলে ডিটেনশন সেন্টার না থাকে, তাহলে তাদের অন্য অঞ্চলে সরিয়ে নিতে হবে৷ তবে খুবই ব্যতিক্রমী ঘটনার ক্ষেত্রে এই নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটতে পারে৷ সে ক্ষেত্রে ব্যক্তিটিকে কারাগারের ভেতরে সাধারণ কারাবন্দিদের কাছ থেকে আলাদা রাখতে হবে৷