1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

বিমস্টেক শীর্ষ সম্মেলনে মনমোহন সিং-হাসিনা বৈঠক

অনিল চট্টোপাধ্যায়, নতুন দিল্লি৪ মার্চ ২০১৪

বিমস্টেক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং এখন মিয়ানমারে৷ ‘‘পুবে-তাকাও’’ নীতিকে জোরালোভাবে তুলে ধরতে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলির সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেবেন তিনি৷

Manmohan Singh Indien Ministerpräsident und Sheikh Hasina
(ফাইল ফটো)ছবি: AP

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ড. মনমোহন সিং সম্ভবত তাঁর শেষ বিদেশ সফরে মিয়ানমারের রাজধানিতে গেছেন দু'দিনের অষ্টম বিমস্টেক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে৷ বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তি সাতটি দেশ ভারত, বাংলাদেশ, ভুটান, মিয়ানমার, নেপাল, থাইল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কাকে নিয়ে গঠিত বিমস্টেক, অর্থাৎ বহু-ক্ষেত্রীয় কারিগরি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংক্রান্ত বঙ্গোপসাগরীয় দেশগোষ্ঠীর এই সংস্থায় ভারতের ভূমিকা চলতি পররাষ্ট্রনীতির ‘‘পুবে-তাকাও'' নীতির এক স্তম্ভ৷

সম্মেলনে ভারতের এই নীতিকে জোরালোভাবে তুলে ধরবেন তিনি৷ জোর দেবেন ঐ সাতটি দেশের লাগোয়া ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলির অর্থনৈতিক বিকাশে পরিবহন, ব্যবসা-বাণিজ্য, পর্যটন ও আঞ্চলিক নিরাপত্তার ওপর৷ ঐ সব দেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক নতুন করে ঝালিয়ে নেবার সুযোগকেও কাজে লাগাবেন প্রধানমন্ত্রী ড. সিং, এমনটাই মনে করছেন পর্যবেক্ষক মহল৷

ছবি: Reuters

এছাড়া শীর্ষ সম্মেলনের পার্শ্ব বৈঠকে তিনি মিলিত হবেন যোগদানকারি দেশগুলির সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে৷ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও সম্ভবত এটাই তাঁর শেষ বৈঠক৷ তাই সেখানে স্বভাবতই উঠবে দীর্ঘদিন ঝুলে থাকা ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের দুটি দিক-চিহ্ন চুক্তির অসম্পূর্ণ রূপায়ন ইস্যু৷ একটি তিস্তার জলবণ্টন চুক্তি, অন্যটি স্থলসীমা চুক্তি৷

আন্তরিক চেষ্টা সত্ত্বেও এ দুটি চুক্তি কেন রূপায়িত করা গেল না তাঁর শাসনকালে – সেই রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার পটভূমি নতুন করে ব্যাখ্যা করবেন তিনি শেখ হাসিনার কাছে৷ তিস্তা নদীর জলবণ্টন চুক্তি আটকাতে প্রথম থেকেই কড়া মনোভাব নিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়, রাজ্যের স্বার্থের দোহাই দিয়ে৷ দু'দেশের স্থলসীমা চুক্তির জন্য দরকার সংসদীয় অনুমোদন৷ তাই সেই সংক্রান্ত বিল সংসদে পেশ করা সত্ত্বেও পাশ করানো যায়নি সংসদের কাজকর্ম দিনের পর দিন অচল হয়ে থাকায়৷

এ বিষয়ে প্রধান বিরোধী দল বিজেপির ভূমিকাও ছিল ‘ধরি মাছ, না ছুঁই পানি' গোছের৷ বিশ্লেষকদের কেউ কেউ মনে করেন, বিজেপি চেয়েছে ঐ বিল পাশ করানোর কৃতিত্ব মনমোহন সিং সরকারকে না দিতে৷ আসন্ন সাধারণ নির্বাচনের পর নতুন সরকার, অর্থাৎ মনে করতে হবে বিজেপি সরকার ঐ বিল পাশের কৃতিত্বের হকদার নিজে হতে৷ শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাহিন্দ্র রাজাপক্ষের সঙ্গেও মিলিত হবেন ড. সিং৷ মাস তিনেক আগে কলোম্বো কমনওয়েলথ সরকার প্রধানদের সম্মেলনে মনমোহন সিং যেতে পারেননি অভ্যন্তরীণ রাজনীতির বাধ্যবাধকতায়৷ এক কথায় ভোটের মুখে তামিল রাজনৈতিক দলগুলির চাপ অগ্রাহ্য করা তাঁর পক্ষে সম্ভব ছিল না৷ সেই একই কারণে শ্রীলঙ্কায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে রাজাপক্ষ সরকারের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের প্রস্তাব সমর্থন করা ছাড়া ভারতের যে উপায় নেই, সে কথাও তিনি শ্রীলঙ্কাকে বুঝিয়ে দেবেন৷

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ছবি: DW

মিয়ানমার রওনা হবার প্রাক্কালে পররাষ্ট্র দপ্তরের সচিব সুজাতা সিং সংবাদমাধ্যমকে বলেন, বিমস্টেক গোষ্ঠীকে যেন কেউ দুর্বল না ভাবে৷ বিমস্টেকের সাতটি দেশে বিশ্ব জনসংখ্যার ২০ শতাংশ বা ২৫০ কোটি মানুষের বাস৷ মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ২৫০ ট্রিলিয়ান মার্কিন ডলার৷ তবে কিছু আঠালো ইস্যু আছে৷ যেমন, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ )৷ সাতটি দেশকে সহমতে আনা কিছুটা সময়সাপেক্ষ বিষয়৷ আর বিমস্টেক সম্মেলনে এ বিষয়ে আলোচনা জটিল হতে পারে এই কারণে যে, সাতটির মধ্যে সার্কের কয়েকটি দেশ আছে, যে সব দেশ ইতিমধ্যেই সার্ক মুক্ত বাণিজ্য ‘সাফটা'-র বৃত্তে রয়েছে৷ অন্যগুলি রয়েছে ‘আসিয়ান' দেশগোষ্ঠীর অন্তর্গত৷ এর প্রেক্ষিতে এমন সিদ্ধান্তে আসতে হবে যাতে ভারতের সর্বোচ্চ সুফল লাভের পাশাপাশি অন্য দেশগুলিও উপকৃত হতে পারে৷ তাই সময় লাগতে পারে৷ উল্লেখ্য, ২০০৪ সালে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির একটি কাঠামো তৈরির চুক্তি সই হয়েছিল, তাতে ছিল পণ্য, পরিষেবা ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ঐকমত্যের সংস্থান৷

মিয়ানমার বিমস্টেক শীর্ষ সম্মেলনে আবহাওয়া ও জলবায়ু পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র এবং ঢাকায় বিমস্টেকের স্থায়ী সচিবালয় স্থাপন চুক্তি সই হবার সম্ভাবনা আছে৷ বিমস্টেকের ঢাকা সচিবালয়ের বার্ষিক খরচ খরচার ২০ শতাংশ বহনে রাজি হয়েছে ভারত৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

ডয়চে ভেলের শীর্ষ সংবাদ

স্কিপ নেক্সট সেকশন ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ

ডয়চে ভেলে থেকে আরো সংবাদ