বিদ্যুতের অভাবে আঁধারে ডুবতে পারে ভারত
১৩ অক্টোবর ২০২১কয়লা না পেলে আর মাত্র দুইদিন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাবে রাজধানী দিল্লিতে। মঙ্গলবার এই মর্মে প্রশাসনকে নোট পাঠিয়েছিল দিল্লিতে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র। তারা জানিয়েছিল, তাদের কাছে আর মাত্র দুইদিনের কয়লা আছে। অথচ কয়লামন্ত্রী বলছেন, এ বছর রেকর্ড পরিমাণ কয়লা উৎপাদন হয়েছে। তাহলে এই সমস্যা কেন? বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
শুধু দিল্লি নয়, গোটা দেশেই বিদ্যুৎ সংকট দেখা দিয়েছে। গোটা ভারতে সব মিলিয়ে ১৩৫টি তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র আছে। যেখান থেকে গোটা দেশের মোট বিদ্যুতের অর্ধেকেরও বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। এই ১৩৫টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মধ্যে ১১৫টি কেন্দ্র জানিয়েছে, তাদের হাতে দুইদিনেরও কম কয়লা আছে। এমন সংকট এর আগে কখনো হয়নি।
কেন্দ্রীয় কয়লামন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী জানিয়েছেন, কোল ইন্ডিয়ার কাছে এখন ২২দিনের কয়লা মজুত করা আছে। ফলে এই বিদ্যুৎ সংকট হওয়ার কোনো কারণ নেই। প্রশ্ন হলো তাহলে সংকট হচ্ছে কেন?
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, কয়লা উৎপাদনে কোনো ঘাটতি নেই। কিন্তু এবছর বৃষ্টির জন্য কয়লা পরিবহনে সমস্যা হয়েছে। সে কারণেই সমস্ত তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলির হাতে সময় মতো কয়লা পৌঁছে দেওয়া যায়নি। আর তার থেকেই তৈরি হয়েছে সংকট। কেন্দ্রীয় সরকার নোট দিয়ে তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলিকে জানিয়েছে, প্রয়োজনে তারা কয়লা রপ্তানি করতে পারে। দ্রুত যাতে তাদের কাছে কয়লা পৌঁছে দেওয়া যায়, তার ব্যবস্থাও করা হবে।
অন্যদিকে রাজ্যগুলির সঙ্গেও কথা বলেছে কেন্দ্র। এই পরিস্থিতিতে বিদ্যুতের দাম যাতে বাড়িয়ে দেওয়া না হয়, সেই আর্জি জানানো হয়েছে। তবে বেশ কয়েকটি রাজ্যে বার বার লোডশেডিং করে সংকট কাটানোর চেষ্টা হচ্ছে।
গোটা বিষয়টি নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও বৈঠক করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি তিনিও বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করেছেন বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের অনেকেরই বক্তব্য, ভারতকে দ্রুত এই চূড়ান্ত কয়লা নির্ভরতা থেকে বের হতে হবে। বিদ্যুতের বিকল্প ব্যবস্থাগুলিকে আরো গুরুত্ব দিতে হবে। নইলে এমন সমস্যা আবারো তৈরি হবে। বস্তুত, প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীও একথা বলেছেন বলে সূত্র জানিয়েছে।
এসজি/জিএইচ (পিটিআই, এএনআই)