প্রেসিডেন্ট পদ ছাড়ার আগে বিদায়-ভাষণ দিলেন ট্রাম্প। বললেন, যা করার জন্য এসেছিলাম, তা করে দেখিয়েছি।
বিজ্ঞাপন
ইউ টিউবে ভিডিও পোস্ট করে বিদায় ভাষণ দিলেন ট্রাম্প। সেখানে বললেন, ''আমায় কঠিন লড়াই করতে হয়েছে. আর সেটা করার জন্যই আপনারা আমাকে পাঠিয়েছিলেন।''
বুধবারই জো বাইডেন মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্বভার নেবেন। ট্রাম্প হয়ে যাবেন সাবেক প্রেসিডেন্ট। তবে তিনি এখনো যে তাঁর হার ও বাইডেনের জয় মেনে নিতে পেরেছেন, এমন নয়।
গত দুই সপ্তাহ ধরে ট্রাম্পের টিমকে ড্যামেজ কন্ট্রোলে ব্যস্ত থাকতে হয়েছে। ভোটের ফলাফল বদল করার দাবি নিয়ে ক্যাপিটলে ট্রাম্প সমর্থকরা যে তাণ্ডব চালিয়েছিলেন, তার ড্যামেজ কন্ট্রোল এখনো হয়নি।
ভিডিওতে ট্রাম্প নিজেও ড্যামেজ কন্ট্রোলের চেষ্টা করেছেন। তিনি বলেছেন, ''অ্যামেরিকায় আমরা গণতন্ত্র নিয়ে গর্ব করি। রাজনৈতিক সহিংসতা তার উপর আঘাত।''
২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে থেকেই নানা কারণে বিতর্কিত ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পরও বিতর্ক তার পিছু ছাড়েনি৷ বরং নিত্য নতুন বিতর্কে জড়িয়েছেন তিনি৷
ছবি: Nicholas Kamm/AFP
প্রেসিডেন্সির প্রথম দিনেই নারীদের প্রতিবাদ
ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন ২০১৭ সালের ২১ জানুয়ারি৷ আর সেদিনই মার্কিন রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে অনেক নারী ট্রাম্পের যৌন কেলেঙ্কারির ইস্যুতে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন৷ তার বিরুদ্ধে অন্তত ২৬ নারী যৌন নিগ্রহের অভিযোগ এনেছেন৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/J. L. Magana
সৌদি আরবে প্রথম সফর
মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রথম বিদেশ সফর ছিল সৌদি আরবে৷ ২০১৭ সালের মে মাসে রিয়াদ সামিটে অংশ নেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোয়াপারেশন (ওআইসি) এর প্রতিনিধিরা৷ সেই সামিট অবশ্য তুরষ্ক এবং ইরান বয়কট করেছিল৷
ছবি: Balkis Press/ABACA/picture alliance
পর্ন তারকার সাথে ‘সমঝোতা’
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এক প্রতিবেদনে জানায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঠিক আগে আগে ট্রাম্পের আইনজীবী মাইকেল কোয়েন পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসের সঙ্গে এক লাখ ত্রিশহাজার মার্কিন ডলারের বিনিময়ে সমঝোতা করেছিলেন৷ সেই তারকার সঙ্গে ট্রাম্পের পরকীয়া সম্পর্ক ছিল বলে দাবি পত্রিকাটির৷
ছবি: Getty Images/E. Miller
গুরুত্বপূর্ণ পদে পরিবারের সদস্যরা
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পদে তার পরিবারের সদস্যদের নিয়োগ দেন৷ তাদের মধ্যে অন্যতম ট্রাম্প কন্যা ইভান্কা ট্রাম্প, যিনি প্রেসিডেন্টের একজন উপদেষ্টা৷
ছবি: Evan Vucci/dpa/AP
শরণার্থীদের প্রতি ‘জিরো টলারেন্স’
ট্রাম্প আশ্রয়প্রার্থীদের উপর অত্যন্ত কঠোর নীতি আরোপ করেন এবং দেশটির দক্ষিণের সীমান্ত থেকে আশ্রয়প্রার্থীদের ফিরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন৷ শুধু তাই নয় অনেক অভিবাসী পরিবারের শিশুদেরকে জোর করে বাবামায়ের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করেন তিনি৷ তার এই নীতির সমালোচনা করেছেন অনেকে৷
ছবি: Saul Loeb/Getty Images/AFP
রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক
মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ সবচেয়ে আলোচিত ছিল তার মধ্যে অন্যতম রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক৷ অনেকেই মনে করেন ২০১৬ সালের নির্বাচনে জিততে ট্রাম্পকে সহায়তা করেছিল রাশিয়া৷ যদিও এই অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি, তবে গত চারবছর রাশিয়ার সঙ্গে মার্কিন সম্পর্ক বেশ দোদুল্যমান ছিল৷
ছবি: Looks Film
সবচেয়ে লম্বা ‘শাটডাউন’
২০১৯ অর্থবছরের বাজেটকে কেন্দ্র করে কংগ্রেসে মতানৈক্যের কারণে মার্কিন ইতিহাসের সবচেয়ে দীর্ঘ ‘ফেডারেল গভর্মেন্ট শাটডাউন’ দেখেছে হোয়াইট হাউস৷ ২০১৮ সালের ২২ ডিসেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ২৫ জানুয়ারী অবধি এই অচলাবস্থা বহাল ছিল৷
ছবি: Getty Images/AFP/B. Smialowski
উত্তর কোরিয়ায় প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট
ক্ষমতায় থাকা কোন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পই প্রথম উত্তর কোরিয়ার মাটিতে পা রাখেন৷ উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে মার্কিন সম্পর্কের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে এই সফর৷
ছবি: Reuters/K. Lamarque
তালেবানের সঙ্গে চুক্তি
দীর্ঘ চেষ্টার পর গত বছর ট্রাম্প প্রশাসন আফগানিস্তান ইস্যুতে তালেবানের সঙ্গে একটি শান্তি চুক্তি করতে সক্ষম হয়৷ এর মাধ্যমে তালেবানের সঙ্গে ১৯ বছর ধরে চলা যুদ্ধের আপাতত অবসান ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে৷ তবে এই চুক্তি আফগানদের কতটা উপকারে আসবে তা নিয়ে সন্দিহান অনেক বিশেষজ্ঞ৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/H. Sayed
সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে ইসরায়েলের চুক্তি
সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে সক্ষম হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ ফলে উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে ইসরায়েলের এখন অর্থনৈতিক এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক তৈরি হয়েছে৷
ছবি: Reuters/T. Brenner
ইরান ইস্যুতে উল্টো নীতি
ওবামা প্রশাসন ইরানের সঙ্গে যে পরমাণু চুক্তি করেছিল, তা থেকে সরে এসেছে ট্রাম্প প্রশাসন৷ দেশটির উপর আরো নানা নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করা হয়েছে৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/J. Martin
11 ছবি1 | 11
প্রেসিডেন্ট হিসাবে ট্রাম্প ইতিহাসে নাম তুলে ফেলেছেন। তিনিই একমাত্র মার্কিন প্রেসিডেন্ট, যাঁর বিরুদ্ধে দুই বার ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব নেয়া হয়েছে। দ্বিতীয় ইমপিচমেন্ট প্রস্তাব হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভে অনুমোদিত হয়েছে। এ বার তা সেনেটে গেছে। ট্রাম্প দায়িত্ব ছাড়ার পর সেনেট সেই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করবে ও ভোটাভুটি হবে। সেনেটে প্রস্তাব অনুমোদিত হলে তিনি আর কখনো প্রেসিডেন্ট পদে লড়তে পারবেন না।
তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি করোনা নিয়ে কড়া ব্যবস্থা নেননি। তাঁর আমলে অর্থনীতি বেহাল হয়েছে। কর্মহীনদের সংখ্যা বেড়েছে। মাত্র ৩৪ শতাংশ অ্যাপ্রুভাল রেটিং নিয়ে তিনি হোয়াইট হাউস থেকে বিদায় নিচ্ছেন। ট্রাম্প অবশ্য বলেছেন, ''আমাদের কর্মসূচি দক্ষিণ বা বামপন্থী ছিল না, রিপাবলিকান অথবা ডেমোক্র্যাটও নয়, এটা ছিল দেশের ভালো করার নীতি, পুরো দেশের ভালো করা।''