এখন থেকে আরো সূক্ষ মানদণ্ডের ভিত্তিতে ইসলামপন্থিদের ভয়াবহতা নির্ধারণ করা হবে৷ ‘রাডার-আইটিই' নামের এক যন্ত্র ব্যবহার করে জার্মান পুলিশ আরো নিখুঁতভাবে বলতে পারবে, ইসলামপন্থিদের মধ্যে সহিংস হয়ে ওঠার ঝুঁকি কতটুকু৷
বিজ্ঞাপন
এখন থেকে আরো সূক্ষ মানদণ্ডের ভিত্তিতে ইসলামপন্থিদের ভয়াবহতা নির্ধারণ করা হবে৷ ‘রাডার-আইটিই' নামের এক যন্ত্র ব্যবহার করে জার্মান পুলিশ আরো নিখুঁতভাবে বলতে পারবে, ইসলামপন্থিদের মধ্যে সহিংস হয়ে ওঠার ঝুঁকি কতটুকু৷
জার্মান পুলিশ বিকেএ-এর এক নতুন রিপোর্ট বলা হচ্ছে, জার্মানিতে ‘সাংঘাতিক' হিসেবে যে সব ইসলামপন্থিদের চিহ্নিত করা হয়েছে, তাদের মধ্যে কেবল অর্ধেক সংখ্যককে সত্যিকার অর্থে ভয়ংকর বলা যায়৷ জার্মান পত্রিকা স্যুড ডয়চে সাইটুং এবং সরকারি গণমাধ্যম এনডিআর ও ডাব্লিউডিআর-এ প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, জার্মানিতে যে ৭২০ জন ইসলামপন্থিকে ‘বিপজ্জনক' হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, তাদের মধ্যে অর্ধেকই আক্ষরিক অর্থে বিপজ্জনক নয়৷ তবে বাকি অর্ধেক ‘অত্যন্ত বিপজ্জনক'৷
বিশ্বের ভয়ংকর পাঁচ জঙ্গি সংগঠন
তথাকথিত জঙ্গিদের কারণে বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছে৷ অনেকেরই ধারণা তথাকথিত ইসলামিক স্টেট বা আইএস-ই সবচেয়ে ভয়ংকর জঙ্গি গোষ্ঠী৷ কিন্তু বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ সূচি বা গ্লোবাল টেররিজম ইনডেক্স কিন্তু বলছে ভিন্ন কথা৷
ছবি: Getty Images/AFP/I. Lieman
বোকো হারাম
ইসলামিক স্টেট বা আইএস নয়, বিশ্বের ভয়ংকর জঙ্গি সংগঠনগুলোর তালিকার শীর্ষে রয়েছে নাইজেরিয়ার বোকো হারাম৷ ২০১৫ সালে আবু বকর শেকাউ-এর নেতৃত্বে এই জঙ্গি গোষ্ঠীটি ৬ হাজার ৬৪৪ জন মানুষকে হত্যা করেছে৷ তাদের হামলায় আহত হয়েছে ১,৭৪২ জন৷ বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক৷ এছাড়া হাজারো কিশোরীকে অপহরণ করেছে বোকো হারাম৷
ছবি: picture-alliance/AP Photo/S.Alamba
ইসলামিক স্টেট
যদিও বোকো হারাম আইএস-এর তুলনায় বেশি মানুষকে হত্যা করেছে, কিন্তু আতঙ্ক সৃষ্টির দিক থেকে সবচেয়ে উপরে আছে আইএস৷ বিশ্বের নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি বলা হচ্ছে আইএসকে৷ ২০১৫ সালে তাদের হাতে প্রাণ হারিয়েছে ৬ হাজার ৭৩ জন মানুষ এবং আহত হয় ৫ হাজার ৭৯৯ জন৷ ১০৭১টি হামলা চালিয়েছে তারা বিশ্ব জুড়ে৷ আবু বকর আল-বাগদাদির নেতৃত্বে সংগঠনটি সিরিয়া, ইরাক, তুরস্ক ও ইউরোপ জুড়ে এখনো হামলা চালিয়ে যাচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
তালেবান
১৯৯৪ সালে আফগানিস্তানে গৃহযুদ্ধ চলার সময় এই জঙ্গি সংগঠনটির আবির্ভাব৷ বিশ্বের সবচেয়ে অভিজ্ঞ জঙ্গি সংগঠন বলা হয় এদের৷ ২০১৫ সালে তালেবানের হাতে প্রাণ হারিয়েছে ৩ হাজার ৪৭৭ জন এবং আহত হয়েছে ৩ হাজার ৩১০ জন৷ গত বছর বিশ্ব জুড়ে ৮৯১ টি হামলা চালিয়েছে তারা৷ হিবাতুল্লাহ আকন্দজাদা এখন তালেবানের নেতৃত্বে রয়েছেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Noorullah Shirzada
ফুলানি জঙ্গি গোষ্ঠী
বিশ্বব্যাপী এদের তেমন পরিচিতি নেই৷ এরা নাইজেরিয়ার ফুলা সম্প্রদায়ের মানুষ৷ এদের লক্ষ্য ফুলানির ভূমি মালিকদের হত্যা করা৷ ২০১৫ সালে ১৫০ টি সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে ফুলানি, তাদের হামলায় মারা গেছে ১ হাজার ২২৯ জন৷
ছবি: Getty Images/AFP/I. Lieman
আল-শাবাব
বোকো হারামকে যদি আইএস-এর সাথে তুলনা করা হয়, তবে আল শাবাবকে তুলনা করা যায় আল-কায়েদার সঙ্গে৷ পূর্ব আফ্রিকায় এদের আধিপত্য অনেক বেশি৷ সোমালিয়াকে ইসলামিক রাষ্ট্র বানানোই তাদের মূল লক্ষ্য৷ গত বছর জঙ্গি গোষ্ঠীটি ৪৯৬টি হামলা চালিয়েছে, হত্যা করেছে ১ হাজার ২১ জন মানুষকে, আহত হয়েছে ৮৫০ জন৷
ছবি: A. Ohanesian
5 ছবি1 | 5
প্রথমবারের মতো এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে বিকেএ ব্যবহার করেছে নতুন একটি যন্ত্র, যা দিয়ে এই বিশ্লেষণ করা হয়েছে৷ এর আগে বার্লিনের ক্রিসমাস মার্কেটে টিউনিশীয়ার নাগরিক আনিস আমরির ট্রাক হামলায় মারা যান ১২ জন, আহত হন আরো অনেকে৷ ঘটনার পর থেকে সন্দেহভাজনদের সম্পর্কে খোঁজ রাখার বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়৷ জার্মানির কন্সটান্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেনসিক মনোবিদদের সহায়তায় বিকেএ উদ্ভাবন করেছে ‘রাডার-আইটিই' নামের এ প্রযুক্তি৷ বিকেএ-র মতে, ‘রাডার-আইটিই' নামের এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে সন্দেহভাজনদের বিশ্বাস বা ধর্মাচারণ নিয়ে বিশ্লেষণ না করে তাদের ‘আচরণ', বিশেষ করে তাদের জীবনাচরণ সংক্রান্ত তথ্যের ভিত্তিতে সামগ্রিকভাবে নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে বিশ্লেষণ করা হয়৷
এ ‘রিস্ক অ্যাসেসমেন্টে' ৭৩ টি প্রশ্নের নির্ধারিত উত্তরের প্যাটার্ন অনুযায়ী ব্যক্তিটি কতটা বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে তার ধারণা নেয়া হবে৷ এর মাধ্যমে ‘সর্বোচ্চ ঝুঁকি', ‘লক্ষ্যণীয় ঝুঁকি' ও ‘সহনীয় ঝুঁকি' এই তিন মাত্রার ঝুঁকি নির্ধারিত করা হবে৷
এ পদ্ধতি আবিষ্কারের সাথে জড়িত কন্সটান্স বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিদ জেরোম এনড্রাস বলেন, ‘‘আমরা যে পদ্ধতি ব্যবহার করেছি, আগের গবেষণা থেকে জানি যে এগুলো ভালো কাজ করে৷ অনেক যন্ত্র রয়েছে যেগুলো মতবাদের উপর জোর দেয়, কিন্তু আমরা জানি যে মতবাদই একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়৷ এ এলাকায় অনেক বিপজ্জনক মানুষ আছে, যাদের ক্ষেত্রে মতবাদের প্রভাব খুব সামান্য৷''
সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে বাস টুরে ইমামরা
ফরাসি ভাষাভাষী বিভিন্ন দেশের কয়েকজন ইমাম সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তাঁদের অবস্থান জানাতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ সফর করছেন৷ রবিবার তাঁরা বার্লিনে ছিলেন৷
ছবি: DW/J. Chase
বাসে করে সফরে
ফরাসি ভাষাভাষী বিভিন্ন দেশের কয়েকজন ইমাম সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তাঁদের অবস্থান জানাতে বাসে করে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হওয়া শহরগুলোতে যাচ্ছেন৷ সপ্তাহব্যাপী এই সফরের দ্বিতীয় গন্তব্যস্থল হিসেবে রবিবার বার্লিনে এসেছিলেন তাঁরা৷ জার্মানি ছাড়াও ফ্রান্স ও বেলজিয়ামে যাবেন তাঁরা৷
ছবি: DW/J. Chase
নিহতদের প্রতি সম্মাননা
গত ডিসেম্বরে বার্লিনের ব্রাইটশিডপ্লাটৎস চত্বরে বড়দিনের বাজারে ইসলামি জঙ্গি আনিস আমরি একটি বড় ট্রাক নিয়ে হামলা চালালে ১২ জন নিহত হন৷ বার্লিনে আগত বিদেশি ইমামরা রবিবার সেই স্থল পরিদর্শনে যান৷ সেখানে তাঁরা নিহতদের স্মরণে স্থাপিত স্মারকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান৷ বার্লিনের মুসলিম সম্প্রদায়ের কয়েকজন সদস্য সেই সময় উপস্থিত ছিলেন৷
ছবি: DW/J. Chase
মুসলিমরা শান্তির পক্ষে
বার্লিন রাজ্যের ‘সিটিজেনস পলিটিক্যাল অ্যাক্টিভিজম’ বিষয়ক সেক্রেটারি সওজান শেবলি ইমামদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন৷ ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত এই মুসলিম নারীও রবিবারের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন৷ তিনি বলেন, মুসলিমরা যে শান্তি ও সহাবস্থানের পক্ষে, এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সেই বক্তব্যের পক্ষে শক্তিশালী বার্তা দেয়া যাচ্ছে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
যৌথ উদ্যোগ
ইমামদের নিয়ে এই বাস সফরের উদ্যোক্তা হলেন ফ্রান্সের প্যারিসের উপকণ্ঠে অবস্থিত দোঁসি-র ইমাম হাসেন শালগুমি (ছবি) ও ইহুদি ফরাসি লেখক মারেক হাল্টার৷
ছবি: imago/PanoramiC
মুসলমানদের সমালোচনা
ইসলামি জঙ্গিদের একের পর এক হামলার পরও ইউরোপের মুসলমান সম্প্রদায় জঙ্গিদের বিরুদ্ধে বড় আকারের প্রতিবাদ না করায় মুসলিমরা সমালোচিত হয়েছেন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/M. Kappeler
উপস্থিতি সন্তোষজনক ছিল না
ছবিটি বার্লিনে ইমামদের অনুষ্ঠানের৷ সেখানে মুসলিম সম্প্রদায়ের যতজন উপস্থিত ছিলেন তার চেয়ে বেশি ছিলেন গণমাধ্যমের কর্মীরা৷ তবে এই অনুষ্ঠানের প্রচার খুব একটা না হওয়ায় উপস্থিতি কম ছিল বলে দাবি করেছেন কয়েকজন৷
ছবি: DW/J. Chase
হুমকির মুখে ইমাম ও তাঁর পরিবার
ফ্রান্সের ইমামদের সংগঠন ‘মুসলিমস ইমাম’-এর সহ সভাপতি হোচিনে দ্রুইচে (মাঝে) সাংবাদিকদের বলেন, উদারপন্থি দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে হুমকি দেয়া হয়েছিল৷ তিনি বলেন, বার্লিনের অনুষ্ঠানে যে ইমামরা উপস্থিত হয়েছেন তাঁদের অনেককে হয়ত চাকরি হারাতে হতে পারে৷ ‘‘অধিকাংশ মুসলমানই আমাদের বক্তব্য মানে না’’, ডয়চে ভেলেকে বলেন তিনি৷
ছবি: DW/J. Chase
7 ছবি1 | 7
এনড্রাস বলেন, অভ্যাসগতভাবে অপরাধী এমন অনেকে আছেন যারা পরবর্তীতে ইসলামের বিষয়ে আগ্রহ দেখিয়েছেন, তাদের আগের পদ্ধতি অনুযায়ী ‘ভয়াবহ বিপজ্জনক' হিসেবে চিহ্নিত করার সম্ভাবনা কম৷ ‘‘এমন হতে পারে যে তাদের ইসলাম সম্পর্কে কোনো ধারণাই নেয়, কিন্তু তারা অত্যন্ত হিংস্র৷ আবার অনেকে আছেন যারা মতাদর্শের দিক থেকে অত্যন্ত গোঁড়া, কিন্তু বিপজ্জনক নন কারণ তারা হয়ত সহিংসতা থেকে অনেক দূরে থাকেন৷ এ জন্যই একটি বিষয়ে নজর দেয়ার চাইতে অনেকগুলো বিষয় নজর দেয়া এত জরুরি৷'' এ পদ্ধতিতে মতবাদ যাই হোক না কেন, যারা অতীতে সহিংসতা দেখেছেন বা এর শিকার হয়েছেন, ছোট বেলায় কিংবা যুদ্ধাবস্থায়, তাদের ‘সর্বোচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ' হিসেবে চিহ্নিত করা হয়৷
যদিও বিপজ্জনক চিহ্নিত করার কোনো নির্দিষ্ট সংজ্ঞা নেই, জার্মান পুলিশের মতে কিছু তথ্যের ভিত্তিতে কেউ ভবিষ্যতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত হতে পারে বলে ধরে নেয়া হয়৷ পুলিশ ইউনিয়ন জিডিপি-র প্রধান অলিভার মালচাও বলেন, ‘‘এর আগে আমাদের কোনো নির্দিষ্ট পদ্ধতি ছিল না এবং এক-একজন একএকভাবে বিচার করত৷'' যদিও এ পদ্ধতি কতটা কাজ করবে এর উত্তরে অলিভার বলেন, ‘‘এটা কতটা সফল তা জানতে আমাদের আরো অপেক্ষা করতে হবে৷''
বেন নাইট/আরএন
প্রতিবেদনটি নিয়ে কোনো মন্তব্য থাকলে লিখুন নীচের ঘরে৷
জার্মানিতে আলোচিত যত ‘জঙ্গিবিরোধী’ মামলা
এ পর্যন্ত বেশ কিছু উগ্র ইসলামপন্থি বা জঙ্গিদের হামলা এবং হামলার চেষ্টা হয়েছে জার্মানিতে৷ কয়েকদিন আগে সর্বোচ্চ শাস্তিও হয়েছে এক ব্যক্তির৷ ছবিঘরে থাকছে জার্মানিতে আলোচিত কিছু ‘জঙ্গিবিরোধী’ মামলার কথা৷
ছবি: AP
বন শহরে বোমা বিস্ফোরণের ব্যর্থ চেষ্টা
২০১২ সালে বন শহরের কেন্দ্রীয় রেল স্টেশনে তোলা ছবি এটি৷ ছবির ওই নীল ব্যাগে বোমা ছিল৷ এক ডানপন্থি রাজনীতিবিদকে হত্যার উদ্দেশ্যে এ বোমা রাখা হয়েছিল বলে পুলিশের সন্দেহ৷ হত্যাচেষ্টায় জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সম্প্রতি এক ব্যাক্তির আজীবন কারাদণ্ডের রায় দিয়েছে ড্যুসেলডর্ফের আদালত৷ বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ড হয়েছে আরো তিনজনের৷
ছবি: picture-alliance/dpa
ফ্রাংকফুর্ট বিমানবন্দরের বাস স্টপে হামলা
জার্মানিতে প্রথম ‘উগ্র ইসলামপন্থির’ হামলাটি হয়েছিল ২০১১ সালের মার্চে৷ সেবার ফ্রাংকফুর্ট বিমানবন্দরের বাস স্টপে দুই মার্কিনিকে গুলি করে হত্যা করেছিল আরিদ উকা নামের এক ব্যক্তি৷ নিহত দুই মার্কিন নাগরিকের কয়েক দিনের মধ্যেই আফগানিস্তানে যাওয়ার কথা৷ জানা যায়, আফগানিস্তানে সামরিক অভিযানের প্রতিবাদে গুলি করে দু’জন নিরপরাধ মার্কিনিকে হত্যা করে আরিদ৷ কসভোতে জন্ম নেওয়া আরিদেরও আজীবন কারাদণ্ড হয়েছে৷
ছবি: AP
সাওয়ারল্যান্ড সেল
‘সাওয়ারল্যান্ড সেল’ হচ্ছে পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে গড়ে ওঠা ইসলামি জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক জিহাদ ইউনিয়ন বা আইপিইউ-এর জার্মান শাখা৷ ১০ বছর আগে এই সংগঠনের হয়েই যুক্তরাষ্ট্রকেন্দ্রিক স্থাপনাগুলোতে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল চার জার্মান এবং এক তুর্কি বংশোদ্ভূত তরুণ৷ ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরে পাঁচজনকেই গ্রেপ্তার করা হয়৷ ২০১০ সালে প্রত্যেকের বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ড হয়েছে৷
ছবি: AP
নকল পুলিশ
২০১৪ সালে ভুপার্টাল শহরে কমলা রঙের সিকিউরিটি ভেস্ট পরা একদল লোক রাস্তায় নেমে আসে৷ তাদের পোশাকে লেখা ছিল ‘শরিয়া পুলিশ’৷ লোকগুলো বিভিন্ন মানুষকে বার এবং ক্লাব বর্জন করে ইসলামি আইন মেনে চলার পরামর্শ দিতে থাকে৷ ওই লোকগুলোর নেতা হিসেবে কাজ করেছিলেন স্ভেন লাউ নামের এক সালাফিস্ট মুসলমান৷ পরে আইএস-এর সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় তাকে৷ তার বিরুদ্ধে মামলা এখন বিচারাধীন৷
ছবি: picture-alliance/dpa/Bildfunk/M. Becker
বড় বড় কথা বলা সেই আইএস জঙ্গি
২০১৩ সালের অক্টোবরে তথাকথিত জঙ্গি সংগঠন আইএস-এ যোগ দিতে ডিন্সলাকেনের সালাফিস্ট মুসলমান নিলস ডি. সিরিয়ায় যায়৷ এক বছর পর আবার ফিরে আসে জার্মানিতে৷ ফিরে এসে সিরিয়ায় সশস্ত্র যুদ্ধে অংশ নেয়ার অভিজ্ঞতা প্রকাশ্যে জানায় সগর্বে৷ তারপর গ্রেপ্তার করা হয় তাকে৷ চার বছরের কারাদণ্ড হয়েছে তার৷
ছবি: DW/M. Gopalakrishnan
তার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল
২০১৬ সালের জুলাই মাসে মামলার চূড়ান্ত শুনানির দিন হ্যারি এস. আদালতে বলে ‘‘সিরিয়ায় যাওয়া আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল৷’’ ব্রেমেনে খ্রিষ্টান থেকে মুসলমান হওয়া তরুণটি তার এক বছর আগেই সিরিয়ায় গিয়ে তথাকথিত জঙ্গি সংগঠন আইএস-এর সঙ্গে তিন মাস কাটিয়ে এসেছে৷ সন্ত্রাসী সংগঠনে যোগ দেয়ার অপরাধে তিন বছরের জেল হয়েছে তার৷