পরিসংখ্যান থেকে স্পষ্ট যে বিবাহবিচ্ছেদ বাড়ছে এবং সেই হার ক্রমবর্ধমান৷ ২০০৫ সালে ঢাকায় যখন একটি সিটি কর্পোরেশন ছিল, তখন বিবাহবিচ্ছেদ হয় প্রায় পাঁচ হাজার৷ আর ২০১৪ সালে শুধু ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনেই এ সংখ্যা ৫,৪১৮টি৷
বিজ্ঞাপন
মিরপুরের নিকাহ রেজিস্ট্রার বা কাজি মো. আমির হোসেন ১১ বছর ধরে বিয়ে এবং তালাক রেজিস্ট্রির কাজ করছেন৷ তিনি ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমার অভিজ্ঞতা বলছে যে, বিয়ে বিচ্ছেদের হার প্রতি বছরই বাড়ছে৷ আর এই বিচ্ছেদের আবেদনের ৭০ ভাগই আসে নারীদের কাছ থেকে৷''
তিনি আরো বলেন, ‘‘একপাক্ষিক তালাকের আবেদনই বেশি৷ তবে সমঝোতার ভিত্তিতেও সম্পর্ক শেষ করছেন কোনো কোনো দম্পতি৷ এছাড়া পরে সালিশে কিছু সংসার টিকলেও, তার সংখ্যা নগন্য৷''
বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী, কাজি অফিসে তালাকের আবেদনের মধ্য দিয়ে এর প্রক্রিয়া শুরু হয়৷ এরপর সিটি কর্পোরেশন তিনমাস সময় দেয় উভয় পক্ষকে সমঝোতার জন্য৷ যদি সমঝোতা না হয়, তাহলে তালাকের আবেদনের দিন থেকেই তা কার্যকর হয়৷
ভালোবাসার যত্ন
‘ভালোবাসা’-র মানুষকে কাছে পাওয়ার জন্য প্রথমদিকে যেমন আবেগ, উৎসাহ আর আগ্রহ থাকে, ধীরে ধীরে তেমনই তা ম্লান হয়ে যায় যা খুবই স্বাভাবিক৷ তারপরও কীভাবে সম্পর্ককে মধুর, আনন্দময় রাখা যায় – সে বিষয়ে এই ছবিঘরে পাবেন কিছু ‘টিপস’৷
ছবি: Highlight
মিলেমিশে কাজ করা
প্রায়ই দেখা যায় স্বামী-স্ত্রী দু’জনে একসাথে বাইরে থেকে ফিরলেন৷ কিন্তু খাবার তৈরি বা সংসারের অন্য কাজে লেগে গেলেন স্ত্রী৷ আর স্বামী টিভি চালিয়ে বসলেন সোফায়৷ এমনটা না করে বরং সংসারের কাজকর্ম দু’জনে মিলেমিশে শেষ করে, পরে একসাথে দু’জন মিলে টিভি দেখুন বা গল্প করুন৷ সারাদিন কে কী করলেন একে অপরেকে জানান৷
ছবি: Fotolia/Yuri Arcurs
ক্রুটি বড় করে না দেখা
একসাথে থাকতে গেলে অনেক সময় ছোটখাটো অভ্যাসগুলো অসুবিধার কারণ হয়ে দাঁড়ায়৷ একজন হয়ত সব সময় মোজা খুলে বিছানায় রেখে দেন৷ অপরজন চুথপেস্টের ঢাকনা লাগাতে যান ভুলে৷ অনেক পরিবারে এ সব ছোটখানো বিষয় নিয়ে অযথা ঝগড়া শুরু হয়৷ তাই এই সব বিষয়গুলো এড়িয়ে চললে জীবন কিন্তু অনেক মধুর হতে পারে৷
ছবি: Fotolia/dkimages
স্বীকৃতি
সব মানুষই মাঝে মাঝে তাঁর কাজের স্বীকৃতি চায়, এমনকি সংসারের কাজের ক্ষেত্রেও৷ তাই মাঝে মধ্যে একে অপরকে সে কথা জানান৷ আরো রোম্যান্টিক হয়, যদি কথাটা জানানো যায় ছোট্ট একটি ‘নোট’ লিখে অথবা এসএমএস-এর মারফত৷ দেখবেন পরের দিন কাজের আগ্রহ তো বাড়বেই, তার সঙ্গে আপন মানুষটিকে মনে হবে আরো কাছের৷
ছবি: Fotolia/mars
প্রশংসা
অনেকদিন একসাথে থাকার ফলে সব কিছুই কেমন যেন সাধারণ ব্যাপার হয়ে যায়৷ তাই বিশেষজ্ঞরা বলেন, নতুন পোশাক বা হেয়ার স্টাইলে আপনার সঙ্গিকে সুন্দর লাগছে – এ কথা বলতে একদম সংকোচ করবেন না৷ আসলে এমন ছোটখাটো প্রশংসার ‘এফেক্ট’ কিন্তু অনেক বড় হয়৷ অর্থাৎ ‘প্রশংসা ছোট তবে তার এফেক্ট বড়’৷
ছবি: Fotolia/Subbotina Anna
ভালোবাসার স্পর্শ
ভালোবাসা গাছের মতো, যত যত্ন করা যাবে ততই বাড়বে৷ ভালোবাসার স্পর্শে ডালপালা ফলে-ফুলে ভরে যায়, আর অযত্নে যায় শুকিয়ে৷ অনেক দম্পতি মনে করেন, ‘ভালোই তো আছি, আবার ভালোবাসা দেখাতে হবে কেন? অথচ ভালোবাসা দেখালে দাম্পত্য জীবন হতে পারে মধুময়৷ ঠিক গাছের মতোই যত্ন নিন৷ হঠাৎ করেই ফুল বা ছোটখাটো উপহার দিয়ে আপনার প্রিয়া বা প্রিয়তমকে দিন চমকে!
ছবি: Nelson Almeida/AFP/Getty Images
‘হবি’ বা সখ
মাঝে মাঝে কখনো নিজেরা একসাথে এমন কিছু করুন, যাতে অন্য ধরণের গল্প বা আলোচনা হতে পারে৷ একসাথে সাইকেল চালাতে বা হাঁটতে যেতে পারেন৷ খোলা আকাশের নীচে প্রাণ খুলে হাসুন বা কথা বলুন৷ একে অপরের সাথে সব কিছু ভাগাভাগি করার নামই যে বন্ধুত্ব, আর সেটাই তো দীর্ঘ ও সুখি দাম্পত্যের আসল কথা৷
ছবি: Foto: Ahrtal-Tourismus Bad Neuenahr-Ahrweiler e.V.
রাগ পুষে রাখতে নেই
রাগ, অভিমান ছাড়া কি দাম্পত্য জীবন মধুর হয়? রাগ, দুঃখ, অভিমান তো থাকবেই৷ কিন্তু তাই বলে রাগ যেন বেশিক্ষণ না থাকে৷ দিনের শেষে রাগ ভুলে অপরের কাছে এগিযে যান৷ রাগ বা মান ভাঙানোর উত্তম সময় সেটা৷ তা না হলে দু’জনকেই হয়ত না ঘুমিয়ে সারাটা রাত কাটাতে হবে, যার প্রভাব পড়বে পরবর্তীতেও৷
ছবি: Fotolia/drubig-photo
কিছুটা দূরত্ব
মাঝে মধ্যে দাম্পত্য জীবনের সব কিছুই একঘেয়েমি মনে হতে পারে৷ তাই স্বামী তাঁর সহকর্মী বা পুরনো বন্ধুদের সাথে কখনো আড্ডায় যেতে পারেন৷ স্ত্রী তাঁর ছেলেবেলার বন্ধু-বান্ধবী বা কাছের কোনো মানুষের সাথে শপিং বা সিনেমা দেখতে যেতে পারেন৷ এতে নিজেদের অনেকটা হালকা মনে হবে৷ মাঝে মাঝে একটু দূরত্ব কিন্তু স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে একে-অপরকে কাছে পাওয়ার আনন্দ বাড়িয়ে দেয়৷
ছবি: picture-alliance/dpa/I. Wagner
বিবাহিত জীবনের জন্য পুরস্কার
দীর্ঘ বিবাহিত জীবনের জন্য বেশ কয়েকটি দেশে পুরস্কার দেওয়ার রীতি রয়েছে৷ পোল্যান্ডের কোনো দম্পতির ৫০ বছর পূর্ণ হলে তাঁদের প্রেসিডেন্ট পদক দেওয়া হয়৷ অ্যামেরিকায় ৫০ বছর হলে হোয়াইট হাউস থেকে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠানো হয়৷ আর ইংল্যান্ডে ৬০ বছরের বিবাহবার্ষিকী পালন করা কোনো দম্পতিকে রানির কাছ থেকে বার্তা পাঠানো হয়৷
ছবি: Fotolia/contrastwerkstatt
ঝগড়া এড়িয়ে চলুন!
ঝগড়া অকালমৃত্যুর কারণ হতে পারে৷ ডেনমার্কের কোপেনহাগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে বের করেছেন যে, যাঁরা খুব বেশি ঝগড়া করেন তাঁদের অকালমৃত্যুর ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় দুই থেকে তিনগুণ বেশি৷ কাজেই ঝগড়া এড়িয়ে চলুন!
ছবি: goodluz - Fotolia
গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা পরে
খাওয়ার আগে কখনো কোনো গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় যাবেন না৷ পারলে মিষ্টি কিছু খেয়ে নেবেন৷ কারণ ওহাইয়ো স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞনীরা গবেষণা করে দেখেছেন যে, শরীরে শর্করার পরিমাণ কম হলে একে-অপরের প্রতি রাগ, ক্রোধ কেমন যেন আক্রমণাত্বক হয়ে ওঠে৷ বলা বাহুল্য, গ্লুকোজ বা শর্করা মানুষের শরীরে জ্বালানির মতো কাজ করে৷
ছবি: Highlight
11 ছবি1 | 11
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের হিসাব অনুযায়ী, গত পাঁচ বছরে এই এলাকায় ১৭ হাজার ৩৮৮টি তালাক কার্যকর হয়েছে৷ দুই সিটি কর্পোরেশন মিলে তা কমপক্ষে ৩৫ হাজার৷ আর এই পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করেও দেখা যায় যে, তালাকের আবেদনকারীদের মধ্যে ৭০ থেকে ৮০ ভাগই নারী৷
নিকাহ রেজিস্ট্রার মো. আমির হোসেন বলেন, ‘‘তালাকের আবেদনে সাধারণত মূল কারণ উল্লেখ করা হয় না৷ আইনি জটিলাতা এড়াতে কারণ হিসেবে ‘বনিবনা না হওয়ার' কথা বলা হয়৷ তবে আসল কারণ আরো গভীর৷''
রাজধানী ঢাকার এই চিত্র কি সারা দেশের? গত সাড়ে পাঁচ বছরে খুলনাতে ৬ ,৫৪৭টি বিবাহবিচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে৷ খুলনা সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ২০১০ সালে ৯৪৬টি, ২০১১ সালে ১ হাজার ৭৪টি, ২০১২ সালে ১ হাজার ১৮১টি, ২০১৩ সালে ১ হাজার ২৫৪টি, ২০১৪ সালে ১ হাজার ৪১৯টি এবং ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত ৬৭৩টি বিয়ে বিচ্ছেদের ঘটনা ঘটে৷
বিচ্ছেদের কারণ হিসেবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, যৌতুক, মনোমালিন্য, পারস্পরিক আস্থা ও নির্ভরশীলতার অভাব, ফেসবুক ও মোবাইল ফোনে অযাচিত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়া, মাদকাসক্তি, বাড়তি অর্থনৈতিক চাহিদা ইত্যাদি উঠে এসেছে৷ এখানেও বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন নারীরাই বেশি করেছেন৷
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিউটের অধ্যাপক ড. তাজুল ইসলাম ডয়চে ভেলেকে জানান, ‘‘বিবাহবিচ্ছেদের মূল কারণ পারস্পরিক আস্থা আর নির্ভরতার সংকট৷ আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তি এবং সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম এই সংকটকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে৷'' তাঁর কথায়, ‘‘এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরো নানা উপাদান৷''
স্বামী পাচ্ছেন না? কিনে নিন!
বিয়ে রসিকতার ব্যাপার নয়৷ কিন্তু সুজানে হাইনৎস এমন বিষয় নিয়ে রসিকতাই করে চলেছেন৷ বিয়ে বিয়ে খেলার একটা প্রকল্পের কাজ শুরু করে দেখছেন এই পৃথিবীতে তাঁর অনেক সমব্যথী৷ ছবিঘরে থাকছে এই নিয়েই মজার এক গল্প৷
ছবি: Suzanne Heintz
যেন এক আদর্শ পরিবার
এক সময় সবাইকেই একটা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় – ‘বিয়ে কবে করছো?’ এ প্রশ্ন যে কত অস্বস্তিকর, যাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয় তাঁর মনে প্রশ্নটি যে কত চাপ তৈরি করে, তা কেউ ভাবেনই না৷ এ চাপ থেকে মুক্তি পেতে ফটোগ্রাফার সুজানে হাইনৎস কাপড়ের দোকানের পোশাক পরানো কিছু মূর্তি, অর্থাৎ ম্যানেকুইন্স দিয়ে সাজিয়েছেন নিজের পরিবার৷ স্বামী চঙ্কি, মেয়ে মেরি মার্গারেটের সঙ্গে তাঁর ছবিটি দেখুন৷ যেন সুখী পরিবার, তাই না!
ছবি: Suzanne Heintz
ছবি দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো
এভাবে নকল পরিবার সাজিয়ে, ছবি তুলে, সেই ছবি দিয়ে বানানো কার্ডের মাধ্যমে প্রিয়জনদের বিশেষ বিশেষ দিনে শুভেচ্ছা জানিয়ে রীতিমতো সাড়া জাগিয়েছেন সুজানে হাইনৎস৷ এভাবে বিয়ে নিয়ে সবার সঙ্গে মজা করার প্রকল্পটির নাম দিয়েছেন ‘প্লেয়িং হাউস প্রজেক্ট : লাইফ ওয়ান্স রিমুভড’৷
ছবি: Suzanne Heintz
সপরিবারে প্যারিস সফর
চঙ্কি আর মার্গারেটকে কিনে এনে নিজের পরিবার গড়েছিলেন সুজানে৷ এক সময় মনে হলো, পরিবার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে বেড়াতে যাওয়া দরকার৷ প্রথম সফরটা হলো প্যারিসে৷ সেখানে আইফেল টাওয়ার থেকে শুরু করে যত দর্শনীয় স্থান আছে সব জায়গায় গিয়েছেন সুজানে৷ চঙ্কি আর মার্গারেটের সঙ্গে এমন সব ছবি তুলেছেন, যেন তাঁরা সত্যি সত্যিই সুখী পরিবার৷ এই ছবিটি তোলা হয়েছিল নোত্র দাম-এর সামনে৷
ছবি: Suzanne Heintz
বংশীবাদক
প্যারিস সফরটা ছিল দারুণ৷ অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে সুজানে বললেন, ‘‘আমি ছিলাম প্যারিসের বংশীবাদক৷’’ তাঁর পেছনে শত শত কৌতূহলী মানুষের ভিড় জমেছিল – এটা বোঝাতেই এমন বলা৷ ‘প্লেয়িং হাউস প্রজেক্ট: লাইফ ওয়ান্স রিমুভড’ প্রকল্পটি ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে৷ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ বিয়ে নিয়ে নিজেদের অভিজ্ঞতা সুজানেকে জানাচ্ছেন তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে৷
ছবি: Suzanne Heintz
পুরুষদেরও একই হাল
সুজানে হাইনৎস বললেন, ‘‘‘প্লেয়িং হাউস’ শুধু মেয়েদের জন্য নয়৷’’ বিয়ে হচ্ছেনা কেন, কবে হবে – এ সব প্রশ্ন একটা সময় পুরুষদেরও শুনতে হয়৷ তাই এখন পুরুষরাও সুজানেকে জানাচ্ছেন তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা৷
ছবি: Suzanne Heintz
এবার চলচ্চিত্র নির্মাণ
ঘুরে ঘুরে ছবি তুলে আনন্দ দেয়া-নেয়ার মধ্যেই আর বিষয়টিকে সীমাবদ্ধ রাখছেন না সুজানে হাইনৎস৷ ভাবছেন, একটা চলচ্চিত্র নির্মাণ করবেন৷ ছবিতে থাকবে তিনটি পর্ব৷ প্রথম পর্বে প্যারিস সফরের মজার সব অভিজ্ঞতা, দ্বিতীয় পর্বে উঠে আসবে বিয়ে সম্পর্কে তাঁর পরিবর্তিত ভাবনা আর শেষে থাকবে বিয়ে নিয়ে স্কুলপড়ুয়া শিশুদের মনের কথা৷ এমন ছবি কে না দেখতে চাইবে, বলুন?
ছবি: Suzanne Heintz
6 ছবি1 | 6
নারীরা কেন বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন বেশি করছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘নারীর এখন আর আগের মতো মুখ বুজে সব কিছু মেনে নিচ্ছেন না৷ তাঁরা শিক্ষা এবং অর্থনৈতিকভাবে সংহত হচ্ছেন৷ ফলে সঙ্গির অন্যায় আচরণ এবং দাবি তাঁরা এখন আর মেনে নিচ্ছে না৷ নির্যাতন গোপন করে সংসারে মুখ বুজে পড়ে থাকছেন না৷ বলা বাহুল্য, নারীরাই এই সমাজে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত৷ ফলে তাঁদের পক্ষ থেকেই আবেদন বেশি আসছে৷''
তিনি অবশ্য এ কথাও বলেন যে, ‘‘এর বাইরে নারী-পুরুষ উভয়েরই একমুখী সম্পর্কের অনিহা, নগরায়ন, বহুমাত্রিক সম্পর্ক থেকেও সংসার ভাঙছে৷ সংসার ভাঙছে আর্থিক কারণেও৷''
তিনি বলেন, ‘‘যে সব দম্পতির সন্তান আছে তাঁদের সংসার ভাঙলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন সন্তানরা৷ তাদের জীবনের স্বাভাবিকতা অনেক সময়ই নষ্ট হয়ে যায়৷''
কাজি মো. আমির হোসেন তাঁর একটি অভিজ্ঞতার কথা জানান৷ তিনি বলেন, ‘‘একটি ঘটনা আমার খুব মনে পড়ে৷ স্বামী-স্ত্রীর সমঝোতার মাধ্যমেই তালাক হয়৷ তাঁদের দু'টি শিশু সন্তানও ছিল৷ একটির বয়স আট এবং আরেকটির বয়স ছয় বছর৷ তারাও বাবা-ময়ের সঙ্গে সেদিন এসেছিল কাজি অফিসে৷ শিশু দু'টি বাবা-মাকে জড়িয়ে আমার সামনে অনেক কেঁদেছে৷ কিন্তু তারপরও তারা পারেনি তাদের বাবা-মাকে এক রাখতে৷ ওই দম্পতি সেষ পর্যন্ত তালাকের কাগজে সই করেন৷ শিশু দু'টির কথা আমার এখনো মনে পড়ে৷ জানি না তারা কেমন আছে৷''
অধ্যাপক তাজুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমাদের এখন অনেক কিছু মানতে হবে, বুঝতে হবে৷ অশান্তিই যদি সম্পর্কের মূল সুর হয়, সেই সম্পর্ক দীর্ঘায়িত না করাই ভালো৷''
বন্ধু, আপনি কি বিবাহবিচ্ছেদ সমর্থন করেন? জানান আপনার মতামত, নীচের ঘরে৷