1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিদ্যুৎ নেই, রোজায় ওষ্ঠাগত প্রাণ গাজার বাসিন্দাদের

২৫ আগস্ট ২০১০

রমজানের মধ্যে বিদ্যুৎ সঙ্কট চরম আকার ধারণ করেছে ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে৷ এনিয়ে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ৷ ইসরায়েলের পাশাপাশি অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় রাজনীতিবিদদের প্রতিও৷

Palestinian, children, lantern, Gaza City, বিদ্যুৎ, গাজা,
ফাইল ছবিছবি: AP

কেউ দোষ দিচ্ছে অভ্যন্তরীণ রাজনীতিকে, কেউবা ইসরায়েলকে৷ তবে দোষ যারই থাক, এটাই সত্যি যে গাজা ভূখণ্ডে বিদ্যুৎ থেকেও নেই৷ আর রমজানের এই সময়ে প্রচণ্ড গরমে সবার নাভিঃশ্বাস উঠেছে৷ তার প্রকাশই ঘটালেন হাসান হাবিলা৷ ‘‘এটা কোনো জীবনই নয়'', এক বাক্যেই সব ক্ষোভ উগরে দিলেন তিনি৷

হাসান থাকেন জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে, আট সন্তান নিয়ে ছোট্ট একটি ঘরে৷ হাসান জানালেন, দিনের ১৬ ঘণ্টাই বিদ্যুৎ থাকে না৷ শিশুগুলো গরমে অস্থির হয়ে যায়৷ তাই স্বস্তির জন্য ঘরে না থেকে বাইরেই থাকেন৷ কারণ তাতে একটু বাতাস লাগে গায়ে৷ হাসান বললেন, ‘‘মাঝে মাঝে তো ঘর থেকে বিছানা বের করে বাইরেই রাত কাটাই৷ সেটা একটু হলেও আরামের হয়৷''

ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডের কর্তৃত্ব হামাসের৷ যারা ইসরায়েলের প্রবল বিরোধী৷ ২০০৬ সালে ইসরায়েলি বোমা হামলায় গাজার একমাত্র বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ছয়টি ট্রান্সফর্মারই উড়ে যায়৷ এরপর কিছু আমদানি করে আর একটি ট্রান্সফর্মার সারিয়ে জোড়াতালি দিয়ে কোনো রকমে বিদ্যুৎ সরবরাহ চলছিল৷ কিন্তু হামাস আর ফাতাহ নিয়ন্ত্রিত ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের রেশারেশিতে অবস্থা আরো খারাপ হয়েছে৷ গাজার বিদ্যুতের একটি বড় অংশ আসে ইসরায়েল থেকে, কিছু সরবরাহ করে মিশর৷ বাকিটা উৎপাদন হয় নিজেদের বিদ্যুৎ কেন্দ্রে৷ বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য ইসরায়েল বা মিশরকে অর্থ দেয় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ৷ যা তারা পায় পশ্চিমা দেশগুলোর কাছ থেকে৷ হামাসের অভিযোগ, গাজার বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য পর্যাপ্ত তহবিল ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ দিচ্ছে না৷ অন্যদিকে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বলছে, গ্রাহকদের কাছ থেকে পাওয়া বিদ্যুত বিলের হিসাব দিচ্ছে না হামাস৷ দুই পক্ষের এই রশি টানাটানিতে দুর্ভোগ যা হচ্ছে, তা গাজার ১৫ লাখ মানুষেরই৷ বিজলি বাতি জ্বলছে না, কাটছে না রাতের আঁধার৷

বিদ্যুৎ পরিস্থিতি নিয়ে গাজার সবাই ক্ষুব্ধ৷ শুধু যে বাতি, আর পাখা কিংবা শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রগুলো চলছে না, তা নয়৷ বিদ্যুতের অভাব নিয়ে এসেছে পানি সঙ্কটও৷ তাও এই রোজার সময়৷ এছাড়া পয়ঃবর্জ্য শোধন ছাড়াই পড়ছে ভূমধ্য সাগরে৷ এ থেকে বড় ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে৷

ফিলিস্তিনের বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গাজা ভূখণ্ডের মাসিক বিদ্যুৎ বিল হয় স্থানীয় মুদ্রায় ৭ কোটি শেকেল, যার মূল্যমান প্রায় দেড় কোটি ডলার৷ কিন্তু স্থানীয় কর্তৃপক্ষ মাসে তুলতে পারে দেড় লাখ শেকেল৷ ফলে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে৷ গণরোষ গণবিক্ষোভের দিকে যেতে পারে, সে জন্য এক ধরনের সমঝোতায় আসতে চাইছে হামাস৷ তারা বলছে, নিয়মিত বিল আদায় করে দেবে তারা৷ আর তাহলেই বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকবে বলে আশ্বাস দিয়েছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ৷ তবে দুই পক্ষের এই আচরণের গাজার বাসিন্দাদের ক্ষোভ আরো বেড়েছে৷ অনেকের ভাষ্য, জনগণের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে রাজনৈতিক নেতারা৷ হাসানের স্ত্রী উমা তো বলেই দিলেন, ‘‘নরক, একটা নরকেই আছি আমরা৷''

প্রতিবেদন: মনিরুল ইসলাম

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ