1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিপন্ন সুদানের মানবাধিকার

১ মার্চ ২০১৮

অগ্নিগর্ভ সুদান৷ সরকারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন থেকে দুর্নীতি সমস্ত অভিযোগই রয়েছে৷ ডয়চে ভেলের ‘কনফ্লিক্ট জোন’ অনুষ্ঠানে অ্যানে সোফি ব্র্যানডলিনকে এই সমস্ত প্রসঙ্গে উত্তর দেন সুদানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইব্রাহিম ঘানডৌর

DW Conflict Zone - Zitattafel Ibrahim Ghandour

Ibrahim Ghandour on Conflict Zone

26:04

This browser does not support the video element.

মানবাধিকার লঙ্ঘন, দুর্নীতি, গণমাধ্যমের উপর আঘাত, অস্বচ্ছ নির্বাচন, মানবাধিকার সংগঠনগুলির ওপর আঘাত, এমনই বিবিধ অভিযোগ রয়েছে সুদান সরকারের বিরুদ্ধে৷ অভিযোগ আজকের নয়, দীর্ঘদিন ধরে বহু সংগঠনের রিপোর্টে বার বার উঠে এসেছে সুদানের ভয়াবহতার প্রসঙ্গ৷ এসেছে, সেখানকার গোপন জেলের কথা৷ বহু মানবাধিকার কর্মীকে নাকি সে সমস্ত জেলে নিয়ে গিয়ে দীর্ঘদিন আটকে রাখা হয় এবং অত্যাচার চালানো হয়৷ কিন্তু এই কোনো অভিযোগই মানতে রাজি নয় সুদান সরকার৷ দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইব্রাহিম ঘানডৌরের মতে, তাঁদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত চলছে৷ এবং সে কারণেই এ ধরনের অভিযোগ তোলা হচ্ছে সুদানের বিরুদ্ধে৷ সুদানের মানবাধিকার নাকি বিশ্বের বহু দেশের কাছে দৃষ্টান্ত হতে পারে৷

মানবাধিকার লঙ্ঘন

দীর্ঘদিন ধরেই ‘কনফ্লিক্ট জোন’ বা যুদ্ধাঞ্চল হয়ে রয়েছে সুদান৷ সশস্ত্র সরকারবিরোধী শক্তির সঙ্গে সেখানে লাগাতার সংঘর্ষ লেগে আছে সরকারপক্ষের৷ অভিযোগ, বিদ্রোহীদের কোণঠাসা করতে সাধারণ মানুষের উপরেও নানারকম অত্যাচার চালায় সুদান সরকার৷ সাম্প্রতিক অতীতে সেখানে এমনই ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল যে, বিশ্বের প্রায় সমস্ত মানবাধিকার সংগঠন ঘটনাটিকে ‘গণহত্যা’ বলে অভিহিত করেছিল৷ খুন, ধর্ষণ, অকথ্য অত্যাচার কিছুই বাদ দেয়নি সরকারের সৈন্যবাহিনী৷ শুধু তাই নয়, দেশের নাগরিকদের পাশাপাশি বিদেশ থেকে আসা মানবাধিকার কর্মীদের ওপরেও অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছিল৷ ইব্রাহিম অবশ্য এসব কিছুই মানতে চাননি৷ তাঁর বক্তব্য, কোনো কোনো পরিস্থিতিতে বিদ্রোহীদের শবক শেখানোর জন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়৷ কিন্তু তা কখনোই মাত্রা ছাড়ায়নি৷

যদিও ‘গণহত্যা’-র পর সুদানের প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল আন্তর্জাতিক আদালত৷ তবে তা কখনোই কার্যকরী হয়নি৷ এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, যে আদালতে সুদানের কোনো প্রতিনিধিই নেই, সে আদালতের রায়কে গুরুত্ব দেন না তাঁরা৷ যদিও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, আফ্রিকান কমিশন অন হিউম্যান অ্যান্ড পিপলস রাইটসের মতো সংগঠন বারংবার তাদের রিপোর্টে সুদানের ভয়াবহতার কথা উল্লেখ করেছে৷ তাদের সর্বশেষ রিপোর্টেও বলা হয়েছে, সুদানে এখনো মানবাধিকার লঙ্ঘন চলছে৷ সরকারের বিরুদ্ধে যাঁরাই মুখ খুলছেন, তাঁদেরই গ্রেফতার করা হচ্ছে৷ ছাত্র, বিরোধী রাজনীতিক, মানবাধিকার কর্মী কাউকে বাদ দেওয়া হচ্ছে না৷

অকথ্য অত্যাচার

সুদানের ‘গণহত্যা’-র পর অসংখ্য ছবি ছড়িয়ে পড়েছিল সোশ্যাল নেটওয়ার্কে৷ মানবাধিকার সংগঠনগুলিও তাদের রিপোর্টে বহু ছবি ব্যবহার করেছিল৷ অকথ্য অত্যাচারের সমস্ত প্রমাণ মিলেছিল ওই সমস্ত ছবিতে৷ কিন্তু সে সব কোনো কিছুই মানতে নারাজ মন্ত্রীমশাই৷ তাঁর বক্তব্য, সুদানের অবস্থা খুব স্থিতিশীল নয়৷ নানারকম সমস্যা ঘিরে রয়েছে দেশটিকে৷ ফলে কখনো কখনো কঠোর হতে হয়৷ কিন্তু তা কখনোই মানবাধিকার লঙ্ঘন করে নয়৷ সুদানে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয় না৷ গোপন জেলের প্রসঙ্গেও তিনি বলেন, সেখানে তেমন কোনো কারাগার নেই৷ যা আছে, সবই প্রকাশ্যে৷ যদি সেখানকার গোপন কারাগারেরও যথেষ্ট প্রমাণ আছে আন্তর্জাতিক আদালতের হাতে৷ এ প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ইব্রাহিম বলেন, এনজিও-গুলি সুদান সম্পর্কে মনগড়া রিপোর্ট তৈরি করে৷ আসল পরিস্থিতির কথা কোথাও বলা হয় না৷ এবং সে কারণেই এনজিও-গুলির কাজকর্ম নিয়ে খুশি নয় সুদান সরকার৷ পাশাপাশি তিনি বলেন, কোনো এনজিও ঠিক তথ্য পরিবেশন করতে চাইলে সুদান সরকার সবরকম সহায়তা করবে৷

নির্বাচন দুর্নীতি

দক্ষিণ সুদান আলাদা হওয়ার পর ২০১৫ সালে সুদানে প্রথম নির্বাচন হয়৷ বিরোধীদের বক্তব্য নির্বাচনের নামে প্রহসন হয়েছিল৷ প্রায় সমস্ত ভোটই লুঠ করেছিল বর্তমান সরকার৷ সাধারণ মানুষের রায় ভোটে প্রতিফলিত হয়নি৷ কিন্তু মন্ত্রীমশাইয়ের বক্তব্য, তিনি নিজে ছিলেন নির্বাচনের দায়িত্বে৷ ফলে তিনি দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারেন যে, নির্বাচন শান্তিপূর্ণ এবং স্বচ্ছ হয়েছিল৷ বরং বিরোধীদের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে তিনি বলেন, দুর্নীতি প্রমাণ করুক তারা৷ এদিকে আফ্রিকান ইউনিয়নও সুদানের নির্বাচনকে স্বচ্ছ বলতে রাজি নয়৷ তাদের কাছে রিপোর্ট রয়েছে যে, নির্বাচনের সময় বিরোধী তো বটেই, এমনকি, বহু সাংবাদিককেও গ্রেফতার করে গোপন কারাগারে পাঠানো হয়েছিল৷

গণমাধ্যমের মুখ বন্ধ

সুদানের বিরুদ্ধে আরো একটি বড় অভিযোগ হলো, সেখানে সংবাদমাধ্যমকে ঠিকমতো কাজ করতে দেওয়া হয় না৷ সরকারবিরোধী কথা বললেই সাংবাদিকদের গ্রেফতার করা হয়৷ নানারকম অত্যাচারও চালানো হয়৷ যদিও এই অভিযোগও মানতে রাজি নন ইব্রাহিম৷ তাঁর বক্তব্য দেশের অধিকাংশ সংবাদমাধ্যমই সরকারের সমালোচনা করে৷ কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে সরকার কখনোই কোনো ব্যবস্থা নেয় না৷ যদিও তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন, দু-একটি ক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেও বাধ্য হয়েছে তাঁর সরকার৷

এসজি/ডিজি

সুদানে কি সত্যিই মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে? মন্তব্য করুন নীচের ঘরে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য
স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ