জার্মানিতে বছরে দু’লাখের মতো সন্তান বিবাহবিচ্ছেদের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷ তবে বিচ্ছেদের পরও একসঙ্গে সন্তান লালনপালনের দায়িত্ব নেয়ার হার আগের চেয়ে বাড়ছে৷ এ জন্য তাদের আর্থিক সহায়তাও প্রয়োজন, বলছেন জার্মানির বিচারমন্ত্রী৷
বিজ্ঞাপন
আলাদা বসবাস কিংবা বিচ্ছেদের পরও সহ-অংশীদারেরভিত্তিতে সন্তান লালনপালনের প্রবণতা জার্মানিতে বাড়ছে৷ তবে এ সংক্রান্ত আইনটি পুরনো হওয়ায় তা এ সমস্ত অভিভাবকদের চাহিদা মেটাতে পারছে না বলে সপ্তাহান্তে মত দিয়েছেন জার্মানির বিচারমন্ত্রী কাটারিনা বার্লে৷
‘‘বিচ্ছিন্ন অভিভাবকদের উপর থেকে আর্থিক চাপ কমাতে হবে আমাদের,'' জার্মানির একটি সংবাদপত্রকে শনিবার দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেন বার্লে৷
ছাড়াছাড়ি মা-বাবার, ভোগান্তি সন্তানের
প্রযুক্তির সুবিধা বাড়ার সাথে বাড়ছে ডিভোর্স বা বিবাহবিচ্ছেদের সংখ্যা৷ বাড়ছে স্বামী-স্ত্রীর আলাদা থাকার প্রবণতাও৷ বিশেষজ্ঞদের মতে এসবের নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে সন্তানের মনোজগতে৷ ওর স্বাভাবিক বিকাশ হচ্ছে বাধাগ্রস্ত৷
ছবি: Getty Images/AFP/R. Beck
শিশুদের ভয় আর আতঙ্ক
সন্তানের কাছে মা-বাবার ছাড়াছাড়ি মেনে নেয়া অনেক কষ্টকর৷ বিশেষ করে সন্তানের বয়স যদি কম থাকে৷ এক সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, হঠাৎ করে একজনের সাথে, অর্থাৎ মা বা বাবার সাথে থাকতে হয় বলে শতকরা ৩৭ থেকে ৪৮ ভাগ শিশু-কিশোরের মনেই অন্যজনকে হারানোর ভয় থাকে৷
ছবি: goodluz - Fotolia
যে কষ্ট তারা বোঝাতে পারে না
যে কোনো সন্তানের কাছে মা-বাবাই তার সবচেয়ে কাছের, ভালোবাসার মানুষ৷ আর তাদের মধ্যেই যখন বোঝাপড়া না হয়, তখন শিশুরা হয়ে পড়ে অসহায়৷ যা থেকে অনেক শিশু বা কিশোর-কিশোরী প্রচণ্ড আঘাত পায় আর সেই আঘাতের ক্ষত হয়তো তাকে সারা জীবনই কষ্ট দেয়৷ এমনটাই মনে করেন মিউনিখের মনোচিকিৎসক বেনেডিক্ট ক্লাউকে৷
ছবি: Fotolia/Kitty
‘আমাকে কেউ ভালোবাসে না, আমি মূল্যহীন’
মা-বাবার ছাড়াছাড়ির মনোকষ্টের কথা শিশুরা সহজে বোঝাতে পারে না৷ তাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মাথা ব্যথা, পেট ব্যথা, পড়াশোনায় মনোযোগ না থাকা বা অকারণে হঠাৎ করে রেগে যাওয়া – এ সবের মধ্য দিয়েই শিশুদের কষ্টের প্রকাশ ঘটে৷ ওদের তখন মনে হয়, ‘‘আমার কেউ নেই৷ আমাকে কেউ ভালোবাসে না৷ আমি মূল্যহীন৷’’ ওরা ভাবে, ওদের যদি কেউ ভালোবাসে, তাহলে ভালোবাসার দু’জন মানুষের মধ্যে একজন তাকে ছেড়ে যাবে কেন?
ছবি: picture-alliance/dpa
দীর্ঘস্থায়ী বিষণ্ণতা
ডিভোর্স বা ছাড়াছাড়ি যেমন মা-বাবার জন্য একটি চ্যালেঞ্জ, তেমনি সন্তানের জন্যও৷ সমীক্ষায় জানা গেছে, পরিবারকে নতুন পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে মা এবং বাবাকেই বড় ভূমিকা নিতে হবে৷ সন্তানের সাথে কথা বলার জন্য যে কোনো পরিস্থিতেই পিতা-মাতাকে প্রস্তুত থাকতে হবে৷ তাছাড়া সন্তানের কাছে একে অপরকে দোষারোপ করাও উচিত নয়, কারণ, এই জটিল ব্যাপারে বাবা বা মায়ের পক্ষ নিতে গিয়ে সন্তানকে যেন বিচারকের ভূমিকা না নিতে হয়৷
মা-বাবা যা করবেন
যেসব দম্পতির ছাড়াছাড়ি হয়েছে তাঁদের প্রতি বেনেডিক্ট ক্লাউকের পরামর্শ, ‘‘সন্তান যার কাছেই থাকুক না কেন, ওকে এমন একটা অনুভূতি বা ধারণা দিন যেন ও মনে করে, আপনারা আলাদা থাকলেও ওকে দু’জনই সমান ভালোবাসেন, কারণ, শিশুর জন্য মানবিক সম্পর্কের জায়গাগুলো বেশ জটিল৷ তাই যতটা সম্ভব ওর সাথে সময় কাটান৷ ‘তোমাকে ভালোবাসি’ বলতে ভুলবেন না৷ জানিয়ে দিন, ওর যে কোনো সমস্যায় আপনারা ওর সাথে আছেন এবং থাকবেন৷’’
ছবি: picture-alliance/dpa
5 ছবি1 | 5
আর্থিক চাপ কমানোর একটি উপায় হতে পারে বিবাহবিচ্ছেদের পর আলাদাভাবে বসবাসকারী অভিভাবকদের উপর থেকে কর কমানো৷ তিনি বলেন, ‘‘হঠাৎ করে তাঁদের দু'টি বাড়ির খরচ জোগান দিতে হয় কিংবা বিচ্ছেদের ফলে তাঁদের ভ্রমণের খরচ বেড়ে যায়৷ সংঘাতমূলক পরিস্থিতিতে এই চাপ জটিলতা আরো বাড়ায়৷''
যখন দু'জন অভিভাবক আলাদা হয়ে যান কিংবা বিবাহবিচ্ছেদ ঘটান, তখন অধিকাংশক্ষেত্রে তাঁদের করসীমা আলাদা হয়ে যায়৷ সেক্ষেত্রে শুধুমাত্র একজন অভিভাবক বাড়তি সুবিধা পান৷
গতশতকের পঞ্চাশের দশকে করা আইনে মূলত একক পিতা বা একক মাতা, যার সঙ্গে সন্তান মূলত থাকবে, তাঁর ক্ষেত্রে কর কমানোর বিষয়টি রয়েছে৷
বিচ্ছেদের পর সাধারণত বিচ্ছিন্ন দম্পতির সন্তান যে কোনো একজন অভিভাবকের বাড়িতে নথিভুক্ত থাকে৷ সেই অভিভাবক সন্তানের সঙ্গে বেশি সময় কাটান এবং সন্তানের মূলরক্ষক হিসেবে বিবেচিত হন৷ অন্য অভিভাবকের তখন সন্তান যাঁর সঙ্গে থাকে, তাঁকে সন্তানের রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ খরচ দিতে হয়৷ এক্ষেত্রে দ্বিতীয় অভিভাবক সন্তানকে মাসে কতদিন নিজের কাছে নিয়ে রাখছেন কিংবা সন্তানের সঙ্গে কতটা সময় কাটাচ্ছেন, তা বিবেচনা করা হয় না৷
ফলে যেসব অভিভাবক সহ-অংশীদারের ভিত্তিতে সন্তান লালনপালনের সিদ্ধান্ত নেন, তাঁদের ক্ষেত্রে বিষয়টি সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়৷
জার্মানির পরিবারমন্ত্রী ফ্রান্সিসকা গিফে রবিবার বিচ্ছেদের পর বাবাদের আরো সুরক্ষা দেয়ার কথা বলেছেন৷ তিনি শিশুদের রক্ষণাবেক্ষণ সংক্রান্ত আইনে পরিবর্তন আনার আশা করছেন, কেননা যেসময় এই আইন তৈরি হয়েছিল তা সন্তানের দেখাশোনার বর্তমানের চর্চার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়৷
ডিভোর্স – কেন? বিয়ে টিকিয়ে রাখার উপায়ই বা কী?
অনেকের কাছে ‘বিয়ের’ দিনটি জীবনের সবচেয়ে সুন্দর ও স্মরণীয় দিন হলেও ডিভোর্সের হার দিনদিন বেড়ে চলেছে, প্রায় সর্বত্রই৷ কিন্তু কী কারণে? ডিভোর্সের হার কমানোর কোনো উপায় আছে কি?
ছবি: Fotolia/Jens Klingebiel
ডিভোর্সের কারণ
সুখে, দুঃখে সারাজীবন একে-অপরের সঙ্গী থাকা – সেকথা ভেবেই তো বিয়ে! কিন্তু বিয়ের পর যতদিন যায়, বেরিয়ে আসে দু’জনের মধ্যকার নানা অমিল৷ এগুলোই এক সময় ডিভোর্সের কারণ হয়ে দাঁড়ায়৷ ‘কমিউনিকেশন গ্যাপ’ বা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বোঝাবুঝির অভাব, পরকীয়া প্রেম, অতৃপ্ত যৌনজীবন, নির্যাতন, অহংকার, সন্তান মানুষ করা নিয়ে মতভেদ, সংসারের কাজে অনীহা ইত্যাদি কারণে তালাক হয় জার্মানিতে৷
ছবি: Fotolia/Marco Scisetti
কমিউনিকেশন গ্যাপ
২০১৪ সালে জার্মানিতে ১ লাখ ৬৬ হাজারের বেশি ডিভোর্স হয়েছে৷ ডিভোর্সের কারণগুলোর মধ্যে প্রথমেই রাখা হয়েছে ‘কমিউনিকেশন গ্যাপ’, অর্থাৎ বিবাহের বন্ধনকে বন্ধুত্বপূর্ণ ও ঘনিষ্ঠ করতে যতটা কথাবার্তা ও আবেগ অনুভূতি বা ভালোবাসার প্রকাশ বা আলোচনা দরকার, তা না হওয়াকে৷ এর ফলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়, দূরত্ব বাড়ে৷
ছবি: picture-alliance/dpa
পরকীয়া প্রেম
দাম্পত্যজীবনের প্রথম শর্তই হলো ‘বিশ্বাস’ আর সেটা যদি না থাকে তাহলে অবশ্যই তা তালাকের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে৷ দাম্পত্যজীবনকে ছেলেখেলা ভেবে অনেকেই অন্য নারী বা পুরুষের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে যায় কিংবা পুরনো প্রেমের সম্পর্ককে আবার জিইয়ে তোলে৷ এমনটা হলে স্বাভাবিকভাবেই অপরজনের পক্ষে তা মনে নেওয়া সম্ভব হয় না, ফলে বিয়েটা ডিভোর্সে গিয়ে শেষ হয়৷
ছবি: picture-alliance /dpa/Armin Weigel
যৌনজীবন অতৃপ্ত হলে
শারীরিক ভালোবাসা বা যৌনসুখের দাম্পত্যজীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে৷ এই সুখের কমতি বা ভাটা পড়লে অনেকক্ষেত্রেই দেখা দেয় সমস্যা৷ আমাদের দেশে দম্পতিদের শোবার ঘরের এই সমস্যার কথা নিয়ে বাইরে আলোচনা করা না হলেও, জার্মানি বা পশ্চিমা বিশ্বে সরাসরি তা আলোচনায় আসে৷ অতৃপ্ত যৌনসুখের কারণে অনেক সংসারই ভেঙে যায় জার্মানিতে৷
ছবি: Fotolia/drubig-photo
কাজ ভাগাভাগি না করা
চাকরি বা নিজস্ব একটা পেশা এখানে স্বামী-স্ত্রী দু’জনেরই রয়েছে৷ পাশাপাশি বাজার, রান্না, ঘরদোর পরিষ্কার, বাগান করা, আতিথেয়তা, সন্তানদের দেখাশোনা – সংসারের কাজ তো আর কম নয়! এ সব কাজ দু’জনে মিলেমিশে করলে যত সহজে করা সম্ভব, একজনের পক্ষে তা সম্ভব নয়৷ যদি এ সব কাজ শুধুমাত্র একজনকে করতে হয়, তাহলেই দেখা দেয় সমস্যা৷ অর্থাৎ এটাও বিবাহবিচ্ছেদের একটা কারণ৷
ছবি: Konstantin Yuganov - Fotolia.com
আমিই সব
অনেক স্বামী বা স্ত্রী নিজের মতামত বা ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিয়ে তাঁর হবি, আনন্দ, সুখের জন্য যা যা দরকার সবই করেন৷ কিন্তু উল্টোদিকে তাঁর সঙ্গীর সখ বা ইচ্ছার কোনো মূল্যই দিতে চান না৷ ফলে অন্যজনের পক্ষে এই স্বার্থপরতা বা একগুঁয়েভাব বেশি দিন সহ্য করা সম্ভব হয় না৷ ফলাফল – ডিভোর্স! অর্থাৎ একে-অপরের প্রতি শ্রদ্ধবোধ না থাকলে সম্পর্ক বেশি দিন টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়!
তালাকের কারণ টাকা
সংসারে প্রয়োজনীয় টাকা অভাবে যেমন তালাক হয়, আবার প্রচুর টাকা থাকলেও বিবাহবিচ্ছেদ হতে পারে৷ দু’টি স্বতন্ত্র মানুষের আলাদা জগত থাকতে পারে, কিন্তু সেই জগত দু’টির একটা মেলবন্ধন জরুরি৷ অতিরিক্ত অর্থ অনেকসময় এটা হতে দেয় না৷ কারণ অতিরিক্ত টাকা-পয়সা কিভাবে সংসার, সন্তান বা অন্য কিছুতে খরচ করা হবে, তা নিয়েও শুরু হতে পারে ঝগড়া৷
ছবি: picture alliance/blickwinkel/McPHOTO
‘ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স’
বাড়িতে শারীরিক অথবা মানসিক নির্যাতন করাকে ‘ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স’ বলা হয়৷ মানসিক নির্যাতন সেভাবে প্রমাণ করা না গেলেও, শারীরিক নির্যাতন তার প্রমাণ রেখে যায়৷ এই নির্যাতনের স্বীকার হয় সাধারণত নারীরাই৷ এই যন্ত্রণা ও অত্যাচার বেশি দিন সহ্য করা সম্ভব হয় না৷ তাই এ থেকে মুক্তি পেতে অনেকেই ডিভোর্সের আবেদন করে থাকেন জার্মানিতে৷
ছবি: Fotolia/detailblick
বাংলাদেশে ডিভোর্সের কারণ
২০১৪ সালে শুধুমাত্র ঢাকার দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনেই ডিভোর্সের সংখ্যা ছিল ৫,৪১৮টি৷ বাংলাদেশে ডিভোর্সের হার দ্রুতগতিতে বাড়ার অন্যান্য কারণের পাশাপাশি জি বাংলা, স্টার প্লাসের মতো টিভি চ্যানেল, অতি আধুনিকতা, সোশ্যাল মিডিয়া এবং বিদেশি সংস্কৃতির প্রভাবকে দায়ী করছেন ডয়চে ভেলের ফেসবুক বন্ধু মোহাম্মদ নূরসহ বেশ কয়েকজন৷
সন্তান না হওয়া, বড় কোনো অসুখ, যৌন সমস্যা, অন্য দেশে থাকতে চাওয়ার মতো বিশেষ কারণ হলে হয়ত বিবাহবিচ্ছেদ রোধ করা সম্ভব নয়৷ তবে বিবাহবিচ্ছেদের কারণ যদি, ভালোবাসা, আবেগ, ভুল বোঝাবুঝি, সন্তান মানুষ করা ইত্যাদি কারণ হয়, তাহলে দু’জন কিছুটা সচেতন ও আগ্রহী হলে বিবাহবিচ্ছেদ আটকানো যেতে পারে৷
ছবি: picture alliance / Markus C. Hurek
সংসার টিকিয়ে রাখতে ভালোবাসার যত্ন
একে-অপরকে নিয়ে খানিকটা ভাবুন, কাজের স্বীকৃতি দিন, সমালোচনা না করে মাঝে-মধ্যে একে-অপরের প্রশংসা করুন, কাজ ভাগাভাগি করে নিন৷ সবচেয়ে বড় কথা দু’জনে মিলে সব কিছু প্ল্যান করুন, আলোচনা করুন আর সে আলোচনায় মাঝে মাঝে সন্তানদেরও সাথে নিন৷ ভালোবাসা গাছের মতো৷ যত্নে ভালোবাসায় তা ফুলে-ফলে ভরে উঠবে৷
ছবি: picture alliance/blickwinkel/G. Fischer
ঝগড়া এড়িয়ে চলুন
ডেনমার্কের কোপেনহাগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে বের করেছেন, যাঁরা খুব বেশি ঝগড়া করেন, তাঁদের অকালমৃত্যুর ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় দুই থেকে তিনগুণ বেশি৷ ঝগড়া অবশ্য শুধু ডিভোর্সের কারণই হয় না, মৃত্যুকেও এগিয়ে আনে৷ আর সন্তানের সামনে তো ঝগড়া নয়ই৷ এতে সন্তানের মধ্যে যেমন মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে, তেমনই কমে যেতে পারে মা-বাবার প্রতি শ্রদ্ধাবোধও৷
ছবি: goodluz - Fotolia
প্রয়োজনে ক্ষমা চেয়ে নিন
ভুল মানুষ করতেই পারে৷ তাই স্বামী বা স্ত্রী যদি কোনো ভুল বা অন্যায় করে থাকে, তাহলে সেটা একে-অপরকে জানিয়ে ক্ষমা চেয়ে নিন৷ দু’জনে দু’জনের প্রতি বিশ্বাস রাখুন৷ অর্থাৎ স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কোনোরকম গোপনীয়তা যেন না থাকে৷ তবে তার মানে অন্যের ওপর নজর রাখা কিন্তু একেবারেই নয়৷ অন্যের স্বাধীনতাকে মর্যাদা দিন৷ ভুলে যাবেন না যে, বিশ্বাসই দাম্পত্যজীবনের মূল ‘চাবিকাঠি’৷
ছবি: Colourbox/Kzenon
13 ছবি1 | 13
তিনি বলেন, ‘‘এখন বাবাদের মধ্যে সন্তানের দায়িত্ব নেয়ার চর্চা ক্রমশ বাড়ছে৷ তাঁরা পিতৃত্বকালীন ছুটি নিতে চাচ্ছেন এবং (সন্তান লালনপালনে) অংশীদার হতে চাচ্ছেন৷ বিচ্ছেদের মাধ্যমে এই আগ্রহ সাধারণত শেষ হয়ে যায় না৷''
সমকামী যুগলের আরো অধিকার
সন্তান জন্মদানের পর বিপরীতকামী যুগল যে আইনি মর্যাদা পান, সমকামী যুগলকেও সেই একই মর্যাদা দিতে চান বার্লে৷ তিনি জানিয়েছেন যে তাঁর প্রস্তাবিত অভিভাবকত্ব অধিকার আইন শুধুমাত্র সমকামী যুগলই নয়, বিচ্ছেদের শিকার অভিভাবক, এমনকি যেসব নারী নানা জটিলতার কারণে স্পার্ম ডোনারের মাধ্যমে গর্ভধারণ করেছেন, তাঁদের অধিকারও নিশ্চিত করবে৷
বর্তমান অভিভাবকত্ব অধিকার আইন অনুযায়ী, জার্মানিতে জন্ম নেয়া শিশুদের জন্ম-সনদ প্রদানের সময় তাঁদের ‘‘বাবা'' এবং ‘‘মা'' আছে বলে বিবেচনা করা হয়৷ এক্ষেত্রে ‘‘বাবা'' হচ্ছেন সেই ব্যক্তি যিনি সন্তান জন্ম দেয়া মায়ের স্বামী৷ এমনকি পিতৃত্ব পরীক্ষার ফলাফল ভিন্ন হলেও কিংবা সন্তান জন্ম দেয়া নারীর স্বামী একজন নারী হলেও এটা প্রযোজ্য৷