1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

সাংবাদিকদের নজরদারির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার!

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২০ মে ২০১৭

বিদেশগামী সাংবাদিকদের ওপর নজরদারির সিদ্ধান্ত তিন দিনের মধ্যে প্রত্যাহার করেছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়৷ সংবাদ মাধ্যমে এই খবর প্রকাশিত হলেও মন্ত্রণালয় থেকে কোনো বক্তব্য জানা যায়নি৷

ছবি: DW/M. Mamun

সূত্র জানায়, ওই আদেশটি সমন্বিতভাবে না হওয়ায় প্রত্যাহার করা হয়৷

চলতি বছরের প্রথমদিকে কিছু বাংলাদেশি সাংবাদিকের পাকিস্তান সফরের ঘটনানিয়েই মূলত বিষয়টির সূত্রপাত৷ পাকিস্তান সরকারের আমন্ত্রণে সেখানে নিয়ে সাংবাদিকদের কেউ কেউ ‘দেশবিরোধী' কাজে লিপ্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ৷ আর এই অভিযোগ নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালায় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনা ও বিদেশগামী সাংবাদিকদের ওপর নজরদারির সুপারিশ করা হয়৷

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ‘‘গত ৩০শে মার্চ কমিটির ১২তম বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনার সূত্রপাত করেন কমিটির সদস্য মাহজাবিন খালেদ৷ তিনি বলেছেন গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে অবস্থিত পাকিস্তান হাইকমিশন কিছু সংখ্যক বাংলাদেশি সাংবাদিককে পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ জানায়৷ এসব সাংবাদিক বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন ব্যক্তিদের সাথে সাক্ষাৎ করে অপপ্রচার চালাচ্ছে৷ গণমাধ্যমে রাষ্ট্রবিরোধী কথাবার্তাসহ গণহত্যা বিষয়ে ভুল তথ্য দিচ্ছে৷''

Mainul - MP3-Stereo

This browser does not support the audio element.

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালায় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছিলেন, ‘‘সাংবাদিকদের বিদেশ যাওয়ার বিষয়ে কড়াকড়ি করা যায় না৷ তবে কোনো সাংবাদিক বিদেশে গিয়ে দেশবিরোধী কার্যক্রমে লিপ্ত হয় কিনা, সে বিষয়ে খোঁজখবর রাখা বা নজরদারি করা বাঞ্ছনীয়৷''

এরপর গত বুধবার কমিটির ওই সুপারিশের কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (বহিঃপ্রচার) স্বাক্ষরিত একটি আদেশ বিদেশে বাংলাদেশি দূতাবাস ও মিশনে পাঠান হয়৷ আদেশে বলা হয়, ‘‘যদি কোনো সাংবাদিক বিদেশে দেশবিরোধী কাজে লিপ্ত হন, তবে তাকে চিহ্নিত করে মন্ত্রণালয়কে তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে হবে৷''

আদেশে আরো বলা হয়েছিল, ‘‘সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে কোনো সাংবাদিক বিদেশে গিয়ে দেশের স্বার্থবিরোধী কোনো কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে কিনা, সে সম্পর্কে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের সুপরিশ করা হয়৷ সংসদীয় কমিটি বিদেশে ভ্রমণরত সাংবাদিকদের নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে৷''

Nayeem - MP3-Stereo

This browser does not support the audio element.

আদেশের খবর জানার পর সাংবাদিকদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছিল৷ বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ‘‘এই আদেশ কোনোভাবেই সম্মানজনক নয়৷ এই আদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে না৷ সাংবাদিকরা দেশের ভাবমূর্তিবিরোধী কোনো কাজ করেন না৷ কেউ যদি করে থাকেন তারা সাংবাদিক নন৷ তারা সাংবাদিকের ছদ্মবেশধারী রাজনৈতিক দলের কর্মী৷ ঢালাওভাবে সাংবাদিকদের দায়ী করে এধরণের সিদ্ধান্ত গ্রহণযোগ্য নয়৷ কেউ কিছু করে থাকলে তাদের তথ্য প্রকাশ করা হোক৷ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হোক৷ সাংবাদিকদের তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করার এই প্রবণতা নিন্দনীয়৷''

আর একুশে টেলিভিশনের হেড অব নিউজ রাশেদ চৌধুরী ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘এটা কোনো ঘটনার প্রেক্ষিতে সাংবাদিকদের জন্য হয়তো একটা সতর্কবার্তা হতে পার৷ তবে এটা আলাদাভাবে সাংবাদিকদের জন্য কেন? এটাতো সবার জন্যই হতে পারে৷''

বুধবার ওই আদেশ জারির পর বৃহস্পতিবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী বলেন,‘‘আমি সার্কুলার দেখিনি, দেখব এটা৷''

Rashed - MP3-Stereo

This browser does not support the audio element.

এই আলোচনার মধ্যে তিনদিনের মাথায় শুক্রবার আদেশটি প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানা গেছে৷ এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করে কারো বক্তব্য জানা যায়নি৷ তবে দৈনিক ইত্তেফাকের ডিপ্লোম্যাটিক এডিটর মাঈনুল আলম ডয়চে ভেলেকে প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘‘সাংবাদিকদের জন্য এই আদেশটি ছিল বৈষম্যমূলক৷ সংসদীয় কমিটির সুপারিশে সম্প্রতি কিছু সাংবাদিকের পাকিস্তানসহ কয়েকটি দেশ সফরের প্রেক্ষাপটে এই আদেশ দেয়া হয়েছিল৷ কিন্তু পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে না জানিয়ে এই আদেশ পাঠানো হয়েছিল বিদেশে বাংলাদেশের প্রায় ৫০টি দূতাবাস ও মিশনে৷ তিনি এই আদেশের বিষয়টি জানতেন না বলে আমাদের জানান৷ তিনি সাংবাদিকরা কোথাও বিদেশ সফরে বাধার মুখে পড়লে তাকে জানাতে বলেছেন৷''

তিনি জানান, ‘‘আদেশেটি প্রত্যাহারে কারণ হিসেবে বলা হয়েছে যে আদেশটি যথাযথভাবে সমন্বয় করা হয়নি৷''

এদিকে একাধিক সূত্র জানায়, কেবল সাংবাদিকদের জন্য এই আদেশ জারি করায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রশ্নের মুখে পড়ে৷ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর জন্য এটা ছিল বিব্রতকর৷ তাই আদেশটি প্রত্যাহার করা হয়েছে৷ তবে যে কেউ দেশের বাইরে গিয়ে দেশবিরোধী কোনো কাজ করছেন কিনা তা নজরদারির মধ্যেই থাকবে৷ বিশেষ করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কোনো অসত্য এবং বিভ্রান্তিকর তথ্যের ব্যাপারে খেয়াল রাখবে বিদেশে বাংলাদেশের দূতাবাস ও মিশনগুলো৷

আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ