বিদেশি শক্তি সিরিয়ার ঐক্য বিপন্ন করছে: আসাদ
৩০ মার্চ ২০১১‘বিদেশি শক্তি দায়ী'
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ সংসদে তাঁর এক ঘন্টার বিরল ভাষণে দেশে বেড়ে চলা প্রতিবাদ বিক্ষোভকে বিদেশি শক্তির ষড়যন্ত্র হিসেবে বর্ণনা করেছেন৷ বলেছেন, স্যাটেলাইট টেলিভিশন ও সামাজিক নেটওয়ার্কগুলি ষড়যন্ত্রকারীদের হাতিয়ার৷ তাঁর মতে, ইসরায়েলের স্বার্থে সিরিয়ার ঐক্য ও অখণ্ডতা ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা চলছে৷ এমন সব বিক্ষোভকারীর দাবি মেনে তিনি কোনো মৌলিক সংস্কার করতেও রাজি নন৷ জরুরি আইন প্রত্যাহারের দাবি সম্পর্কেও তিনি মুখ খোলেন নি, যদিও রবিবার তাঁর এক উপদেষ্টা এমন ইঙ্গিত দিয়েছিলেন৷ যারা সিরিয়ার স্বার্থ বিপন্ন করে পথে নামছে, তাদের চরম হুঁশিয়ারি দেন আসাদ৷ ফলে বিদ্রোহীরা আগামী শুক্রবার দেশজুড়ে বড় বিক্ষোভের যে ডাক দিয়েছে, তার পরিণতি কী হতে পারে, তা অনুমান করা যেতে পারে৷
সংস্কারের সদিচ্ছা
আরব জগতে যে পরিবর্তনের হাওয়া চলছে, তার থেকে সিরিয়া যে বিচ্ছিন্ন থাকতে পারে না, এই বিষয়টি মেনে নিয়েছেন আসাদ৷ তিনি বলেন, গোটা অঞ্চলে ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটছে বলে আমরা মনে করি৷ সিরিয়াও আরব বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন নয়৷ কিন্তু তাঁর মতে, বাকি দেশের সঙ্গে সিরিয়ার কোনো তুলনা হয় না৷ মানুষ সংস্কারের দাবি করলে তা পূরণ করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব, বলেন আসাদ৷ উল্লেখ্য, ২০০০ সালে ক্ষমতায় আসার পর বাশার আল আসাদ অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে বেশ কিছু সংস্কারের পদক্ষেপ নিয়েছেন৷ তবে রাজনৈতিক সংস্কারের প্রশ্নে তিনি কোনোরকম আপোশ করতে এখনো প্রস্তুত নন৷ তাছাড়া মনে রাখতে হবে, টিউনিশিয়া, মিশর, লিবিয়া বা অন্যান্য দেশের তুলনায় সিরিয়ার পরিস্থিতি ভিন্ন৷ সেদেশে প্রেসিডেন্ট আসাদের প্রতি জনসাধারণের একটা উল্লেখযোগ্য অংশের সমর্থন রয়েছে৷
ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
প্রেসিডেন্ট আসাদ তাঁর ভাষণে কড়া অবস্থান নিলেও তাঁর প্রশাসন গত সপ্তাহ থেকেই কিছু সংস্কারের ইঙ্গিত দিচ্ছে৷ কিন্তু সরকার বিক্ষোভকারীদের চাপের মুখে নতি স্বীকার করছে, এমন একটা চিত্র তুলে ধরতে প্রস্তুত নয় প্রশাসন৷ বাশার আল আসাদ অত্যন্ত ঠান্ডা মাথার নেতা বলে পরিচিত৷ সহজে তিনি বিচলিত হন না৷ তিনি ও তাঁর প্রশাসন প্রকাশ্যে বলে চলেছে, যে বিক্ষোভকারীদের উপর হিংসাত্মক দমন নীতি প্রয়োগ করা হবে না৷ বাস্তব চিত্র অবশ্য ভিন্ন৷ নিরাপত্তা বাহিনী কড়া হাতে বিক্ষোভ দমন করে চলেছে৷ শুক্রবার যদি সেই দমন নীতি আরও বড় আকার ধারণ করে, সেক্ষেত্রে পরিস্থিতি আসাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে কি না, সেটাই এখন অপেক্ষা করে দেখতে হবে৷
প্রতিবেদন: সঞ্জীব বর্মন
সম্পাদনা: ফাহমিদা সুলতানা