1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিদেশেও জঙ্গি কার্যক্রমে বাংলাদেশিরা

সমীর কুমার দে ঢাকা
২৪ জানুয়ারি ২০১৭

শুধু দেশে নয়, বিদেশেও জঙ্গি কার্যক্রমে জড়িয়ে পড়ছে বাংলাদেশিরা৷ সাম্প্রতিতে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি গ্রেপ্তার হয়েছে৷ এতে সুনাম ক্ষুণ্ণ হচ্ছে বাংলাদেশেরই৷

প্রতীকী ছবি
ছবি: Getty Images/AFP/A. Solaro

গ্রেপ্তারকৃত এ সমস্ত বাংলাদেশিদের মধ্যে সিঙ্গাপুরেই দু'দফায় ৩৫ জন নাগরিক আটক হয়েছে৷ এই ৩৫ জনের মধ্যে আবার ৩৩ জনকে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে সেদেশের সরকার৷ এর বাইরে সর্বশেষ জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট বা আইএস-এর সঙ্গে সম্পৃক্তার অভিযোগে মালয়েশিয়ায় দুই বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির পুলিশ৷ এছাড়া ভারতের বিভিন্ন রাজ্যেও বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷

পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক নুরুল হুদা ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘যারা দেশের বাইরে অবস্থান করছেন, তারা যদি এই ধরনের কোনো কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন, তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে আমাদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বা সরকারের কিছু করার নেই৷ এমতাবস্থায় সেদেশের সরকার তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে৷ তাদের গ্রেপ্তার করে দেশে ফেরত পাঠাতে পারে৷ আর আমাদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীও যথাযথ প্রক্রিয়ায় ঐ সব দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের ফেরত আনতে পারে৷ পাশাপাশি তাদের মাধ্যমে অন্য কেউ জঙ্গি সম্পৃক্ত হচ্ছে কিনা, তাও তদন্ত করতে পারে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী৷ এটাই তাদের কাজ৷ তবে তারা এটা করে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে নয়, গোপনে৷''

নুরুল হুদা

This browser does not support the audio element.

সর্বশেষ সোমবার মালয়েশিয়ায় তথাকথিত ইসলামিক স্টেটের সাথে জড়িত সন্দেহে দু'জন বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ৷ কুয়ালালামপুর ও সাবাহ প্রদেশে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়৷ দেশটির নিউ স্ট্রেইটস টাইমস পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, মালয়েশীয় পুলিশ বাহিনীর সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ শাখার সদস্যরা আইএস-এর একটি আস্তানা গুঁড়িয়ে দিয়েছে৷ এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে দু'জন বাংলাদেশি৷ তবে তাদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করেনি পুলিশ৷ পুলিশ শুধু জানায় যে, গ্রেপ্তার হওয়া চারজনের মধ্যে একজন ফিলিপাইন্সের ও একজন মালয়েশিয়ার নাগরিক৷ বাকি দু'জন বাংলাদেশি৷ এই দু'জনের বয়স আনুমানিক ২৭-২৮ বছর৷ তারা বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করছিল৷ এর আগে গত ২২ সেপ্টেম্বর গুলশানের হামলাকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ থাকার অভিযোগে এবং জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস সন্দেহে মালয়েশিয়ায় আন্দালিব নামের এক শিক্ষার্থীকে আটক করেছিল পুলিশ৷

এর আগে গত বছরের জানুয়ারি মাসে জঙ্গি কর্মকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে সিঙ্গাপুরে কর্মরত ২৭ জন বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী৷ এদের মধ্যে ২৬ জনকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়৷ অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা আইন বা আইএসএ অনুযায়ী, ২০১৫ সালের ১৬ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বরের মধ্যে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল৷ জানা গেছে, এরা সবাই পুরুষ ও দেশটিতে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করত৷ শুধু তাই নয়, এরা সকলেই আল-কায়েদা ও ইসলামিক স্টেটের মতো জঙ্গি সংগঠনের মতাদর্শে বিশ্বাসী ছিল৷ এদের মধ্যে কয়েকজন বিদেশে জিহাদে অংশ নেওয়ার কথাও ভাবছিল৷ তবে সিঙ্গাপুরের ভেতরে সন্ত্রাসী হামলা পরিচালনার কোনো পরিকল্পনা তাদের ছিল না৷

ছানোয়ার হোসেন

This browser does not support the audio element.

ঐ ঘটনার দু'মাস পর, অর্থাৎ মার্চ মাসে, সিঙ্গাপুর পুলিশ সেদেশে কর্মরত আরো আটজন বাংলাদেশি শ্রমিককে আটক করে৷ আটক শ্রমিকরা জঙ্গি সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত এবং বাংলাদেশে ফিরে সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা করছিল বলে জানায় দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়৷ আটককৃতদের বয়স ২৬ থেকে ৩৪ বছরের মধ্যে ছিল৷ তারা নিজেদের ইসলামিক স্টেট ইন বাংলাদেশ বা আইএসবি-এর সদস্য বলে দাবি করে৷ আইএস-এর পক্ষে যুদ্ধ করার জন্য বিদেশি যোদ্ধা হিসেবে ইরাক ও সিরিয়ায় যাওয়ারও চেষ্টা করছিলেন তারা৷ এদের মধ্যে সাতজনকে তখন ফেরত পাঠানো হয়৷

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার ছানোয়ার হোসেন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘যাদের ফেরত পাঠানো হয়েছে তাদের বিষয়ে আমরা তদন্ত করেছি৷ এদের সবাই জঙ্গি সম্পৃক্ত ছিল, এটা বলা যাবে না৷ তাই আমাদের তদন্তে আমরা যাদের সঙ্গে জঙ্গি সম্পৃক্ততা পেয়েছি, তাদের কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে৷ অন্যদের আমরা ছেড়ে দিয়েছি৷ পাশাপাশি এদের সঙ্গে যারা সম্পৃক্ত ছিল, তাদের বিষয়েও আমরা তদন্ত করেছি৷ এছাড়া দেশের বাইরে যারা আছে, তাদের কারো জঙ্গি সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে যথাযথ প্রক্রিয়ায় তাদের ফেরত আনার চেষ্টাও করছি আমরা৷''

গত জুনে গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলায় জড়িত সন্দেহে গত ৭ জানুয়ারি ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ধরা পড়ে জেএমবি জঙ্গি রিপন শেখ ওরফে লায়ন ওরফে রিপন৷ তিনি বাংলাদেশি নাগরিক৷ তার বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গে জাল নোটের ব্যবসা করারও অভিযোগ রয়েছে৷ গ্রেপ্তারের পর ভারতের সর্বোচ্চ গোয়েন্দা সংস্থা এনআইএ রিপনকে কলকাতায় নিয়ে যায়৷ বর্তমানে আদালতের নির্দেশে রিপন শেখ এনআইএ হেফাজতে রয়েছে৷

লে. কর্ণেল আবুল কালাম আজাদ

This browser does not support the audio element.

এর আগে গত বছরের জুলাই মাসে ভারত অধ্যুষিত জম্মু-কাশ্মীরের সীমান্ত অঞ্চল থেকে জঙ্গি সন্দেহে এক বাংলাদেশি নাগরিককে আটক করেছে সেদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী৷ ঐ ব্যক্তির নাম সোহেল রানা৷ তখন ভারতের পত্র-পত্রিকা খবর দিয়েছিল, সীমান্ত এলাকা দিয়ে পাকিস্তানে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন তিনি৷ তবে কী ধরনের জঙ্গি তিনি সেটা তখন জানা যায়নি৷ বর্তমানে সোহেল রানা ভারতের একটি কারাগারে বন্দি রয়েছেন বলে জানা গেছে৷

র‌্যাবের ইন্টেলিজেন্স উইংয়ের পরিচালক লে. কর্ণেল আবুল কালাম আজাদ ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘দেশ থেকে যেসব জঙ্গিকে ফেরত আনা হয়, তাদের বিষয়গুলো পুলিশই দেখে৷ তাছাড়া বিদেশে কোনো জঙ্গি গ্রেপ্তার হলে আমরা তার সঙ্গে কারা সম্পৃক্ত তাদের ব্যাপারে খোঁজ নেই৷ র‌্যাবও তদন্ত করতে গিয়ে দেশি জঙ্গিদের সঙ্গে বিদেশে অবস্থানকারী বাংলাদেশি কোনো জঙ্গির সম্পৃক্ততা পায়নি৷''

বন্ধু, বিষয়টি নিয়ে আপনার কিছু বলার থাকলে জানান আমাদের৷ লিখুন নীচে, মন্তব্যের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ