বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের নিয়ে আরো একবার কাশ্মীর সফরে গেল ভারতীয় প্রশাসন। তবে দলে নেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা।
বিজ্ঞাপন
ফের বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের জম্মু এবং কাশ্মীর দেখাতে নিয়ে গেল ভারত সরকার। আজ, বৃহস্পতিবার তাঁরা দু'দিনের সফরে শ্রীনগর পৌঁছেছেন বলে প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে। সব মিলিয়ে ১৫টি দেশের রাষ্ট্রদূত সেখানে আছেন। তবে সেই দলে নেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোনও প্রতিনিধি।
ভারতীয় প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিটি রাষ্ট্র একসঙ্গে কাশ্মীরে যেতে চেয়েছিল। কিন্তু এত লোককে একসঙ্গে নিয়ে যাওয়া এই মুহূর্তে ভারতের পক্ষে সম্ভব নয়। তাতে নিরাপত্তার সমস্যা হতে পারে। সে কারণেই তাদের বলা হয়েছে, কিছু দিন পরে তাদের দাবি মেনে আরও একটি সফর করা হতে পারে। কিন্তু এ যাত্রায় তাদের নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এ বার যারা দলে আছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, অ্যামেরিকা, বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, দক্ষিণ কোরিয়া, মালদ্বীপ, মরক্কো, নাইজেরিয়া, নরওয়ে ৷
কাশ্মীরে বহুদিনের সংঘাত, বহুদিনের ক্ষত
স্বাধীনতার পর থেকেই ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্কে যেন গলার ফাঁস হয়ে রয়েছে কাশ্মীর৷ তাই কাশ্মীর সংক্রান্ত ঘটনাবলী আজ নিজেরাই ইতিহাস৷
ছবি: Getty Images/AFP/R. Bhat
১৯৪৭
বলা হয় দেশবিভাগের পর পাকিস্তান থেকে আগত উপজাতিক যোদ্ধারা কাশ্মীর আক্রমণ করে৷ তখন কাশ্মীরের মহারাজা ভারতের সাথে সংযোজনের চুক্তি করেন, যা থেকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়৷
ছবি: dapd
১৯৪৮
ভারত জাতিসংঘে কাশ্মীর প্রসঙ্গ উত্থাপন করলে পর, ৪৭ ক্রমিক সংখ্যক প্রস্তাবটি গৃহীত হয়৷ ঐ প্রস্তাব অনুযায়ী গোটা কাশ্মীরে গণভোট অনুষ্ঠিত হবার কথা রয়েছে৷
ছবি: Keystone/Getty Images
১৯৪৮
কিন্তু পাকিস্তান প্রস্তাব অনুযায়ী, কাশ্মীর থেকে সৈন্যাপসারণ করতে অস্বীকার করে৷ অতঃপর কাশ্মীরকে দু’ভাগে ভাগ করা হয়৷
ছবি: Getty Images
১৯৫১
ভারতীয় কাশ্মীরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ও ভারতের সঙ্গে সংযোজনকে সমর্থন করা হয়৷ অতঃপর ভারত বলে, আর গণভোট অনুষ্ঠানের কোনো প্রয়োজন নেই৷ জাতিসংঘ ও পাকিস্তানের মতে, গণভোট অনুষ্ঠিত হওয়া আবশ্যক৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Khan
১৯৫৩
কাশ্মীরের ‘প্রধানমন্ত্রী’ শেখ আব্দুল্লাহ গণভোটের সমর্থক ছিলেন ও ভারতের সঙ্গে সংযোজনকে বিলম্বিত করার চেষ্টা করেন৷ ফলে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ জম্মু-কাশ্মীরের নতুন সরকার ভারতের সঙ্গে কাশ্মীরের সংযোজনকে পাকা করেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Khan
১৯৬২-৬৩
১৯৬২ সালের যুদ্ধে চীন আকসাই দখল করে৷ তার আগের বছর পাকিস্তান কাশ্মীরের ট্রান্স কারাকোরাম ট্র্যাক্ট এলাকাটি চীনকে প্রদান করে৷
ছবি: Getty Images
১৯৬৫
কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে আবার ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ হয়৷ কিন্তু যুদ্ধশেষে উভয় দেশের সেনা তাদের পুরোনো অবস্থানে ফিরে যায়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/J. Singh
১৯৭১-৭২
আবার ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ৷ যুদ্ধে পাকিস্তানের পরাজয়ের পর সিমলা চুক্তি সম্পাদিত হয় ১৯৭২ সালে৷ যুদ্ধবিরতি রেখাকে লাইন অফ কন্ট্রোল বা নিয়ন্ত্রণ রেখায় পরিণত করা হয় ও আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বিবাদ সমাধান সম্পর্কে ঐকমত্য অর্জিত হয়৷
ছবি: AP
১৯৮৪
ভারত সিয়াচেন হিমবাহ নিজ নিয়ন্ত্রণে আনার পর পাকিস্তান তা একাধিকবার দখল করার চেষ্টা করেছে, কিন্তু সফল হতে পারেনি৷
ছবি: AP
১৯৮৭
জম্মু-কাশ্মীরে বিতর্কিত নির্বাচনের পর রাজ্যে বিচ্ছিন্নতাবাদী স্বাধীনতা আন্দোলন শুরু হয়৷ ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে উগ্রপন্থাকে উসকানি দেওয়ার অভিযোগ করে, কিন্তু পাকিস্তান সে দোষারোপ চিরকাল অস্বীকার করে এসেছে৷
ছবি: AP
১৯৯০
গওকাদল সেতুর কাছে ভারতীয় সিআরপি রক্ষীবাহিনী কাশ্মীরি বিক্ষোভকারীদের উপর গুলি চালালে পর শতাধিক আন্দোলনকারী নিহত হন৷ প্রায় সমস্ত হিন্দু কাশ্মীর উপত্যকা ছেড়ে চলে যান৷ জম্মু-কাশ্মীরে সেনাবাহিনীকে আফসা বা আর্মড ফোর্সেস স্পেশাল পাওয়ার্স অ্যাক্ট অনুযায়ী বিশেষ ক্ষমতা প্রদান করা হয়৷
ছবি: AFP/Getty Images/Tauseef Mustafa
১৯৯৯
কাশ্মীর ভ্যালিতে গোটা নব্বই-এর দশক ধরে অশান্তি চলে৷ ১৯৯৯ সালে আবার ভারত-পাকিস্তানের লড়াই হয়, এবার কারগিলে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
২০০১-২০০৮
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আলাপ-আলোচনার যাবতীয় প্রচেষ্টা প্রথমে নতুন দিল্লির সংসদ ভবন ও পরে মুম্বই হামলার ফলে ব্যর্থ হয়৷
ছবি: picture-alliance/Pacific Press/F. Khan
২০১০
ভারতীয় সেনার গুলি লেগে এক বিক্ষোভকারীর মৃত্যুর পর কাশ্মীর ভ্যালি উত্তেজনায় ফেটে পড়ে৷ বিক্ষোভ চলে বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে, প্রাণ হারান অন্তত ১০০ জন৷
ছবি: picture-alliance/Pacific Press/U. Asif
২০১৩
সংসদ ভবনের উপর হামলার মুখ্য অপরাধী আফজল গুরুকে ফাঁসি দেওয়া হয়৷ এর পর যে বিক্ষোভ চলে, তা-তে দু’জন প্রাণ হারায়৷ এই বছরই ভারত আর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীদ্বয় মিলিত হয়ে উত্তেজনা উপশমের কথা বলেন৷
ছবি: Reuters
২০১৪
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ উপস্থিত থাকেন৷ কিন্তু এর পর নতুন দিল্লিতে পাকিস্তানি হাই কমিশনার কাশ্মীরি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে মিলিত হওয়ায় ভারত আলাপ-আলোচনা স্থগিত রাখে৷
ছবি: Reuters
২০১৬
আজাদ কাশ্মীর ভিত্তিক হিজবুল মুজাহিদীন-এর অধিনায়ক বুরহান ওয়ানি-র মৃত্যুর পর কাশ্মীরে স্বাধীনতা সমর্থকরা আবার পথে নেমেছেন৷ এই আন্দোলনে এ পর্যন্ত অন্তত ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে ও বিক্ষোভ অব্যাহত আছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa/R.S.Hussain
২০১৯
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামা সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স (সিআরপিএফ)-এর গাড়িবহরে বোমা হামলার ঘটনা ঘটে৷ এতে ৪২ জওয়ান নিহত হন৷ বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন জৈশ-ই-মোহাম্মদ হামলার দায় স্বীকার করেছে৷ এরপর ২৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান সীমান্তের ভেতরে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ঘাঁটিতে বিমান হামলা চালায় ভারতীয় বিমান বাহিনী৷
ছবি: picture-alliance/ZUMA Wire/P. Kumar Verma
২০১৯
ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ নং ধারা অনুযায়ী, জম্মু ও কাশ্মীরের কাছে কিছু বিশেষ অধিকার ছিল। ৫ আগস্ট স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ৩৭০ ধারাটি অবসানের দাবি তোলেন৷ বিল পাস হয়। একই দিনে তাতে সই করেন ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ৷ ফলে, কাশ্মীরের ‘বিশেষ মর্যাদা' বাতিল হয়। তাছাড়া মোদী সরকারের সিদ্ধান্তের ফলে জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের মর্যাদা হারায়। জম্মু ও কাশ্মীর ও লাদাখ নামে দুইটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠিত হয়।
ছবি: Reuters
19 ছবি1 | 19
এর আগে অক্টোবর মাসে বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের একটি দলকে নিয়ে জম্মু এবং কাশ্মীর সফরে গিয়েছিল ভারত সরকার। ৩৭০ ধারা তুলে দেওয়ার পরে সেটাই ছিল বিদেশিদের নিয়ে ভারতের প্রথম কাশ্মীর সফর। সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছিল, কাশ্মীর যে শান্ত তা দেখানোর জন্যই তাদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সেখানে। সূত্র জানাচ্ছে, কাশ্মীর থেকে ফেরার পরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা সেখানকার মানুষের সঙ্গে আরও কথা বলার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। সূত্রের তরফ থেকে জানা গিয়েছে, এ বারেও ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোনও কোনও রাষ্ট্র কাশ্মীরের আটক তিন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন। তবে প্রকাশ্যে ভারত এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করছে না। বরং বলা হচ্ছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দূতদের পরবর্তীকালে কাশ্মীরে নিয়ে যাওয়া হবে।
ভূস্বর্গের এ কেমন চিত্র?
আবার শিরোনামে ভূস্বর্গ নামে খ্যাত কাশ্মীর৷ এবার আলোড়ন ভারতের রাজ্য জম্মু ও কাশ্মীরের মর্যাদা বদলকে কেন্দ্র করে৷ কেমন চিত্র বর্তমান কাশ্মীরের, দেখুন ছবিঘরে...
ছবি: Reuters/D. Saddiqui
কেন এত সেনা?
সোমবার ভারতের রাজ্যসভায় পাশ হয়েছে জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যকে ভাগ করে দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার বিল৷ সাথে, কেড়ে নেওয়া হয়েছে ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদের অন্তর্গত বিশেষ মর্যাদাও৷ এই ঘোষণার আগে থেকেই কাশ্মীরে উত্তেজনা বাড়ার আশঙ্কায় মোতায়েন করা হয় ৩৮,০০০ সেনাসদস্য৷
ছবি: AFP/R. Bakshi
যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
রোববার রাত থেকেই জম্মু ও কাশ্মীরের সমস্ত সংযোগ পরিষেবা ছিন্ন করে দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে৷ সোমবার মর্যাদা পরিবর্তনের বিল রাজ্যসভায় পাশ হয়ে যাবার পর কেটে গেছে একদিন৷ এখনও কাশ্মীরে নেই টেলিফোন, ইন্টারনেট ও মোবাইল পরিষেবা৷ ফলে, সেই অঞ্চলের মানুষের সাথে যোগাযোগ করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে৷
ছবি: AFP/R. Bakshi
গৃহবন্দি স্থানীয় নেতৃত্ব
জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের রাজধানী শ্রীনগরসহ অন্যান্য অঞ্চলে ৫ আগস্ট মধ্যরাত থেকে জারি করা হয় ১৪৪ ধারা৷ কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয় যে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এমনটা করা হয়েছে৷ সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ ও বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতিসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের রাখা হয়েছে গৃহবন্দি৷
ছবি: AFP/R. Bakshi
স্তব্ধ জীবন
১৪৪ ধারা জারি করার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা৷ গোটা এলাকার সমস্ত স্কুল-কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ৷ দোকানপাটও বন্ধ থাকার ফলে বাজার স্তব্ধ হয়ে পড়েছে৷ কার্ফু জারি হবার পর থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন পেট্রোল পাম্প ও মুদি দোকানে হুড়োহুড়ি পড়ে যায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস ও জ্বালানি কিনতে৷
ছবি: imago-images/ZUMA Press/M. Mattoox
ভূস্বর্গ ছাড়ো!
গত কয়েকদিন ধরেই আঁচ করা যাচ্ছিল যে কাশ্মীর ঘিরে শুরু হবে নতুন কিছু৷ সে কারণে, কর্তৃপক্ষের নির্দেশে জম্মু ও কাশ্মীর ছেড়ে চলে যেতে বলা হয় সব বহিরাগতদের৷ যে কাশ্মীর বিশ্ববিখ্যাত তার পর্যটনের জন্য, সেই ভূস্বর্গে নিরাপত্তার খাতিরে নেই একজনও পর্যটক৷ শুধু তাই নয়, খালি করা হয়েছে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ ছাড়া অন্যান্য সব বিভাগ৷
ছবি: Getty Images/AFP/R. Bakshi
সংবাদ কোথায়?
সব রকমের যোগাযোগপন্থা বন্ধ থাকার ফলে সেখানকার খবর পাওয়া যাচ্ছে না৷ সরকারি পরোয়ানা এড়িয়ে কোনো ছবি বা ভিডিও ধারণও বর্তমানে আংশিকভাবে বন্ধ৷
ছবি: imago-images/Hindustan Times
ভারতের অন্যত্র এর প্রতিক্রিয়া কেমন?
কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসনের যে ধারা এতদিন ৩৭০ নং অনুচ্ছেদের কারণে বজায় ছিল, তা বিলোপের কারণে নতুন করে প্রশ্নের মুখে ভারতের অভ্যন্তরে কাশ্মীরের চিত্র৷ সোমবারের পর থেকেই সোশাল মিডিয়া থেকে রাজপথ মুখর হয়ে উঠছে পক্ষে-বিপক্ষে নানা অবস্থানে৷ ভারতের রাজধানী নতুন দিল্লীতে বেশ কিছু বামপন্থি সংগঠনের পক্ষ থেকে আয়োজিত হয় প্রতিবাদ সভা৷ এমন আরো সভার কথা শোনা যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ, উত্তর-পূর্ব ভারত ও অন্যান্য অংশেও ৷